পোল্ট্রি শিল্প রক্ষায় খামারিদের ৮ দফা দাবি
পোলট্রি খামারিদের প্রণোদনা ও কৃষি শিল্পের মত পোলট্রি খামারের বিদ্যুৎ বিলে ২০ শতাংশ রিবেট (ছাড়) দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন পোলট্রি খামারিরা। সেইসাথে দেশের পোল্ট্রি শিল্প রক্ষায় ৮ দফা দাবি জানিয়েছেন তারা।
মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর মিরপুর ডিওএইচএসে বিপিআইএ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে খামারিরা এ দাবি তুলে ধরেন। সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাষ্ট্রিজ এসোসিয়েশন (বিপিআইএ)।
তারা আরও বলেন, দেশের ৮০ শতাংশ ডিমের যোগানদার ক্ষুদ্র ও মাঝারি খামারিরা। ডিমের দাম যখন বৃদ্ধি পায়, তখন সরকারের কঠোর নীতির প্রতিফলন দেখা গেলেও যখন খামারিরা লোকসানের মুখে পড়ে তখন সরকারি সংস্থাগুলো নীরব থাকে। এ অবস্থার দ্রুত সমাধান ও টেকসই নীতিমালা চান খামারিরা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন বিপিআইএ’র সেক্রেটারী জেনারেল খন্দকার মো. মহসিন। তিনি বলেন, ‘খামারিরা এখন যে দামে ডিম বিক্রি করছেন, তাতে তাঁদের প্রতিদিনের মুরগি পালন করতে খাদ্য বাবদ যে খরচ হয়, ডিম বিক্রি করে সেই ব্যয়ও উঠছে না। বর্তমানে একটি ডিমের উৎপাদন খরচ প্রায় ১১ টাকা ৬৪ পয়সা কাছাকাছি। কিন্তু বাজারে বিক্রি করতে হচ্ছে ৯ টাকা দশ পয়সা দামে। সে হিসাবে প্রতি ডিমে একজন ক্ষুদ্র ও মাঝারি খামারির লোকসান দাঁড়ায় ২ টাকা ৫৪ পয়সা। লোকসানে ডিম বিক্রি অব্যাহত থাকলে আগামী দিনে হাজার হাজার সাধারণ খামারি তাঁদের খামার বন্ধ করে দিতে বাধ্য হবেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘অনেক ছোট খামারি লোকসানের বোঝা টানতে না পেরে উৎপাদনে থাকা ডিম পাড়া মুরগি বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। যা অতি স্বল্প সময়ে রমজান পরবর্তী মাসগুলোতে ডিমের উৎপাদন ও যোগানের ভারসাম্য নষ্ট করবে, পোলট্রি ফার্মিং ও ডিম মুরগির বিপণনের সঙ্গে জড়িত গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর লাখ লাখ মানুষ কর্মচ্যুতির ঝুঁকিতে পড়বেন, অন্যদিকে ভোক্তা বেশি দামে ডিম ক্রয়ের ঝুঁকিতে পড়বেন। ’
কিশোরগঞ্জ সদরের খুশবো পোলট্রি ফার্মের মালিক সাদেকুর রহমান জানান, তার খামারে ছয় হাজার মুরগি রয়েছে। লসে ডিম বিক্রি করায় তিনি বড় ধরনের ক্ষতির মুখে রয়েছেন। এর আগেও ভাইরাসজনিত রোগে তিনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
নরসিংদীর খামারি বিলকিস আহমেদ বলেন, ‘ডিমের দাম পাচ্ছি না। তাই খামারের খরচ ওঠছে না। এখন লোকসানে পথে বসার অবস্থা। সরকার যেন আমাদের রক্ষায় প্রণোদনার ব্যবস্থা করে।‘
সংবাদ সম্মেলনে প্রান্তিক খামারিদের রক্ষায় কয়েকটি দাবি জানানো হয়। দাবি গুলোর মধ্যে রয়েছে, ডিমের দামের পতনে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র ও মাঝারি খামারিদের জরুরি ভিত্তিতে নগদ আর্থিক প্রণোদনার ব্যবস্থা করা। কৃষি শিল্পের মত পোলট্রি খামারের বিদ্যুৎ বিলে ২০ শতাংশ রিবেট প্রদান করা। প্রতি বছর রমজান মাসে খামারিদের ডিম সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা। বাস্তব পরিপ্রেক্ষিতে ডিম মুরগির সরকার ঘোষিত যৌক্তিক দাম অনতিবিলম্বে পুনঃ নির্ধারণ করার জোর দাবি জানাই। নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন, ডিম ও মুরগির মাংসের আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানির পথ উন্মুক্ত করতে ‘জাতীয় পোলট্রি ডেভেলপমেন্ট বোর্ড’ গঠন ইত্যাদি।
বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ এসোসয়িশেনের সভাপতি শাহ হাবিবুল হকের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে আরও আলোচনায় অংশ নেন সংগঠনের সিনিয়র সহ সভাপতি খন্দকার মনির আহম্মেদ, প্রচার সম্পাদক তোফাজ্জাল হোসেন, পোলট্রি প্রোডাকশন এন্ড সাপ্লাই চেইন বিশেষজ্ঞ কৃষিবিদ অঞ্জন মজুমদার, পোলট্রি খামারি জাহিদ হোসেন জোর্য়াদার প্রমুখ।
পোল্ট্রি শিল্প রক্ষায় খামারিদের ৮ দফা দাবি
মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫
পোলট্রি খামারিদের প্রণোদনা ও কৃষি শিল্পের মত পোলট্রি খামারের বিদ্যুৎ বিলে ২০ শতাংশ রিবেট (ছাড়) দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন পোলট্রি খামারিরা। সেইসাথে দেশের পোল্ট্রি শিল্প রক্ষায় ৮ দফা দাবি জানিয়েছেন তারা।
মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর মিরপুর ডিওএইচএসে বিপিআইএ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে খামারিরা এ দাবি তুলে ধরেন। সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাষ্ট্রিজ এসোসিয়েশন (বিপিআইএ)।
তারা আরও বলেন, দেশের ৮০ শতাংশ ডিমের যোগানদার ক্ষুদ্র ও মাঝারি খামারিরা। ডিমের দাম যখন বৃদ্ধি পায়, তখন সরকারের কঠোর নীতির প্রতিফলন দেখা গেলেও যখন খামারিরা লোকসানের মুখে পড়ে তখন সরকারি সংস্থাগুলো নীরব থাকে। এ অবস্থার দ্রুত সমাধান ও টেকসই নীতিমালা চান খামারিরা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন বিপিআইএ’র সেক্রেটারী জেনারেল খন্দকার মো. মহসিন। তিনি বলেন, ‘খামারিরা এখন যে দামে ডিম বিক্রি করছেন, তাতে তাঁদের প্রতিদিনের মুরগি পালন করতে খাদ্য বাবদ যে খরচ হয়, ডিম বিক্রি করে সেই ব্যয়ও উঠছে না। বর্তমানে একটি ডিমের উৎপাদন খরচ প্রায় ১১ টাকা ৬৪ পয়সা কাছাকাছি। কিন্তু বাজারে বিক্রি করতে হচ্ছে ৯ টাকা দশ পয়সা দামে। সে হিসাবে প্রতি ডিমে একজন ক্ষুদ্র ও মাঝারি খামারির লোকসান দাঁড়ায় ২ টাকা ৫৪ পয়সা। লোকসানে ডিম বিক্রি অব্যাহত থাকলে আগামী দিনে হাজার হাজার সাধারণ খামারি তাঁদের খামার বন্ধ করে দিতে বাধ্য হবেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘অনেক ছোট খামারি লোকসানের বোঝা টানতে না পেরে উৎপাদনে থাকা ডিম পাড়া মুরগি বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। যা অতি স্বল্প সময়ে রমজান পরবর্তী মাসগুলোতে ডিমের উৎপাদন ও যোগানের ভারসাম্য নষ্ট করবে, পোলট্রি ফার্মিং ও ডিম মুরগির বিপণনের সঙ্গে জড়িত গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর লাখ লাখ মানুষ কর্মচ্যুতির ঝুঁকিতে পড়বেন, অন্যদিকে ভোক্তা বেশি দামে ডিম ক্রয়ের ঝুঁকিতে পড়বেন। ’
কিশোরগঞ্জ সদরের খুশবো পোলট্রি ফার্মের মালিক সাদেকুর রহমান জানান, তার খামারে ছয় হাজার মুরগি রয়েছে। লসে ডিম বিক্রি করায় তিনি বড় ধরনের ক্ষতির মুখে রয়েছেন। এর আগেও ভাইরাসজনিত রোগে তিনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
নরসিংদীর খামারি বিলকিস আহমেদ বলেন, ‘ডিমের দাম পাচ্ছি না। তাই খামারের খরচ ওঠছে না। এখন লোকসানে পথে বসার অবস্থা। সরকার যেন আমাদের রক্ষায় প্রণোদনার ব্যবস্থা করে।‘
সংবাদ সম্মেলনে প্রান্তিক খামারিদের রক্ষায় কয়েকটি দাবি জানানো হয়। দাবি গুলোর মধ্যে রয়েছে, ডিমের দামের পতনে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র ও মাঝারি খামারিদের জরুরি ভিত্তিতে নগদ আর্থিক প্রণোদনার ব্যবস্থা করা। কৃষি শিল্পের মত পোলট্রি খামারের বিদ্যুৎ বিলে ২০ শতাংশ রিবেট প্রদান করা। প্রতি বছর রমজান মাসে খামারিদের ডিম সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা। বাস্তব পরিপ্রেক্ষিতে ডিম মুরগির সরকার ঘোষিত যৌক্তিক দাম অনতিবিলম্বে পুনঃ নির্ধারণ করার জোর দাবি জানাই। নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন, ডিম ও মুরগির মাংসের আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানির পথ উন্মুক্ত করতে ‘জাতীয় পোলট্রি ডেভেলপমেন্ট বোর্ড’ গঠন ইত্যাদি।
বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ এসোসয়িশেনের সভাপতি শাহ হাবিবুল হকের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে আরও আলোচনায় অংশ নেন সংগঠনের সিনিয়র সহ সভাপতি খন্দকার মনির আহম্মেদ, প্রচার সম্পাদক তোফাজ্জাল হোসেন, পোলট্রি প্রোডাকশন এন্ড সাপ্লাই চেইন বিশেষজ্ঞ কৃষিবিদ অঞ্জন মজুমদার, পোলট্রি খামারি জাহিদ হোসেন জোর্য়াদার প্রমুখ।