কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে গত দেড় বছরে ৮০ জন খুন হয়েছে। এর মধ্যে ২০২৩ সালে ৬৪ জন ও এবছর এখন পর্যন্ত আরও ১৬ জন হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছেন।
এসব হত্যাকান্ডগুলোর অধিকাংশই আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে। এই প্রেক্ষিতে বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে ১১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। যাদের মধ্যে সশস্ত্র সংগঠন আরসার সদস্যরা রয়েছেন।
তাদের কাছ থেকে গতকাল পর্যন্ত ৫১ কেজির বেশি বিষ্ফোরক, ১২টি বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র, ৫৩টি দেশি আগ্নেয়াস্ত্র, ১৫৩ রাউন্ড গুলি ও কার্তুজ। ৬৭ রাউন্ড গুলির খোসা, ৪টি আইডি ও ৩৫টি ককটেল উদ্ধার করা হয়েছে।
এসব অভিযানের মুখে আরসা কিছুটা নিষ্ক্রিয় ও নেতৃত্ব শূন্য হয়ে পড়েছে বলে মনে করে র্যাব। তবে তারা নতুন করে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছে বলে জানায় র্যাব। সে কারণেই এখানে র্যাবের গোয়েন্দা কার্যক্রম ও নজরদারী আরও বাড়ানো হয়েছে।
আরসার প্রধান সমন্বয়ক ও কমান্ডার গ্রেপ্তার
এদিকে গতকাল ভোরে র্যাব-১৫ টিম কক্্রবাজারের উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন লাল পাহাড়ে আরসার আস্তানায় অভিযান চালিয়ে আরসার প্রধান সমন্বয়ক ও কমান্ডার শাহনুর প্রকাশ মাস্টার সলিমসহ দুই জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে ৫টি গ্রেনেড, ৩টি রাইফেল গ্রেনেড, ১০টি দেশে তৈরি হ্যান্ড গ্রেনেড, ১৩টি ককটেল, ১টি বিদেশি রিভলবার, ৯ রাউন্ড নাইম এমএম পিস্তলের গুলি, ১টি এলজি ও তিনটি ১২ বোরের কার্তুজ উদ্ধার করছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- ১. শাহনুর প্রকাশ মাস্টার সলিম, তার পিতার নাম সৈয়দুর আবেরা, মায়ের ছরিয়া বিবি, উখিয়া ১৫ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্প তার ঠিকানা। ২. মো. রিয়াজ, পিতা মোহাম্মদ নূর, মায়ের নাম জোহরা বেগম, ৮/ডবিউ রোহিঙ্গা ক্যাম্প, ব্লক-এ/২৩ বালুখালী উখিয়া।
গ্রেপ্তারকৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে র্যাবকে জানিয়েছে, তারা পার্শ্ববর্তী দেশের নাগরিক। গ্রেপ্তারকৃত শাহনুর প্রকাশ মাস্টার সলিম ২০১৭ সালে মায়ানমার থেকে অবৈধ ভাবে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এরপর থেকে রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১৫তে বসবাস শুরু করে। সে মায়ানমারে থাকা অবস্থায় সেখানকার জোন কমান্ডারের দায়িত্বে ছিল। এ ছাড়াও আরসা প্রধান আতাউল্লাহ আবু আম্মার জোনিয়র দেহরক্ষী হিসেবে দুই মাস দায়িত্ব পালন করেছে। বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থী হিসেবে ২০১৭ সালে আরসার পর মৌলভী আকিজের মাধ্যমে আরসায় পুনরায় যোগদান করেন।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আরসার হয়ে আধিপত্য বিস্তার, কোন্দলসহ খুন, অপহরণ, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধে সম্পৃক্ত হয়ে পড়ে। অস্ত্র চালানোসহ বিভিন্ন বিষ্ফোরণের ওপর সে পারদর্শী।
