alt

অপরাধ ও দুর্নীতি

হত্যামামলা অনুসন্ধান করতে গিয়ে লিঙ্গ পরিবর্তনকারী চক্রের সন্ধান

বাকী বিল্লাহ : মঙ্গলবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৩

হত্যা মামলার তদন্ত করতে গিয়ে লিঙ্গ পরিবর্তনকারী চক্রের সন্ধান পাওয়া গেছে। তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া) হতে দেড় থেকে দুই লাখ টাকার বিনিময়ে অপারেশন করতো চক্রটি। পরে হরমোনজাতীয় ওষুধ প্রয়োগ করে শরীরে আনা হতো পরিবর্তন। এমন অভিযোগে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার স্বীকারোক্তিতে বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। তাদের লিঙ্গ পরিবর্তনে কয়েকজন ডাক্তারও জড়িত। লিঙ্গ পরিবর্তনে আছে বিশেষ অপারেশন থিয়েটার। সব কিছুর অনুসন্ধান করে উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) সর্বশেষ তথ্যে জানা গেছে, তৃতীয় লিঙ্গ করার অপারেশন করা একজচন ডাক্তারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের অপারেশন থিয়েটারসহ অন্যান্য তথ্য উদ্ঘাটনে অভিযান অব্যাহত আছে।

পিবিআইয়ের সদর দপ্তর থেকে বলা হয়েছে, লিঙ্গ পরিবর্তন করা তৃতীয় লিঙ্গের চম্পার সঙ্গে বসবাস করেন একজন। এরপর তাদের সম্পর্কের বিরোধে রাজধানীর আশুলিয়ায় একটি হত্যাকা-ের ঘটনাও ঘটে।

হত্যাকা-ের পর অজ্ঞাত ব্যক্তির পরিচয় উদ্ঘাটনে ডিএনএ টেস্ট করা হয়। পরিচয় জানার পর সন্দেহভাজন নওশাদ নামে তৃতীয় লিঙ্গের এক ব্যক্তিকে গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ এলাকার হিজড়া পল্লী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

পিবিআই জানায়, গত ৭ জুন আশুলিয়া থানায় একটি সাধারণ ডাইরি (জিডি) সূত্র ধরে থানা পুলিশ আশুলিয়ার এনায়েতপুর গ্রামের আকতার হোসেনের বাড়ির দক্ষিণে ফাঁকা জমিতে বস্তাবন্দী এক ব্যক্তির লাশ (৩৫) অর্ধগলিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

প্রাথমিকভাবে পুলিশ ধারণা করছে, অজ্ঞাত আসামিরা পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে ওই ব্যক্তিকে হত্যা করে লাশ গুম করার জন্য বস্তাভর্তি করে ফেলে রাখে। এই ঘটনায় আশুলিয়া থানায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে।

থানা পুলিশ প্রথমে দুই মাস মামলাটি তদন্ত করে। তারা পরিচয় নিশ্চিত করার জন্য চেষ্টা করেছেন। কিন্তু করতে না পেরে মামলাটি ক্লুলেস হিসেবে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের নির্দেশে তদন্তের দায়িত্ব পিবিআইকে দেয়া হয়।

পিবিআইয়ের টিম অনুসন্ধানে শুরুতে ঘটনাস্থল, আশপাশ সরজমিনে পরিদর্শন খোঁজ-খবর নিতে থাকে। পরে পিবিআই জানতে পারে, তৃতীয় লিঙ্গের চম্পা নামের একজন সেখানে ভাড়া থাকেন। ঘটনার খবর জানাজানি হলে তিনি গ্রামের বাড়িতে চলে যান। তার গ্রামের বাড়ি জামালপুরের জামতলী নারায়ণপুর। এপর পিবিআই জানতে পারে চম্পার আরেক নাম নওশাদ।

