alt

অপরাধ ও দুর্নীতি

লোহাগাড়ার লম্বাশিয়ার পাহাড় থেকে থামছে না অবৈধভাবে বালু উত্তোলন

প্রতিনিধি, লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম) : শনিবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৩

লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম) : উপজেলার চুনতি ইউনিয়নে লম্বাশিয়ার পাহাড় থেকে এভাবেই বালু কেটে নেয়া হচ্ছে -সংবাদ

চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় চুনতি ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ সাতগড় লম্বা শিয়ার পাহাড়ের মুখ এলাকায় সংরক্ষিত বন বিভাগের জায়গায় শ্যালো মেশিনের মাধ্যমে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন থামছে না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অভিযান পরিচালনা করে বালু জব্দ করে। তবে তা পুনরায় নিলামের মাধ্যমে বিক্রি করে। বালু উত্তোলনকারীরা শ্যালো বসিয়ে বালু তুলে নিলাম দেওয়া বালুর উপর পুনরায় বালু জমা করছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন বালু নিলাম নেওয়া ব্যক্তি ও উত্তোলনকারীদের সঙ্গে প্রশাসনের একটা যোগসাজস রয়েছে। কারণ বালু উত্তোলনকারীরাই তাদের উত্তোলনকৃত বালুগুলো বারবার নিলাম নিয়ে থাকে। প্রশাসনও তাদের সুযোগ দেওযার জন্য মাস দেড়েক পরে একবার অভিযান চালিয়ে আসে।

স্থানীয়রা আরো বলেন, নিয়ম মোতাবেক প্রতি ঘনফুট বালুর মুল্য ২০ টাকা হয়। অথচ প্রশাসন নিলাম দিয়ে ১২-১৩ টাকা। কোন সময় আবার ৫-৬ টাকাও দিয়েছে। প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর আমাদের বনাঞ্চল।এই বনাঞ্চলে রয়েছে বিভিন্ন প্রকার সম্পদ,যা রক্ষা করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।উক্ত বনাঞ্চলে রয়েছে বিভিন্ন প্রকার জীববৈচিত্র্যের আবাসস্থল। তবে অন্যায়ভাবে পাহাড় কাটার ফলে তাদের আবাসস্থল নষ্টের সঙ্গে দেখা দিয়েছে বন্যপ্রাণীর খাদ্য সংকট। যার ফলে মাঝেমধ্যে বন্য হাতি খাদ্যের সন্ধানে লোকালয়ে চলে এসে জনসাধারণের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে থাকে। সরেজমিনে দেখা যায়, চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের চুনতি রেঞ্জের সাতগড় বনবিট ও পদুয়া রেঞ্জর ডলু বনবিটের আওতাধীন ঘোড়ামারা, করিম্মাকাটা, বদারবর ঘোনা, সাইটতালা ও লম্বাশিয়া এলাকায় সরকারি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের পাহাড়ের ছড়ায় আনুমানিক ২০টি ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।

এখানে ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় শতাধিক পাহাড়ের মধ্যে প্রায় ৩০ টির মত পাহাড় ইতিমধ্যে বালু ব্যবসায়িরা সাবাড় করে দিয়েছে। হাতি চলাচলের জন্য নির্ধারিত এসব পাহাড় বিলীন হয়ে যাওয়াই নিয়মিত চলার পথ হারিয়ে হাতিরা লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে। প্রসঙ্গত গত বছরের চলতি মাসের ২৬ তারিখে বালুখেকোদের বেপরোয়াভাবে বালু উত্তোলনের ফলে এখানে একটি হাতি শাবক গর্তে পড়ে মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটে।