প্রাথমিকভাবে ক্যাম্প-১৫ কমান্ডার হিসেবে তাকে নিয়োগ দেয়া হয়। সম্প্রতিক সময় বাংলাদেশে আরসার নেতৃত্ব শূণ্য হয়ে পড়ায় সে বাংলাদেশে আরসার প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব নেয়। মায়ানমারের সৃষ্ট সংঘর্ষের ফলে লুটকৃত অস্ত্র-গোলাবারুদ বিভিন্ন মাধ্যম হতে সংগ্রহ করে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ত্রাস সৃষ্টি করে। ফলে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পুনরায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে মারামারি, সংঘর্ষ ও হত্যার ঘটনা ঘটেছে। তার বিরুদ্ধে তিনটি হত্যা মামলাসহ অন্যান্য অপরাধে একাধিক মামলা রয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃত রিয়াজ মায়ানমার থেকে অবৈধ ভাবে বাংলাদেশে ঢুকেছে। সে ২০১৮ সালে মৌলভী মো. ইব্রাহিমের মাধ্যমে আরসায় যোগদান করে। প্রাথমিকভাবে আরসার হয়ে পাহারাদারের দায়িত্ব পালন করে। এ সময় সে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ আরসা বিরোধী সংগঠনের সদস্যদের গতিবিধি লক্ষ্য করত। ২০১৯ সালের মাঝামাঝি সময় পূণরায় মায়ানমার ফিরে যায়।
সেখানে ৬ মাসের সামরিক বিভিন্ন বিষয়াদিসহ মাইন, বোমা, হাত বোমা ও বিষ্ফোরক তৈরিতে প্রশিক্ষণ নেয়। পরবর্তীতে পুনরায় বাংলাদেশে ঢুকে গ্রেপ্তারকৃত মাস্টার সলিমের সহযোগী হয়ে বিভিন্ন অপরাধ মূলক কর্মকান্ডে অংশ গ্রহণ করে বলে জানা গেছে। তার বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা রয়েছে।
বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪
কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে গত দেড় বছরে ৮০ জন খুন হয়েছে। এর মধ্যে ২০২৩ সালে ৬৪ জন ও এবছর এখন পর্যন্ত আরও ১৬ জন হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছেন।
এসব হত্যাকান্ডগুলোর অধিকাংশই আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে। এই প্রেক্ষিতে বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে ১১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। যাদের মধ্যে সশস্ত্র সংগঠন আরসার সদস্যরা রয়েছেন।
তাদের কাছ থেকে গতকাল পর্যন্ত ৫১ কেজির বেশি বিষ্ফোরক, ১২টি বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র, ৫৩টি দেশি আগ্নেয়াস্ত্র, ১৫৩ রাউন্ড গুলি ও কার্তুজ। ৬৭ রাউন্ড গুলির খোসা, ৪টি আইডি ও ৩৫টি ককটেল উদ্ধার করা হয়েছে।
এসব অভিযানের মুখে আরসা কিছুটা নিষ্ক্রিয় ও নেতৃত্ব শূন্য হয়ে পড়েছে বলে মনে করে র্যাব। তবে তারা নতুন করে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছে বলে জানায় র্যাব। সে কারণেই এখানে র্যাবের গোয়েন্দা কার্যক্রম ও নজরদারী আরও বাড়ানো হয়েছে।
আরসার প্রধান সমন্বয়ক ও কমান্ডার গ্রেপ্তার