তার ঠিকানায় যোগাযোগ করে তার বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, তার ছেলে রাকিব ঢাকার আশুলিয়া এক হিজড়ার সঙ্গে বসবাস করেন। কিন্তু কোথায় থাকেন সেই ঠিকানা জানা নেই। তখন রাকিব হাসানের মোবাইল ফোনের রেজিস্ট্রেশন কৃত নম্বর নিয়ে শাওনের বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, নম্বরটি তার ছেলে রাকিব ব্যবহার করেন। কিন্তু লাশের ছবি দেখে বাবা লাশ শনাক্ত করতে পারেননি।

এরপর তদন্ত কর্মকর্তার অনুরোধে ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে নিশ্চিত হয় আশুলিয়া পাওয়া অজ্ঞাত লাশই তার সন্তান রাকিব হাসান শাওনের। তদন্ত কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে পিবিআই ঘটনায় নওশাদ জড়িত বলে সন্দেহ করে। এরপর চম্পা হিজড়াকে গ্রেপ্তারে তার গ্রামের বাড়িতে অভিযান চালায়।

জামালপুর, শেরপুর, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, দিনাজপুর ও গাইবান্ধা জেলার হিজড়া (তৃতীয় লিঙ্গ) অভিযান চালিয়ে চম্পা নাম পরিবর্তন করে আত্মগোপন করে। অবশেষে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সম্প্রতি তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

জিজ্ঞাসাবাদে সন্দেহভাজন আসামি নওশাদ ওরফে চম্পা ওরফে স্বপ্না জানায়, সে জন্মগতভাবে হিজড়া ছিল না। সে বিবাহিত পুরুষ এবং নাম ছিল নওশাদ। তার ১২ বছর বয়সী একজন সন্তানও আছে। প্রায় ১১ বছর আগে তার স্ত্রী মারা গেছে। স্ত্রী মারা যাওয়ার পর সে বেকার হয়ে হয়ে যায়। এরপর দেলু নামে তৃতীয় লিঙ্গের একজনের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। দেলু তাকে (নওশাদ) (হিজড়া) হওয়ার পরামর্শ দেয়। এও বলেছে, যে তৃতীয় লিঙ্গ হলে অনেক টাকা ইনকাম করতে পারবে। দেলুর কথামত নওশাদ তৃতীয় লিঙ্গে যোগ দেয়।

প্রায় দেড় বছর পর সে দেলু হিজড়ার কথা মতো খুলনার একজন ডাক্তারের মাধ্যমে অপারেশন করে মেয়ে হিজড়া হয়। সে ডাক্তার অনেক লোককে অপরাশেন করে হিজড়া বানিয়েছে। এরপর নওশাদ নাম পরিবর্তন করে চম্পা নাম ধারণ করেছে। সে দেলু হিজড়ার সঙ্গে ৪ থেকে ৫ বছর কাজ করেছে। অবশেষে আলাদা হয়ে আশুলিয়া এনায়েতপুরে গিয়ে বসবাস করে। সেখানে ভিকটিম রাকিব হাসান শাওনের সঙ্গে পরিচয় হয়। রাকিব অবিবাহিত পুরুষ। এক পর্যায়ে চম্পার সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলে। এরপর তারা স্বামী-স্ত্রী হিসেবে এক সঙ্গে বসবাস শুরু করেন। এরপর ভিকটিমের সব খরচ চম্পা বহন করত।

পিবিআই প্রধান ও অতিরিক্ত আইজি বনজ কুমার মজুমদার সংবাদকে জানান, চক্রের সদস্য ও ডাক্তারসহ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা টাকার বিনিময়ে অপারেশন করে হিজড়া হচ্ছে। চক্রের অনেক সদস্যের সন্ধান পাওয়া গেছে। ধরতে চলছে অভিযান।

ছবি

মুরাদনগরে ধর্ষণ ও ভিডিও ছড়ানোর ঘটনায় চার আসামির তিন দিনের রিমান্ড

ভোটবিহীন নির্বাচন মামলায় নূরুল হুদা কারাগারে, পেলেন না জামিন

ছবি

শেখ রেহানার স্বামী ও তারিক সিদ্দিকের সম্পত্তি জব্দের আদেশ

ছবি

আদালত অবমাননায় শেখ হাসিনার ৬ মাসের কারাদণ্ড

ছবি

বিএনপির মামলায় সাবেক সিইসি নূরুল হুদার জবানবন্দি রেকর্ড শুরু

ছবি

আবু সাঈদ হত্যা মামলা: বেরোবির সাবেক উপাচার্যসহ ২৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

