সরেজমিন রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতাল
রাজধানীর রামপুরা টিভি ভবন ও ডেমরার কাজলা এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যদের হত্যার টার্গেট নিয়ে মাথায় আঘাত করা হয়েছে। শুধু তাই না তাদের হাত-পা ভেঙে দেয়া হয়েছে। এই ভাবে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে রাজধানীসহ সারাদেশে এক হাজার ১শ’র বেশি পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্য নানা ভাবে আহত হয়েছেন। তার মধ্যে ইন্সপেক্টরসহ ৩ জনের মৃত্যুর খবর জানা গেছে। এই সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
একেক জন পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যের মাথায় ৬০ থেকে ৩০টি পর্যন্ত সেলাই লেগেছে। কারো কারো মাথার খুলিতে ইনফেকশন দেখা দিয়েছে। তাদেরকে রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। হাসপাতালের ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে এই সব রোগীদের চিকিৎসা চলছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) বিকেলে সরজমিনে রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে এই সব দৃশ্য দেখা গেছে। অপরাধ বিশেষজ্ঞদের মতে, পুলিশের ওপর ক্ষোভ থেকে পরিকল্পিত ভাবে তীব্র আঘাত করেছে নাশকতারিরা।
রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের দায়িত্ব প্রাপ্ত ডিআইজি শেখ রেজাউল হায়দার জানান, আঘাতের ধরন দেখে মনে হচ্ছে, হত্যার টার্গেট নিয়ে পরিকল্পিত ভাবে পুলিশ কর্মকর্তাদের ওপর আক্রমণ চালানো হয়েছে। তাদের মাথায় ধারালো অস্ত্রের (দা, চাপাতি, ছুরি) আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
এখনও হাসপাতালের ক্যাজুয়ালটি ওয়ার্ডে ৫৮ জন পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্য ভর্তি আছে। মারাত্বক আঘাত প্রাপ্ত ৬৯ জন ভর্তি ছিল। সব মিলিয়ে শুধু রাজাবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে ২৫২ জনের মতো ভর্তি হয়েছে।
চিকিৎসকরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে তাদেরকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। একজনের মাথার খুলিতে ইনফেকশন দেখা দেয়ায় তাকে নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
তার মতে, সারাদেশে নাশকতার তা-বের সময় ১ হাজার ১শ’ ৬ জন পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্য আহত হয়েছে। তারমধ্যে ডিএমপির ২৩০ জনের অপারেশন করতে হয়েছে।
সরজমিনে হাসাপাতাল
ভর্তিকৃত পুলিশ সদস্য আমিনুল ইসলাম জানান, রাজধানীর খিলগাঁও থানায় তিনি কর্মরত। ঘটনার দিন রামপুরা টিভি সেন্টারের কাছে তার ডিউটি ছিল। টিভি সেন্টারে হামলার সময় বাড্ডা ও বনশ্রী ও ওয়াপদা রোডসহ তিন দিক থেকে তাদেরকে ঘেরাও করে ইট, পাথর নিক্ষেপ, বাম হাতে আঘাত, মাথায় হেলমেট, রড ও হকিস্টিক দিয়ে পিটিয়ে আহত করেছে। তার মাথায় চিকিৎসকরা অপারেশন করে ৬০টি সেলাই দিয়েছে।
তার হাত ও শরীরের অন্যান্য স্থান থেতলানো। তার ঘাড়ে নির্যাতনের আলামত রয়েছে। হাসপাতালের বেডেই যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। চিকিৎসক ও নার্স ছাড়াও পরিবারের স্বজনরা সর্বক্ষণ তার পাশে অবস্থান করছেন। হাসপাতাল থেকে সব ধরনের ওষুধ সরবরাহ করা হয়। তাদের চিকিৎসার কোনো ঘাটতি নেই।
হাসপাতালে ভর্তিকৃত আহত পুলিশ সদস্য রফিকুল ইসলাম জানান, রাজধানীর আদাবর থানায় তিনি কর্মরত। কোটা আন্দোলনের সময় যাত্রাবাড়ী থানা এলাকায় তিনি পেশাগত দায়িত্ব পালন করছিলেন। যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভারের তার ওপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়। হামলাকারীরা প্রথমে তার মাথায় আঘাত করেছে। তিনি অচেতন হয়ে গেলে তার হাত-পাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে নির্যাতন চালানো হয়। খবর পেয়ে সহকর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছে।
