শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ড. মুহম্মদ ইউনূসের প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানি ও এর পরিচালনা পর্ষদের বিষয়ে সব তথ্য চেয়ে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক। সেই চিঠিতে গ্রামীণ টেলিকমের লভ্যাংশ, কর্মচারীদের তহবিলের অর্থের বিষয়ে তথ্য চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদ যে ঋণ নিয়েছে সেই ঋণ নেয়ার বৈধতা এবং পরিমান সম্পর্কেও তথ্য চাওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে ৬ বিষয়ে তথ্য চেয়ে গতকাল দুদক থেকে চিঠি পাঠিয়েছে অনুুসন্ধান টিমের প্রধান উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান।
দুদকের নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, গ্রামীণ টেলিকমের পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা পাচারের মাধ্যমে আত্মসাতসহ ৪টি অভিযোগ অনুসন্ধানে ৬ ধরনের তথ্য চেয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে। আগামী ৭ আগস্টের মধ্যে দুদকের চাহিদা মোতাবেক তথ্য ছক আকারে দেয়ার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় রেকর্ডের ফটোকপি চাওয়া হয়েছে। এরআগে অনুসন্ধানের জন্য ৩ সদস্যের টিম গঠন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধানের নেতৃত্বাধীন এ টিম ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে। গতকাল ৬ ধরনের তথ্য চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে গ্রামীণ টেলিকম সংস্থার কাছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে শ্রমিক-কর্মচারীদের মধ্যে বণ্টনের জন্য সংরক্ষিত লভ্যাংশের ৫% অর্থ লোপাট, তাদের পাওনা ৩৬৪ কোটি ১৭ লাখ ৯ হাজার ১৪৬ টাকা পরিশোধ কালে অবৈধভাবে অ্যাডভোকেট ফি ও অন্যান্য ফির নামে ৬% অর্থ কর্তন, তাদের কল্যাণ তহবিলে বরাদ্দকৃত সুদসহ ৪৫ কোটি ৫২ লাখ ১৩ হাজার ৬৪৩ টাকা বিতরণ না করে আত্মসাতসহ উক্ত কোম্পানি হতে ২ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা মানিল-ারিং এর মাধ্যমে অন্য সহযোগী প্রতিষ্ঠানসমূহের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তরের অভিযোগ। উল্লিখিত অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে নি¤œবর্ণিত রেকর্ডপত্র সংগ্রহপূর্বক পর্যালোচনা করা একান্ত প্রয়োজন। চাহিত তথ্যাদি-রেকর্ডপত্রের সত্যায়িত ছায়ালিপি আগামী ৭ আগস্টের মধ্যে প্রেরণের নির্দেশ প্রদানের মাধ্যমে অনুসন্ধানকাজে সহযোগিতা করার জন্য সবিনয় অনুরোধ করা হলো ।
দুদক সূত্র জানিয়েছে গ্রামীণ টেলিকমের পরিচালনা পর্ষদের অনিয়ম ও দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধানে দুদক উপপরিচালক গুলশান আনোয়ারকে অনুসন্ধান টিমের প্রধান করা হয়েছে। পাশাপাশি সহকারী পরিচালক জেসমিন আক্তার ও নুরে আলম সিদ্দিকী রয়েছেন সদস্য হিসেবে। গঠিত তিন সদস্যের টিম ইতোমধ্যে নথিপত্র সংগ্রহের জন্য কাজ শূরু করেছেন। প্রধান কার্যালয়ের মাধ্যমে দুদক বেশ কিছু নথিপত্র তলব করেছে। আগামী ৭ আগষ্টের মধ্যে এসব তথ্য সরবরাহ করতে বলা হয়েছে চিঠিতে।
