alt

news » campus

জাকসু ভোটে সেনা মোতায়েন নিয়ে বিতর্ক: নিরাপত্তা ঘাটতি আসলে কতটা?

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : বুধবার, ২৭ আগস্ট ২০২৫

দীর্ঘ ৩৩ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচন ঘিরে সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, সম্ভাব্য সহিংসতা ঠেকাতেই এ পদক্ষেপ; তবে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের একটি অংশ মনে করছেন, স্বায়ত্তশাসিত ক্যাম্পাসে সেনা মোতায়েন বিশ্ববিদ্যালয়ের চরিত্র ও ধারণার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

২০ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে ভোটের আগে, চলাকালে ও পরে সেনা মোতায়েনের জন্য চিঠি পাঠায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বলেন, “রাষ্ট্রে এখন বিশেষ পরিস্থিতি চলছে। পাশাপাশি সেনাবাহিনীর ম্যাজিস্ট্র্যাসি পাওয়ার আছে। নির্বাচনে নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুলিশ, র‌্যাব ও আনসারের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর সহায়তাও চাওয়া হয়েছে।”

প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মো. মনিরুজ্জামান বলেন, “দীর্ঘদিন চেষ্টার পরেও মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের হল থেকে বের করতে পারিনি। তারা বহিরাগত হিসেবে থেকে গেছে। এসব কারণে নিরাপত্তা ঝুঁকি অনুভব করছি। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা চাইছি।”

জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর বলেন, “ছাত্রলীগের কিছু সদস্য এখনো প্রভাবশালী। তাদের রুখতে সেনা মোতায়েনকে আমরা ইতিবাচকভাবে দেখছি।”

অন্যদিকে বাগছাস সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছে। সংগঠনের আহ্বায়ক আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল বলেন, “এতদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে সেনা মোতায়েন হয়নি, তেমন কোনো জরুরি প্রেক্ষাপটও নেই। তাই এ সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা উচিত।”

ছাত্র ইউনিয়নের একাংশ মনে করে, সেনা ক্যাম্পাসে নয়, বাইরে থাকলেই যথেষ্ট। সাবেক সভাপতি অমর্ত্য রায় বলেন,

“নিরাপত্তার জন্য সীমিত মাত্রায় ফটকের বাইরে সেনাদের রাখা যেতে পারে, তবে ক্যাম্পাসে তাদের অবস্থান আমরা চাই না।”

ছাত্রফ্রন্ট (মার্কসবাদী)-এর নেতা সজীব আহমেদ জেনিচ অভিযোগ করেন, “সংগঠনগুলোর সহাবস্থান ও প্রশাসনিক তদারকি নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হওয়াতেই প্রশাসন সেনাবাহিনী ডাকছে। এটি প্রক্রিয়াগত ভ্রান্তি।”

সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মৃধা মো. শিবলী নোমান বলেন, “পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ নির্বাচনে সেনা মোতায়েন বিশ্ববিদ্যালয়ের চরিত্রের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এটি নির্বাচন-পরবর্তী ক্যাম্পাসের পরিবেশকেও প্রভাবিত করবে।”

একজন ভোটার আজিজুল হাকিম জয় বলেন, “অভ্যন্তরীণ নির্বাচন করতে সেনা দরকার হওয়া প্রশাসনের অক্ষমতা প্রমাণ করে। তবে সহিংসতার আশঙ্কা আছে, তাই অনেকেই চাচ্ছেন সেনাদের উপস্থিতিতে হলেও নির্বাচনটা হোক।”

১১ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ভোট হবে। নির্বাচনের ২৫টি পদের বিপরীতে প্রার্থী হয়েছেন শতাধিক শিক্ষার্থী। এরই মধ্যে ইসলামী ছাত্রশিবির ‘সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট’ এবং বাগছাস নিজেদের পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা করেছে। ছাত্রদল, বাম সংগঠন ও কয়েকটি স্বতন্ত্র প্যানেলও খুব শিগগির তালিকা প্রকাশ করবে।

এদিকে বটতলা, মুরাদ চত্বরসহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে জমে উঠেছে নির্বাচনি আড্ডা। শিক্ষার্থীরা উচ্ছ্বসিত হলেও সহিংসতা ও নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কাও প্রকাশ করছেন।