এয়ারপোর্ট থানায় কর্মরত পুলিশ সদস্য আবদুল্লাহ আল-কাইয়ুম যাত্রাবাড়ী এলাকায় ডিউটি শেষে বাসায় ফেরার পথে বাঁশ ও কাঠ দিয়ে তার মাথা লক্ষ্য করে মারপিট করে। তার মাথায় মোট ৪৫টি সেলাই লেগেছে।
এসআই রেজাউল হাসপাতাল বেডে শুয়ে সংবাদকে জানান, তিনি গেন্ডারিয়া থানায় কর্মরত। যাত্রাবাড়ীতে কোটা আন্দোলনের সময় ডিউটি শেষ করে ফেরার পথে তার হাত, মাথা ও পিঠ, গলা ও চোখ ও মুখসহ সমস্ত শরীরে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে মারাত্বক ভাবে আহত করেছে।
এসআই অনুব বিশ্বাস রামপুরা থানায় কর্মরত। তার মাথায় ২৫টি সেলাই লেগেছে। বাম হাত ভাঙা। কব্জি ভাঙা, হাতে ও পিঠে নির্যাতন করে থেতলিয়ে দেয়া হয়েছে।
ফারুক হোসেন নামে আরেকজন পুলিশ সদস্য তার হাত-পাসহ সমস্ত শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এছাড়াও মোস্তাক আহমেদ নামে আরেকজন পুলিশ সদস্যকে মাথায় সেলাইসহ সমস্ত শরীরে নির্যাতন করা হয়েছে। তার অবস্থা খুবই খারাপ।
পুলিশ হাসপাতাল থেকে জানা গেছে, এখন ভর্তিকৃত ৫৮ জন পুলিশ কর্মকর্তাও সদস্যের সমস্ত শরীরে নাশকতাকারিরা পরিকল্পিত ভাবে পুলিশের ওপর হামলা ও তা-ব চালিয়েছে। ঢাকা ছাড়াও ঢাকার বাইরে আরও অনেকেই নাশকতার শিকার হয়েছেন। তারা ঢাকার বাইরে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। ১১শ’র বেশি পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। তিন জনের মৃত্যুর খবর পুলিশ সদর দপ্তর থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে।
জানা গেছে, ডিউটি শেষে বাসায় ফেরার পথে অনেক পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যের পরিচয় জানার পর তাদের ওপর টার্গেট করে হামলা ও তা-ব চালানো হয়েছে। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে এই হামলা চালানো হয়।
সরেজমিন রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতাল
শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪
রাজধানীর রামপুরা টিভি ভবন ও ডেমরার কাজলা এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যদের হত্যার টার্গেট নিয়ে মাথায় আঘাত করা হয়েছে। শুধু তাই না তাদের হাত-পা ভেঙে দেয়া হয়েছে। এই ভাবে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে রাজধানীসহ সারাদেশে এক হাজার ১শ’র বেশি পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্য নানা ভাবে আহত হয়েছেন। তার মধ্যে ইন্সপেক্টরসহ ৩ জনের মৃত্যুর খবর জানা গেছে। এই সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
একেক জন পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যের মাথায় ৬০ থেকে ৩০টি পর্যন্ত সেলাই লেগেছে। কারো কারো মাথার খুলিতে ইনফেকশন দেখা দিয়েছে। তাদেরকে রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। হাসপাতালের ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে এই সব রোগীদের চিকিৎসা চলছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) বিকেলে সরজমিনে রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে এই সব দৃশ্য দেখা গেছে। অপরাধ বিশেষজ্ঞদের মতে, পুলিশের ওপর ক্ষোভ থেকে পরিকল্পিত ভাবে তীব্র আঘাত করেছে নাশকতারিরা।
রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের দায়িত্ব প্রাপ্ত ডিআইজি শেখ রেজাউল হায়দার জানান, আঘাতের ধরন দেখে মনে হচ্ছে, হত্যার টার্গেট নিয়ে পরিকল্পিত ভাবে পুলিশ কর্মকর্তাদের ওপর আক্রমণ চালানো হয়েছে। তাদের মাথায় ধারালো অস্ত্রের (দা, চাপাতি, ছুরি) আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
এখনও হাসপাতালের ক্যাজুয়ালটি ওয়ার্ডে ৫৮ জন পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্য ভর্তি আছে। মারাত্বক আঘাত প্রাপ্ত ৬৯ জন ভর্তি ছিল। সব মিলিয়ে শুধু রাজাবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে ২৫২ জনের মতো ভর্তি হয়েছে।
চিকিৎসকরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে তাদেরকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। একজনের মাথার খুলিতে ইনফেকশন দেখা দেয়ায় তাকে নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
তার মতে, সারাদেশে নাশকতার তা-বের সময় ১ হাজার ১শ’ ৬ জন পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্য আহত হয়েছে। তারমধ্যে ডিএমপির ২৩০ জনের অপারেশন করতে হয়েছে।
সরজমিনে হাসাপাতাল
ভর্তিকৃত পুলিশ সদস্য আমিনুল ইসলাম জানান, রাজধানীর খিলগাঁও থানায় তিনি কর্মরত। ঘটনার দিন রামপুরা টিভি সেন্টারের কাছে তার ডিউটি ছিল। টিভি সেন্টারে হামলার সময় বাড্ডা ও বনশ্রী ও ওয়াপদা রোডসহ তিন দিক থেকে তাদেরকে ঘেরাও করে ইট, পাথর নিক্ষেপ, বাম হাতে আঘাত, মাথায় হেলমেট, রড ও হকিস্টিক দিয়ে পিটিয়ে আহত করেছে। তার মাথায় চিকিৎসকরা অপারেশন করে ৬০টি সেলাই দিয়েছে।
তার হাত ও শরীরের অন্যান্য স্থান থেতলানো। তার ঘাড়ে নির্যাতনের আলামত রয়েছে। হাসপাতালের বেডেই যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। চিকিৎসক ও নার্স ছাড়াও পরিবারের স্বজনরা সর্বক্ষণ তার পাশে অবস্থান করছেন। হাসপাতাল থেকে সব ধরনের ওষুধ সরবরাহ করা হয়। তাদের চিকিৎসার কোনো ঘাটতি নেই।
হাসপাতালে ভর্তিকৃত আহত পুলিশ সদস্য রফিকুল ইসলাম জানান, রাজধানীর আদাবর থানায় তিনি কর্মরত। কোটা আন্দোলনের সময় যাত্রাবাড়ী থানা এলাকায় তিনি পেশাগত দায়িত্ব পালন করছিলেন। যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভারের তার ওপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়। হামলাকারীরা প্রথমে তার মাথায় আঘাত করেছে। তিনি অচেতন হয়ে গেলে তার হাত-পাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে নির্যাতন চালানো হয়। খবর পেয়ে সহকর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছে।
এয়ারপোর্ট থানায় কর্মরত পুলিশ সদস্য আবদুল্লাহ আল-কাইয়ুম যাত্রাবাড়ী এলাকায় ডিউটি শেষে বাসায় ফেরার পথে বাঁশ ও কাঠ দিয়ে তার মাথা লক্ষ্য করে মারপিট করে। তার মাথায় মোট ৪৫টি সেলাই লেগেছে।
এসআই রেজাউল হাসপাতাল বেডে শুয়ে সংবাদকে জানান, তিনি গেন্ডারিয়া থানায় কর্মরত। যাত্রাবাড়ীতে কোটা আন্দোলনের সময় ডিউটি শেষ করে ফেরার পথে তার হাত, মাথা ও পিঠ, গলা ও চোখ ও মুখসহ সমস্ত শরীরে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে মারাত্বক ভাবে আহত করেছে।
এসআই অনুব বিশ্বাস রামপুরা থানায় কর্মরত। তার মাথায় ২৫টি সেলাই লেগেছে। বাম হাত ভাঙা। কব্জি ভাঙা, হাতে ও পিঠে নির্যাতন করে থেতলিয়ে দেয়া হয়েছে।
ফারুক হোসেন নামে আরেকজন পুলিশ সদস্য তার হাত-পাসহ সমস্ত শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এছাড়াও মোস্তাক আহমেদ নামে আরেকজন পুলিশ সদস্যকে মাথায় সেলাইসহ সমস্ত শরীরে নির্যাতন করা হয়েছে। তার অবস্থা খুবই খারাপ।
পুলিশ হাসপাতাল থেকে জানা গেছে, এখন ভর্তিকৃত ৫৮ জন পুলিশ কর্মকর্তাও সদস্যের সমস্ত শরীরে নাশকতাকারিরা পরিকল্পিত ভাবে পুলিশের ওপর হামলা ও তা-ব চালিয়েছে। ঢাকা ছাড়াও ঢাকার বাইরে আরও অনেকেই নাশকতার শিকার হয়েছেন। তারা ঢাকার বাইরে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। ১১শ’র বেশি পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। তিন জনের মৃত্যুর খবর পুলিশ সদর দপ্তর থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে।
জানা গেছে, ডিউটি শেষে বাসায় ফেরার পথে অনেক পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যের পরিচয় জানার পর তাদের ওপর টার্গেট করে হামলা ও তা-ব চালানো হয়েছে। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে এই হামলা চালানো হয়।