দুদকের নির্ভর যোগ্য সূত্র জানিয়েছে, গ্রামীণ টেলিকমের কাছে যেসব তথ্য চাওয়া হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে ২০০৬ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক শ্রমিক কর্মচারীদের মধ্যে বণ্টনের জন্য সংরক্ষিত লভ্যাংশের ৩৬৪ কোটি ১৭ লাখ ৯ হাজার ১৪৬ টাকা ৫% অর্থ প্রদান সংক্রান্ত তথ্যাদি বা রেকর্ডপত্রের ফটোকপি। ওই অর্থ কাকে কিভাবে, কোন ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে পরিশোধ করা হয়েছে তার বিবরণ ছকে দেয়ার জন্য বলা হয়েছে। প্রয়োজন সাপেক্ষে রেকর্ডপত্রের সত্যায়িত কপিও সঙ্গে দিতে বলা হয়েছে। ১৯৯৭-২০২২ সাল পর্যন্ত গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ বাবদ শ্রমিক কর্মচারীদের পাওনা ৩৬৪ কোটি ১৭ লাখ ৯ হাজার ১৪৬ টাকা পরিশোধকালে ফি এবং অন্যান্য ফি’র নামে ৬% টাকা কর্তন সংক্রান্ত তথ্যাদি বা রেকর্ডপত্রের ফটোকপি। ওই অর্থ কাকে কিভাবে, কোন ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে অর্থ পরিশোধ করা হয়েছে তার বিবরণ ছকে দিতে হবে। প্রয়োজন সাপেক্ষে রেকর্ডপত্রের সত্যায়িত কপি। ১৯৯৭-২০২২ সাল পর্যন্ত গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের কল্যাণ তহবিলে বরাদ্দকৃত সুদসহ ৪৫ কোটি ৫২ লাখ ১৩ হাজার ৬৪৩ টাকা বিতরণ সংক্রান্ত রেকর্ডপত্রের কপি বা তথ্যাদি। ওই কোম্পানির কল্যাণ তহবিলে ওই অর্থ স্থানান্তর করা না হলে অর্থ কোথায়, কিভাবে, কোন ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে খরচ করা হয়েছে- তার তথ্যাদি। ১৯৯৭-২০২২ সাল পর্যন্ত গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ হতে দুই হাজার নয়শত সাতাত্তর কোটি টাকা ড. ইউনূস ও তার সহযোগী প্রতিষ্ঠানসমূহের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর সংক্রান্তে তথ্য ছকে দিতে বলা হয়েছে। ওই টাকা কোন প্রতিষ্ঠান থেকে কত সালের কত তারিখে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসেবে পাঠানো হয়েছে এবং কত টাকা দেয়া হয়েছে তা ছক আকারে বিস্তারিত চাওয়া হয়েছে।
এছাড়া গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানি হতে উক্ত অর্থ কোথায়, কিভাবে, কোন ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে কোন প্রতিষ্ঠান/ব্যক্তির হিসাবে স্থানান্তরিত হয়েছে এবং পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে তাদের সর্ম্পক কি- এতদসংক্রান্ত তথ্যাদির গড়সহ প্রতিবেদন এবং প্রয়োজনীয় রেকর্ডপত্রের সত্যায়িত কপি। গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানির ১৯৯৭ থেকে বর্তমান পর্যন্ত পরিচালনা পর্ষদের বিস্তারিত তথ্য, গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানি পরিচালনার আইন ও বিধিসমূহ, পরিচালনা পর্ষদের কোন সদস্যের উক্ত কোম্পানি থেকে ঋণ পাওয়ার বৈধ অধিকার রয়েছে কি-না বা এ পর্যন্ত পর্ষদের কোন কোন সদস্য কত টাকা ঋণ নিয়েছেন এবং ঋণের অর্থ কিভাবে উত্তোলন করেছেন। এসকল তথ্য ছকে দেয়ার কথা বলা হয়েছে। এবং এ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় রেকর্ডপত্রের সত্যায়িত কপিও দিতে বলা হয়েছে। গ্রামীণ ফোন কোম্পানিতে গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানির কত শতাংশ শেয়ার রয়েছে এবং এ শেয়ারের বিপরীতে ১৯৯৭ থেকে ২০২২ পর্যন্ত গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানি কত টাকা লভাংশ পেয়েছে, ওই লভ্যাংশের টাকা কোন কোন খাতে কিভাবে ব্যয় করেছে, তার বছরভিত্তিক তথ্য ছকে দিতে বলা হয়েছে।
গত ২৮ জুলাই এক ব্রিফিংয়ে দুদকের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে আসা দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বেশ কিছু অভিযোগের বিষয়ে দুদক অনুসন্ধান করবে। ইতোমধ্যে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের উপমহাপরিদর্শক গ্রামীণ টেলিকমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ সংবলিত একটি প্রতিবেদন দুদকে জমা দেয়। অভিযোগগুলো পর্যালোচনা করে অনুসন্ধান করার সিদ্ধান্ত নেয় দুদক।
