জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ঘাটারচর-মতিঝিল-কাঁচপুর রুটের ঢাকা নগর পরিবহন বাস সার্ভিস। কাউন্টার থেকে যাত্রীর উঠানোর কারণে দিন দিন মানুষের আগ্রহ বৃদ্ধি যাচ্ছে। তবে বাস কম থাকায় ১০-১৫ মিনিট অপেক্ষা করতে হয়। এই অপেক্ষার পরিমাণ কমানোর জন্য এই রুটে নতুন আরও বাস নামানোর দাবি জানান যাত্রীরা। গত সোমবার সরেজমিন রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থেকে ঘাটারচর পর্যন্ত এই বাসে ভ্রমণের সময় যাত্রীরা এসব কথা বলেন। ওইদিন বেলা ১২টায় যাত্রাবাড়ী মোড় থেকে ঘাটারচর পর্যন্ত ৩৫ টাকার একটি টিকেট কেটে ৩৬ সিটের একটি বাসে উঠি। ওই বাসে আগে থেকে ২৫ জন যাত্রী ছিল। যাত্রাবাড়ী থেকে দৈনিক বাংলা পর্যন্ত আসতে সময় লাগে ২২ মিনিট।
কিন্তু দৈনিক বাংলা থেকে পুরানা পল্টন মোড় পর্যন্ত আসতেই ১০ মিনিট সময় লাগে যায়। এখানে ৮ মিনিটেই যানজটে আটকে থাকতে হয়। বেলা সাড়ে ১২টায় পুরানা পল্টন কাউন্টার থেকে চার-পাঁচজন যাত্রী উঠে। আগের ২৬ জনের মধ্যে বেশির ভাগ মতিঝিল ও পল্টনে মেনে যান। নতুন যাত্রীসহ ২১ জন যাত্রী নিয়ে পল্টন থেকে বাসটি প্রেসক্লাবে আসে ১২টা ৩৬ মিনিটে। এখান থেকে আরও চারজন যাত্রী উঠানো হয়। প্রেসক্লাব থেকে শাহবাগ পর্যন্ত দুই কিলোমিটারের একটু বেশি পথ অতিক্রম করতে সময় লাগে চার মিনিট। শাহবাগে তেমন যাত্রী না পাওয়া গেলেও সিটি কলেজের সামনের কাউন্টারে আসার পর বাসটি পূর্ণ হয়ে যায়। সিট না পাওয়ায় ৪ জন যাত্রী দাঁড়িয়ে ছিল।
এভাবে জিগাতলা, ধানমন্ডি-১৫, শংকর, মোহাম্মদপুর ও মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড কাউন্টার পর্যন্ত যাত্রী পূর্ণ ছিল বাসটিতে। তবে বসিলা ও ওয়াশপুর যেতেই বাসটি প্রায় খালি হয়ে যায়। দুই-তিনজন যাত্রী ঘাটারচর শেষ কাউন্টার পর্যন্ত যেতে দেখা গেছে। যাত্রাবাড়ী থেকে ঘাটারচর পর্যন্ত সাড়ে ১৬ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে সময় লাগে ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট। দুপুর ১টা ২০ মিনিটে ঘাটারচর শেষ কাউন্টারে পৌঁছায় ঢাকা নগর পরিবহন বাসটি।
এই যাত্রাপথে মিলন নামের মোহাম্মদপুরে এক যাত্রী সংবাদকে বলেন, ‘এই বাস সার্ভিস অনেক ভালো। তবে অন্য বাসের প্রতিযোগিতার কারণে তেমন যাত্রী পায় না। এই বাসের জন্য মানুষ ১০ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকতে চায় না। মোহাম্মদপুর থেকে মতিঝিল রুটের একাধিক বাস চলে। সামনে যেটা পায় তাতে উঠে পড়েন যাত্রীরা। কিন্তু ১০ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকলে ৩০ মিনিটের উপকার পাওয়া যায়। এটা অনেক যাত্রী বুঝে না। কারণ অন্য বাস যাত্রী বোঝাই না হলে ছাড়ে না। তখন দেখা যায় ৩০ মিনিট বাসে বসে থাকতে হয়।’ এছাড়া এই রুটে কিছু নতুন বাস নামানো হলে যাত্রীদের আগ্রহ আরও বাড়বে বলে জানান তিনি।
