alt

অপরাধ ও দুর্নীতি

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে একদিনে ৪ খুন, ১৫ দিনে ৯

জেলা বার্তা পরিবেশক, কক্সবাজার : বুধবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩

এক দিনে চারজনকে হত্যার ঘটনা ঘটেছে কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা শিবিরে। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মায়ানমারের সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন আরসা ও আরএসও’র মধ্যে গোলাগুলিতে নিহত হন তারা। এ ঘটনায় আরও দুইজন রোহিঙ্গা গুরুতর আহত হয়েছেন। এনিয়ে গত ১৫ দিনে খুন হলেন ৯ জন।

সর্বশেষ নিহত চারজন হচ্ছেন- উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১ ইস্ট ব্লক-জি/১২ এর মনি উল্লাহর ছেলে ইমাম হোসেন (২২) ১৫ ও ১৭ নম্বর ক্যাম্পের আনোয়ার সাদেক (১৭), আবুল কাসেম (৩৪) ও জোবাইর (১৮)।

গত মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ৩টার দিকে উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প-৪ এর এফ/১৬ ব্লকে এবং বুধবার (৬ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ২টার সময় ১৫ ও ১৭ নম্বর ক্যাম্পে হত্যাগুলো সংঘটিত হয়েছে।

উখিয়া থানার ওসি শামীম হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, গত মঙ্গলবার বেলা আড়াইটা থেকে তিনটার দিকে উখিয়ার রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প-৪ এর এফ/১৬ ব্লকে ১০ থেকে ১২ জনের একটি সন্ত্রাসী দল ইমাম হোসেন নামের রোহিঙ্গা যুবককে গুলি করে পালিয়ে যায়। সন্ত্রাসীদের ছোড়া গুলিতে ঘটনাস্থলে ইমাম হোসেনের মৃত্যু ঘটে।

তিনি আরও বলেন, রাতে উখিয়ার ১৭ নম্বর মধুরছড়া ও জামতলি ১৫ নম্বর ক্যাম্পে আরসা এবং আরএসও মুখোমুখি অবস্থান নেয়। একপর্যায়ে দু’পক্ষের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে আরও ৩ জন নিহত হয়।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উখিয়া সার্কেল) মোহাম্মদ রাসেল জানান, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে রোহিঙ্গাদের দুই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর মধ্যে গোলাগুলি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তারপরও কারা, কী কারণে এ ঘটনা ঘটিয়েছে সে ব্যাপারে খোঁজ নেয়া হচ্ছে। সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরির পর ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে, গত ২০ নভেম্বর থেকে মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) পর্যন্ত ১৫ দিনে ক্যাম্পের সাবেক হেড মাঝিসহ ৯ জন খুন হয়েছেন। এ ঘটনায় পুরো ক্যাম্পে আতঙ্ক বিরাজ করছে। মায়ানমার কেন্দ্রিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আসরা-আরএসওর সদস্যরা আধিপত্য বিস্তার নিয়ে প্রতিদিনই নির্মম এ হত্যাকা- গুলো ঘটাচ্ছে বলে অভিমত সাধারণ রোহিঙ্গা ও সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের।

সাধারণ রোহিঙ্গারা জানিয়েছে, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে শুধু রাতে নয়, এখন দিনেও চলছে অস্ত্রের ঝনঝনানি। উখিয়া-টেকনাফে ৩২টি ক্যাম্পেই পরস্পর বিরোধী একাধিক রোহিঙ্গা সশস্ত্র গ্রুপ এখন মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসতেই ক্যাম্পগুলোর সর্বত্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। খুনোখুনি, অপহরণ, গুম, লুটপাট সেখানে এখন স্বাভাবিক ঘটনায় রূপ নিয়েছে। পর্যটন নগরী কক্সবাজারের টেকনাফ যেন এখন মায়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরসা (আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মি) এবং আরএসওর (আরাকান সলিডারিটি অর্গানাইজেশন) রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। এই দুই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর হাত থেকে রেহাই পাচ্ছেন না আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও।

এমন পরিস্থিতিতে এই দুই সন্ত্রাসী গ্রুপের সদস্যদের তালিকা নিয়ে অভিযান শুরু করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সম্প্রতি একটি গোয়েন্দা সংস্থার তালিকায় দেখা গেছে, কক্সবাজার ও টেকনাফের ৩২টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পেই দুই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সশস্ত্র সদস্যদের অবস্থান রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আরসার সদস্যরা বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য আন্দোলন করছে। এক্ষেত্রে আরএসওর বেশিরভাগ নেতাই প্রত্যাবাসনের বিরোধিতা করছে। এই নিয়ে আরসা এবং আরএসও’র মধ্যে দ্বন্দ্ব চরমে পৌঁছেছে। এ কারণে দুই গ্রুপের মধ্যে খুনোখুনি ও হামলার ঘটনা বেড়ে চলেছে।

এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতনরা আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য না দিলেও নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি সূত্র জানায়, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, অস্ত্র কারবার মানব পাচারসহ গুরুতর অপরাধের সঙ্গে এই দুই সন্ত্রাসী গ্রুপের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। আরসার সদস্যরা অস্ত্র ও মাদক চোরাকারবারে সক্রিয়ভাবে জড়িত। তারা ক্যাম্পের সদস্যের তালিকায় নাম লেখালেও বেশিরভাগ সময় শূন্য রেখায় অবস্থান করে। আবার কিছু সদস্য সাধারণ রোহিঙ্গাদের সঙ্গে মিশে গিয়ে সার্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে।

গত ৬ বছরে বিভিন্ন ক্যাম্পে নিজেদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারের জেরে প্রায় ১৭০ জনের মতো খুন হয়েছে। এসব ঘটনার জের ধরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালিয়ে দুই শতাধিক দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করেছে। গত ছয় বছরে ৩ হাজারের মতো মামলায় আসামি হয়েছে প্রায় ১০ হাজার জন। এর মধ্যে হত্যা, অস্ত্র, মাদক, ধর্ষণ ও অপহরণ মামলা অন্যতম।

সম্প্রতি শূন্য রেখার কাছে একটি গোয়েন্দা সংস্থার এক কর্মকর্তা নিহত হন আরসার মাদক চোরাকারবারিদের হাতে। ওই ঘটনার পর আরসার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এই দুই সন্ত্রাসী গ্রুপের একটি তালিকা করেছে। এই তালিকায় অন্তত ৭০০ জনের নাম রয়েছে। যদিও আগে থেকেই সরকার তাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে।

ছবি

পীরগাছায় পুলিশের অভিযানে চুরি হওয়া ৩ মোটরসাইকেলসহ গ্রেফতার ৫

ছবি

মুরাদনগরে নারী নির্যাতনের ঘটনায় মূল উসকানিদাতা ভাই শাহ পরাণ: পরিকল্পনায় ‘মব’, ভিডিওও তার ‘নির্দেশে’

ছবি

মুরাদনগরে ধর্ষণ ও ভিডিও ছড়ানোর ঘটনায় চার আসামির তিন দিনের রিমান্ড

ভোটবিহীন নির্বাচন মামলায় নূরুল হুদা কারাগারে, পেলেন না জামিন

ছবি

শেখ রেহানার স্বামী ও তারিক সিদ্দিকের সম্পত্তি জব্দের আদেশ

ছবি

আদালত অবমাননায় শেখ হাসিনার ৬ মাসের কারাদণ্ড

ছবি

বিএনপির মামলায় সাবেক সিইসি নূরুল হুদার জবানবন্দি রেকর্ড শুরু

ছবি

আবু সাঈদ হত্যা মামলা: বেরোবির সাবেক উপাচার্যসহ ২৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

ছবি

তিনটি হত্যা মামলায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার দেখানোর নির্দেশ, আছেন সাবেক এসপিও

ধর্ষণের পর বিবস্ত্র অবস্থায় মারধর, ভিডিও ভাইরালের ঘটনায় গ্রেপ্তার ৫

ভুক্তভোগীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হাইকোর্টের নির্দেশ

রূপগঞ্জে মদ্যপ অবস্থায় অশোভন আচরণ, প্রতিবাদ করায় দুই যুবককে গুলি

নাইক্ষ্যংছড়িতে ইমাম হত্যা,৫ জনকে আসামী করে মামলা

ছবি

হত্যা মামলায় ইনু, কামাল, পলকসহ চারজনকে গ্রেপ্তার দেখালো আদালত

ছবি

বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ মামলায় প্রিন্স মামুনের বিচার শুরু

ছবি

ব্রিটিশ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের অভিযোগ অস্বীকার করে দুদক চেয়ারম্যান, টিউলিপকে বাংলাদেশি নাগরিক বলেও মন্তব্য

ছবি

১৬ হাজার কোটি টাকার সম্পদ অবরুদ্ধ, এস আলম গ্রুপ ও ইসলামী ব্যাংকের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আদালতের কঠোর পদক্ষেপ