গ্রামীণ টেলিকমের প্রতিষ্ঠাতা অর্থনীতিবিদ ড. মুহম্মদ ইউনূস শ্রমিক কর্মচারীদের চাকরিচ্যুত ও বেতন বোনাস আত্মসাতের অভিযোগে মামলা হয়েছিল। গত মে মাসে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সমঝোতার মাধ্যমে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে করা ১১০টি মামলা আদালত থেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন। পরে জানা গেছে মোটা অঙ্ক দিয়ে আইনজীবী নিয়োগ করে এবং ঘাটে ঘাটে কমিশন দিয়ে কর্মচারী ইউনিয়নের নেতাকে ম্যানেজ করে মামলা প্রত্যাহার করে নেয়া হয়। এ নিয়ে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ পায়।
দুদক সূত্র জানিয়েছে গ্রামীণ টেলিকমের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ অনুসন্ধান করবে দুদক সে অভিযোগগুলো হচ্ছে, শ্রমিক-কর্মচারীদের মধ্যে বণ্টনের জন্য সংরক্ষিত লভ্যাংশের পাঁচ শতাংশ লোপাট, শ্রমিক-কর্মচারীদের পাওনা পরিশোধকালে অবৈধভাবে আইনজীবী ফি ও অন্য ফির নামে ছয় শতাংশ অর্থ কেটে নেয়া, শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলে বরাদ্দকৃত সুদসহ ৪৫ কোটি ৫২ লাখ ১৩ হাজার ৬৪৩ টাকা বিতরণ না করে আত্মসাৎ করা এবং কোম্পানি থেকে ২ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা পাচারের উদ্দেশে বিভিন্ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানসমূহের ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তরের মাধ্যমে আত্মসাৎ করা।
মঙ্গলবার, ০২ আগস্ট ২০২২
শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ড. মুহম্মদ ইউনূসের প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানি ও এর পরিচালনা পর্ষদের বিষয়ে সব তথ্য চেয়ে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক। সেই চিঠিতে গ্রামীণ টেলিকমের লভ্যাংশ, কর্মচারীদের তহবিলের অর্থের বিষয়ে তথ্য চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদ যে ঋণ নিয়েছে সেই ঋণ নেয়ার বৈধতা এবং পরিমান সম্পর্কেও তথ্য চাওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে ৬ বিষয়ে তথ্য চেয়ে গতকাল দুদক থেকে চিঠি পাঠিয়েছে অনুুসন্ধান টিমের প্রধান উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান।
দুদকের নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, গ্রামীণ টেলিকমের পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা পাচারের মাধ্যমে আত্মসাতসহ ৪টি অভিযোগ অনুসন্ধানে ৬ ধরনের তথ্য চেয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে। আগামী ৭ আগস্টের মধ্যে দুদকের চাহিদা মোতাবেক তথ্য ছক আকারে দেয়ার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় রেকর্ডের ফটোকপি চাওয়া হয়েছে। এরআগে অনুসন্ধানের জন্য ৩ সদস্যের টিম গঠন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধানের নেতৃত্বাধীন এ টিম ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে। গতকাল ৬ ধরনের তথ্য চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে গ্রামীণ টেলিকম সংস্থার কাছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে শ্রমিক-কর্মচারীদের মধ্যে বণ্টনের জন্য সংরক্ষিত লভ্যাংশের ৫% অর্থ লোপাট, তাদের