ব্যাংকের সার্ভার থেকে তথ্য নিয়ে স্বাক্ষর জালিয়াতি করে ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফারের (ইএফটি) মাধ্যমে ২০১৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে আট কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি করেছিল ফিলিপাইনসহ বিদেশি কয়েকটি চক্র। এবার দেশেরই একটি চক্র ইএফটির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছিল বলে জানিয়েছেন পুলিশ। চক্রের মূল হোতাসহ ১০ সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর ডিএমপির গুলশান বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. আসাদুজ্জামান শুক্রবার (২৮ জানুয়ারি) নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান। উপপুলিশ কমিশনার জানান, এজন্য দেশের বড় বড় গ্রুপ অব কোম্পানির ব্যাংক একাউন্ট টার্গেট করে চক্রটি। পরে সার্ভারে সংরক্ষিত স্বাক্ষর নকল করে ভুয়া আরটিজিএস ফর্ম তৈরি করা হয়। প্রলোভনের মাধ্যমে ম্যানেজ করা হয় ব্যাংকের যে শাখায় ফান্ড ট্রান্সফারের আবেদন করা হবে সেখানকার ম্যানেজারকে। এভাবে ওয়াল্টন গ্রুপের একাউন্ট থেকে সাড়ে ৬ কোটি টাকা ট্রান্সফার করার চেষ্টা করে। তারা ইউনাইটেড গ্রুপের একাউন্ট থেকেও ১২ কোটি টাকা ট্রান্সফারের চেষ্টা করছিল।
বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) ডিএমপির বাড্ডা জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) মোহাম্মদ তয়াছির জাহান বাবুর নেতৃত্বে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলো মূল হোতা ডাচ বাংলা ব্যাংকের কারওয়ান বাজার শাখায় এসএমই সেলস টিম ম্যানেজার মো. জাকির হোসেন, তার সহযোগী ইয়াসিন আলী, মাহবুব ইশতিয়াক ভূঁইয়া, আনিছুর রহমান ওরফে সোহান, মো. দুলাল হোসাইন, মো. আসলাম, আবদুর রাজ্জাক, জাকির হোসেন, মো. আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়া ও মো. নজরুল ইসলাম। এ সময় তাদের কাছ থেকে আরটিজিএস ফর্ম, বিভিন্ন ব্যাংকের চেকসহ বিভিন্ন কাগজপত্র জব্দ করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, গত ২৫ জানুয়ারি রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ডাচ বাংলা ব্যাংক লিমিটেডে (ডিবিবিএল) থাকা ওয়াল্টন গ্রুপের একাউন্ট থেকে সাড়ে ৬ কোটি টাকা আরটিজিএস ফর্মে ট্রান্সফারের একটি আবেদন আসে। টাকাটি ‘এন আই করপোরেশন বিডি লি.’ নামে একটি কোম্পানির এবি ব্যাংকের একাউন্টে মতিঝিল শাখায় ট্রান্সফারের আবেদন করা হয়।
ডিবিবিএলের বসুন্ধরা শাখার ম্যানেজারের কাছে ট্রান্সফারের আবেদনটি অস্বাভাবিক মনে হওয়ায় তিনি সঙ্গে সঙ্গে ওয়াল্টন গ্রুপের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরে ওয়াল্টন থেকে ব্যাংক ম্যানেজারকে বলা হয় তারা টাকা ট্রান্সফারের আবেদন করেননি। পরে ট্রান্সকফারের আবেদনটি স্থগিত করায়। এ বিষয়ে ওয়াল্টন গ্রুপের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার ডিএমপির ভাটারা থানায় একটি অভিযোগ করা হয়। এই অভিযোগের ভিত্তিতে চক্রটির ১০ সদস্যদের গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ আরও জানায়, চক্রের মূল হোতা জাকির হোসেন ডিবিবিএল এ চাকরি করার সুবাদে ব্যাংকের সার্ভার থেকে বিভিন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের একাউন্টের তথ্য সংগ্রহ করেন। যেসব একাউন্টে টাকার পরিমাণ বেশি তাদের ব্যাংক হিসাব থেকে স্বাক্ষর জাল করে আরটিজিএসের মাধ্যমে টাকা ট্রান্সফারের পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনার পর জাকির গ্রেপ্তারকৃত ইয়াসিন আলীকে স্বাক্ষর জালিয়াতির কাজ দেন।