পারভেজ নামের বসিলার এক যাত্রী বলেন, ‘ভাবছিলাম এই লাইনে মেয়র সাহেবরা নতুন গাড়ি নিয়ে নামাবে। কিন্তু এখন দেখি আগের মতো পুরাতন গাড়ি। রঙ দিয়ে নামানো হয়েছে। যাত্রীরা নতুন রুটে একটু নতুন নতুন গাড়ি দেখতে চায়। গাড়ি নতুন হলে অনেক যাত্রী পাওয়া যেত।’
‘যত্রতত্র যাত্রী উঠানো হয় না ঠিক আছে। কিন্তু যত্রতত্র যাত্রীরা নামতে চায়।’ এতে অনেক সময় চলে যায় বলে জানান ঢাকা নগর পরিবহনের চালক আশরাফুল। তিনি সংবাদকে বলেন, ‘যত্রতত্র যাত্রী নামানো বন্ধ হলে আরও দ্রুত কাউন্টারে পে৭ৗছানো সম্ভব। কারণ যাত্রীরা তাদের সুবিধা মতো স্থানে নামতে চায়। নামানো না হলে খারাপ ব্যবহার করে। দেখা যায় ওয়ারীর বলধা গার্ডেন থেকে মতিঝিল পর্যন্ত কোন কাউন্টার নেই। এখানে জয়কালী মন্দির ও ইত্তেফাক মোড় যাত্রী নামাতে হয়। এভাবে কাউন্টার ছাড়া অনেক স্থানে যাত্রী নামাতে এতে কিছুটা সময় চলে যায়। কাউন্টার ও বাস সংখ্যা আরও বাড়লে যাত্রী আরও বাড়বে বলে জানান সাইফুল ইসলাম নামের এক বাস স্টাফ। তিনি বলেন, ‘ঘাটারচর থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত আসা ও যাওয়া পথে তালিকায় ২৩টি কাউন্টারের নাম আছে। কিন্তু বাস্তবে আছে ১৫-১৮টির মতো। ঘাটারচর থেকে কাঁচপুর যাওয়ার পথে শাহবাগ থেকে মতিঝিল পর্যন্ত কোন কাউন্টার নেই। এছাড়া পল্টনের যানজটে অনেক সময় আটকে থাকতে হয়। তখন অনেক যাত্রী নেমে যায়। তাই পল্টন থেকে মতিঝিল পর্যন্ত খালি গাড়ি নিয়ে আসতে হয়। মতিঝিল থেকে কিছু যাত্রী পাওয়া গেলেও যাত্রাবাড়ী গেলেই গাড়ি ফাঁকা হয়ে যায়। আসার পথে টিকাটুলি থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত কোন কাউন্টার নেই।’ তাই গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নতুন কাউন্টার ও আরও কিছু বাস নামানো পরামর্শ দেন তিনি।
এ বিষয়ে ঢাকা নগর পরিবহন বাস কোম্পানির চেয়ারম্যান ও বেসরকারি ট্রান্স সিলভা পরিবহনের মালিক সৈয়দ রেজাউল করিম খোকন সংবাদকে বলেন, ‘মেয়রের কথা মতো আমরা এই রুটে ২০টি গাড়ি দিয়েছি। এছাড়া বিআরটিসির ৩০ গাড়িসহ মোট ৫০টি বাস দিয়ে এই রুট চালু করা হয়েছে। কিন্তু অন্যান্য গাড়ির কারণে যাত্রী পাওয়া যায় না। রুট পারমিট ছাড়াও অনেক বাস চলে এই রুটে। এ পর্যন্ত অনেক টাকা লোকসান দিতে হয়েছে। স্টাফদের বেতম দিতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। অবৈধ গাড়িগুলো বন্ধ করে নতুন আরও কিছু গাড়ি নামানো হলে যাত্রীদের আগ্রহ বাড়বে বলে জানান তিনি।
