দুই হাজার কোটি অর্থ পাচারের মামলায় অভিযোগপত্রে নাম আসা সকল আসামিকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছে ঢাকার একটি আদালত।
সোমবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকা মহানগর বিশেষ সিনিয়র দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আলসামস জগলুল হোসেন এই আদেশ দেন।
এদিন পুলিশের অপরাধ তদন্ত সংস্থা সিআইডির জমা দেওয়া অভিযোগপত্র গ্রহণের ওপর শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।
আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) তাপস পাল জানান, এই মামলায় ১০টি প্রতিষ্ঠান এবং ৩৭ জন ব্যক্তির নাম এসেছে অভিযোগপত্রে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ নেতা বিপুল ঘোষ, রেজাউল করিম পান্নু, রিজিয়া বেগম, আবু সাদেক মুকুলকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
তাপস পাল জানান, এই মামলায় তিন আসামি কারাগারে এবং সাত জন সাতজন জামিনে আছেন।
২০২০ সালের ২৬ জুন রাজধানীর কাফরুল থানায় অর্থ পাচারের অভিযোগে সাবেক স্থানীয় সরকার মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত ফরিদপুরের আলোচিত দুই ভাই সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও ইমতিয়াজ হাসান রুবেলের বিরুদ্ধে সিআইডির পরিদর্শক এস এম মিরাজ আল মাহমুদ মামলাটি করেন।
এতে ওই দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে দুই হাজার কোটি টাকার সম্পদ অবৈধ উপায়ে উপার্জন ও পাচারের অভিযোগ আনা হয়।
এজাহারে বলা হয়, ২০১০ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ফরিদপুরের এলজিইডি, বিআরটিএ, গণপূর্ত বিভাগসহ বিভিন্ন সরকারি বিভাগের ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ করে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন বরকত-রুবেল। এছাড়া মাদক কারবার, ভূমি দখল করে অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন তারা।
মামলায় বলা হয়, এই দুই ভাই ২৩টি বাস, ট্রাক, বোল্ডার, পাজেরো গাড়ির মালিক হয়েছেন। টাকার একটি অংশ হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে পাচার করেছেন।
২০২১ সালের ৩ মার্চ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার উত্তম কুমার সাহা ১০ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র জমা দেন।
ওই বছরের ১ সেপ্টেম্বর অভিযোগপত্র গঠনের শুনানির দিন কিছু অসঙ্গতি দেখতে পেয়ে আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে আবার তদন্তের নির্দেশ দেয়।
সিআইডি নতুন করে আরও ৩৭ জনকে আসামি করে মোট ৪৭ জন ও ১০ প্রতিষ্ঠানকে আসামি করে অভিযোগপত্র জমা দেন সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রায়হানউদ্দিন।
গ্রেপ্তারের আসামিরা হলেন, ফরিদপুর সদর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম চৌধুরী, সাবেক পৌর মেয়র শেখ মাহতাব আলী মেথু, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান পৌর মেয়র অমিতাব বোস।
জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অনিমেষ রায়, ফরিদপুর চেম্বারের সাবেক সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, সাবেক ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মোকাররম মিয়া বাবু, জেলা শ্রমিক লীগের একাংশের সভাপতি ও জেলা মোটর ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর কাউন্সিলর গোলাম মো. নাছির, জেলা আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় সম্পাদক দীপক মজুমদারকেও আসামি করা হয়েছে।
আসামিদের মধ্যে আছেন ঈশান-গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম মজনু, কানাইপুরের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ফকির মো. বেলায়েত হোসেন, বিটিভির ফরিদপুর জেলা সংবাদদাতা সাজ্জাদ হোসেন বাবু, ঠিকাদার খন্দকার শাহিন ওরফে পান শাহিন, সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা সাহেব সরোয়ার।
ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম জীবন, সাবেক মন্ত্রী মোশাররফ হোসেনের এপিএসের দায়িত্ব পালন করা সত্যজিৎ মুখার্জি, ব্যবসায়ী আজমল হোসেন খান ওরফে ছোট আজম, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা খলিফা কামাল উদ্দিনও আসামি হয়েছেন।
খাবাসপুরের ব্যবসায়ী জামাল মিয়া, সাবেক কাউন্সিলর নাজিফুল ইসলাম তাপস, সাবেক যুবলীগ নেতা চৌধুরী হাসান, বরকত-রুবেলের দূর সম্পর্কের আত্মীয় হারুন মণ্ডল, বরকতের স্ত্রী আফরোজ পারভীন, রুবেলের স্ত্রী সোহেলী ইমরুজকেও আসামি করা হয়েছে।
ব্যবসায়ী বিলাল হোসেন, যুবলীগ নেতা স্বপন কুমার পাল, ফরিদপুর আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও জেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক জাহিদ ব্যাপারী, ব্যবসায় বেলায়েত মোল্লা, আহসান হোসেন খান, আবজাল হোসেন খান সিপলুকেও আসামি করা হয়েছে।
অন্য আসামিরা হলেন: মাহফুজুর রহমান মামুন, সুমন সাহা, আব্দুল জলিল শেখ, আনোয়ার হোসেন আবু, রফিক মন্ডল, ব্যবসায়ী রিয়াজ আহমেদ, নিশান মাহমুদ শামিম এবং ঢাকা টাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমের সম্পাদক আরিফুর রহমান দোলন।
মামলায় আগে থেকে আসামি হিসাবে নথিভুক্ত ছিলেন ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি নাজমুল ইসলাম খন্দকার লেভী, আসিকুর রহমান ফারহান, সাবেক মন্ত্রীর ভাই খন্দকার মোহ্তেশাম হোসেন বাবর, সাবেক মন্ত্রীর এপিএস এএইচএম ফোয়াদ, যুবলীগ নেতা ফাহাদ বিন ওয়াজেদ ফাহিম, কামরুল হাসান ডেভিড, মুহাম্মদ আলী মিনার ও তারিকুল ইসলাম নাসিম।
২০২০ সালের ১৬ মে রাতে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবল চন্দ্র সাহার বাড়িতে দুই দফা হামলার ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় ১৮ মে সুবল সাহা অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা করেন। এরপর ৭ জুন রাতে শহরের বদরপুরসহ বিভিন্ন মহল্লায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ বরকত, রুবেল সহ মোট ৯ জনকে গ্রেপ্তার করে।
সোমবার, ২২ এপ্রিল ২০২৪
দুই হাজার কোটি অর্থ পাচারের মামলায় অভিযোগপত্রে নাম আসা সকল আসামিকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছে ঢাকার একটি আদালত।
সোমবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকা মহানগর বিশেষ সিনিয়র দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আলসামস জগলুল হোসেন এই আদেশ দেন।
এদিন পুলিশের অপরাধ তদন্ত সংস্থা সিআইডির জমা দেওয়া অভিযোগপত্র গ্রহণের ওপর শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।
আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) তাপস পাল জানান, এই মামলায় ১০টি প্রতিষ্ঠান এবং ৩৭ জন ব্যক্তির নাম এসেছে অভিযোগপত্রে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ নেতা বিপুল ঘোষ, রেজাউল করিম পান্নু, রিজিয়া বেগম, আবু সাদেক মুকুলকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
তাপস পাল জানান, এই মামলায় তিন আসামি কারাগারে এবং সাত জন সাতজন জামিনে আছেন।
২০২০ সালের ২৬ জুন রাজধানীর কাফরুল থানায় অর্থ পাচারের অভিযোগে সাবেক স্থানীয় সরকার মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত ফরিদপুরের আলোচিত দুই ভাই সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও ইমতিয়াজ হাসান রুবেলের বিরুদ্ধে সিআইডির পরিদর্শক এস এম মিরাজ আল মাহমুদ মামলাটি করেন।
এতে ওই দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে দুই হাজার কোটি টাকার সম্পদ অবৈধ উপায়ে উপার্জন ও পাচারের অভিযোগ আনা হয়।
এজাহারে বলা হয়, ২০১০ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ফরিদপুরের এলজিইডি, বিআরটিএ, গণপূর্ত বিভাগসহ বিভিন্ন সরকারি বিভাগের ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ করে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন বরকত-রুবেল। এছাড়া মাদক কারবার, ভূমি দখল করে অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন তারা।
