১৭ দিন বন্ধ থাকার পর শনিবার পুরোদমে চালু হয়েছে ঢাকার জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল।
সকাল থেকে রোগী ভর্তি, বহির্বিভাগে চিকিৎসাসেবা, অস্ত্রোপচারসহ সব কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে শুরু হয়।
হাসপাতাল এলাকায় সরেজমিনে দেখা গেছে, দুটি ফটকের একটি বন্ধ রয়েছে। অন্যটিতে পুলিশ, র্যাব, আনসার ও হাসপাতালের নিজস্ব নিরাপত্তাকর্মীরা মোতায়েন। পকেট গেইট দিয়ে রোগী ও তাদের স্বজনদের প্রবেশ করতে দেখা যায়।
দীর্ঘ বন্ধের পর চালু হওয়ায় বহির্বিভাগে রোগীর চাপ লক্ষ করা গেছে। ডেমরা থেকে আসা জুয়েল বর্মণ জানান, তার স্ত্রীর চোখের অস্ত্রোপচারের পরবর্তী দেখা দেখানোর সময় ছিল গত বৃহস্পতিবার। কিন্তু হাসপাতাল বন্ধ থাকায় তারা আসতে পারেননি।
তিনি বলেন, “ডাক্তার বলছিল এক মাস পরে আসতে। আইসা দেখি মেডিকেল বন্ধ। সেদিন খবরে দেখলাম আজ ডাক্তাররা আসবেন। এজন্য আমার স্ত্রীকে নিয়ে এসেছি।”
গাজীপুরের ভোগড়া এলাকা থেকে এসেছেন বাদশা মিয়া। স্ত্রীর ছানি কাটার জন্য আগেই তারিখ ছিল তাদের। কিন্তু বন্ধের কারণে তা সম্ভব হয়নি।
“আজ সবকিছু স্বাভাবিক। আমাদের যা পরীক্ষা ছিল তা করিয়েছি। আগামী ১৮ তারিখ অপারেশন হবে,” বলেন তিনি।
আশরাফুল ইসলাম নামে একজন রোগী কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে এসেছেন। তিনি জানান, গত বুধবার হাসপাতালে এসে ফিরে যেতে হয়েছিল তাকে। শনিবার আবার আসার পর সেবা পেয়েছেন।
“আজকে এসে ভালোই সেবা পেলাম আরকি। এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতাল। এভাবে বন্ধ রাখলে জনগণের অসুবিধা হয়, আসতে যেতে সমস্যা হয়,” বলেন তিনি। “আমি আগেও এসেছিলাম, বন্ধ থাকায় হয়রানি হয়েছে। আজ পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ করে ১৬ তারিখে ভর্তি দিয়েছে।”
হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জানে আলম জানান, “আমাদের সব সেবা পুরোপুরি চালু হয়েছে। কোনো সেবা বন্ধ নাই। স্বাভাবিক নিয়মেই সব চলছে। তবে একটি সমস্যা হচ্ছে—আমরা যখন রোগীদের বেড দিতে যাচ্ছি, তখন সেখানে থাকা চার-পাঁচজন নার্সদের বাধা দিচ্ছে।”
গত ২৮ মে কর্মচারীদের কর্মবিরতির পর রোগী ও তাদের স্বজনদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এরপর নিরাপত্তার দাবিতে চিকিৎসক ও কর্মচারীরা হাসপাতালে আসা বন্ধ করে দেন।
৪ জুন চালু হয় জরুরি বিভাগ, ১২ জুন চালু হয় বহির্বিভাগ। এর একদিন পর শনিবার চালু হলো পুরো হাসপাতাল।
ডিরেক্টর জানে আলম জানান, জুলাই অভ্যুত্থানে আহত ৫৪ জনের মধ্যে ৫০ জন রিলিজ না নিয়েই চলে গেছেন। তারা অনুপস্থিত হিসেবে দেখানো হচ্ছে। বাকি চারজনের মধ্যে তিনজনের ছাড়পত্র প্রস্তুত করা হয়েছে। তারা বাড়িতে থেকেই ফলোআপে আসতে পারবেন। একজন এখনও ছুটি দেওয়ার মত অবস্থায় নেই। আরেকজন ভর্তি ছাড়াই হাসপাতালে রয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, “হাসপাতালে এখন চারজন অবস্থান করছেন। যেসব আহত ব্যক্তি বাইরে ছিলেন, তাদের একটি অংশ এখনো হাসপাতালের বাইরে অবস্থান করছেন। ফলে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা এখনও পুরোপুরি নিরাপদ বোধ করছেন না।”
“আমরা এখনও নিরাপত্তা ঝুঁকিতে আছি। কারণ তারা বাইরে অবস্থান করছে। ভেতরের স্বাভাবিক কাজকর্মে বাধা দিচ্ছে।”
হাসপাতালের সামনের সড়কে আহতদের কয়েকজনকে অবস্থান করতে দেখা গেছে। তাদের একজন জানান, “ঈদের ছুটিতে বাড়িতে গিয়েছিলাম। আজ এসে দেখি পুলিশ। আমাদের ঢুকতে দিচ্ছে না। অথচ আমার চোখের অবস্থা খারাপ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ছোট একটা বিষয়কে জটিল করেছে। আমাদের সবাইকে ভিলেন বানিয়েছে।”
শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫
১৭ দিন বন্ধ থাকার পর শনিবার পুরোদমে চালু হয়েছে ঢাকার জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল।
সকাল থেকে রোগী ভর্তি, বহির্বিভাগে চিকিৎসাসেবা, অস্ত্রোপচারসহ সব কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে শুরু হয়।
হাসপাতাল এলাকায় সরেজমিনে দেখা গেছে, দুটি ফটকের একটি বন্ধ রয়েছে। অন্যটিতে পুলিশ, র্যাব, আনসার ও হাসপাতালের নিজস্ব নিরাপত্তাকর্মীরা মোতায়েন। পকেট গেইট দিয়ে রোগী ও তাদের স্বজনদের প্রবেশ করতে দেখা যায়।
দীর্ঘ বন্ধের পর চালু হওয়ায় বহির্বিভাগে রোগীর চাপ লক্ষ করা গেছে। ডেমরা থেকে আসা জুয়েল বর্মণ জানান, তার স্ত্রীর চোখের অস্ত্রোপচারের পরবর্তী দেখা দেখানোর সময় ছিল গত বৃহস্পতিবার। কিন্তু হাসপাতাল বন্ধ থাকায় তারা আসতে পারেননি।
তিনি বলেন, “ডাক্তার বলছিল এক মাস পরে আসতে। আইসা দেখি মেডিকেল বন্ধ। সেদিন খবরে দেখলাম আজ ডাক্তাররা আসবেন। এজন্য আমার স্ত্রীকে নিয়ে এসেছি।”
গাজীপুরের ভোগড়া এলাকা থেকে এসেছেন বাদশা মিয়া। স্ত্রীর ছানি কাটার জন্য আগেই তারিখ ছিল তাদের। কিন্তু বন্ধের কারণে তা সম্ভব হয়নি।
“আজ সবকিছু স্বাভাবিক। আমাদের যা পরীক্ষা ছিল তা করিয়েছি। আগামী ১৮ তারিখ অপারেশন হবে,” বলেন তিনি।
আশরাফুল ইসলাম নামে একজন রোগী কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে এসেছেন। তিনি জানান, গত বুধবার হাসপাতালে এসে ফিরে যেতে হয়েছিল তাকে। শনিবার আবার আসার পর সেবা পেয়েছেন।
“আজকে এসে ভালোই সেবা পেলাম আরকি। এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতাল। এভাবে বন্ধ রাখলে জনগণের অসুবিধা হয়, আসতে যেতে সমস্যা হয়,” বলেন তিনি। “আমি আগেও এসেছিলাম, বন্ধ থাকায় হয়রানি হয়েছে। আজ পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ করে ১৬ তারিখে ভর্তি দিয়েছে।”
হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জানে আলম জানান, “আমাদের সব সেবা পুরোপুরি চালু হয়েছে। কোনো সেবা বন্ধ নাই। স্বাভাবিক নিয়মেই সব চলছে। তবে একটি সমস্যা হচ্ছে—আমরা যখন রোগীদের বেড দিতে যাচ্ছি, তখন সেখানে থাকা চার-পাঁচজন নার্সদের বাধা দিচ্ছে।”
গত ২৮ মে কর্মচারীদের কর্মবিরতির পর রোগী ও তাদের স্বজনদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এরপর নিরাপত্তার দাবিতে চিকিৎসক ও কর্মচারীরা হাসপাতালে আসা বন্ধ করে দেন।
৪ জুন চালু হয় জরুরি বিভাগ, ১২ জুন চালু হয় বহির্বিভাগ। এর একদিন পর শনিবার চালু হলো পুরো হাসপাতাল।
ডিরেক্টর জানে আলম জানান, জুলাই অভ্যুত্থানে আহত ৫৪ জনের মধ্যে ৫০ জন রিলিজ না নিয়েই চলে গেছেন। তারা অনুপস্থিত হিসেবে দেখানো হচ্ছে। বাকি চারজনের মধ্যে তিনজনের ছাড়পত্র প্রস্তুত করা হয়েছে। তারা বাড়িতে থেকেই ফলোআপে আসতে পারবেন। একজন এখনও ছুটি দেওয়ার মত অবস্থায় নেই। আরেকজন ভর্তি ছাড়াই হাসপাতালে রয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, “হাসপাতালে এখন চারজন অবস্থান করছেন। যেসব আহত ব্যক্তি বাইরে ছিলেন, তাদের একটি অংশ এখনো হাসপাতালের বাইরে অবস্থান করছেন। ফলে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা এখনও পুরোপুরি নিরাপদ বোধ করছেন না।”
“আমরা এখনও নিরাপত্তা ঝুঁকিতে আছি। কারণ তারা বাইরে অবস্থান করছে। ভেতরের স্বাভাবিক কাজকর্মে বাধা দিচ্ছে।”
হাসপাতালের সামনের সড়কে আহতদের কয়েকজনকে অবস্থান করতে দেখা গেছে। তাদের একজন জানান, “ঈদের ছুটিতে বাড়িতে গিয়েছিলাম। আজ এসে দেখি পুলিশ। আমাদের ঢুকতে দিচ্ছে না। অথচ আমার চোখের অবস্থা খারাপ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ছোট একটা বিষয়কে জটিল করেছে। আমাদের সবাইকে ভিলেন বানিয়েছে।”