ছবি

শিক্ষক বরখাস্ত: শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদে উত্তাল ভিকারুননিসার বসুন্ধরা শাখা

ছবি

রাকসু: ক্ষোভের মুখে ৯ ঘণ্টার মধ্যে ভোটের তারিখ আবার পরিবর্তন

ছবি

জাকসু: নারী হলে পদের চেয়ে প্রার্থী কম, বামপন্থিদের বিভাজন

ছবি

রাকসু নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তন

ছবি

ডাকসু ভিপি প্রার্থী জালাল আহমদকে রুমমেটকে হত্যাচেষ্টার মামলায় কারাগারে পাঠানোর আদেশ

ছবি

ডাকসু নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘন, সরানো হল প্রার্থীদের ব্যানার

ছবি

ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রদলের অভিযোগ: আচরণবিধি লঙ্ঘন ও ভোটকেন্দ্রের সমস্যা

ছবি

ঢাবির হল সংসদ নির্বাচনে লড়বেন ১ হাজার ৩৫ প্রার্থী

ছবি

রাকসু: পিছিয়ে গেলো ভোট

ছবি

ডাকসুর ভিপি প্রার্থী জালালকে পুলিশের হাতে সোপর্দ

ছবি

রুমমেটকে ছুরিকাঘাতের অভিযোগে ডাকসুর ভিপি প্রার্থী জালাল হল থেকে বহিষ্কৃত

ছবি

জাকসু: অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, পরিচিত মুখের ‘অভাবে’ ছাত্রদলের প্যানেল ঘোষণায় বিলম্ব

ছবি

রাকসু নির্বাচন: শেষদিনেও মনোনয়ন নিলো না ছাত্রদল-শিবির, ফরম বিতরণ ৮২

ছবি

৩ দাবিতে শাহবাগ মোড় অবরোধ করে প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

ছবি

ডাকসু: সেনাবাহিনী নামছে প্রথমবারের মতো

ছবি

ডাকসু নির্বাচনে ব্যানার ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ

ছবি

ডাকসু নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪৭১ জন

ছবি

রাকসু নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমার সময় পাঁচ দিন বাড়ানো

ছবি

শুরু হলো ডাকসু নির্বাচনে প্রার্থীদের প্রচার

ছবি

ডাকসু নির্বাচন নিয়ে আচরণবিধি ভাঙার অভিযোগ ছাত্রদলের

ছবি

জাকসু: খসড়া প্রার্থী তালিকা প্রকাশ, ভিপি পদে লড়বেন ২০ জন

ছবি

ডাকসু নির্বাচন: প্রচারণা শুরু হচ্ছে মঙ্গলবার

ছবি

জকসু নির্বাচনের রোডম্যাপসহ দুই দফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি

ছবি

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নের তিন দফা দাবিতে বরিশাল থেকে পটুয়াখালী-ভোলা মহাসড়ক অবরোধ

ছবি

ঢাবিতে ফজলুর রহমানের কুশপুত্তলিকা দাহ

ছবি

জাকসু: সাইবার হয়রানির শিকার নারীরা

ছবি

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তিন দফা দাবি নিয়ে বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ

ছবি

জকসু ও সম্পূরক বৃত্তি দাবি: প্রশাসনিক ভবনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তালা

ছবি

জকসু নিয়ে এখনও বাধা আসেনি, আসলে ‘তোমাদের জানাবো’, আন্দোলনকারীদের জবি উপাচার্য

ছবি

ডাকসু: বাগছাসে বিদ্রোহ, পদত্যাগ এজিএস পদে প্রার্থী তাদের পাঁচ নেতা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বহিষ্কৃত শিক্ষক মাহমুদুর রহমান গ্রেপ্তার

ছবি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় রাকসু নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার পদত্যাগ

ছবি

রাকসু নির্বাচন: শঙ্কা আর প্রত্যাশায় উত্তাল ক্যাম্পাস

ছবি

জাকসু: বাগছাসের প্যানেল ঘোষণা, ছাত্রদল, বামরা এখনও পিছিয়ে

ছবি

ডাকসু: নারীর সংখ্যা অনেক কম

ছবি

ইউসিবিডিতে ডাটা সায়েন্স নিয়ে মাস্টারক্লাস অনুষ্ঠিত

tab

news » campus

জাকসু ভোটে সেনা মোতায়েন নিয়ে বিতর্ক: নিরাপত্তা ঘাটতি আসলে কতটা?