পরিচয় গোপন করার স্বার্থে স্থানীয়রা জানান, বালু উত্তোলনকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলার সাহস পায় না। বালু উত্তোলন করার ফলে বিভিন্ন স্থানে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ওই এলাকায় হাতির দল নিয়মিত বিচরণ করে। গত বছর চলতি মাসে একটি হাতি বালু উত্তোলনের ফলে সৃষ্ট গর্তে পড়ে মারাও গেছে। আর মাত্রাতিরিক্ত বালু পরিবহনের গাড়ি চলাচলের ফলে সড়কের বেহাল দশা হয়ে পড়েছে। বর্ষার মৌসুমে আমাদের চলাচল করতে দুর্ভোগ পোহাতে হয়।এছাড়া ধুলোবালি সারা শরীরে এমনি নাকের ভিতর ঢুকে যায়, যা পরবর্তীতে শ্বাসকষ্ট হয়। এই পাহাড় নিধনের ফলে বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল ঝুঁকির মধ্যে, যা পরিবেশ প্রকৃতির জন্য এক মহাবিপদ সংকেত।

এভাবে দিন কিংবা বছরের পর বছর পাহাড় ধ্বংসের ফলে প্রকৃতি তার ভারসাম্য হারিয়ে ফেলছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এখনো নীরব। উক্ত ইউনিয়নের স্থানীয় বাসিন্দা পরিবেশবাদী কর্মী ও শিক্ষক সানজিদা রহমান বলেন, বালু উত্তোলন এখানকার একটি নিয়মিত ব্যবসায় পরিণত হয়ে গেছে। এখানকার মানুষ এইটা ধরে নিয়েছে বা এটা শিক্ষার অভাব বা সচেতনতার অভাব হতে পারে। এই বালু উত্তোলন একটা সিন্ডিকেট কাজ করছে, আমি প্রায় দেড় বছর যাবত পরিবেশ নিয়ে কাজ করতেছি, এখানে দেখা যাচ্ছে অবৈধ বালু যখন প্রশাসন এসে জব্দ করে নিলামে, বিক্রি করে দেয়, তখন ওই সিন্ডিকেটরা কিনে নেয়। কিন্তু যে পরিমাণ বালু জব্দ করে সে পরিমাণ বালু থেকেই থাকে।

প্রতিদিন দেড়শো থেকে দুইশত ট্রাক করে বালি নেওয়ার পরও কমেনা। এবং স্যালো মেশিন দিয়ে পাহাড় কেটে বালু উঠাতে থাকে,কাজেই, নিলাম কোন সমাধান না , যে পরিমাণ বালু সিন্ডিকেটরা বের করছে প্রশাসনের সাহায্যে সে পরিমান বালু ওই স্থানে ফেরত এর ব্যবস্থা করতে হবে এবং প্রচুর অর্থ দন্ড কিংবা অন্যান্য আইনি দন্ডে দন্ডিত করতে হবে, এবং দুর্গম পাহাড় কেটে যে রাস্তা করছে তা বন্ধ করে দিয়ে সিলগালা করে দিতে হবে।

লোহাগাড়া উপজেলা ভূমি সহকারী কমিশনার নাজমুন লায়েল বলেন,অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন প্রশাসনের কোন কমর্কতা জড়িত নেই এবং জড়িত থেকে থাকলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আরো বলেন, জব্দকৃত বালি নিলামে দেওয়ার পর নতুন করে বালু উঠানোর কোন সুযোগ নেই। এবং লম্বাশিয়াসহ অন্যান্য পাহাড় কাটা বন্ধের ব্যাপারে আমরা বন বিভাগের কর্মকর্তাদের নিয়ে বসে আলোচনা করে একটা স্থায়ী পদক্ষেপ নেব।

চুনতি রেঞ্জাধীন সাতগড় বনবিট কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি সবে মাত্র যোগদান করেছি এ ব্যাপারে যাচাই করে অবশ্যই অভিযান পরিচালনা করবো। চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, পাহাড় ও পাহাড়ের ভেতর চলমান ছরা থেকে অনিয়ন্ত্রিত বালি তোলা হলে পাহাড় ধ্বসের শঙ্কা থাকে। এটি বনভূমির জন্য ক্ষতিকর।

তাই কাউকে পাহাড় ও বনের ভেতর চলমান ছড়া থেকে বালি উত্তোলনের অনুমতি দেয়া হয় না। যারা এসব করছেন অচিরেই তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ছবি

এস আলম ও পরিবারের ব্যাংক শেয়ার জব্দের নির্দেশ, দুদককে তদন্তের নির্দেশ

ছবি

একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা : হাইকোর্টের রায় রোববার

