alt

অপরাধ ও দুর্নীতি

রংপুর মেডিকেলে অস্বাভাবিক দামে রোগীর খাবার, চক্রের হাতে নিয়ন্ত্রণ ঠিকাদারির

লিয়াকত আলী বাদল, রংপুর : রোববার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩

প্রতি কেজি ছাগলের মাংস ১ হাজার ১৭০ টাকা। বয়লার মুরগি ৪২৮ টাকা। পাকিস্তানি ছোট মুরগি ৭১৫ টাকা। মাছ ৬১১ টাকা। এভাবেই বাজার দরের চেয়ে বেশি দামে রোগীদের খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।

এখানে এ দায়িত্ব চারটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের। মজার বিষয় হচ্ছে, তারা প্রত্যেকেই ব্যবহার করছে একই ঠিকানা।

এ নিয়ে হাসপাতালের মহাপরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি। তাদের অভিযোগ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মিলে এই প্রক্রিয়ায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে ওই সিন্ডিকেট।

তারা বলছেন, কয়েক বছর আগ পর্যন্ত হাসপাতালে খাদ্য সরবরাহের কাজের নিয়ন্ত্রণ আগে ছিল স্থানীয় তিন ব্যক্তির হাতে। পরে এ নিয়ে অভিযোগ উঠলে তারাই চারটি প্রতিষ্ঠানের নামে টেন্ডারে অংশ নিতে থাকে এবং কাজ বাগিয়ে নেয়। আর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের কাছ থেকে খাবার কেনে বাজার দরের চেয়ে বেশি দামে। ক্ষেত্র বিশেষে দ্বিগুণ-তিন গুণ দামে।

অভিযুক্ত চারটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিটিরই ঠিকানা হাসপাতালের পাশের মহল্লায়। অভিযোগকারীরা বলেন, কৌশল হিসেবে প্রতি বছরই নাম পাল্টায় তারা। আর এজন্য কবে কখন টেন্ডার আহ্বান করা হয়, কী প্রক্রিয়ায় তাদের কাজ দেয়া হয় তা কেউ জানে না। লিখিত সেই অভিযোগের বিষয়ে অবহিত হয়ে সরেজমিন গিয়ে ঘটনার সত্যতা পায় এই প্রতিবেদক।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে হাসপাতালে ছাগলের মাংস, ব্রয়লার মুরগি, পাকিস্তানি মুরগি, রুই মাছ, মৃগেল মাছ, কাতল মাছ, ডিম সরবরাহ করছে মেসার্স সোনাম ট্রেডার্স নামে একটি প্রতিষ্ঠান। ছাগলের মাংস রংপুরে বাজারদর প্রতি কেজি ৮শ’ টাকার নিচে হলেও তারা সরবরাহ করছে ১ হাজার ১৭০ টাকা কেজি দরে। মুরগির মাংস ব্রয়লার ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা হলেও তারা সরবরাহ করছে ৪২৮ টাকা কেজি দরে। বাচ্চা মুরগি (কক) সর্বোচ্চ সাড়ে ৩শ’ টাকা হলেও তারা ৭১৫ টাকা কেজি দরে সরবরাহ করছে। একই রুই মাছের সর্বোচ্চ আড়াইশ টাকা হলেও তারা সরবরাহ করছে ৬১১ টাকা কেজি দরে। মৃগেল মাছ ২শ’ টাকা বাজার দর হলেও তারা সরবরাহ করছে ৪৯৪ টাকা দরে। কাতল মাছ ৩শ’ টাকা দরের মাছ তারা ৫৮৫ টাকা দরে সরবরাহ করছে।

রংপুরে সাগরকলা ২০ থেকে ২৫ টাকা হলেও তারা ৭১ টাকা ৫০ পয়সা, মিষ্টি কুমড়া ২০ টাকা দরে হলেও ৫২ টাকা কেজি দরে, ৩০ টাকার বরবটি ৬৫ টাকা দরে সরবরাহ করছে, এ আর ট্রেডার্স নামে আরেকটি প্রতিষ্ঠান। এছাড়া কুমড়া, লাউসহ বিভিন্ন সবজিও তারা সরবরাহ করছে বাজারের চেয়ে অনেক বেশি দামে।

