দরবেশ বাবা পরিচয়দানকারি একটি প্রতারক চক্রের সন্ধান পেয়েছে সিআইডি। ঢাকার কেরানীগঞ্জ ও মাগুরায় অভিযান চালিয়ে এই চক্রের ১৯ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসছে প্রতারণার চা ল্যকর কাহিনী। এই চক্র এক নারী ডাক্তার থেকে ২৫ লাখ টাকা হাতিয়েছে। গতকাল সোমবার সিআইডির মালিবাগস্থ প্রধান কার্যালয় থেকে এই তথ্য জানিয়েছেন।
সিআইডির মিডিয়া শাখা থেকে বলা হয়েছে,প্রতারক চক্রটির এক সদস্য সৌদি আরবের মসজিদে নব্বীর ইমাম পরিচয়ে বিভিন্ন সমস্যার সমাধানের নামে প্রতারণা করত।
সম্প্রতি সিআইডির অনুসন্ধানী টিম ফেইসবুক পেইজ,হটলাইন নম্বর ও ইমেইলের মাধ্যমে ভূক্তভোগীদের কাছ থেকে সাইবার সংক্রান্ত যে কোন অভিযোগ গ্রহণ করে। পরবর্তীতে উক্ত অভিযোগ সমূহ আমলে নিয়ে অনুসন্ধাণ শুরু করেন।
তারা মূলত ১.সাইবার অপরাধে ব্যবহ্নত ডিজিটাল ফরেনসিক ২.ম্যানুয়াল ব্যবহার ও ৩.অপরাধীদের প্রদত্ত জবাবনবন্দি।
এই সব কার্যক্রম মনিটরিং করার সময় তারা এই প্রতারক চক্রের সন্ধান পায়। অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রতারক চক্রটি একটি বিশেষ এলাকার। তারা ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ছোট ছোট গ্রæপে ভাগ হয়ে বাসা ভাড়া নিয়ে অবস্থান করে প্রতারণা করে থাকে। এই চক্রের সদস্যরা মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে ২টি ভিন্ন ভিন্ন কৌশলে।
এই চক্রের প্রতারকরা ব্যক্তিগত ভাবে পরিচিত অথবা অর্থ সম্পদশালী ব্যক্তিদের দারোয়ান বা ড্রাইভারের সঙ্গে সম্পর্ক করে পরিবারের গোপন তথ্য সংগ্রহ করে পারিবারিক সমস্যা গুলো কৌশলে জেনে নিয়ে ওই বাসার মালিক ও তার স্ত্রীর নাম, ফোন নম্বর সংগ্রহ করে। তারপর শুরু হয় প্রতারণা।
প্রতারক চক্র শুরুতে স্ত্রীর কাছে স্বামীর বদনাম এবং স্বামীর কাছে স্ত্রীর বদনাম বলে কান ভারি করে। তখন উভয়ের মধ্যে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। প্রত্যেকে তাদের সমস্যা নিরসনের জন্য পথ খুজতে থাকে। এই সুযোগে উক্ত প্রতারকগণ মসজিদে নব্বীর ইমামের নাম ব্যবহার করে প্রতারণা করতে থাকে।
২.এই প্রতারক চক্র গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চমকপ্রদ বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রথমে প্রলুদ্ধ করে। লটারী পাইয়ে দেয়া,ভাগ্য বদল,পাওনা টাকা আদায়,মামলায় জেতানো, পারিবারিক সমস্যার সমাধানের কথা বলা হয় তাদের বিজ্ঞাপনে।
তারা বিপদগ্রস্থ মানুষের বর্তমান ও ভবিষ্যত বলে দিতে পারে। এরপর বিজ্ঞাপনে থাকা মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করলে শুরু হয় পকেট কাটা।
এইভাবেই চক্রটি পরিবারিক সমস্যা সমাধান করে দেয়ার কথা বলে এক নারী ডাক্তার ভূক্তভোগীর কাছ থেকে ২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। প্রতারক চক্র দরবেশ বাবা পরিচয়ে কয়েক ধাপে তার কাছ থেকে এই টাকা আত্মাসাৎ করে। দরবেশ বাবা পরিচয়দানকারি এই চক্রের ১৯ জনকে মাগুরা ও ঢাকার কেরানীগঞ্জ পৃথক অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। রাজধানীর খিলগাঁও থানায় দায়ের করা একটি মামলার তদন্ত করতে গিয়ে এই চক্রের সন্ধান পেয়েছে সিআইডি।
