নড়াইলের লোহাগড়ার নোয়াগ্রামের বাসিন্দা প্রবাসী আমিরুল ইসলাম ওরফে টনিক দীর্ঘদিন পর দেশে ফেরেন। এরপর আর বিদেশ না গিয়ে জমানো টাকা দিয়ে দেশেই ব্যবসা করার পরিকল্পনা করেন। জমানো টাকা থেকে তিনি প্রথমে একটি ট্রাক কিনেন। এরপর একটি মাইক্রোবাস কেনার জন্য রাজধানীর একটি গাড়ির শো রুমের মালিকের সঙ্গে চুক্তি করেন। চুক্তি মোতাবেক গাড়ি কেনার জন্য ব্যাংক থেকে টাকা উঠিয়ে নিজ বাড়িতে ঘরের মধ্যে আলমারিতে রাখেন। গাড়ি কেনা ও ব্যাংক থেকে টাকা উঠানোর সব কিছুই জানত তার আপন চাচাত ভাই তুষার শেখ। টাকার বান্ডিল ঘরের আলমারিতে রাখা হয়েছে জানতে পেরে ওই টাকা বাসায় ঢুকে আলমারি থেকে চুরির পরিকল্পনা করে। এ জন্য নিজেসহ মোট ৫ জন মিলে জানালার গ্রিল কেটে বাসায় ঢুকে। বাসার আলমারি খোলার সময় হলে শব্দে প্রবাসী টনিকের ঘুম ভেঙে যায়। সে উঠে লাইট জ্বালিয়ে চিনে ফেলে চোরদের মধ্যে তারই আপন চাচাত ভাই তুষার রয়েছে। ‘তুষার তুই, তোরা আমার বাড়ি—?’ এ কথা শোনার সঙ্গে সঙ্গে চাচাত ভাই তুষার তার হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে আপন চাচাত ভাই টনিকের মাথায় কুপিয়ে মারাত্বকভাবে জখম করে পালিয়ে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে পরে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি নেয়া হয়। দুই দিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
২০১৬ সালে ৫ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১১টার দিকে আমিরুল ইসলাম টনিকের নিজ বসতঘরে এ নির্মম ঘটনায় ২০১৬ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি লোহাগড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলার বাদী আবু সাঈদ শেখ।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) রাজধানীর ধানমন্ডির প্রধান কার্যালয় থেকে জানা গেছে, আলোচিত এ মামলাটি প্রথমে নড়াইল লোহাগড়া থানার ৬ জন উপ-পরিদর্শক তদন্ত করেন। ২০১৬ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১৯ সালের ১৮ আগস্ট পর্যন্ত প্রায় ২০ মাস তারা তদন্ত করেন। তদন্তকালে থানা পুলিশ সন্দেহভাজন ২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
এক পর্যায়ে মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় পিবিআই যশোর জেলাকে। এই সঙ্গে ২০১৯ সালের ১৮ আগস্ট পিবির কাছে মামলার নথি (ডকেট) হস্তান্তর করা হয়। পিবিআইয়ের প্রাথমিক তদন্তে থানা পুলিশের গ্রেপ্তারকৃত দুই জন হত্যাকা-ে জড়িত নয় বলে জানান।
পিবিআই’র তদন্ত টিম টানা ৬ মাস অনুসন্ধান চালিয়ে তিন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে। তাদের মধ্যে অভিযুক্ত সজিব খাঁন ও মনিরুল মোল্লা আদালতে দোষ স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। তাদের দেয়া তথ্য মতে, আরেক অভিযুক্ত জিল্লুর রহমান ওরফে জিল্লুকে গ্রেপ্তার করে। তাকে আদালতে সোপর্দ করলে সেও স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। তার দেয়া তথ্যে রাতে বাসায় ঢুকে চুরি করার সময় আপন চাচাত ভাইয়ের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে প্রবাসী আমিরুল ইসলাম টনিক খুন হয়।
পিবিআই আলোচিত এই হত্যাকান্ডের ঘটনায় ৬ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
পিবিআইয়ের যশোর জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন সংবাদকে মুঠোফোনে জানান, পিবিআই আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার ও অনুসন্ধান করে অভিযুক্ত আসামিদের প্রথমে শনাক্ত করে। তারপর গ্রেপ্তার করেছে। মামলাটি এখন আদালতে বিচারাধীন।
শনিবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২১
নড়াইলের লোহাগড়ার নোয়াগ্রামের বাসিন্দা প্রবাসী আমিরুল ইসলাম ওরফে টনিক দীর্ঘদিন পর দেশে ফেরেন। এরপর আর বিদেশ না গিয়ে জমানো টাকা দিয়ে দেশেই ব্যবসা করার পরিকল্পনা করেন। জমানো টাকা থেকে তিনি প্রথমে একটি ট্রাক কিনেন। এরপর একটি মাইক্রোবাস কেনার জন্য রাজধানীর একটি গাড়ির শো রুমের মালিকের সঙ্গে চুক্তি করেন। চুক্তি মোতাবেক গাড়ি কেনার জন্য ব্যাংক থেকে টাকা উঠিয়ে নিজ বাড়িতে ঘরের মধ্যে আলমারিতে রাখেন। গাড়ি কেনা ও ব্যাংক থেকে টাকা উঠানোর সব কিছুই জানত তার আপন চাচাত ভাই তুষার শেখ। টাকার বান্ডিল ঘরের আলমারিতে রাখা হয়েছে জানতে পেরে ওই টাকা বাসায় ঢুকে আলমারি থেকে চুরির পরিকল্পনা করে। এ জন্য নিজেসহ মোট ৫ জন মিলে জানালার গ্রিল কেটে বাসায় ঢুকে। বাসার আলমারি খোলার সময় হলে শব্দে প্রবাসী টনিকের ঘুম ভেঙে যায়। সে উঠে লাইট জ্বালিয়ে চিনে ফেলে চোরদের মধ্যে তারই আপন চাচাত ভাই তুষার রয়েছে। ‘তুষার তুই, তোরা আমার বাড়ি—?’ এ কথা শোনার সঙ্গে সঙ্গে চাচাত ভাই তুষার তার হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে আপন চাচাত ভাই টনিকের মাথায় কুপিয়ে মারাত্বকভাবে জখম করে পালিয়ে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে পরে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি নেয়া হয়। দুই দিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
২০১৬ সালে ৫ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১১টার দিকে আমিরুল ইসলাম টনিকের নিজ বসতঘরে এ নির্মম ঘটনায় ২০১৬ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি লোহাগড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলার বাদী আবু সাঈদ শেখ।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) রাজধানীর ধানমন্ডির প্রধান কার্যালয় থেকে জানা গেছে, আলোচিত এ মামলাটি প্রথমে নড়াইল লোহাগড়া থানার ৬ জন উপ-পরিদর্শক তদন্ত করেন। ২০১৬ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১৯ সালের ১৮ আগস্ট পর্যন্ত প্রায় ২০ মাস তারা তদন্ত করেন। তদন্তকালে থানা পুলিশ সন্দেহভাজন ২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
এক পর্যায়ে মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় পিবিআই যশোর জেলাকে। এই সঙ্গে ২০১৯ সালের ১৮ আগস্ট পিবির কাছে মামলার নথি (ডকেট) হস্তান্তর করা হয়। পিবিআইয়ের প্রাথমিক তদন্তে থানা পুলিশের গ্রেপ্তারকৃত দুই জন হত্যাকা-ে জড়িত নয় বলে জানান।
পিবিআই’র তদন্ত টিম টানা ৬ মাস অনুসন্ধান চালিয়ে তিন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে। তাদের মধ্যে অভিযুক্ত সজিব খাঁন ও মনিরুল মোল্লা আদালতে দোষ স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। তাদের দেয়া তথ্য মতে, আরেক অভিযুক্ত জিল্লুর রহমান ওরফে জিল্লুকে গ্রেপ্তার করে। তাকে আদালতে সোপর্দ করলে সেও স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। তার দেয়া তথ্যে রাতে বাসায় ঢুকে চুরি করার সময় আপন চাচাত ভাইয়ের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে প্রবাসী আমিরুল ইসলাম টনিক খুন হয়।
পিবিআই আলোচিত এই হত্যাকান্ডের ঘটনায় ৬ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
পিবিআইয়ের যশোর জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন সংবাদকে মুঠোফোনে জানান, পিবিআই আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার ও অনুসন্ধান করে অভিযুক্ত আসামিদের প্রথমে শনাক্ত করে। তারপর গ্রেপ্তার করেছে। মামলাটি এখন আদালতে বিচারাধীন।