এদিকে গতকাল ভোরে র্যাব-১৫ টিম কক্্রবাজারের উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন লাল পাহাড়ে আরসার আস্তানায় অভিযান চালিয়ে আরসার প্রধান সমন্বয়ক ও কমান্ডার শাহনুর প্রকাশ মাস্টার সলিমসহ দুই জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে ৫টি গ্রেনেড, ৩টি রাইফেল গ্রেনেড, ১০টি দেশে তৈরি হ্যান্ড গ্রেনেড, ১৩টি ককটেল, ১টি বিদেশি রিভলবার, ৯ রাউন্ড নাইম এমএম পিস্তলের গুলি, ১টি এলজি ও তিনটি ১২ বোরের কার্তুজ উদ্ধার করছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- ১. শাহনুর প্রকাশ মাস্টার সলিম, তার পিতার নাম সৈয়দুর আবেরা, মায়ের ছরিয়া বিবি, উখিয়া ১৫ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্প তার ঠিকানা। ২. মো. রিয়াজ, পিতা মোহাম্মদ নূর, মায়ের নাম জোহরা বেগম, ৮/ডবিউ রোহিঙ্গা ক্যাম্প, ব্লক-এ/২৩ বালুখালী উখিয়া।
গ্রেপ্তারকৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে র্যাবকে জানিয়েছে, তারা পার্শ্ববর্তী দেশের নাগরিক। গ্রেপ্তারকৃত শাহনুর প্রকাশ মাস্টার সলিম ২০১৭ সালে মায়ানমার থেকে অবৈধ ভাবে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এরপর থেকে রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১৫তে বসবাস শুরু করে। সে মায়ানমারে থাকা অবস্থায় সেখানকার জোন কমান্ডারের দায়িত্বে ছিল। এ ছাড়াও আরসা প্রধান আতাউল্লাহ আবু আম্মার জোনিয়র দেহরক্ষী হিসেবে দুই মাস দায়িত্ব পালন করেছে। বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থী হিসেবে ২০১৭ সালে আরসার পর মৌলভী আকিজের মাধ্যমে আরসায় পুনরায় যোগদান করেন।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আরসার হয়ে আধিপত্য বিস্তার, কোন্দলসহ খুন, অপহরণ, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধে সম্পৃক্ত হয়ে পড়ে। অস্ত্র চালানোসহ বিভিন্ন বিষ্ফোরণের ওপর সে পারদর্শী।
প্রাথমিকভাবে ক্যাম্প-১৫ কমান্ডার হিসেবে তাকে নিয়োগ দেয়া হয়। সম্প্রতিক সময় বাংলাদেশে আরসার নেতৃত্ব শূণ্য হয়ে পড়ায় সে বাংলাদেশে আরসার প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব নেয়। মায়ানমারের সৃষ্ট সংঘর্ষের ফলে লুটকৃত অস্ত্র-গোলাবারুদ বিভিন্ন মাধ্যম হতে সংগ্রহ করে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ত্রাস সৃষ্টি করে। ফলে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পুনরায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে মারামারি, সংঘর্ষ ও হত্যার ঘটনা ঘটেছে। তার বিরুদ্ধে তিনটি হত্যা মামলাসহ অন্যান্য অপরাধে একাধিক মামলা রয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃত রিয়াজ মায়ানমার থেকে অবৈধ ভাবে বাংলাদেশে ঢুকেছে। সে ২০১৮ সালে মৌলভী মো. ইব্রাহিমের মাধ্যমে আরসায় যোগদান করে। প্রাথমিকভাবে আরসার হয়ে পাহারাদারের দায়িত্ব পালন করে। এ সময় সে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ আরসা বিরোধী সংগঠনের সদস্যদের গতিবিধি লক্ষ্য করত। ২০১৯ সালের মাঝামাঝি সময় পূণরায় মায়ানমার ফিরে যায়।
সেখানে ৬ মাসের সামরিক বিভিন্ন বিষয়াদিসহ মাইন, বোমা, হাত বোমা ও বিষ্ফোরক তৈরিতে প্রশিক্ষণ নেয়। পরবর্তীতে পুনরায় বাংলাদেশে ঢুকে গ্রেপ্তারকৃত মাস্টার সলিমের সহযোগী হয়ে বিভিন্ন অপরাধ মূলক কর্মকান্ডে অংশ গ্রহণ করে বলে জানা গেছে। তার বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা রয়েছে।