প্রতারণার শিকার নারী পারিবারিক সমস্যা থাকায় মুক্তির পথ খুঁজছিলেন। তখন ফেসবুকে একটি বিজ্ঞাপন দেখে তার চোখ পড়ে। বিজ্ঞাপনে একজন সুদর্শন ব্যক্তি দরবেশ বেশধারী নিজেকে সৌদি আরবের মসজিদে নব্বীর ইমাম পরিচয় দিয়ে বলছেন,তিনি কোরআন হাদিসের আলোকে মানুষের সমস্যার সমাধান করেন।
বিজ্ঞাপনটি দেখে ওই নারী চিকিৎসক বিজ্ঞাপনে দেয়া মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করেন। অপর প্রান্তে থাকা দরবেশ বাবা বেশধারী ব্যক্তি সুন্দরভাবে কথা বলে তার পরিবারের সমস্যা শুনতে চান। ভূক্তভোগী চিকিৎসক তার পরিবারের সমস্যার কথা তুলে ধরেন কথিত দরবেশ বাবার কাছে। সমস্যার কথা শুনে দরবেশ তাকে বলেন,মা তোমার সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। বাবার উপর আস্থা রাখো। তোমাকে মা বলে ডাকলাম। আজ থেকে তুমি আমার মেয়ে। তবে কিছু খরচ লাগবে। খরচের কথা কাউকে জানানো যাবে না। জানালে সমস্যার সমাধান তো হবে না। বরং সমস্যা আরও বাড়বে। তোমার ছেলে,মেয়ে ও স্বামীর ক্ষতি হবে। নারী চিকিৎসক ভয়ে দরবেশের কথায় তার ভক্ত হয়ে যান।
এরপরই কথিত দরবেশ বাবা বিভিন্ন ধাপে বিভিন্ন সময়ে অলোকিক সমস্যার কথা বলে প্রলোভন ও ভয়-ভীতির মাধ্যমে ওই নারী ডাক্তার থেকে মোট ২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়।
পরবর্তীতে সিআইডি একটি নম্বরের সূত্র ধরে মাগুরা থেকে আশিকুর রহমান নামে একজনকে গ্রেফতার করে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়,এটি একটি সংঘবদ্ব চক্র। এই চক্রের বিভিন্ন টেকনিক্যাল সাপোর্ট ,বেনামে রেজিস্ট্রেশন করা সিম এবং ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেয়ার কাজ করে সে। প্রতারক আশিকের দেয়া তথ্য মতে, ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে কথিত দরবেশ পরিচয়দানকারি ১৮ আসামিকে গ্রেফতার করেছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এই চক্র জানিয়েছে,তারা ২০২০ ও ২০২১ সাল থেকে এই প্রতারণার সঙ্গে জড়িত। প্রথম দিকে তারা বিভিন্ন পত্র পত্রিকা ও টিভি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন দিতেন। পরবর্তীতে তারা ইউটিউব ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতারণ্রা বিজ্ঞাপন দিতে থাকে। ভূক্তভোগী সাধারণ মানুষ তাদের দেয়া মোবাইল নম্বরে ফোন দিলে সমস্যার সমাধানের নামে ভয়-ভীতি ও নানা প্রলোভন দেখিয়ে এমএফএস নম্বরে টাকা হাতিয়ে নিত চক্রটি। আসামিদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহ্নত ৪টি মোবাইল ফোন,বিপুল সংখ্যক সিমকার্ড ও ডিজিটাল আলামত উদ্ধার করা হয়েছে।
সোমবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
দরবেশ বাবা পরিচয়দানকারি একটি প্রতারক চক্রের সন্ধান পেয়েছে সিআইডি। ঢাকার কেরানীগঞ্জ ও মাগুরায় অভিযান চালিয়ে এই চক্রের ১৯ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসছে প্রতারণার চা ল্যকর কাহিনী। এই চক্র এক নারী ডাক্তার থেকে ২৫ লাখ টাকা হাতিয়েছে। গতকাল সোমবার সিআইডির মালিবাগস্থ প্রধান কার্যালয় থেকে এই তথ্য জানিয়েছেন।
সিআইডির মিডিয়া শাখা থেকে বলা হয়েছে,প্রতারক চক্রটির এক সদস্য সৌদি আরবের মসজিদে নব্বীর ইমাম পরিচয়ে বিভিন্ন সমস্যার সমাধানের নামে প্রতারণা করত।
সম্প্রতি সিআইডির অনুসন্ধানী টিম ফেইসবুক পেইজ,হটলাইন নম্বর ও ইমেইলের মাধ্যমে ভূক্তভোগীদের কাছ থেকে সাইবার সংক্রান্ত যে কোন অভিযোগ গ্রহণ করে। পরবর্তীতে উক্ত অভিযোগ সমূহ আমলে নিয়ে অনুসন্ধাণ শুরু করেন।
তারা মূলত ১.সাইবার অপরাধে ব্যবহ্নত ডিজিটাল ফরেনসিক ২.ম্যানুয়াল ব্যবহার ও ৩.অপরাধীদের প্রদত্ত জবাবনবন্দি।
এই সব কার্যক্রম মনিটরিং করার সময় তারা এই প্রতারক চক্রের সন্ধান পায়। অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রতারক চক্রটি একটি বিশেষ এলাকার। তারা ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ছোট ছোট গ্রæপে ভাগ হয়ে বাসা ভাড়া নিয়ে অবস্থান করে প্রতারণা করে থাকে। এই চক্রের সদস্যরা মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে ২টি ভিন্ন ভিন্ন কৌশলে।
এই চক্রের প্রতারকরা ব্যক্তিগত ভাবে পরিচিত অথবা অর্থ সম্পদশালী ব্যক্তিদের দারোয়ান বা ড্রাইভারের সঙ্গে সম্পর্ক করে পরিবারের গোপন তথ্য সংগ্রহ করে পারিবারিক সমস্যা গুলো কৌশলে জেনে নিয়ে ওই বাসার মালিক ও তার স্ত্রীর নাম, ফোন নম্বর সংগ্রহ করে। তারপর শুরু হয় প্রতারণা।
প্রতারক চক্র শুরুতে স্ত্রীর কাছে স্বামীর বদনাম এবং স্বামীর কাছে স্ত্রীর বদনাম বলে কান ভারি করে। তখন উভয়ের মধ্যে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। প্রত্যেকে তাদের সমস্যা নিরসনের জন্য পথ খুজতে থাকে। এই সুযোগে উক্ত প্রতারকগণ মসজিদে নব্বীর ইমামের নাম ব্যবহার করে প্রতারণা করতে থাকে।
২.এই প্রতারক চক্র গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চমকপ্রদ বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রথমে প্রলুদ্ধ করে। লটারী পাইয়ে দেয়া,ভাগ্য বদল,পাওনা টাকা আদায়,মামলায় জেতানো, পারিবারিক সমস্যার সমাধানের কথা বলা হয় তাদের বিজ্ঞাপনে।
তারা বিপদগ্রস্থ মানুষের বর্তমান ও ভবিষ্যত বলে দিতে পারে। এরপর বিজ্ঞাপনে থাকা মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করলে শুরু হয় পকেট কাটা।
