সিসিটিভি ফুটেজে ছিনতাইয়ের ঘটনা -সংবাদ
রাজধানীর পল্টনে আইএফআইসি ব্যাংকে টাকা জমা দেয়ার জন্য কর্মচারীকে পাঠিয়েছিলেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান করপোরেট আইডিয়াসের মালিক আবদুল্লাহ আল মামুন। কিছুক্ষণ পর তিনি জানতে পারেন সেই টাকা তার কর্মচারীর কাছ থেকে ছিনতাই করে নিয়ে গেছে দুই পুলিশ সদস্যসহ কয়েকজন।
পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে এ ঘটনার মূল পরিকল্পনকারী ও ছিনতাইয়ের নেতৃত্ব দেয়া ২ পুলিশ সদস্যসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- দুই পুলিশ সদস্য কনস্টেল মাহবুব ও আসিফ, মূল পরিকল্পনাকারী শাজাহান, তার সহযোগী হৃদয় ও রাসেল। উদ্ধার করা হয়েছে ছিনতাই হওয়া ২১ লাখ টাকাও।
পুলিশ জানায়, এ ছিনতাইয়ের মূল পরিকল্পনাকারী তার চাচাতো ভাই ও ওই প্রতিষ্ঠানেরই আরেক কর্মচারী।
পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকাল পৌনে ১১টায় পল্টনের আইএফআইসি ব্যাংকের শাখায় ‘করপোরেট আইডিয়াস’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের ২১ লাখ ৫ হাজার টাকা জমা দিচ্ছিলেন মার্কেটিং অফিসার মো. আজিম। এ সময় হঠাৎ দুই পুলিশ পোশাক পরিহিত অবস্থায় ব্যাংকের ভেতরে গিয়ে হাজির হন। তারা আজিমের টাকার উৎস সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। ব্যাগে থাকা টাকা হুন্ডির অর্থ বলে দাবি করেন পুলিশ সদস্যরা। এরপর জিজ্ঞাসাবাদের কথা বলে আজিমকে টেনে-হেঁচড়ে ব্যাংকের বাইরে নিয়ে আসেন। রাস্তায় এনে তাকে মোটরসাইকেলে তুলে দ্রুত মুগদা এলাকায় নিয়ে টাকার ব্যাগ রেখে ছেড়ে দেয়া হয়। দিন-দুপুরে ব্যাংকের ভেতর থেকে এভাবে লোক ধরে নিয়ে টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা জানাজানির পরপরই জড়িতদের গ্রেপ্তারে অপারেশন শুরু করে গোয়েন্দা পুলিশসহ একাধিক টিম। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযানের পর সন্ধ্যায় ছিনতাই চক্রের জড়িত দুই পুলিশ সদস্যসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থলে গিয়ে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে ব্যাংকের সামনের ফুটপাতের হকার হৃদয় ও তার সহযোগী রাসেলকে গ্রেপ্তার করা হয় প্রথমে। তাদের দেয়া তথ্যে ডেমরা পুলিশ লাইনে কর্মরত দুই কনস্টেবল মাহাবুব ও আসিফকে ১০ লাখ টাকাসহ আটক করে ডিবি। এরপর তাদের দেয়া তথ্যে বাসাবো থেকে ছিনতাই হওয়া আরও ১০ লাখ টাকা ও মোটরসাইকেলসহ অন্য আরেকজকে আটক করে পুলিশ।