পাওনা ৩৬৪ কোটি ১৭ লাখ ৯ হাজার ১৪৬ টাকা পরিশোধ কালে অবৈধভাবে অ্যাডভোকেট ফি ও অন্যান্য ফির নামে ৬% অর্থ কর্তন, তাদের কল্যাণ তহবিলে বরাদ্দকৃত সুদসহ ৪৫ কোটি ৫২ লাখ ১৩ হাজার ৬৪৩ টাকা বিতরণ না করে আত্মসাতসহ উক্ত কোম্পানি হতে ২ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা মানিল-ারিং এর মাধ্যমে অন্য সহযোগী প্রতিষ্ঠানসমূহের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তরের অভিযোগ। উল্লিখিত অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে নি¤œবর্ণিত রেকর্ডপত্র সংগ্রহপূর্বক পর্যালোচনা করা একান্ত প্রয়োজন। চাহিত তথ্যাদি-রেকর্ডপত্রের সত্যায়িত ছায়ালিপি আগামী ৭ আগস্টের মধ্যে প্রেরণের নির্দেশ প্রদানের মাধ্যমে অনুসন্ধানকাজে সহযোগিতা করার জন্য সবিনয় অনুরোধ করা হলো ।
দুদক সূত্র জানিয়েছে গ্রামীণ টেলিকমের পরিচালনা পর্ষদের অনিয়ম ও দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধানে দুদক উপপরিচালক গুলশান আনোয়ারকে অনুসন্ধান টিমের প্রধান করা হয়েছে। পাশাপাশি সহকারী পরিচালক জেসমিন আক্তার ও নুরে আলম সিদ্দিকী রয়েছেন সদস্য হিসেবে। গঠিত তিন সদস্যের টিম ইতোমধ্যে নথিপত্র সংগ্রহের জন্য কাজ শূরু করেছেন। প্রধান কার্যালয়ের মাধ্যমে দুদক বেশ কিছু নথিপত্র তলব করেছে। আগামী ৭ আগষ্টের মধ্যে এসব তথ্য সরবরাহ করতে বলা হয়েছে চিঠিতে।
দুদকের নির্ভর যোগ্য সূত্র জানিয়েছে, গ্রামীণ টেলিকমের কাছে যেসব তথ্য চাওয়া হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে ২০০৬ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক শ্রমিক কর্মচারীদের মধ্যে বণ্টনের জন্য সংরক্ষিত লভ্যাংশের ৩৬৪ কোটি ১৭ লাখ ৯ হাজার ১৪৬ টাকা ৫% অর্থ প্রদান সংক্রান্ত তথ্যাদি বা রেকর্ডপত্রের ফটোকপি। ওই অর্থ কাকে কিভাবে, কোন ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে পরিশোধ করা হয়েছে তার বিবরণ ছকে দেয়ার জন্য বলা হয়েছে। প্রয়োজন সাপেক্ষে রেকর্ডপত্রের সত্যায়িত কপিও সঙ্গে দিতে বলা হয়েছে। ১৯৯৭-২০২২ সাল পর্যন্ত গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ বাবদ শ্রমিক কর্মচারীদের পাওনা ৩৬৪ কোটি ১৭ লাখ ৯ হাজার ১৪৬ টাকা পরিশোধকালে ফি এবং অন্যান্য ফি’র নামে ৬% টাকা কর্তন সংক্রান্ত তথ্যাদি বা রেকর্ডপত্রের ফটোকপি। ওই অর্থ কাকে কিভাবে, কোন ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে অর্থ পরিশোধ করা হয়েছে তার বিবরণ ছকে দিতে হবে। প্রয়োজন সাপেক্ষে রেকর্ডপত্রের সত্যায়িত কপি। ১৯৯৭-২০২২ সাল পর্যন্ত গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের কল্যাণ তহবিলে বরাদ্দকৃত সুদসহ ৪৫ কোটি ৫২ লাখ ১৩ হাজার ৬৪৩ টাকা বিতরণ সংক্রান্ত রেকর্ডপত্রের কপি বা তথ্যাদি। ওই কোম্পানির কল্যাণ তহবিলে ওই অর্থ স্থানান্তর করা না হলে অর্থ কোথায়, কিভাবে, কোন ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে খরচ করা হয়েছে- তার তথ্যাদি। ১৯৯৭-২০২২ সাল পর্যন্ত গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ হতে দুই হাজার নয়শত সাতাত্তর কোটি টাকা ড. ইউনূস ও তার সহযোগী প্রতিষ্ঠানসমূহের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর সংক্রান্তে তথ্য ছকে দিতে বলা হয়েছে। ওই টাকা কোন প্রতিষ্ঠান থেকে কত সালের কত তারিখে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসেবে পাঠানো হয়েছে এবং কত টাকা দেয়া হয়েছে তা ছক আকারে বিস্তারিত চাওয়া হয়েছে।