ছবি

‘ভোটের প্রতারণা’ অভিযোগে রিমান্ড শুনানিতে নিজেকে নির্দোষ দাবি নূরুল হুদার

ছবি

নগদের ১ কোটি টাকার ডাকাতি: রহস্য উদঘাটনের দাবি পুলিশের, উদ্ধার সাড়ে ৩২ লাখ

ছবি

স্বপ্না হত্যা: থানা থেকে সিআইডি, তবু রহস্য অজানা

ছবি

সাক্ষ্যগ্রহণের দিনে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে পালাল অপহরণ ও হত্যার আসামি

ছবি

আদালত অবমাননার মামলায় আইনজীবী এ ওয়াই মশিউজ্জামানকে ট্রাইব্যুনালের সহায়তাকারী নিযুক্ত

ছবি

সবজি ব্যবসায়ী শাওন হত্যা মামলায় সালমান এফ রহমান ৪ দিনের রিমান্ডে, আনিসুল হক গ্রেপ্তার

মিরপুরে প্রকাশ্যে গুলি করে টাকা ছিনতাই, গ্রেপ্তার ৫ আসামির রিমান্ড মঞ্জুর

ছবি

কেরাণীগঞ্জে মেয়েকে ধর্ষণের দায়ে সৎ বাবার মৃত্যুদণ্ড

ছবি

রংপুরের কাউনিয়ায় টিসিবির কার্ড বিতরণে টাকা আদায়ের অভিযোগে ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতার

ছবি

মানিলন্ডারিং তদন্ত: তিন সহযোগীর বিদেশ যাত্রায় আদালতের নিষেধাজ্ঞা

ছবি

হাজিরা না দিলে অনুপস্থিতিতেই শেখ হাসিনার বিচার শুরু হবে: ট্রাইব্যুনাল

ছবি

যুক্তরাজ্যে বসুন্ধরা মালিকপক্ষসহ কয়েকজনের সম্পদ জব্দে উদ্যোগ: দুদক

ছবি

টিউলিপের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা, তাকে বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে দেখছে দুদক

ছবি

লাশ টুকরো করে বালু চাপা: ব্যবসায়ী জাকির হত্যা মামলায় চার আসামি আদালতে, একজনের স্বীকারোক্তি

ছবি

বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া সম্পদ ফেরত পাঠাতে যুক্তরাজ্যকে কার্যকর পদক্ষেপের আহ্বান

অবশেষে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে বিএনপির ১৩ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে থানায় মামলা

পীরগাছায় ইসলামিক রিলিফের গরুর মাংস বিতরণের তালিকা তৈরিতে অনিয়মের অভিযোগ

খাগড়াছড়ির গুইমারায় এক পাহাড়ি গৃহবধুকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে আটক-১

ছবি

রিমান্ড শেষে শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন কারাগারে

tab

অপরাধ ও দুর্নীতি

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে একদিনে ৪ খুন, ১৫ দিনে ৯

জেলা বার্তা পরিবেশক, কক্সবাজার

বুধবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩

এক দিনে চারজনকে হত্যার ঘটনা ঘটেছে কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা শিবিরে। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মায়ানমারের সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন আরসা ও আরএসও’র মধ্যে গোলাগুলিতে নিহত হন তারা। এ ঘটনায় আরও দুইজন রোহিঙ্গা গুরুতর আহত হয়েছেন। এনিয়ে গত ১৫ দিনে খুন হলেন ৯ জন।

সর্বশেষ নিহত চারজন হচ্ছেন- উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১ ইস্ট ব্লক-জি/১২ এর মনি উল্লাহর ছেলে ইমাম হোসেন (২২) ১৫ ও ১৭ নম্বর ক্যাম্পের আনোয়ার সাদেক (১৭), আবুল কাসেম (৩৪) ও জোবাইর (১৮)।

গত মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ৩টার দিকে উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প-৪ এর এফ/১৬ ব্লকে এবং বুধবার (৬ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ২টার সময় ১৫ ও ১৭ নম্বর ক্যাম্পে হত্যাগুলো সংঘটিত হয়েছে।

উখিয়া থানার ওসি শামীম হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, গত মঙ্গলবার বেলা আড়াইটা থেকে তিনটার দিকে উখিয়ার রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প-৪ এর এফ/১৬ ব্লকে ১০ থেকে ১২ জনের একটি সন্ত্রাসী দল ইমাম হোসেন নামের রোহিঙ্গা যুবককে গুলি করে পালিয়ে যায়। সন্ত্রাসীদের ছোড়া গুলিতে ঘটনাস্থলে ইমাম হোসেনের মৃত্যু ঘটে।