পুলিশের মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) হায়াতুল ইসলাম জানান, যে প্রতিষ্ঠানের টাকা ছিল ওই প্রতিষ্ঠানের মালিকের এক চাচাতো ভাই শাজাহানের পরিকল্পনায় মূলত ছিনতাই হয়েছে। মালিক মামুনের চাচাতো ভাই শাহাজান ওই প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী ছিলেন। অনেকদিন ধরে প্রতিষ্ঠানের অর্থ ব্যাংকে জমা বা ব্যাংক থেকে উত্তোলনের বিষয়টি নজর রাখছিল। কখন কত টাকা তোলা হয়, কত টাকা জমা দেয়া হয়। সবকিছু রেকি করার পর পুলিশের দুই সদস্য তার পরিচিত হওয়ায় ছিনতাইয়ের কাজে ওই দুই সদস্যকে ব্যবহার করা হয়। পুলিশের দুই সদস্য ছিনতাইয়ের নেতৃত্ব দেন। ঘটনায় পুরো টাকা উদ্ধারের পাশাপাশি জড়িত ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন। অন্য কেউ জড়িত আছে কিনা সেই বিষয়ে তদন্ত চলছে।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট আরেকজন কর্মকর্তা বলেন, ‘ছিনতাইয়ের এই ঘটনার অন্যতম পরিকল্পনাকারী হলেন করপোরেট আইডিয়াসের কর্মচারী শাহজাহান, পল্টনে চায়ের দোকানের কর্মচারী হৃদয়। সোহেল তার পূর্ব পরিচিত এবং বন্ধু। তাদের ৩ জনের মধ্যে একজনের পূর্ব পরিচিত ছিল ছিনতাইয়ে জড়িত পুলিশের এক সদস্য। ওই সদস্যের সহযোগিতা চাওয়া হলে সে আরেক কনস্টেবলকে সঙ্গে নিয়ে ছিনতাইয়ের নেতৃত্ব দেয় যাতে কোন ঝামেলায় না পড়তে হয়।
আইডিয়াসের অফিস থেকে প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী আজিম টাকা জমা দেয়া জন্য ব্যাংকের উদ্দেশ্যে যাত্রার পরপরই শাহজাহান, হৃদয় ও রাসেল পুলিশের দুই সদস্যকে খবর দেন। দ্রুত পল্টনের আইএফআইসি ব্যাংকের শাখায় গিয়ে টাকার ব্যাগসহ আজিমকে তুলে নেয়ার পরামর্শ দেন। এরপরই দুই পুলিশ সদস্য পোশাক পরিহিত অবস্থায় ছিনতাই অপারেশনে নেতৃত্বে নেন। এই পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত বাকি তিন জন আশপাশে পাহারায় ছিলেন।’
পল্টন থানার ওসি সালাউদ্দিন মিয়া বলেন, ‘ছিনতাইয়ের অভিযোগ পাওয়ার পরপরই ব্যাংকের ভেতর-বাইরের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হয়। পুলিশের দুই সদস্যকে শনাক্তের পর অন্যদের বিষয়ও বেরিয়ে আসে। এক লাখ ৫ হাজার টাকা একটি হিসাব নম্বরে জমা দেয়ার পরপরই ওই যুবককে জিজ্ঞাসাবাদের নামে ব্যাংকের বাইরে নিয়ে আসা হয়। তখন তার ব্যাগে ২১ লাখ টাকা ছিল।’
করপোরেট আইডিয়াসের কর্ণধার আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘অন্যান্য দিনের মতো মার্কেটিং অফিসারের মাধ্যমে টাকা ব্যাংকে জমা দেয়ার জন্য পাঠানো হয়। ছিনতাইয়ের ঘটনা শুনে দ্রুত পুলিশকে জানাই। পুলিশের পোশাক পরিহিত দুই লোক এসে আমাদের কর্মীকে ভয় দেখিয়ে টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে এটা শুনে বিস্মিত হয়েছিলাম। এখন জানলাম এই ছিনতাই কান্ডে শাহজাহানসহ আরও তিনজন রয়েছে। শাহজাহান আমার দীর্ঘ দিনের কর্মী। আমাদের প্রতিষ্ঠান ঠিকাদারি ব্যবসায় জড়িত। দ্রুত সবাইকে গ্রেপ্তার করা গেছে এটা ভালো খবর। শুনেছি সব টাকা উদ্ধারও হয়েছে।’
সিসিটিভি ফুটেজে ছিনতাইয়ের ঘটনা -সংবাদ
বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩
রাজধানীর পল্টনে আইএফআইসি ব্যাংকে টাকা জমা দেয়ার জন্য কর্মচারীকে পাঠিয়েছিলেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান করপোরেট আইডিয়াসের মালিক আবদুল্লাহ আল মামুন। কিছুক্ষণ পর তিনি জানতে পারেন সেই টাকা তার কর্মচারীর কাছ থেকে ছিনতাই করে নিয়ে গেছে দুই পুলিশ সদস্যসহ কয়েকজন।
পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে এ ঘটনার মূল পরিকল্পনকারী ও ছিনতাইয়ের নেতৃত্ব দেয়া ২ পুলিশ সদস্যসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- দুই পুলিশ সদস্য কনস্টেল মাহবুব ও আসিফ, মূল পরিকল্পনাকারী শাজাহান, তার সহযোগী হৃদয় ও রাসেল। উদ্ধার করা হয়েছে ছিনতাই হওয়া ২১ লাখ টাকাও।
পুলিশ জানায়, এ ছিনতাইয়ের মূল পরিকল্পনাকারী তার চাচাতো ভাই ও ওই প্রতিষ্ঠানেরই আরেক কর্মচারী।
পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকাল পৌনে ১১টায় পল্টনের আইএফআইসি ব্যাংকের শাখায় ‘করপোরেট আইডিয়াস’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের ২১ লাখ ৫ হাজার টাকা জমা দিচ্ছিলেন মার্কেটিং অফিসার মো. আজিম। এ সময় হঠাৎ দুই পুলিশ পোশাক পরিহিত অবস্থায় ব্যাংকের ভেতরে গিয়ে হাজির হন। তারা আজিমের টাকার উৎস সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। ব্যাগে থাকা টাকা হুন্ডির অর্থ বলে দাবি করেন পুলিশ সদস্যরা। এরপর জিজ্ঞাসাবাদের কথা বলে আজিমকে টেনে-হেঁচড়ে ব্যাংকের বাইরে নিয়ে আসেন। রাস্তায় এনে তাকে মোটরসাইকেলে তুলে দ্রুত মুগদা এলাকায় নিয়ে টাকার ব্যাগ রেখে ছেড়ে দেয়া হয়। দিন-দুপুরে ব্যাংকের ভেতর থেকে এভাবে লোক ধরে নিয়ে টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা জানাজানির পরপরই জড়িতদের গ্রেপ্তারে অপারেশন শুরু করে গোয়েন্দা পুলিশসহ একাধিক টিম। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযানের পর সন্ধ্যায় ছিনতাই চক্রের জড়িত দুই পুলিশ সদস্যসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থলে গিয়ে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে ব্যাংকের সামনের ফুটপাতের হকার হৃদয় ও তার সহযোগী রাসেলকে গ্রেপ্তার করা হয় প্রথমে। তাদের দেয়া তথ্যে ডেমরা পুলিশ লাইনে কর্মরত দুই কনস্টেবল মাহাবুব ও আসিফকে ১০ লাখ টাকাসহ আটক করে ডিবি। এরপর তাদের দেয়া তথ্যে বাসাবো থেকে ছিনতাই হওয়া আরও ১০ লাখ টাকা ও মোটরসাইকেলসহ অন্য আরেকজকে আটক করে পুলিশ।