ছবি

আত্মসমর্পণ করে জামিন পেলেন সেই তাপসী তাবাসসুম ঊর্মি

ছবি

গণহত্যা মামলায় মামুন-জিয়াউলসহ আরও ৬ কর্মকর্তাকে গ্রেফতার দেখানো হলো

ছবি

জমি নিয়ে বিরোধ: মাদারীপুরে ২ বোনকে লাঠিপেটা, ভিডিও ভাইরাল

ছবি

উদ্দেশ্য ছিল মুক্তিপণ, নজরদারিতে শিশুটির বাবা

ছবি

প্রতিবেশীর সাথে মুরগী নিয়ে ঝগড়া, সংঘর্ষে একজন নিহত, আহত ২

ছবি

রাজধানীর আজিমপুরে ডাকাতি মালামালের সঙ্গে দুধের শিশুকেও নিয়ে যায় ডাকাতরা

সূত্রাপুরে সাংবাদিকের বাসার গ্রিল কেটে ২০ ভরি স্বর্ণ ও আড়াই লাখ টাকা চুরি

ঝিকরগাছায় যুবদল কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা: ছাত্রদল নেতাসহ গ্রেপ্তার ৪

হাত খরচের টাকার জন্য মাকে খুন, ছেলে গ্রেপ্তার

ছবি

বেক্সিমকো ফার্মায় রিসিভার নিয়োগের সিদ্ধান্ত স্থগিত

ছবি

শরীয়তপুরে সড়কের পাশে পড়ে থাকা দশটি ব্যাগ থেকে ১২৩টি ককটেল বোমা উদ্ধার

ছবি

কেন শিশু মুনতাহাকে হত্যা করে তার গৃহশিক্ষিকা?

ছবি

ঝিকরগাছায় দলীয় প্রতিপক্ষের হাতে যুবদল কর্মী খুন

জামালপুরে সেনা সদস্যের স্ত্রী ধর্ষণসহ হত্যা মামলার পলাতক আসামী গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১৪

আরিচা-কাজিরহাট-বাঘাবাড়ী ও পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌ-রুটে ড্রেজিংয়ের নামে ৭০০ কোটি টাকা লোপাট

ছবি

আদালতে আমুর আইনজীবীকে পিটুনি

সিলেটে ভারতীয় বৃহৎ চোরাই চালান জব্দ

নারায়ণগঞ্জে স্কুলছাত্রী হত্যায় যুবকের যাবজ্জীবন

যশোরে ‘বাজার কেন্দ্রীক বিরোধে’ খুন হন ব্যবসায়ী জামায়াত নেতা সজল

হত্যা মামলায় কারাগারে যশোর নগর বিএনপির সভাপতি মুল্লুক চাঁদ

না’গঞ্জে নারী পোশাক কর্মীকে পিটিয়ে হত্যা, পুলিশ বলছে ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’

ছবি

উখিয়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান, ৩ ব্যবসায়ীকে অর্থদণ্ড

ছবি

গান বাংলার চেয়ারম্যান তাপস গ্রেপ্তার

যশোরে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে ট্রাক হেলপার খুন

ছিনতাই ও চুরি হওয়া ৪৫টি মোবাইল ফোনসেট উদ্ধার

ছবি

সাবেক মন্ত্রী উবায়দুল মোকতাদির ৫ দিনের রিমান্ডে

চৌগাছায় ইউপি চেয়ারম্যান আশা হত্যাকান্ডের ২২ বছর পর তার ভাই খুন

ছবি

মিরপুরের সাবেক ডিসি জসিম গ্রেপ্তার

রাজশাহী নগরীতে যুবলীগ কর্মীকে পিটিয়ে ও ছুরিকাঘাতে হত্যা

যশোরে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ দেশ ক্লিনিকের লাইসেন্স বাতিল ও জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি

খাগড়াছড়ি বিজিবি’র অভিযানে পানছড়ি সীমান্তে ভারতীয় মালামাল উদ্ধার

ছবি

খুলনায় ছাত্রলীগ নেতাকে হত্যার দায়ে ২১ জনের যাবজ্জীবন

ছবি

রংপুরে কিশোরকে চোরের অপবাদে গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতন, ভিডিও ভাইরাল

