alt

অপরাধ ও দুর্নীতি

কর ফাঁকি : মদিনার ৪ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা

বাকী বিল্লাহ : বৃহস্পতিবার, ১১ আগস্ট ২০২২

মদিনা সিমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড প্রতিষ্ঠানের ৪ শীর্ষ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ২১ কোটি টাকারও বেশি মূল্য সংযোজন কর ফাঁকি দেয়ার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

রাজধানীর সেগুন বাগিচার বৃহৎ করদাতা ইউনিট মূসকের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন বাদী হয়ে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থানায় এ মামলা দায়ের করেছেন।

গত রোববার থানার অফিসার ইনচার্জ ইন্সপেক্টর মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান মামলাটি গ্রহণ করেন। এরপর সাব-ইন্সপেক্টর মোস্তাফিজুর রহমান বিশ্বাসকে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা গতকাল সংবাদকে জানান, তিনি শীঘ্রই মামলাটির তদন্ত শুরু করবেন।

মামলার অভিযুক্ত আসামিরা হলোÑ মদিনা সিমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের শেখ মো. বাবুল হোসেন (ব্যবস্থাপক-মূসক), উপ-মহাব্যবস্থাপক মামুন অর রশিদ খান, মো. আতোয়ার হোসেন খান (ব্যবস্থাপক-মূসক) ও মাহমুদুর রহমান (সিনিয়র নির্বাহী)

অভিযুক্তরা প্রতারণা ও জাল কাগজপত্র তৈরি করে মূল্য সংযোজন কর ফাঁকি দিয়ে অপরাধ করেছে। মামলায় বৃহৎ করদাতা ইউনিট, মূল্য সংযোজন কর, সেগুন বাগিচায় কর্মরত ১০ জনকে এ মামলায় সাক্ষী করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, মদিনা সিমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, মেঘনাঘাট, সোনারগাঁও, নারায়ণগঞ্জ বৃহৎ করদাতা ইউনিট, মূসকের অধিক্ষেত্রাধীন একটি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটি থানা থেকে ৫ কিলোমিটার দক্ষিণ পূর্ব দিকে।

এজাহার থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, ২০২১ সালের ২ ডিসেম্বর কর আদায় দপ্তরের ৯ সদস্যের পরিদর্শক টিম মদিনা সিমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডে ঢুকে তল্লাশি চালিয়ে বিভিন্ন আলামত জব্দ করে। মূসক আইন মতে, ঢাকার দপ্তরে নিয়ে যায়। যাচাই শেষে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয় যে, মদিনা সিমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড প্রতিষ্ঠানটি একাধিক বিক্রয় হিসাব পরিচালনা করছে নকল ও জাল বিক্রয় হিসাবের মাধ্যমে। যা দিয়ে তারা মূসক ফাঁকি দিয়েছে। এরপর প্রতিষ্ঠানটিকে অধিকতর যাচাই-বাছাইপূর্বক বিশেষ নিরীক্ষা আদেশের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। যাচাই-বাছাই করে দেখা গেছে, প্রতিষ্ঠানটির বিক্রয় হিসাব বইসমূহ নকল/জালের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি রাজস্ব তথা মূসক ফাঁকি দিয়েছে।

প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ তাদের কাছে রক্ষিত ২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে ১৬টি বিক্রয় হিসাব বই মূসক কর্তৃপক্ষের দপ্তরে জমা দেয়।

ওই ১৬টি বিক্রয় হিসাব বই সরবরাহকৃত পণ্যের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে প্রতিষ্ঠান কর্তৃক দাখিলকৃত সংশ্লিষ্ট কর মেয়াদ সমূহের (২০২০ জুলাই থেকে ডিসেম্বর-২০২১) দাখিলকৃত বিক্রয়মূল্যের মূসকের সঙ্গে মিল পাওয়া গেছে।

তদন্তে ৭টি বিক্রয় হিসাবের বইয়ে লেখা বিক্রয় তথ্যে উল্লিখিত মূসক সরকারি কোষাগারে জমা দেয়ার কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। অর্থাৎ প্রতিষ্ঠান প্রতারণামূলক সরকারি রাজস্ব আত্মসাৎ করার লক্ষ্যে নকল/জাল বিক্রয় হিসাব বইসমূহ ব্যবহার করছে। ওই নকল হিসাব বই খাঁটি বলে কর দপ্তরে সরবরাহ করেছে।

