ঢাকার বাংলাবাজার থেকে সরকারি বিনামূল্যে বিতরণের প্রায় ১০ হাজার বইসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। বুধবার (২৩ জানুয়ারি) বিকেলে ইস্পাহানি গলির বিভিন্ন গুদামে অভিযান চালিয়ে এসব বই জব্দ করা হয়। জব্দকৃত বইয়ের বাজারমূল্য প্রায় আট লাখ টাকা বলে জানিয়েছে ডিবি।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন ৫৫ বছর বয়সী সিরাজুল ইসলাম উজ্জ্বল এবং ৫৬ বছর বয়সী দেলোয়ার হোসেন। ডিবির ভাষ্যমতে, তারা দীর্ঘদিন ধরে সরকারি বই অবৈধভাবে মজুদ করে খোলাবাজারে বিক্রি করছিলেন। শুধু তারা নয়, এমন আরও বেশ কয়েকটি চক্র সক্রিয় রয়েছে, যাদের ধরতে ডিবির অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
২০১০ সাল থেকে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রতি বছরের প্রথম দিনে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়ার রেওয়াজ শুরু হয়। তবে বর্তমান সরকার পরিবর্তনের পর এবার সেই বই উৎসবে ছেদ পড়েছে।
নতুন বছরের প্রথম দুই দিনে ৪১ কোটি বইয়ের মধ্যে ১০ কোটি বই শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। বাকি বই ৩০ জানুয়ারির মধ্যে বিতরণ শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে।
তবে সব বই হাতে না পাওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের এনসিটিবির ওয়েবসাইট থেকে পিডিএফ কপি ব্যবহার করে পড়ালেখা চালিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিবির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম জানান, বাংলাবাজারের ইস্পাহানি গলিতে কয়েকটি গুদামে সরকারি বই মজুদ থাকার তথ্য পেয়ে অভিযান চালানো হয়।
অভিযানে প্রায় ১০ হাজার বই জব্দ করা হয়, যা দুই ট্রাকে করে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এসব বই আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে এনসিটিবির কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানান তিনি।
ডিবির তথ্যমতে, পরিবহন ও বিতরণের দায়িত্বে থাকা কিছু অসাধু ব্যক্তি বই পাচারকারী চক্রের সঙ্গে যুক্ত। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বই সরবরাহের পরিবর্তে অতিরিক্ত বই গুদামজাত করে তারা অবৈধভাবে বিক্রি করে থাকে।
অতিরিক্ত বই ছাপানোর কোনো সুযোগ রয়েছে কি না—এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। ডিবির কর্মকর্তা নাসিরুল ইসলাম জানান, ১১৬টি প্রেসে সরকারি বই ছাপানো হয়, যার মধ্যে ঢাকার ভেতর ও বাইরে বেশ কয়েকটি প্রেস রয়েছে। অতিরিক্ত বই ছাপানোর কোনো প্রমাণ পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এনসিটিবি বা মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) কেউ এই চক্রের সঙ্গে জড়িত কি না, সে বিষয়েও তদন্ত চলছে। এনসিটিবির দুটি সরকারি গুদাম—তেজগাঁও ও টঙ্গীতে অবস্থিত, যেখানে বই সংরক্ষণ করা হয়। এর বাইরে অন্য কোথাও বই মজুদের সুযোগ নেই।
যদি কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী এই অনিয়মে জড়িত থাকেন, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান ডিবির যুগ্ম কমিশনার।
ডিবির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গ্রেপ্তারকৃত সিরাজুল ইসলাম উজ্জ্বল ১০ বছর আগেও একই অপরাধে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। এবার তার গুদাম থেকেই বিপুল পরিমাণ বই জব্দ করা হয়েছে।
তিনি মাত্র ১০-১২ টাকা দামে বই কিনে তা ৮০-৮৫ টাকায় বিক্রি করতেন। বিতরণ ও পরিবহনের অনিয়মের সঙ্গে জড়িত আরও কিছু নাম পেয়েছে ডিবি, যাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ডিবির যুগ্ম কমিশনার নাসিরুল ইসলাম।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫
ঢাকার বাংলাবাজার থেকে সরকারি বিনামূল্যে বিতরণের প্রায় ১০ হাজার বইসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। বুধবার (২৩ জানুয়ারি) বিকেলে ইস্পাহানি গলির বিভিন্ন গুদামে অভিযান চালিয়ে এসব বই জব্দ করা হয়। জব্দকৃত বইয়ের বাজারমূল্য প্রায় আট লাখ টাকা বলে জানিয়েছে ডিবি।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন ৫৫ বছর বয়সী সিরাজুল ইসলাম উজ্জ্বল এবং ৫৬ বছর বয়সী দেলোয়ার হোসেন। ডিবির ভাষ্যমতে, তারা দীর্ঘদিন ধরে সরকারি বই অবৈধভাবে মজুদ করে খোলাবাজারে বিক্রি করছিলেন। শুধু তারা নয়, এমন আরও বেশ কয়েকটি চক্র সক্রিয় রয়েছে, যাদের ধরতে ডিবির অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
২০১০ সাল থেকে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রতি বছরের প্রথম দিনে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়ার রেওয়াজ শুরু হয়। তবে বর্তমান সরকার পরিবর্তনের পর এবার সেই বই উৎসবে ছেদ পড়েছে।
নতুন বছরের প্রথম দুই দিনে ৪১ কোটি বইয়ের মধ্যে ১০ কোটি বই শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। বাকি বই ৩০ জানুয়ারির মধ্যে বিতরণ শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে।
তবে সব বই হাতে না পাওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের এনসিটিবির ওয়েবসাইট থেকে পিডিএফ কপি ব্যবহার করে পড়ালেখা চালিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিবির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম জানান, বাংলাবাজারের ইস্পাহানি গলিতে কয়েকটি গুদামে সরকারি বই মজুদ থাকার তথ্য পেয়ে অভিযান চালানো হয়।
অভিযানে প্রায় ১০ হাজার বই জব্দ করা হয়, যা দুই ট্রাকে করে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এসব বই আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে এনসিটিবির কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানান তিনি।
ডিবির তথ্যমতে, পরিবহন ও বিতরণের দায়িত্বে থাকা কিছু অসাধু ব্যক্তি বই পাচারকারী চক্রের সঙ্গে যুক্ত। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বই সরবরাহের পরিবর্তে অতিরিক্ত বই গুদামজাত করে তারা অবৈধভাবে বিক্রি করে থাকে।
অতিরিক্ত বই ছাপানোর কোনো সুযোগ রয়েছে কি না—এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। ডিবির কর্মকর্তা নাসিরুল ইসলাম জানান, ১১৬টি প্রেসে সরকারি বই ছাপানো হয়, যার মধ্যে ঢাকার ভেতর ও বাইরে বেশ কয়েকটি প্রেস রয়েছে। অতিরিক্ত বই ছাপানোর কোনো প্রমাণ পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এনসিটিবি বা মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) কেউ এই চক্রের সঙ্গে জড়িত কি না, সে বিষয়েও তদন্ত চলছে। এনসিটিবির দুটি সরকারি গুদাম—তেজগাঁও ও টঙ্গীতে অবস্থিত, যেখানে বই সংরক্ষণ করা হয়। এর বাইরে অন্য কোথাও বই মজুদের সুযোগ নেই।
যদি কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী এই অনিয়মে জড়িত থাকেন, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান ডিবির যুগ্ম কমিশনার।
ডিবির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গ্রেপ্তারকৃত সিরাজুল ইসলাম উজ্জ্বল ১০ বছর আগেও একই অপরাধে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। এবার তার গুদাম থেকেই বিপুল পরিমাণ বই জব্দ করা হয়েছে।
তিনি মাত্র ১০-১২ টাকা দামে বই কিনে তা ৮০-৮৫ টাকায় বিক্রি করতেন। বিতরণ ও পরিবহনের অনিয়মের সঙ্গে জড়িত আরও কিছু নাম পেয়েছে ডিবি, যাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ডিবির যুগ্ম কমিশনার নাসিরুল ইসলাম।