তিনি আরও বলেন, রাতে উখিয়ার ১৭ নম্বর মধুরছড়া ও জামতলি ১৫ নম্বর ক্যাম্পে আরসা এবং আরএসও মুখোমুখি অবস্থান নেয়। একপর্যায়ে দু’পক্ষের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে আরও ৩ জন নিহত হয়।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উখিয়া সার্কেল) মোহাম্মদ রাসেল জানান, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে রোহিঙ্গাদের দুই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর মধ্যে গোলাগুলি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তারপরও কারা, কী কারণে এ ঘটনা ঘটিয়েছে সে ব্যাপারে খোঁজ নেয়া হচ্ছে। সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরির পর ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে, গত ২০ নভেম্বর থেকে মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) পর্যন্ত ১৫ দিনে ক্যাম্পের সাবেক হেড মাঝিসহ ৯ জন খুন হয়েছেন। এ ঘটনায় পুরো ক্যাম্পে আতঙ্ক বিরাজ করছে। মায়ানমার কেন্দ্রিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আসরা-আরএসওর সদস্যরা আধিপত্য বিস্তার নিয়ে প্রতিদিনই নির্মম এ হত্যাকা- গুলো ঘটাচ্ছে বলে অভিমত সাধারণ রোহিঙ্গা ও সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের।

সাধারণ রোহিঙ্গারা জানিয়েছে, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে শুধু রাতে নয়, এখন দিনেও চলছে অস্ত্রের ঝনঝনানি। উখিয়া-টেকনাফে ৩২টি ক্যাম্পেই পরস্পর বিরোধী একাধিক রোহিঙ্গা সশস্ত্র গ্রুপ এখন মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসতেই ক্যাম্পগুলোর সর্বত্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। খুনোখুনি, অপহরণ, গুম, লুটপাট সেখানে এখন স্বাভাবিক ঘটনায় রূপ নিয়েছে। পর্যটন নগরী কক্সবাজারের টেকনাফ যেন এখন মায়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরসা (আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মি) এবং আরএসওর (আরাকান সলিডারিটি অর্গানাইজেশন) রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। এই দুই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর হাত থেকে রেহাই পাচ্ছেন না আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও।

এমন পরিস্থিতিতে এই দুই সন্ত্রাসী গ্রুপের সদস্যদের তালিকা নিয়ে অভিযান শুরু করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সম্প্রতি একটি গোয়েন্দা সংস্থার তালিকায় দেখা গেছে, কক্সবাজার ও টেকনাফের ৩২টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পেই দুই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সশস্ত্র সদস্যদের অবস্থান রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আরসার সদস্যরা বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য আন্দোলন করছে। এক্ষেত্রে আরএসওর বেশিরভাগ নেতাই প্রত্যাবাসনের বিরোধিতা করছে। এই নিয়ে আরসা এবং আরএসও’র মধ্যে দ্বন্দ্ব চরমে পৌঁছেছে। এ কারণে দুই গ্রুপের মধ্যে খুনোখুনি ও হামলার ঘটনা বেড়ে চলেছে।

এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতনরা আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য না দিলেও নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি সূত্র জানায়, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, অস্ত্র কারবার মানব পাচারসহ গুরুতর অপরাধের সঙ্গে এই দুই সন্ত্রাসী গ্রুপের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। আরসার সদস্যরা অস্ত্র ও মাদক চোরাকারবারে সক্রিয়ভাবে জড়িত। তারা ক্যাম্পের সদস্যের তালিকায় নাম লেখালেও বেশিরভাগ সময় শূন্য রেখায় অবস্থান করে। আবার কিছু সদস্য সাধারণ রোহিঙ্গাদের সঙ্গে মিশে গিয়ে সার্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে।

গত ৬ বছরে বিভিন্ন ক্যাম্পে নিজেদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারের জেরে প্রায় ১৭০ জনের মতো খুন হয়েছে। এসব ঘটনার জের ধরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালিয়ে দুই শতাধিক দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করেছে। গত ছয় বছরে ৩ হাজারের মতো মামলায় আসামি হয়েছে প্রায় ১০ হাজার জন। এর মধ্যে হত্যা, অস্ত্র, মাদক, ধর্ষণ ও অপহরণ মামলা অন্যতম।

সম্প্রতি শূন্য রেখার কাছে একটি গোয়েন্দা সংস্থার এক কর্মকর্তা নিহত হন আরসার মাদক চোরাকারবারিদের হাতে। ওই ঘটনার পর আরসার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এই দুই সন্ত্রাসী গ্রুপের একটি তালিকা করেছে। এই তালিকায় অন্তত ৭০০ জনের নাম রয়েছে। যদিও আগে থেকেই সরকার তাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে।

back to top