প্রিমিয়াম ট্রেডার্স নামে একটি প্রতিষ্ঠান সরবরাহ করছে চাল, আটা, তেল, চিনিসহ বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী। তারা সয়াবিন তেল সরবরাহ করছে ২৩০ টাকা কেজি দরে। রসুন, আদাসহ বিভিন্ন মসলা সরবরাহ করছে, যা বাজার দরের চেয়ে অনেক বেশি মূল্যে।

এছাড়া মেসার্স নুরাইজ ট্রেডার্স নামে একটি প্রতিষ্ঠান গুঁড়াদুধ প্রতি কেজি ১ হাজার ৯২ টাকা, হরলিক্স ৫৮৫ টাকা দরে সরবরাহ করছে। মিষ্টি দইয়ের জন্য বাজারের চেয়ে অনেক বেশি দাম নিচ্ছে তারা।

তাদের সরবরাহ করা পণ্যের মানও নিম্ন বলে অভিযোগ। এছাড়া রোগীর সংখ্যা বেশি দেখানো, খাদ্য সরবরাহ না করে বিল নেয়া এটা নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে হাসপাতাল ঘুরে।

চারটি প্রতিষ্ঠানের কোনটিই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হয়নি। এ বিষয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. ইউনুছ আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কথা বলতে রাজি হচ্ছিলেন না। পরে রোগী সেজে দেখা করতে গেলে বলেন, তিনি পরিচালক হিসেবে যোগ দেয়ার পর দুর্নীতি অনেক কমিয়ে এনেছেন।

তিনি বলেন, অনেক টেন্ডার বিক্রি হলেও মাত্র এক-দুটি প্রতিষ্ঠানই কীভাবে সবসময় টেন্ডার পায় সে বিষয়ে কোন সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।

ছবি

মিরপুরে চার মৃত্যুর জন্য দায়ী বিদ্যুতের ‘চোরাই লাইন’

ছবি

হিলি সীমান্তে ১৬ কোটি টাকার হেরোইন ও ইয়াবা জব্দ

ঘরের মেজেতে পড়ে কান্না করছে শিশু, বিছানায় মায়ের নিথর দেহ

ছবি

২০ লাখ টাকা ছিনতাই: দুই পুলিশ সদস্যসহ ৫ জন রিমান্ডে

ছবি

ভগ্নিপতিকে হত্যার ১৬ বছর পর যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার

ছবি

জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে গুলিবিদ্ধ পথচারী ভুবন

চট্টগ্রামে শিক্ষার্থীকে ধর্ষণচেষ্টায় পুলিশ পরিদর্শকের যাবজ্জীবন

ছবি

পল্টনে ২১ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্যসহ গ্রেপ্তার ৫

ছবি

মেয়াদ উত্তীর্ণ দ্রব্য সামগ্রী বিক্রির অভিযোগে ৪ ব্যবসায়ীকেজরিমানা

দাদীকে হত্যা করে টাকা লুট, অবশেষে নাতিসহ ২জন গ্রেফতার,স্বীকারোক্তি

‘ঘুষ নির্ধারণ’ করে দেয়া এসিল্যান্ডকে সাময়িক বরখাস্ত

ছবি

আত্মসমর্পণ করে জামিন পেলেন এএসপি সোহেল

ছবি

সাংবাদিক নাদিম হত্যার প্রধান আসামি বাবুর হাইকোর্টে জামিন

খালেদা জিয়ার নাইকো মামলায় সাক্ষ্য দেবেন বিদেশি তিন নাগরিক

ঘোড়াঘাটে রোগীর শরীরে অন্য গ্রুপের রক্ত দেয়ার অভিযোগ

ছবি

হেফাজত কাণ্ড : অধিকার সম্পাদক আদিলুরের ২ বছরের কারাদণ্ড

ছবি

জামিন পেলেন রিজেন্টের সাহেদ

ছবি

৩ বছর দণ্ডের মামলায় রিজেন্ট সাহেদের জামিন আবেদন

প্রশ্নফাঁসের মামলায় গ্রেপ্তার আইডিয়ালের শিক্ষিকা বহিষ্কার

রংপুরে সাংবাদিককে বাড়ি থেকে ধরে এনে মামলা, তারাগজ্ঞ থানার ওসিকে ষ্টান্ড রিলিজ

পূর্ব সুন্দরবনে ট্রলার ও নিষিদ্ধ জালসহ আটক ৬

অপহ্নত মাদ্রাসা ছাত্রী উদ্ধার ২ অপহরণকারি গ্রেফতার

ছবি

অবৈধ অর্থ বৈধ করতে মায়ের নাম ব্যবহার কাম্য নয় : হাইকোর্ট

সাভারে নিখোঁজ সাংবাদিক সীতাকুন্ডে উদ্ধারে

নরসিংদীর শিবপুরে গরু ব্যবসায়ীর মাথা বিচ্ছিন্ন মরদেহ উদ্ধার

ছবি

ঘোড়াঘাটে কঙ্কাল চুরির ঘটনায় পাঁচ আসামী রিমান্ড শেষে জেলে

ছবি

ঢাকায় প্রকাশ্যে কুপিয়ে হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন করে ভিডিও ভাইরাল, গ্রেপ্তার ৭

ছবি

অনলাইন জুয়ারি চক্রের ৫০ সদস্য গ্রেফতার

কাস্টমসের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা শহীদুল ও সাহেদের পেছনে কারা?

ছবি

ট্রলারে ১০ মরদেহ : আত্মসমর্পণকারী জলদস্যু সুমন গ্রেফতার

সাভারে গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগে কাউন্সিলর আটক

ছবি

অধিকার সম্পাদক আদিলুরের মামলার রায় পিছিয়ে ১৪ সেপ্টেম্বর

সাজেকে ঘুরতে গিয়ে অপহরণের শিকার ঢাবি শিক্ষার্থী, ৭ ঘন্টা পর উদ্ধার

কক্সবাজারের কটেজ জোনে ধর্ষণের শিকার কিশোরী, আটক ১

ছবি

এসএমসি ওরস্যালাইনকে শাকিব খানের লিগ্যাল নোটিশ

‘সাবেক অধ্যক্ষ শাহান আরা’র সম্পদের পাহাড়’

tab

অপরাধ ও দুর্নীতি

রংপুর মেডিকেলে অস্বাভাবিক দামে রোগীর খাবার, চক্রের হাতে নিয়ন্ত্রণ ঠিকাদারির

লিয়াকত আলী বাদল, রংপুর

রোববার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩

প্রতি কেজি ছাগলের মাংস ১ হাজার ১৭০ টাকা। বয়লার মুরগি ৪২৮ টাকা। পাকিস্তানি ছোট মুরগি ৭১৫ টাকা। মাছ ৬১১ টাকা। এভাবেই বাজার দরের চেয়ে বেশি দামে রোগীদের খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।

এখানে এ দায়িত্ব চারটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের। মজার বিষয় হচ্ছে, তারা প্রত্যেকেই ব্যবহার করছে একই ঠিকানা।

এ নিয়ে হাসপাতালের মহাপরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি। তাদের অভিযোগ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মিলে এই প্রক্রিয়ায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে ওই সিন্ডিকেট।

তারা বলছেন, কয়েক বছর আগ পর্যন্ত হাসপাতালে খাদ্য সরবরাহের কাজের নিয়ন্ত্রণ আগে ছিল স্থানীয় তিন ব্যক্তির হাতে। পরে এ নিয়ে অভিযোগ উঠলে তারাই চারটি প্রতিষ্ঠানের নামে টেন্ডারে অংশ নিতে থাকে এবং কাজ বাগিয়ে নেয়। আর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের কাছ থেকে খাবার কেনে বাজার দরের চেয়ে বেশি দামে। ক্ষেত্র বিশেষে দ্বিগুণ-তিন গুণ দামে।