এইভাবেই চক্রটি পরিবারিক সমস্যা সমাধান করে দেয়ার কথা বলে এক নারী ডাক্তার ভূক্তভোগীর কাছ থেকে ২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। প্রতারক চক্র দরবেশ বাবা পরিচয়ে কয়েক ধাপে তার কাছ থেকে এই টাকা আত্মাসাৎ করে। দরবেশ বাবা পরিচয়দানকারি এই চক্রের ১৯ জনকে মাগুরা ও ঢাকার কেরানীগঞ্জ পৃথক অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। রাজধানীর খিলগাঁও থানায় দায়ের করা একটি মামলার তদন্ত করতে গিয়ে এই চক্রের সন্ধান পেয়েছে সিআইডি।
প্রতারণার শিকার নারী পারিবারিক সমস্যা থাকায় মুক্তির পথ খুঁজছিলেন। তখন ফেসবুকে একটি বিজ্ঞাপন দেখে তার চোখ পড়ে। বিজ্ঞাপনে একজন সুদর্শন ব্যক্তি দরবেশ বেশধারী নিজেকে সৌদি আরবের মসজিদে নব্বীর ইমাম পরিচয় দিয়ে বলছেন,তিনি কোরআন হাদিসের আলোকে মানুষের সমস্যার সমাধান করেন।
বিজ্ঞাপনটি দেখে ওই নারী চিকিৎসক বিজ্ঞাপনে দেয়া মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করেন। অপর প্রান্তে থাকা দরবেশ বাবা বেশধারী ব্যক্তি সুন্দরভাবে কথা বলে তার পরিবারের সমস্যা শুনতে চান। ভূক্তভোগী চিকিৎসক তার পরিবারের সমস্যার কথা তুলে ধরেন কথিত দরবেশ বাবার কাছে। সমস্যার কথা শুনে দরবেশ তাকে বলেন,মা তোমার সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। বাবার উপর আস্থা রাখো। তোমাকে মা বলে ডাকলাম। আজ থেকে তুমি আমার মেয়ে। তবে কিছু খরচ লাগবে। খরচের কথা কাউকে জানানো যাবে না। জানালে সমস্যার সমাধান তো হবে না। বরং সমস্যা আরও বাড়বে। তোমার ছেলে,মেয়ে ও স্বামীর ক্ষতি হবে। নারী চিকিৎসক ভয়ে দরবেশের কথায় তার ভক্ত হয়ে যান।
এরপরই কথিত দরবেশ বাবা বিভিন্ন ধাপে বিভিন্ন সময়ে অলোকিক সমস্যার কথা বলে প্রলোভন ও ভয়-ভীতির মাধ্যমে ওই নারী ডাক্তার থেকে মোট ২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়।
পরবর্তীতে সিআইডি একটি নম্বরের সূত্র ধরে মাগুরা থেকে আশিকুর রহমান নামে একজনকে গ্রেফতার করে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়,এটি একটি সংঘবদ্ব চক্র। এই চক্রের বিভিন্ন টেকনিক্যাল সাপোর্ট ,বেনামে রেজিস্ট্রেশন করা সিম এবং ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেয়ার কাজ করে সে। প্রতারক আশিকের দেয়া তথ্য মতে, ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে কথিত দরবেশ পরিচয়দানকারি ১৮ আসামিকে গ্রেফতার করেছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এই চক্র জানিয়েছে,তারা ২০২০ ও ২০২১ সাল থেকে এই প্রতারণার সঙ্গে জড়িত। প্রথম দিকে তারা বিভিন্ন পত্র পত্রিকা ও টিভি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন দিতেন। পরবর্তীতে তারা ইউটিউব ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতারণ্রা বিজ্ঞাপন দিতে থাকে। ভূক্তভোগী সাধারণ মানুষ তাদের দেয়া মোবাইল নম্বরে ফোন দিলে সমস্যার সমাধানের নামে ভয়-ভীতি ও নানা প্রলোভন দেখিয়ে এমএফএস নম্বরে টাকা হাতিয়ে নিত চক্রটি। আসামিদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহ্নত ৪টি মোবাইল ফোন,বিপুল সংখ্যক সিমকার্ড ও ডিজিটাল আলামত উদ্ধার করা হয়েছে।