উল্লেখ্য ৭টি নকল/জাল বিক্রয় হিসাব বইয়ের সর্বশেষ পাতায় শেখ মো. বাবুল হোসেন (ব্যবস্থাপক-মূসক) মদিনা সিমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড দ্বারা সত্যায়িত রয়েছে। যা পেনাল কোর্ডের ১৮৬০ সালের ৪২০.৪৬৮ ও ৪৭১ ধারা অনুযায়ী দ-নীয় অপরাধ বলে গণ্য হবে।

এজাহারে আরও বলা হয়েছে, প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি মামুন-অর রশিদ খান (উপমহাব্যবস্থাপক) ও ব্যবস্থাপক আতোয়ার হোসেন খান ও সিনিয়র নির্বাহী মাহমুদুর রহমানের সঙ্গে দপ্তরের দায়িত্ব প্রাপ্ত নিরীক্ষা দলের একাধিকবার আলোচনা হয়েছে। মতবিনিময়কালে প্রতিষ্ঠান প্রতিনিধিদ্বয় একাধিকবার স্বীকার করে নিয়েছে তাদের বিক্রয় হিসাব বই অথাৎ নকল /জাল বিক্রয় হিসাব বই পরিচালনার বিষয়টি প্রতিষ্ঠানের শুধুমাত্র কারখানার কর্মচারীরা ঘটিয়েছে।

এভাবে প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা একেক সময় একেক ধরনের বক্তব্য দিয়ে মূসক ফাঁকির বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার জন্য এ ধরনের বক্তব্য দিয়েছে। তারা মূসক ফাঁকি দিয়ে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতি সাধন করেছে।

সরকারি পাওনা বাবদ অপরিশোধিত রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যে যৌথভাবে যাচাইকৃত হিসাব অনুযায়ী মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইনের ২০১২ ধারা অনুযায়ী পরিচালনায় জড়িত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি ব্যবস্থা নেয়ার জন্য এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

সেগুন বাগিচার বৃহৎ করদাতা ইউনিটের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা গতকাল তার কার্যালয়ে সংবাদ প্রতিবেদককে জানান, মদিনা সিমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ২১ কোটির বেশি টাকা ফাঁকি দিয়েছে। এমনকি তাদের ব্যাংকের অ্যাকাউন্টের টাকাও সরিয়ে নিয়েছে। মালিকপক্ষের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করার পরও তারা রাজস্ব পরিশোধ করেনি। উল্টো জাহিদুল ইসলাম নামের একজনের একাউন্টে টাকা সরিয়ে নিয়ে গেছে। তা নিয়ে খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে বলে কমিশন অফিস থেকে বলা হয়েছে।

এদিকে গতকাল বিকেলে মামলার প্রধান অভিযুক্ত শেখ মো. বাবুল হোসেনের সঙ্গে তার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, মামলার বিষয়টি তার জানা নেই। তিনি খোঁজ নিবেন।

ভোটবিহীন নির্বাচন মামলায় নূরুল হুদা কারাগারে, পেলেন না জামিন

ছবি

শেখ রেহানার স্বামী ও তারিক সিদ্দিকের সম্পত্তি জব্দের আদেশ

ছবি

আদালত অবমাননায় শেখ হাসিনার ৬ মাসের কারাদণ্ড

ছবি

বিএনপির মামলায় সাবেক সিইসি নূরুল হুদার জবানবন্দি রেকর্ড শুরু

ছবি

আবু সাঈদ হত্যা মামলা: বেরোবির সাবেক উপাচার্যসহ ২৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

ছবি

তিনটি হত্যা মামলায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার দেখানোর নির্দেশ, আছেন সাবেক এসপিও