পুলিশের মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) হায়াতুল ইসলাম জানান, যে প্রতিষ্ঠানের টাকা ছিল ওই প্রতিষ্ঠানের মালিকের এক চাচাতো ভাই শাজাহানের পরিকল্পনায় মূলত ছিনতাই হয়েছে। মালিক মামুনের চাচাতো ভাই শাহাজান ওই প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী ছিলেন। অনেকদিন ধরে প্রতিষ্ঠানের অর্থ ব্যাংকে জমা বা ব্যাংক থেকে উত্তোলনের বিষয়টি নজর রাখছিল। কখন কত টাকা তোলা হয়, কত টাকা জমা দেয়া হয়। সবকিছু রেকি করার পর পুলিশের দুই সদস্য তার পরিচিত হওয়ায় ছিনতাইয়ের কাজে ওই দুই সদস্যকে ব্যবহার করা হয়। পুলিশের দুই সদস্য ছিনতাইয়ের নেতৃত্ব দেন। ঘটনায় পুরো টাকা উদ্ধারের পাশাপাশি জড়িত ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন। অন্য কেউ জড়িত আছে কিনা সেই বিষয়ে তদন্ত চলছে।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট আরেকজন কর্মকর্তা বলেন, ‘ছিনতাইয়ের এই ঘটনার অন্যতম পরিকল্পনাকারী হলেন করপোরেট আইডিয়াসের কর্মচারী শাহজাহান, পল্টনে চায়ের দোকানের কর্মচারী হৃদয়। সোহেল তার পূর্ব পরিচিত এবং বন্ধু। তাদের ৩ জনের মধ্যে একজনের পূর্ব পরিচিত ছিল ছিনতাইয়ে জড়িত পুলিশের এক সদস্য। ওই সদস্যের সহযোগিতা চাওয়া হলে সে আরেক কনস্টেবলকে সঙ্গে নিয়ে ছিনতাইয়ের নেতৃত্ব দেয় যাতে কোন ঝামেলায় না পড়তে হয়।
আইডিয়াসের অফিস থেকে প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী আজিম টাকা জমা দেয়া জন্য ব্যাংকের উদ্দেশ্যে যাত্রার পরপরই শাহজাহান, হৃদয় ও রাসেল পুলিশের দুই সদস্যকে খবর দেন। দ্রুত পল্টনের আইএফআইসি ব্যাংকের শাখায় গিয়ে টাকার ব্যাগসহ আজিমকে তুলে নেয়ার পরামর্শ দেন। এরপরই দুই পুলিশ সদস্য পোশাক পরিহিত অবস্থায় ছিনতাই অপারেশনে নেতৃত্বে নেন। এই পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত বাকি তিন জন আশপাশে পাহারায় ছিলেন।’
পল্টন থানার ওসি সালাউদ্দিন মিয়া বলেন, ‘ছিনতাইয়ের অভিযোগ পাওয়ার পরপরই ব্যাংকের ভেতর-বাইরের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হয়। পুলিশের দুই সদস্যকে শনাক্তের পর অন্যদের বিষয়ও বেরিয়ে আসে। এক লাখ ৫ হাজার টাকা একটি হিসাব নম্বরে জমা দেয়ার পরপরই ওই যুবককে জিজ্ঞাসাবাদের নামে ব্যাংকের বাইরে নিয়ে আসা হয়। তখন তার ব্যাগে ২১ লাখ টাকা ছিল।’
করপোরেট আইডিয়াসের কর্ণধার আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘অন্যান্য দিনের মতো মার্কেটিং অফিসারের মাধ্যমে টাকা ব্যাংকে জমা দেয়ার জন্য পাঠানো হয়। ছিনতাইয়ের ঘটনা শুনে দ্রুত পুলিশকে জানাই। পুলিশের পোশাক পরিহিত দুই লোক এসে আমাদের কর্মীকে ভয় দেখিয়ে টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে এটা শুনে বিস্মিত হয়েছিলাম। এখন জানলাম এই ছিনতাই কান্ডে শাহজাহানসহ আরও তিনজন রয়েছে। শাহজাহান আমার দীর্ঘ দিনের কর্মী। আমাদের প্রতিষ্ঠান ঠিকাদারি ব্যবসায় জড়িত। দ্রুত সবাইকে গ্রেপ্তার করা গেছে এটা ভালো খবর। শুনেছি সব টাকা উদ্ধারও হয়েছে।’