পরে ইয়াসিন আলী স্বাক্ষর জাল করে মাহবুব ইশতিয়াক ভূঁইয়ার পরিচালিত একাউন্ট ‘এনআই করপোরেশন বিডি লি.’ নামের কোম্পানির একাউন্টে এবি ব্যাংকের মতিঝিল শাখায় স্থানান্তরের পরিকল্পনা করে জাল ব্যাংক দলিল তৈরি করে। পরে তারা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য অন্য আসামিদের ঠিক করে। গ্রেপ্তারকৃতরা পুলিশকে জানিয়েছে, তারা একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তারা দীর্ঘদিন যাবত ডিবিবিএলের সার্ভার থেকে তথ্য সংগ্রহ করে টাকা আত্মসাৎ করার পরিকল্পনা করছিল।
সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির গুলশান বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, এই চক্রটির কার্যক্রম ব্যাংকের ভেতর থেকে শুরু হয়। এর বাইরে চক্রটির সঙ্গে আরও অনেকে জড়িত থাকতে পারে। আমরা যখন তাদের গ্রেপ্তার করতে যাই তখন তারা ইউনাইটেড গ্রুপের একাউন্ট থেকে ১২ কোটি টাকা ট্রান্সফারের চেষ্টা করছিল।
তিনি বলেন, চক্রটির এক অংশ যে গ্রুপ বা ব্যক্তির টাকা তারা ট্রান্সফার করবে সেই নির্দিষ্ট কর্মকর্তার স্বাক্ষর জাল করে। অন্যদিকে চক্রটির আরেকটি অংশ যেই শাখায় টাকা ট্রান্সফারের আবেদনটি জমা দিবে সেই শাখার ব্যবস্থাপককে তাদের পক্ষে আনার জন্য বিভিন্নভাবে প্রলোভন দেখিয়ে ম্যানেজ করে।
চক্রটি এরকম জালিয়াতি আরও করেছে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এর আগে গ্রেপ্তারকৃতরা এরকম ট্রান্সফার করেছে কি-না তা আমরা জানি না। তাদের সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর হলে এ বিষয়ে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করা যাবে।
এরা কি ধরনের একাউন্টকে টার্গেট করে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এরা মূলত বাংলাদেশের বড় বড় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের মালিক বা গ্রুপের একাউন্টকে টার্গেট করে। এমন প্রতিষ্ঠানকে তারা টার্গেট করে যেখান থেকে অ্যামাউন্ট ট্রান্সফার হলে যেন তাড়াতাড়ি বুঝতে না পারে। কেননা বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাংক একাউন্টে বিশাল অঙ্কের টাকা থাকে।
শুক্রবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২২
ব্যাংকের সার্ভার থেকে তথ্য নিয়ে স্বাক্ষর জালিয়াতি করে ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফারের (ইএফটি) মাধ্যমে ২০১৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে আট কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি করেছিল ফিলিপাইনসহ বিদেশি কয়েকটি চক্র। এবার দেশেরই একটি চক্র ইএফটির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছিল বলে জানিয়েছেন পুলিশ। চক্রের মূল হোতাসহ ১০ সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর ডিএমপির গুলশান বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. আসাদুজ্জামান শুক্রবার (২৮ জানুয়ারি) নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান। উপপুলিশ কমিশনার জানান, এজন্য দেশের বড় বড় গ্রুপ অব কোম্পানির ব্যাংক একাউন্ট টার্গেট করে চক্রটি। পরে সার্ভারে সংরক্ষিত স্বাক্ষর নকল করে ভুয়া আরটিজিএস ফর্ম তৈরি করা হয়। প্রলোভনের মাধ্যমে ম্যানেজ করা হয় ব্যাংকের যে শাখায় ফান্ড ট্রান্সফারের আবেদন করা হবে সেখানকার ম্যানেজারকে। এভাবে ওয়াল্টন গ্রুপের একাউন্ট থেকে সাড়ে ৬ কোটি টাকা ট্রান্সফার করার চেষ্টা করে। তারা ইউনাইটেড গ্রুপের একাউন্ট থেকেও ১২ কোটি টাকা ট্রান্সফারের চেষ্টা করছিল।
বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) ডিএমপির বাড্ডা জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) মোহাম্মদ তয়াছির জাহান বাবুর নেতৃত্বে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলো মূল হোতা ডাচ বাংলা ব্যাংকের কারওয়ান বাজার শাখায় এসএমই সেলস টিম ম্যানেজার মো. জাকির হোসেন, তার সহযোগী ইয়াসিন আলী, মাহবুব ইশতিয়াক ভূঁইয়া, আনিছুর রহমান ওরফে সোহান, মো. দুলাল হোসাইন, মো. আসলাম, আবদুর রাজ্জাক, জাকির হোসেন, মো. আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়া ও মো. নজরুল ইসলাম। এ সময় তাদের কাছ থেকে আরটিজিএস ফর্ম, বিভিন্ন ব্যাংকের চেকসহ বিভিন্ন কাগজপত্র জব্দ করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, গত ২৫ জানুয়ারি রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ডাচ বাংলা ব্যাংক লিমিটেডে (ডিবিবিএল) থাকা ওয়াল্টন গ্রুপের একাউন্ট থেকে সাড়ে ৬ কোটি টাকা আরটিজিএস ফর্মে ট্রান্সফারের একটি আবেদন আসে। টাকাটি ‘এন আই করপোরেশন বিডি লি.’ নামে একটি কোম্পানির এবি ব্যাংকের একাউন্টে মতিঝিল শাখায় ট্রান্সফারের আবেদন করা হয়।
ডিবিবিএলের বসুন্ধরা শাখার ম্যানেজারের কাছে ট্রান্সফারের আবেদনটি অস্বাভাবিক মনে হওয়ায় তিনি সঙ্গে সঙ্গে ওয়াল্টন গ্রুপের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরে ওয়াল্টন থেকে ব্যাংক ম্যানেজারকে বলা হয় তারা টাকা ট্রান্সফারের আবেদন করেননি। পরে ট্রান্সকফারের আবেদনটি স্থগিত করায়। এ বিষয়ে ওয়াল্টন গ্রুপের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার ডিএমপির ভাটারা থানায় একটি অভিযোগ করা হয়। এই অভিযোগের ভিত্তিতে চক্রটির ১০ সদস্যদের গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ আরও জানায়, চক্রের মূল হোতা জাকির হোসেন ডিবিবিএল এ চাকরি করার সুবাদে ব্যাংকের সার্ভার থেকে বিভিন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের একাউন্টের তথ্য সংগ্রহ করেন। যেসব একাউন্টে টাকার পরিমাণ বেশি তাদের ব্যাংক হিসাব থেকে স্বাক্ষর জাল করে আরটিজিএসের মাধ্যমে টাকা ট্রান্সফারের পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনার পর জাকির গ্রেপ্তারকৃত ইয়াসিন আলীকে স্বাক্ষর জালিয়াতির কাজ দেন।
পরে ইয়াসিন আলী স্বাক্ষর জাল করে মাহবুব ইশতিয়াক ভূঁইয়ার পরিচালিত একাউন্ট ‘এনআই করপোরেশন বিডি লি.’ নামের কোম্পানির একাউন্টে এবি ব্যাংকের মতিঝিল শাখায় স্থানান্তরের পরিকল্পনা করে জাল ব্যাংক দলিল তৈরি করে। পরে তারা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য অন্য আসামিদের ঠিক করে। গ্রেপ্তারকৃতরা পুলিশকে জানিয়েছে, তারা একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তারা দীর্ঘদিন যাবত ডিবিবিএলের সার্ভার থেকে তথ্য সংগ্রহ করে টাকা আত্মসাৎ করার পরিকল্পনা করছিল।
সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির গুলশান বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, এই চক্রটির কার্যক্রম ব্যাংকের ভেতর থেকে শুরু হয়। এর বাইরে চক্রটির সঙ্গে আরও অনেকে জড়িত থাকতে পারে। আমরা যখন তাদের গ্রেপ্তার করতে যাই তখন তারা ইউনাইটেড গ্রুপের একাউন্ট থেকে ১২ কোটি টাকা ট্রান্সফারের চেষ্টা করছিল।
তিনি বলেন, চক্রটির এক অংশ যে গ্রুপ বা ব্যক্তির টাকা তারা ট্রান্সফার করবে সেই নির্দিষ্ট কর্মকর্তার স্বাক্ষর জাল করে। অন্যদিকে চক্রটির আরেকটি অংশ যেই শাখায় টাকা ট্রান্সফারের আবেদনটি জমা দিবে সেই শাখার ব্যবস্থাপককে তাদের পক্ষে আনার জন্য বিভিন্নভাবে প্রলোভন দেখিয়ে ম্যানেজ করে।
চক্রটি এরকম জালিয়াতি আরও করেছে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এর আগে গ্রেপ্তারকৃতরা এরকম ট্রান্সফার করেছে কি-না তা আমরা জানি না। তাদের সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর হলে এ বিষয়ে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করা যাবে।
এরা কি ধরনের একাউন্টকে টার্গেট করে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এরা মূলত বাংলাদেশের বড় বড় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের মালিক বা গ্রুপের একাউন্টকে টার্গেট করে। এমন প্রতিষ্ঠানকে তারা টার্গেট করে যেখান থেকে অ্যামাউন্ট ট্রান্সফার হলে যেন তাড়াতাড়ি বুঝতে না পারে। কেননা বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাংক একাউন্টে বিশাল অঙ্কের টাকা থাকে।