ঝিনাইদহে
মামলা দায়ের পুরুষশূন্য গ্রাম
হরিহরা গ্রামের বাসিন্দা ফিরোজুর রহমান। হতাশার সুরে বললেন, অনেক আশা ছিল উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে নির্বাচন করবো কিন্তু তা আর হলো না। এখন নির্বাচনের প্রচারণা চালানো তো দূরের কথা। পুলিশের ভয়ে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে।
একই কথা বরিয়া গ্রামের বাসিন্দা রেহানা বেগমের। তিনি বলেন, পুলিশের ভয়ে আমার স্বামী গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে, গ্রামে থাকতে পারছেন না। গ্রামে থাকলে যদি পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। সে বাড়িতে না থাকায় কাজ করতে পারছে না। আমার সন্তানরা খাওয়া পাবে কোথায় সেই চিন্তায় ঘুম আসে না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেল সবার মধ্যে কেন আতঙ্ক। গত ২৮ নভেম্বর ঝিনাইদহের হাকিমপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে শৈলকুপার বিপ্রবগদিয়া গ্রামে বর্তমান চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী কামরুজ্জামান জিকু ও অন্য মনোনয়ন প্রত্যাশী বিপ্রবগদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনিরুজ্জামান সাচ্ছুর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় ৩ পুলিশসহ ২০ ব্যক্তি আহত হন। পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় ৭৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৬শ’ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করে পুলিশ। আর এই মামলার জের ধরে উপজেলার বিপ্রবগদিয়া, চামটাইলপাড়া, হরিহরা, সাধুহাটি, রাগপাড়া, খুলুমবাড়ি, নলখোলা ও বরিয়া গ্রামের বেশিরভাগ পুরুষ পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। পুলিশ প্রতিদিনই আসামি ধরতে বিভিন্ন গ্রামে অভিযান চালাচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে যে, অভিযানের সময় যাকে কাছে পায় ধরে নিয়ে যায়। এই ভয়ে কেউ পুলিশের সামনে পড়তে হওয়ার আশঙ্কায় গ্রামে থাকাই ছেড়ে ড়িয়েছে।
গ্রেপ্তার আতঙ্কে হাকিমপুর ইউনিয়নের ৮ গ্রামের পুরুষ মানুষ বাড়িছাড়া রয়েছে। দিনে কারও কারও দেখা মিললেও রাতে এসব গ্রামের পুরুষরা গ্রেপ্তারের ভয়ে বাড়িতে থাকে না। বাড়িতে পুরুষ মানুষ না থাকায় বাড়ির মহিলা ও শিশুরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে।
এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করার বিষয়ে হাকিমপুর ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান ও চেয়ারম্যান প্রার্থী কামরুজ্জামান জিকু বলেন, প্রতিদিনই পুলিশ কোন না কোন নিরাপরাধ মানুষের বাড়িতে তল্লাশি ও ভয়-ভীতি প্রদর্শন করছে। যার ফলে সাধারণ মানুষ আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ছে। পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে আমার ইউনিয়নের ৭-৮টি গ্রাম এভাবে চলতে থাকলে নির্বাচনী পরিবেশ নষ্ট হবে। আমি প্রশাসনের কাছে নির্বাচনের জন্য সুষ্ঠু পরিবেশ চাই।
তবে হয়রানির বিষয়টি অস্বীকার করে শৈলকুপা থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, নিরাপরাধ মানুষদের হয়রানির প্রশ্নই আসে না। আমরা মানুষের বন্ধু হিসেবে কাজ করি। তবে যারা অপরাধী তাদের আইনের আওতায় আসতে হবে। পুলিশের ওপর যারা হামলা করেছে, যারা নিরাপরাধ মানুষের বাড়ি ভেঙেছে তাদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।
ঝিনাইদহে
মামলা দায়ের পুরুষশূন্য গ্রাম
শনিবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২১
হরিহরা গ্রামের বাসিন্দা ফিরোজুর রহমান। হতাশার সুরে বললেন, অনেক আশা ছিল উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে নির্বাচন করবো কিন্তু তা আর হলো না। এখন নির্বাচনের প্রচারণা চালানো তো দূরের কথা। পুলিশের ভয়ে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে।
একই কথা বরিয়া গ্রামের বাসিন্দা রেহানা বেগমের। তিনি বলেন, পুলিশের ভয়ে আমার স্বামী গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে, গ্রামে থাকতে পারছেন না। গ্রামে থাকলে যদি পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। সে বাড়িতে না থাকায় কাজ করতে পারছে না। আমার সন্তানরা খাওয়া পাবে কোথায় সেই চিন্তায় ঘুম আসে না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেল সবার মধ্যে কেন আতঙ্ক। গত ২৮ নভেম্বর ঝিনাইদহের হাকিমপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে শৈলকুপার বিপ্রবগদিয়া গ্রামে বর্তমান চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী কামরুজ্জামান জিকু ও অন্য মনোনয়ন প্রত্যাশী বিপ্রবগদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনিরুজ্জামান সাচ্ছুর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় ৩ পুলিশসহ ২০ ব্যক্তি আহত হন। পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় ৭৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৬শ’ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করে পুলিশ। আর এই মামলার জের ধরে উপজেলার বিপ্রবগদিয়া, চামটাইলপাড়া, হরিহরা, সাধুহাটি, রাগপাড়া, খুলুমবাড়ি, নলখোলা ও বরিয়া গ্রামের বেশিরভাগ পুরুষ পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। পুলিশ প্রতিদিনই আসামি ধরতে বিভিন্ন গ্রামে অভিযান চালাচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে যে, অভিযানের সময় যাকে কাছে পায় ধরে নিয়ে যায়। এই ভয়ে কেউ পুলিশের সামনে পড়তে হওয়ার আশঙ্কায় গ্রামে থাকাই ছেড়ে ড়িয়েছে।
গ্রেপ্তার আতঙ্কে হাকিমপুর ইউনিয়নের ৮ গ্রামের পুরুষ মানুষ বাড়িছাড়া রয়েছে। দিনে কারও কারও দেখা মিললেও রাতে এসব গ্রামের পুরুষরা গ্রেপ্তারের ভয়ে বাড়িতে থাকে না। বাড়িতে পুরুষ মানুষ না থাকায় বাড়ির মহিলা ও শিশুরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে।
এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করার বিষয়ে হাকিমপুর ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান ও চেয়ারম্যান প্রার্থী কামরুজ্জামান জিকু বলেন, প্রতিদিনই পুলিশ কোন না কোন নিরাপরাধ মানুষের বাড়িতে তল্লাশি ও ভয়-ভীতি প্রদর্শন করছে। যার ফলে সাধারণ মানুষ আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ছে। পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে আমার ইউনিয়নের ৭-৮টি গ্রাম এভাবে চলতে থাকলে নির্বাচনী পরিবেশ নষ্ট হবে। আমি প্রশাসনের কাছে নির্বাচনের জন্য সুষ্ঠু পরিবেশ চাই।
তবে হয়রানির বিষয়টি অস্বীকার করে শৈলকুপা থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, নিরাপরাধ মানুষদের হয়রানির প্রশ্নই আসে না। আমরা মানুষের বন্ধু হিসেবে কাজ করি। তবে যারা অপরাধী তাদের আইনের আওতায় আসতে হবে। পুলিশের ওপর যারা হামলা করেছে, যারা নিরাপরাধ মানুষের বাড়ি ভেঙেছে তাদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।