ছবি

তিনটি হত্যা মামলায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার দেখানোর নির্দেশ, আছেন সাবেক এসপিও

ধর্ষণের পর বিবস্ত্র অবস্থায় মারধর, ভিডিও ভাইরালের ঘটনায় গ্রেপ্তার ৫

ভুক্তভোগীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হাইকোর্টের নির্দেশ

রূপগঞ্জে মদ্যপ অবস্থায় অশোভন আচরণ, প্রতিবাদ করায় দুই যুবককে গুলি

নাইক্ষ্যংছড়িতে ইমাম হত্যা,৫ জনকে আসামী করে মামলা

ছবি

হত্যা মামলায় ইনু, কামাল, পলকসহ চারজনকে গ্রেপ্তার দেখালো আদালত

ছবি

বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ মামলায় প্রিন্স মামুনের বিচার শুরু

ছবি

ব্রিটিশ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের অভিযোগ অস্বীকার করে দুদক চেয়ারম্যান, টিউলিপকে বাংলাদেশি নাগরিক বলেও মন্তব্য

ছবি

১৬ হাজার কোটি টাকার সম্পদ অবরুদ্ধ, এস আলম গ্রুপ ও ইসলামী ব্যাংকের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আদালতের কঠোর পদক্ষেপ

ছবি

‘ভোটের প্রতারণা’ অভিযোগে রিমান্ড শুনানিতে নিজেকে নির্দোষ দাবি নূরুল হুদার

ছবি

নগদের ১ কোটি টাকার ডাকাতি: রহস্য উদঘাটনের দাবি পুলিশের, উদ্ধার সাড়ে ৩২ লাখ

ছবি

স্বপ্না হত্যা: থানা থেকে সিআইডি, তবু রহস্য অজানা

ছবি

সাক্ষ্যগ্রহণের দিনে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে পালাল অপহরণ ও হত্যার আসামি

ছবি

আদালত অবমাননার মামলায় আইনজীবী এ ওয়াই মশিউজ্জামানকে ট্রাইব্যুনালের সহায়তাকারী নিযুক্ত

ছবি

সবজি ব্যবসায়ী শাওন হত্যা মামলায় সালমান এফ রহমান ৪ দিনের রিমান্ডে, আনিসুল হক গ্রেপ্তার

মিরপুরে প্রকাশ্যে গুলি করে টাকা ছিনতাই, গ্রেপ্তার ৫ আসামির রিমান্ড মঞ্জুর

ছবি

কেরাণীগঞ্জে মেয়েকে ধর্ষণের দায়ে সৎ বাবার মৃত্যুদণ্ড

ছবি

রংপুরের কাউনিয়ায় টিসিবির কার্ড বিতরণে টাকা আদায়ের অভিযোগে ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতার

ছবি

মানিলন্ডারিং তদন্ত: তিন সহযোগীর বিদেশ যাত্রায় আদালতের নিষেধাজ্ঞা

ছবি

হাজিরা না দিলে অনুপস্থিতিতেই শেখ হাসিনার বিচার শুরু হবে: ট্রাইব্যুনাল

ছবি

যুক্তরাজ্যে বসুন্ধরা মালিকপক্ষসহ কয়েকজনের সম্পদ জব্দে উদ্যোগ: দুদক

ছবি

টিউলিপের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা, তাকে বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে দেখছে দুদক

ছবি

লাশ টুকরো করে বালু চাপা: ব্যবসায়ী জাকির হত্যা মামলায় চার আসামি আদালতে, একজনের স্বীকারোক্তি

ছবি

বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া সম্পদ ফেরত পাঠাতে যুক্তরাজ্যকে কার্যকর পদক্ষেপের আহ্বান

অবশেষে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে বিএনপির ১৩ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে থানায় মামলা