এছাড়া গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানি হতে উক্ত অর্থ কোথায়, কিভাবে, কোন ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে কোন প্রতিষ্ঠান/ব্যক্তির হিসাবে স্থানান্তরিত হয়েছে এবং পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে তাদের সর্ম্পক কি- এতদসংক্রান্ত তথ্যাদির গড়সহ প্রতিবেদন এবং প্রয়োজনীয় রেকর্ডপত্রের সত্যায়িত কপি। গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানির ১৯৯৭ থেকে বর্তমান পর্যন্ত পরিচালনা পর্ষদের বিস্তারিত তথ্য, গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানি পরিচালনার আইন ও বিধিসমূহ, পরিচালনা পর্ষদের কোন সদস্যের উক্ত কোম্পানি থেকে ঋণ পাওয়ার বৈধ অধিকার রয়েছে কি-না বা এ পর্যন্ত পর্ষদের কোন কোন সদস্য কত টাকা ঋণ নিয়েছেন এবং ঋণের অর্থ কিভাবে উত্তোলন করেছেন। এসকল তথ্য ছকে দেয়ার কথা বলা হয়েছে। এবং এ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় রেকর্ডপত্রের সত্যায়িত কপিও দিতে বলা হয়েছে। গ্রামীণ ফোন কোম্পানিতে গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানির কত শতাংশ শেয়ার রয়েছে এবং এ শেয়ারের বিপরীতে ১৯৯৭ থেকে ২০২২ পর্যন্ত গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানি কত টাকা লভাংশ পেয়েছে, ওই লভ্যাংশের টাকা কোন কোন খাতে কিভাবে ব্যয় করেছে, তার বছরভিত্তিক তথ্য ছকে দিতে বলা হয়েছে।
গত ২৮ জুলাই এক ব্রিফিংয়ে দুদকের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে আসা দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বেশ কিছু অভিযোগের বিষয়ে দুদক অনুসন্ধান করবে। ইতোমধ্যে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের উপমহাপরিদর্শক গ্রামীণ টেলিকমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ সংবলিত একটি প্রতিবেদন দুদকে জমা দেয়। অভিযোগগুলো পর্যালোচনা করে অনুসন্ধান করার সিদ্ধান্ত নেয় দুদক।
গ্রামীণ টেলিকমের প্রতিষ্ঠাতা অর্থনীতিবিদ ড. মুহম্মদ ইউনূস শ্রমিক কর্মচারীদের চাকরিচ্যুত ও বেতন বোনাস আত্মসাতের অভিযোগে মামলা হয়েছিল। গত মে মাসে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সমঝোতার মাধ্যমে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে করা ১১০টি মামলা আদালত থেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন। পরে জানা গেছে মোটা অঙ্ক দিয়ে আইনজীবী নিয়োগ করে এবং ঘাটে ঘাটে কমিশন দিয়ে কর্মচারী ইউনিয়নের নেতাকে ম্যানেজ করে মামলা প্রত্যাহার করে নেয়া হয়। এ নিয়ে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ পায়।
দুদক সূত্র জানিয়েছে গ্রামীণ টেলিকমের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ অনুসন্ধান করবে দুদক সে অভিযোগগুলো হচ্ছে, শ্রমিক-কর্মচারীদের মধ্যে বণ্টনের জন্য সংরক্ষিত লভ্যাংশের পাঁচ শতাংশ লোপাট, শ্রমিক-কর্মচারীদের পাওনা পরিশোধকালে অবৈধভাবে আইনজীবী ফি ও অন্য ফির নামে ছয় শতাংশ অর্থ কেটে নেয়া, শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলে বরাদ্দকৃত সুদসহ ৪৫ কোটি ৫২ লাখ ১৩ হাজার ৬৪৩ টাকা বিতরণ না করে আত্মসাৎ করা এবং কোম্পানি থেকে ২ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা পাচারের উদ্দেশে বিভিন্ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানসমূহের ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তরের মাধ্যমে আত্মসাৎ করা।