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

বুধবার, ২৭ আগস্ট ২০২৫

দীর্ঘ ৩৩ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচন ঘিরে সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, সম্ভাব্য সহিংসতা ঠেকাতেই এ পদক্ষেপ; তবে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের একটি অংশ মনে করছেন, স্বায়ত্তশাসিত ক্যাম্পাসে সেনা মোতায়েন বিশ্ববিদ্যালয়ের চরিত্র ও ধারণার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

২০ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে ভোটের আগে, চলাকালে ও পরে সেনা মোতায়েনের জন্য চিঠি পাঠায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বলেন, “রাষ্ট্রে এখন বিশেষ পরিস্থিতি চলছে। পাশাপাশি সেনাবাহিনীর ম্যাজিস্ট্র্যাসি পাওয়ার আছে। নির্বাচনে নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুলিশ, র‌্যাব ও আনসারের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর সহায়তাও চাওয়া হয়েছে।”

প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মো. মনিরুজ্জামান বলেন, “দীর্ঘদিন চেষ্টার পরেও মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের হল থেকে বের করতে পারিনি। তারা বহিরাগত হিসেবে থেকে গেছে। এসব কারণে নিরাপত্তা ঝুঁকি অনুভব করছি। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা চাইছি।”

জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর বলেন, “ছাত্রলীগের কিছু সদস্য এখনো প্রভাবশালী। তাদের রুখতে সেনা মোতায়েনকে আমরা ইতিবাচকভাবে দেখছি।”

অন্যদিকে বাগছাস সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছে। সংগঠনের আহ্বায়ক আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল বলেন, “এতদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে সেনা মোতায়েন হয়নি, তেমন কোনো জরুরি প্রেক্ষাপটও নেই। তাই এ সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা উচিত।”

ছাত্র ইউনিয়নের একাংশ মনে করে, সেনা ক্যাম্পাসে নয়, বাইরে থাকলেই যথেষ্ট। সাবেক সভাপতি অমর্ত্য রায় বলেন,

“নিরাপত্তার জন্য সীমিত মাত্রায় ফটকের বাইরে সেনাদের রাখা যেতে পারে, তবে ক্যাম্পাসে তাদের অবস্থান আমরা চাই না।”

ছাত্রফ্রন্ট (মার্কসবাদী)-এর নেতা সজীব আহমেদ জেনিচ অভিযোগ করেন, “সংগঠনগুলোর সহাবস্থান ও প্রশাসনিক তদারকি নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হওয়াতেই প্রশাসন সেনাবাহিনী ডাকছে। এটি প্রক্রিয়াগত ভ্রান্তি।”

সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মৃধা মো. শিবলী নোমান বলেন, “পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ নির্বাচনে সেনা মোতায়েন বিশ্ববিদ্যালয়ের চরিত্রের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এটি নির্বাচন-পরবর্তী ক্যাম্পাসের পরিবেশকেও প্রভাবিত করবে।”

একজন ভোটার আজিজুল হাকিম জয় বলেন, “অভ্যন্তরীণ নির্বাচন করতে সেনা দরকার হওয়া প্রশাসনের অক্ষমতা প্রমাণ করে। তবে সহিংসতার আশঙ্কা আছে, তাই অনেকেই চাচ্ছেন সেনাদের উপস্থিতিতে হলেও নির্বাচনটা হোক।”

১১ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ভোট হবে। নির্বাচনের ২৫টি পদের বিপরীতে প্রার্থী হয়েছেন শতাধিক শিক্ষার্থী। এরই মধ্যে ইসলামী ছাত্রশিবির ‘সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট’ এবং বাগছাস নিজেদের পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা করেছে। ছাত্রদল, বাম সংগঠন ও কয়েকটি স্বতন্ত্র প্যানেলও খুব শিগগির তালিকা প্রকাশ করবে।

এদিকে বটতলা, মুরাদ চত্বরসহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে জমে উঠেছে নির্বাচনি আড্ডা। শিক্ষার্থীরা উচ্ছ্বসিত হলেও সহিংসতা ও নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কাও প্রকাশ করছেন।

back to top