রোববার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২২
জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ঘাটারচর-মতিঝিল-কাঁচপুর রুটের ঢাকা নগর পরিবহন বাস সার্ভিস। কাউন্টার থেকে যাত্রীর উঠানোর কারণে দিন দিন মানুষের আগ্রহ বৃদ্ধি যাচ্ছে। তবে বাস কম থাকায় ১০-১৫ মিনিট অপেক্ষা করতে হয়। এই অপেক্ষার পরিমাণ কমানোর জন্য এই রুটে নতুন আরও বাস নামানোর দাবি জানান যাত্রীরা। গত সোমবার সরেজমিন রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থেকে ঘাটারচর পর্যন্ত এই বাসে ভ্রমণের সময় যাত্রীরা এসব কথা বলেন। ওইদিন বেলা ১২টায় যাত্রাবাড়ী মোড় থেকে ঘাটারচর পর্যন্ত ৩৫ টাকার একটি টিকেট কেটে ৩৬ সিটের একটি বাসে উঠি। ওই বাসে আগে থেকে ২৫ জন যাত্রী ছিল। যাত্রাবাড়ী থেকে দৈনিক বাংলা পর্যন্ত আসতে সময় লাগে ২২ মিনিট।
কিন্তু দৈনিক বাংলা থেকে পুরানা পল্টন মোড় পর্যন্ত আসতেই ১০ মিনিট সময় লাগে যায়। এখানে ৮ মিনিটেই যানজটে আটকে থাকতে হয়। বেলা সাড়ে ১২টায় পুরানা পল্টন কাউন্টার থেকে চার-পাঁচজন যাত্রী উঠে। আগের ২৬ জনের মধ্যে বেশির ভাগ মতিঝিল ও পল্টনে মেনে যান। নতুন যাত্রীসহ ২১ জন যাত্রী নিয়ে পল্টন থেকে বাসটি প্রেসক্লাবে আসে ১২টা ৩৬ মিনিটে। এখান থেকে আরও চারজন যাত্রী উঠানো হয়। প্রেসক্লাব থেকে শাহবাগ পর্যন্ত দুই কিলোমিটারের একটু বেশি পথ অতিক্রম করতে সময় লাগে চার মিনিট। শাহবাগে তেমন যাত্রী না পাওয়া গেলেও সিটি কলেজের সামনের কাউন্টারে আসার পর বাসটি পূর্ণ হয়ে যায়। সিট না পাওয়ায় ৪ জন যাত্রী দাঁড়িয়ে ছিল।
এভাবে জিগাতলা, ধানমন্ডি-১৫, শংকর, মোহাম্মদপুর ও মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড কাউন্টার পর্যন্ত যাত্রী পূর্ণ ছিল বাসটিতে। তবে বসিলা ও ওয়াশপুর যেতেই বাসটি প্রায় খালি হয়ে যায়। দুই-তিনজন যাত্রী ঘাটারচর শেষ কাউন্টার পর্যন্ত যেতে দেখা গেছে। যাত্রাবাড়ী থেকে ঘাটারচর পর্যন্ত সাড়ে ১৬ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে সময় লাগে ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট। দুপুর ১টা ২০ মিনিটে ঘাটারচর শেষ কাউন্টারে পৌঁছায় ঢাকা নগর পরিবহন বাসটি।
এই যাত্রাপথে মিলন নামের মোহাম্মদপুরে এক যাত্রী সংবাদকে বলেন, ‘এই বাস সার্ভিস অনেক ভালো। তবে অন্য বাসের প্রতিযোগিতার কারণে তেমন যাত্রী পায় না। এই বাসের জন্য মানুষ ১০ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকতে চায় না। মোহাম্মদপুর থেকে মতিঝিল রুটের একাধিক বাস চলে। সামনে যেটা পায় তাতে উঠে পড়েন যাত্রীরা। কিন্তু ১০ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকলে ৩০ মিনিটের উপকার পাওয়া যায়। এটা অনেক যাত্রী বুঝে না। কারণ অন্য বাস যাত্রী বোঝাই না হলে ছাড়ে না। তখন দেখা যায় ৩০ মিনিট বাসে বসে থাকতে হয়।’ এছাড়া এই রুটে কিছু নতুন বাস নামানো হলে যাত্রীদের আগ্রহ আরও বাড়বে বলে জানান তিনি।