ছবি

লাকী যুগের অবসানের পর প্রথম সভায় বসছে গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন

tab

অপরাধ ও দুর্নীতি

লোহাগাড়ার লম্বাশিয়ার পাহাড় থেকে থামছে না অবৈধভাবে বালু উত্তোলন

প্রতিনিধি, লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম)

লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম) : উপজেলার চুনতি ইউনিয়নে লম্বাশিয়ার পাহাড় থেকে এভাবেই বালু কেটে নেয়া হচ্ছে -সংবাদ

শনিবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৩

চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় চুনতি ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ সাতগড় লম্বা শিয়ার পাহাড়ের মুখ এলাকায় সংরক্ষিত বন বিভাগের জায়গায় শ্যালো মেশিনের মাধ্যমে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন থামছে না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অভিযান পরিচালনা করে বালু জব্দ করে। তবে তা পুনরায় নিলামের মাধ্যমে বিক্রি করে। বালু উত্তোলনকারীরা শ্যালো বসিয়ে বালু তুলে নিলাম দেওয়া বালুর উপর পুনরায় বালু জমা করছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন বালু নিলাম নেওয়া ব্যক্তি ও উত্তোলনকারীদের সঙ্গে প্রশাসনের একটা যোগসাজস রয়েছে। কারণ বালু উত্তোলনকারীরাই তাদের উত্তোলনকৃত বালুগুলো বারবার নিলাম নিয়ে থাকে। প্রশাসনও তাদের সুযোগ দেওযার জন্য মাস দেড়েক পরে একবার অভিযান চালিয়ে আসে।

স্থানীয়রা আরো বলেন, নিয়ম মোতাবেক প্রতি ঘনফুট বালুর মুল্য ২০ টাকা হয়। অথচ প্রশাসন নিলাম দিয়ে ১২-১৩ টাকা। কোন সময় আবার ৫-৬ টাকাও দিয়েছে। প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর আমাদের বনাঞ্চল।এই বনাঞ্চলে রয়েছে বিভিন্ন প্রকার সম্পদ,যা রক্ষা করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।উক্ত বনাঞ্চলে রয়েছে বিভিন্ন প্রকার জীববৈচিত্র্যের আবাসস্থল। তবে অন্যায়ভাবে পাহাড় কাটার ফলে তাদের আবাসস্থল নষ্টের সঙ্গে দেখা দিয়েছে বন্যপ্রাণীর খাদ্য সংকট। যার ফলে মাঝেমধ্যে বন্য হাতি খাদ্যের সন্ধানে লোকালয়ে চলে এসে জনসাধারণের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে থাকে। সরেজমিনে দেখা যায়, চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের চুনতি রেঞ্জের সাতগড় বনবিট ও পদুয়া রেঞ্জর ডলু বনবিটের আওতাধীন ঘোড়ামারা, করিম্মাকাটা, বদারবর ঘোনা, সাইটতালা ও লম্বাশিয়া এলাকায় সরকারি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের পাহাড়ের ছড়ায় আনুমানিক ২০টি ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।

এখানে ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় শতাধিক পাহাড়ের মধ্যে প্রায় ৩০ টির মত পাহাড় ইতিমধ্যে বালু ব্যবসায়িরা সাবাড় করে দিয়েছে। হাতি চলাচলের জন্য নির্ধারিত এসব পাহাড় বিলীন হয়ে যাওয়াই নিয়মিত চলার পথ হারিয়ে হাতিরা লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে। প্রসঙ্গত গত বছরের চলতি মাসের ২৬ তারিখে বালুখেকোদের বেপরোয়াভাবে বালু উত্তোলনের ফলে এখানে একটি হাতি শাবক গর্তে পড়ে মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটে।