মামলায় বলা হয়, এই দুই ভাই ২৩টি বাস, ট্রাক, বোল্ডার, পাজেরো গাড়ির মালিক হয়েছেন। টাকার একটি অংশ হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে পাচার করেছেন।
২০২১ সালের ৩ মার্চ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার উত্তম কুমার সাহা ১০ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র জমা দেন।
ওই বছরের ১ সেপ্টেম্বর অভিযোগপত্র গঠনের শুনানির দিন কিছু অসঙ্গতি দেখতে পেয়ে আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে আবার তদন্তের নির্দেশ দেয়।
সিআইডি নতুন করে আরও ৩৭ জনকে আসামি করে মোট ৪৭ জন ও ১০ প্রতিষ্ঠানকে আসামি করে অভিযোগপত্র জমা দেন সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রায়হানউদ্দিন।
গ্রেপ্তারের আসামিরা হলেন, ফরিদপুর সদর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম চৌধুরী, সাবেক পৌর মেয়র শেখ মাহতাব আলী মেথু, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান পৌর মেয়র অমিতাব বোস।
জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অনিমেষ রায়, ফরিদপুর চেম্বারের সাবেক সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, সাবেক ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মোকাররম মিয়া বাবু, জেলা শ্রমিক লীগের একাংশের সভাপতি ও জেলা মোটর ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর কাউন্সিলর গোলাম মো. নাছির, জেলা আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় সম্পাদক দীপক মজুমদারকেও আসামি করা হয়েছে।
আসামিদের মধ্যে আছেন ঈশান-গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম মজনু, কানাইপুরের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ফকির মো. বেলায়েত হোসেন, বিটিভির ফরিদপুর জেলা সংবাদদাতা সাজ্জাদ হোসেন বাবু, ঠিকাদার খন্দকার শাহিন ওরফে পান শাহিন, সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা সাহেব সরোয়ার।
ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম জীবন, সাবেক মন্ত্রী মোশাররফ হোসেনের এপিএসের দায়িত্ব পালন করা সত্যজিৎ মুখার্জি, ব্যবসায়ী আজমল হোসেন খান ওরফে ছোট আজম, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা খলিফা কামাল উদ্দিনও আসামি হয়েছেন।
খাবাসপুরের ব্যবসায়ী জামাল মিয়া, সাবেক কাউন্সিলর নাজিফুল ইসলাম তাপস, সাবেক যুবলীগ নেতা চৌধুরী হাসান, বরকত-রুবেলের দূর সম্পর্কের আত্মীয় হারুন মণ্ডল, বরকতের স্ত্রী আফরোজ পারভীন, রুবেলের স্ত্রী সোহেলী ইমরুজকেও আসামি করা হয়েছে।
ব্যবসায়ী বিলাল হোসেন, যুবলীগ নেতা স্বপন কুমার পাল, ফরিদপুর আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও জেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক জাহিদ ব্যাপারী, ব্যবসায় বেলায়েত মোল্লা, আহসান হোসেন খান, আবজাল হোসেন খান সিপলুকেও আসামি করা হয়েছে।
অন্য আসামিরা হলেন: মাহফুজুর রহমান মামুন, সুমন সাহা, আব্দুল জলিল শেখ, আনোয়ার হোসেন আবু, রফিক মন্ডল, ব্যবসায়ী রিয়াজ আহমেদ, নিশান মাহমুদ শামিম এবং ঢাকা টাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমের সম্পাদক আরিফুর রহমান দোলন।
মামলায় আগে থেকে আসামি হিসাবে নথিভুক্ত ছিলেন ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি নাজমুল ইসলাম খন্দকার লেভী, আসিকুর রহমান ফারহান, সাবেক মন্ত্রীর ভাই খন্দকার মোহ্তেশাম হোসেন বাবর, সাবেক মন্ত্রীর এপিএস এএইচএম ফোয়াদ, যুবলীগ নেতা ফাহাদ বিন ওয়াজেদ ফাহিম, কামরুল হাসান ডেভিড, মুহাম্মদ আলী মিনার ও তারিকুল ইসলাম নাসিম।
২০২০ সালের ১৬ মে রাতে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবল চন্দ্র সাহার বাড়িতে দুই দফা হামলার ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় ১৮ মে সুবল সাহা অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা করেন। এরপর ৭ জুন রাতে শহরের বদরপুরসহ বিভিন্ন মহল্লায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ বরকত, রুবেল সহ মোট ৯ জনকে গ্রেপ্তার করে।