পারভেজ নামের বসিলার এক যাত্রী বলেন, ‘ভাবছিলাম এই লাইনে মেয়র সাহেবরা নতুন গাড়ি নিয়ে নামাবে। কিন্তু এখন দেখি আগের মতো পুরাতন গাড়ি। রঙ দিয়ে নামানো হয়েছে। যাত্রীরা নতুন রুটে একটু নতুন নতুন গাড়ি দেখতে চায়। গাড়ি নতুন হলে অনেক যাত্রী পাওয়া যেত।’
‘যত্রতত্র যাত্রী উঠানো হয় না ঠিক আছে। কিন্তু যত্রতত্র যাত্রীরা নামতে চায়।’ এতে অনেক সময় চলে যায় বলে জানান ঢাকা নগর পরিবহনের চালক আশরাফুল। তিনি সংবাদকে বলেন, ‘যত্রতত্র যাত্রী নামানো বন্ধ হলে আরও দ্রুত কাউন্টারে পে৭ৗছানো সম্ভব। কারণ যাত্রীরা তাদের সুবিধা মতো স্থানে নামতে চায়। নামানো না হলে খারাপ ব্যবহার করে। দেখা যায় ওয়ারীর বলধা গার্ডেন থেকে মতিঝিল পর্যন্ত কোন কাউন্টার নেই। এখানে জয়কালী মন্দির ও ইত্তেফাক মোড় যাত্রী নামাতে হয়। এভাবে কাউন্টার ছাড়া অনেক স্থানে যাত্রী নামাতে এতে কিছুটা সময় চলে যায়। কাউন্টার ও বাস সংখ্যা আরও বাড়লে যাত্রী আরও বাড়বে বলে জানান সাইফুল ইসলাম নামের এক বাস স্টাফ। তিনি বলেন, ‘ঘাটারচর থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত আসা ও যাওয়া পথে তালিকায় ২৩টি কাউন্টারের নাম আছে। কিন্তু বাস্তবে আছে ১৫-১৮টির মতো। ঘাটারচর থেকে কাঁচপুর যাওয়ার পথে শাহবাগ থেকে মতিঝিল পর্যন্ত কোন কাউন্টার নেই। এছাড়া পল্টনের যানজটে অনেক সময় আটকে থাকতে হয়। তখন অনেক যাত্রী নেমে যায়। তাই পল্টন থেকে মতিঝিল পর্যন্ত খালি গাড়ি নিয়ে আসতে হয়। মতিঝিল থেকে কিছু যাত্রী পাওয়া গেলেও যাত্রাবাড়ী গেলেই গাড়ি ফাঁকা হয়ে যায়। আসার পথে টিকাটুলি থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত কোন কাউন্টার নেই।’ তাই গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নতুন কাউন্টার ও আরও কিছু বাস নামানো পরামর্শ দেন তিনি।
এ বিষয়ে ঢাকা নগর পরিবহন বাস কোম্পানির চেয়ারম্যান ও বেসরকারি ট্রান্স সিলভা পরিবহনের মালিক সৈয়দ রেজাউল করিম খোকন সংবাদকে বলেন, ‘মেয়রের কথা মতো আমরা এই রুটে ২০টি গাড়ি দিয়েছি। এছাড়া বিআরটিসির ৩০ গাড়িসহ মোট ৫০টি বাস দিয়ে এই রুট চালু করা হয়েছে। কিন্তু অন্যান্য গাড়ির কারণে যাত্রী পাওয়া যায় না। রুট পারমিট ছাড়াও অনেক বাস চলে এই রুটে। এ পর্যন্ত অনেক টাকা লোকসান দিতে হয়েছে। স্টাফদের বেতম দিতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। অবৈধ গাড়িগুলো বন্ধ করে নতুন আরও কিছু গাড়ি নামানো হলে যাত্রীদের আগ্রহ বাড়বে বলে জানান তিনি।