পরিচয় গোপন করার স্বার্থে স্থানীয়রা জানান, বালু উত্তোলনকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলার সাহস পায় না। বালু উত্তোলন করার ফলে বিভিন্ন স্থানে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ওই এলাকায় হাতির দল নিয়মিত বিচরণ করে। গত বছর চলতি মাসে একটি হাতি বালু উত্তোলনের ফলে সৃষ্ট গর্তে পড়ে মারাও গেছে। আর মাত্রাতিরিক্ত বালু পরিবহনের গাড়ি চলাচলের ফলে সড়কের বেহাল দশা হয়ে পড়েছে। বর্ষার মৌসুমে আমাদের চলাচল করতে দুর্ভোগ পোহাতে হয়।এছাড়া ধুলোবালি সারা শরীরে এমনি নাকের ভিতর ঢুকে যায়, যা পরবর্তীতে শ্বাসকষ্ট হয়। এই পাহাড় নিধনের ফলে বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল ঝুঁকির মধ্যে, যা পরিবেশ প্রকৃতির জন্য এক মহাবিপদ সংকেত।

এভাবে দিন কিংবা বছরের পর বছর পাহাড় ধ্বংসের ফলে প্রকৃতি তার ভারসাম্য হারিয়ে ফেলছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এখনো নীরব। উক্ত ইউনিয়নের স্থানীয় বাসিন্দা পরিবেশবাদী কর্মী ও শিক্ষক সানজিদা রহমান বলেন, বালু উত্তোলন এখানকার একটি নিয়মিত ব্যবসায় পরিণত হয়ে গেছে। এখানকার মানুষ এইটা ধরে নিয়েছে বা এটা শিক্ষার অভাব বা সচেতনতার অভাব হতে পারে। এই বালু উত্তোলন একটা সিন্ডিকেট কাজ করছে, আমি প্রায় দেড় বছর যাবত পরিবেশ নিয়ে কাজ করতেছি, এখানে দেখা যাচ্ছে অবৈধ বালু যখন প্রশাসন এসে জব্দ করে নিলামে, বিক্রি করে দেয়, তখন ওই সিন্ডিকেটরা কিনে নেয়। কিন্তু যে পরিমাণ বালু জব্দ করে সে পরিমাণ বালু থেকেই থাকে।

প্রতিদিন দেড়শো থেকে দুইশত ট্রাক করে বালি নেওয়ার পরও কমেনা। এবং স্যালো মেশিন দিয়ে পাহাড় কেটে বালু উঠাতে থাকে,কাজেই, নিলাম কোন সমাধান না , যে পরিমাণ বালু সিন্ডিকেটরা বের করছে প্রশাসনের সাহায্যে সে পরিমান বালু ওই স্থানে ফেরত এর ব্যবস্থা করতে হবে এবং প্রচুর অর্থ দন্ড কিংবা অন্যান্য আইনি দন্ডে দন্ডিত করতে হবে, এবং দুর্গম পাহাড় কেটে যে রাস্তা করছে তা বন্ধ করে দিয়ে সিলগালা করে দিতে হবে।

লোহাগাড়া উপজেলা ভূমি সহকারী কমিশনার নাজমুন লায়েল বলেন,অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন প্রশাসনের কোন কমর্কতা জড়িত নেই এবং জড়িত থেকে থাকলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আরো বলেন, জব্দকৃত বালি নিলামে দেওয়ার পর নতুন করে বালু উঠানোর কোন সুযোগ নেই। এবং লম্বাশিয়াসহ অন্যান্য পাহাড় কাটা বন্ধের ব্যাপারে আমরা বন বিভাগের কর্মকর্তাদের নিয়ে বসে আলোচনা করে একটা স্থায়ী পদক্ষেপ নেব।

চুনতি রেঞ্জাধীন সাতগড় বনবিট কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি সবে মাত্র যোগদান করেছি এ ব্যাপারে যাচাই করে অবশ্যই অভিযান পরিচালনা করবো। চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, পাহাড় ও পাহাড়ের ভেতর চলমান ছরা থেকে অনিয়ন্ত্রিত বালি তোলা হলে পাহাড় ধ্বসের শঙ্কা থাকে। এটি বনভূমির জন্য ক্ষতিকর।

তাই কাউকে পাহাড় ও বনের ভেতর চলমান ছড়া থেকে বালি উত্তোলনের অনুমতি দেয়া হয় না। যারা এসব করছেন অচিরেই তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

back to top