পীরগাছায় ইসলামিক রিলিফের গরুর মাংস বিতরণের তালিকা তৈরিতে অনিয়মের অভিযোগ

খাগড়াছড়ির গুইমারায় এক পাহাড়ি গৃহবধুকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে আটক-১

ছবি

রিমান্ড শেষে শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন কারাগারে

ছবি

ই-মানি জালিয়াতিতে ‘নগদ’-এর শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা

ছবি

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অবমাননার মামলায় দুইজনের অনুপস্থিতি

tab

অপরাধ ও দুর্নীতি

হত্যামামলা অনুসন্ধান করতে গিয়ে লিঙ্গ পরিবর্তনকারী চক্রের সন্ধান

বাকী বিল্লাহ

মঙ্গলবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৩

হত্যা মামলার তদন্ত করতে গিয়ে লিঙ্গ পরিবর্তনকারী চক্রের সন্ধান পাওয়া গেছে। তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া) হতে দেড় থেকে দুই লাখ টাকার বিনিময়ে অপারেশন করতো চক্রটি। পরে হরমোনজাতীয় ওষুধ প্রয়োগ করে শরীরে আনা হতো পরিবর্তন। এমন অভিযোগে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার স্বীকারোক্তিতে বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। তাদের লিঙ্গ পরিবর্তনে কয়েকজন ডাক্তারও জড়িত। লিঙ্গ পরিবর্তনে আছে বিশেষ অপারেশন থিয়েটার। সব কিছুর অনুসন্ধান করে উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) সর্বশেষ তথ্যে জানা গেছে, তৃতীয় লিঙ্গ করার অপারেশন করা একজচন ডাক্তারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের অপারেশন থিয়েটারসহ অন্যান্য তথ্য উদ্ঘাটনে অভিযান অব্যাহত আছে।

পিবিআইয়ের সদর দপ্তর থেকে বলা হয়েছে, লিঙ্গ পরিবর্তন করা তৃতীয় লিঙ্গের চম্পার সঙ্গে বসবাস করেন একজন। এরপর তাদের সম্পর্কের বিরোধে রাজধানীর আশুলিয়ায় একটি হত্যাকা-ের ঘটনাও ঘটে।

হত্যাকা-ের পর অজ্ঞাত ব্যক্তির পরিচয় উদ্ঘাটনে ডিএনএ টেস্ট করা হয়। পরিচয় জানার পর সন্দেহভাজন নওশাদ নামে তৃতীয় লিঙ্গের এক ব্যক্তিকে গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ এলাকার হিজড়া পল্লী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

পিবিআই জানায়, গত ৭ জুন আশুলিয়া থানায় একটি সাধারণ ডাইরি (জিডি) সূত্র ধরে থানা পুলিশ আশুলিয়ার এনায়েতপুর গ্রামের আকতার হোসেনের বাড়ির দক্ষিণে ফাঁকা জমিতে বস্তাবন্দী এক ব্যক্তির লাশ (৩৫) অর্ধগলিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

প্রাথমিকভাবে পুলিশ ধারণা করছে, অজ্ঞাত আসামিরা পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে ওই ব্যক্তিকে হত্যা করে লাশ গুম করার জন্য বস্তাভর্তি করে ফেলে রাখে। এই ঘটনায় আশুলিয়া থানায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে।

থানা পুলিশ প্রথমে দুই মাস মামলাটি তদন্ত করে। তারা পরিচয় নিশ্চিত করার জন্য চেষ্টা করেছেন। কিন্তু করতে না পেরে মামলাটি ক্লুলেস হিসেবে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের নির্দেশে তদন্তের দায়িত্ব পিবিআইকে দেয়া হয়।

পিবিআইয়ের টিম অনুসন্ধানে শুরুতে ঘটনাস্থল, আশপাশ সরজমিনে পরিদর্শন খোঁজ-খবর নিতে থাকে। পরে পিবিআই জানতে পারে, তৃতীয় লিঙ্গের চম্পা নামের একজন সেখানে ভাড়া থাকেন। ঘটনার খবর জানাজানি হলে তিনি গ্রামের বাড়িতে চলে যান। তার গ্রামের বাড়ি জামালপুরের জামতলী নারায়ণপুর। এপর পিবিআই জানতে পারে চম্পার আরেক নাম নওশাদ।