অভিযুক্ত চারটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিটিরই ঠিকানা হাসপাতালের পাশের মহল্লায়। অভিযোগকারীরা বলেন, কৌশল হিসেবে প্রতি বছরই নাম পাল্টায় তারা। আর এজন্য কবে কখন টেন্ডার আহ্বান করা হয়, কী প্রক্রিয়ায় তাদের কাজ দেয়া হয় তা কেউ জানে না। লিখিত সেই অভিযোগের বিষয়ে অবহিত হয়ে সরেজমিন গিয়ে ঘটনার সত্যতা পায় এই প্রতিবেদক।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে হাসপাতালে ছাগলের মাংস, ব্রয়লার মুরগি, পাকিস্তানি মুরগি, রুই মাছ, মৃগেল মাছ, কাতল মাছ, ডিম সরবরাহ করছে মেসার্স সোনাম ট্রেডার্স নামে একটি প্রতিষ্ঠান। ছাগলের মাংস রংপুরে বাজারদর প্রতি কেজি ৮শ’ টাকার নিচে হলেও তারা সরবরাহ করছে ১ হাজার ১৭০ টাকা কেজি দরে। মুরগির মাংস ব্রয়লার ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা হলেও তারা সরবরাহ করছে ৪২৮ টাকা কেজি দরে। বাচ্চা মুরগি (কক) সর্বোচ্চ সাড়ে ৩শ’ টাকা হলেও তারা ৭১৫ টাকা কেজি দরে সরবরাহ করছে। একই রুই মাছের সর্বোচ্চ আড়াইশ টাকা হলেও তারা সরবরাহ করছে ৬১১ টাকা কেজি দরে। মৃগেল মাছ ২শ’ টাকা বাজার দর হলেও তারা সরবরাহ করছে ৪৯৪ টাকা দরে। কাতল মাছ ৩শ’ টাকা দরের মাছ তারা ৫৮৫ টাকা দরে সরবরাহ করছে।

রংপুরে সাগরকলা ২০ থেকে ২৫ টাকা হলেও তারা ৭১ টাকা ৫০ পয়সা, মিষ্টি কুমড়া ২০ টাকা দরে হলেও ৫২ টাকা কেজি দরে, ৩০ টাকার বরবটি ৬৫ টাকা দরে সরবরাহ করছে, এ আর ট্রেডার্স নামে আরেকটি প্রতিষ্ঠান। এছাড়া কুমড়া, লাউসহ বিভিন্ন সবজিও তারা সরবরাহ করছে বাজারের চেয়ে অনেক বেশি দামে।

প্রিমিয়াম ট্রেডার্স নামে একটি প্রতিষ্ঠান সরবরাহ করছে চাল, আটা, তেল, চিনিসহ বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী। তারা সয়াবিন তেল সরবরাহ করছে ২৩০ টাকা কেজি দরে। রসুন, আদাসহ বিভিন্ন মসলা সরবরাহ করছে, যা বাজার দরের চেয়ে অনেক বেশি মূল্যে।

এছাড়া মেসার্স নুরাইজ ট্রেডার্স নামে একটি প্রতিষ্ঠান গুঁড়াদুধ প্রতি কেজি ১ হাজার ৯২ টাকা, হরলিক্স ৫৮৫ টাকা দরে সরবরাহ করছে। মিষ্টি দইয়ের জন্য বাজারের চেয়ে অনেক বেশি দাম নিচ্ছে তারা।

তাদের সরবরাহ করা পণ্যের মানও নিম্ন বলে অভিযোগ। এছাড়া রোগীর সংখ্যা বেশি দেখানো, খাদ্য সরবরাহ না করে বিল নেয়া এটা নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে হাসপাতাল ঘুরে।

চারটি প্রতিষ্ঠানের কোনটিই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হয়নি। এ বিষয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. ইউনুছ আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কথা বলতে রাজি হচ্ছিলেন না। পরে রোগী সেজে দেখা করতে গেলে বলেন, তিনি পরিচালক হিসেবে যোগ দেয়ার পর দুর্নীতি অনেক কমিয়ে এনেছেন।

তিনি বলেন, অনেক টেন্ডার বিক্রি হলেও মাত্র এক-দুটি প্রতিষ্ঠানই কীভাবে সবসময় টেন্ডার পায় সে বিষয়ে কোন সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।

back to top