তার ঠিকানায় যোগাযোগ করে তার বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, তার ছেলে রাকিব ঢাকার আশুলিয়া এক হিজড়ার সঙ্গে বসবাস করেন। কিন্তু কোথায় থাকেন সেই ঠিকানা জানা নেই। তখন রাকিব হাসানের মোবাইল ফোনের রেজিস্ট্রেশন কৃত নম্বর নিয়ে শাওনের বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, নম্বরটি তার ছেলে রাকিব ব্যবহার করেন। কিন্তু লাশের ছবি দেখে বাবা লাশ শনাক্ত করতে পারেননি।

এরপর তদন্ত কর্মকর্তার অনুরোধে ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে নিশ্চিত হয় আশুলিয়া পাওয়া অজ্ঞাত লাশই তার সন্তান রাকিব হাসান শাওনের। তদন্ত কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে পিবিআই ঘটনায় নওশাদ জড়িত বলে সন্দেহ করে। এরপর চম্পা হিজড়াকে গ্রেপ্তারে তার গ্রামের বাড়িতে অভিযান চালায়।

জামালপুর, শেরপুর, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, দিনাজপুর ও গাইবান্ধা জেলার হিজড়া (তৃতীয় লিঙ্গ) অভিযান চালিয়ে চম্পা নাম পরিবর্তন করে আত্মগোপন করে। অবশেষে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সম্প্রতি তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

জিজ্ঞাসাবাদে সন্দেহভাজন আসামি নওশাদ ওরফে চম্পা ওরফে স্বপ্না জানায়, সে জন্মগতভাবে হিজড়া ছিল না। সে বিবাহিত পুরুষ এবং নাম ছিল নওশাদ। তার ১২ বছর বয়সী একজন সন্তানও আছে। প্রায় ১১ বছর আগে তার স্ত্রী মারা গেছে। স্ত্রী মারা যাওয়ার পর সে বেকার হয়ে হয়ে যায়। এরপর দেলু নামে তৃতীয় লিঙ্গের একজনের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। দেলু তাকে (নওশাদ) (হিজড়া) হওয়ার পরামর্শ দেয়। এও বলেছে, যে তৃতীয় লিঙ্গ হলে অনেক টাকা ইনকাম করতে পারবে। দেলুর কথামত নওশাদ তৃতীয় লিঙ্গে যোগ দেয়।

প্রায় দেড় বছর পর সে দেলু হিজড়ার কথা মতো খুলনার একজন ডাক্তারের মাধ্যমে অপারেশন করে মেয়ে হিজড়া হয়। সে ডাক্তার অনেক লোককে অপরাশেন করে হিজড়া বানিয়েছে। এরপর নওশাদ নাম পরিবর্তন করে চম্পা নাম ধারণ করেছে। সে দেলু হিজড়ার সঙ্গে ৪ থেকে ৫ বছর কাজ করেছে। অবশেষে আলাদা হয়ে আশুলিয়া এনায়েতপুরে গিয়ে বসবাস করে। সেখানে ভিকটিম রাকিব হাসান শাওনের সঙ্গে পরিচয় হয়। রাকিব অবিবাহিত পুরুষ। এক পর্যায়ে চম্পার সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলে। এরপর তারা স্বামী-স্ত্রী হিসেবে এক সঙ্গে বসবাস শুরু করেন। এরপর ভিকটিমের সব খরচ চম্পা বহন করত।

পিবিআই প্রধান ও অতিরিক্ত আইজি বনজ কুমার মজুমদার সংবাদকে জানান, চক্রের সদস্য ও ডাক্তারসহ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা টাকার বিনিময়ে অপারেশন করে হিজড়া হচ্ছে। চক্রের অনেক সদস্যের সন্ধান পাওয়া গেছে। ধরতে চলছে অভিযান।

back to top