ধর্ষণের পর বিবস্ত্র অবস্থায় মারধর, ভিডিও ভাইরালের ঘটনায় গ্রেপ্তার ৫

ভুক্তভোগীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হাইকোর্টের নির্দেশ

রূপগঞ্জে মদ্যপ অবস্থায় অশোভন আচরণ, প্রতিবাদ করায় দুই যুবককে গুলি

নাইক্ষ্যংছড়িতে ইমাম হত্যা,৫ জনকে আসামী করে মামলা

ছবি

হত্যা মামলায় ইনু, কামাল, পলকসহ চারজনকে গ্রেপ্তার দেখালো আদালত

ছবি

বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ মামলায় প্রিন্স মামুনের বিচার শুরু

ছবি

ব্রিটিশ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের অভিযোগ অস্বীকার করে দুদক চেয়ারম্যান, টিউলিপকে বাংলাদেশি নাগরিক বলেও মন্তব্য

ছবি

১৬ হাজার কোটি টাকার সম্পদ অবরুদ্ধ, এস আলম গ্রুপ ও ইসলামী ব্যাংকের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আদালতের কঠোর পদক্ষেপ

ছবি

‘ভোটের প্রতারণা’ অভিযোগে রিমান্ড শুনানিতে নিজেকে নির্দোষ দাবি নূরুল হুদার

ছবি

নগদের ১ কোটি টাকার ডাকাতি: রহস্য উদঘাটনের দাবি পুলিশের, উদ্ধার সাড়ে ৩২ লাখ

ছবি

স্বপ্না হত্যা: থানা থেকে সিআইডি, তবু রহস্য অজানা

ছবি

সাক্ষ্যগ্রহণের দিনে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে পালাল অপহরণ ও হত্যার আসামি

ছবি

আদালত অবমাননার মামলায় আইনজীবী এ ওয়াই মশিউজ্জামানকে ট্রাইব্যুনালের সহায়তাকারী নিযুক্ত

ছবি

সবজি ব্যবসায়ী শাওন হত্যা মামলায় সালমান এফ রহমান ৪ দিনের রিমান্ডে, আনিসুল হক গ্রেপ্তার

মিরপুরে প্রকাশ্যে গুলি করে টাকা ছিনতাই, গ্রেপ্তার ৫ আসামির রিমান্ড মঞ্জুর

ছবি

কেরাণীগঞ্জে মেয়েকে ধর্ষণের দায়ে সৎ বাবার মৃত্যুদণ্ড

ছবি

রংপুরের কাউনিয়ায় টিসিবির কার্ড বিতরণে টাকা আদায়ের অভিযোগে ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতার

ছবি

মানিলন্ডারিং তদন্ত: তিন সহযোগীর বিদেশ যাত্রায় আদালতের নিষেধাজ্ঞা

ছবি

হাজিরা না দিলে অনুপস্থিতিতেই শেখ হাসিনার বিচার শুরু হবে: ট্রাইব্যুনাল

ছবি

যুক্তরাজ্যে বসুন্ধরা মালিকপক্ষসহ কয়েকজনের সম্পদ জব্দে উদ্যোগ: দুদক

ছবি

টিউলিপের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা, তাকে বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে দেখছে দুদক

ছবি

লাশ টুকরো করে বালু চাপা: ব্যবসায়ী জাকির হত্যা মামলায় চার আসামি আদালতে, একজনের স্বীকারোক্তি

ছবি

বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া সম্পদ ফেরত পাঠাতে যুক্তরাজ্যকে কার্যকর পদক্ষেপের আহ্বান

অবশেষে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে বিএনপির ১৩ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে থানায় মামলা

পীরগাছায় ইসলামিক রিলিফের গরুর মাংস বিতরণের তালিকা তৈরিতে অনিয়মের অভিযোগ

খাগড়াছড়ির গুইমারায় এক পাহাড়ি গৃহবধুকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে আটক-১

ছবি

রিমান্ড শেষে শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন কারাগারে

ছবি

ই-মানি জালিয়াতিতে ‘নগদ’-এর শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা

ছবি

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অবমাননার মামলায় দুইজনের অনুপস্থিতি

পাঁচটি মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন আবেদন নামঞ্জুর

tab

অপরাধ ও দুর্নীতি

কর ফাঁকি : মদিনার ৪ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা

বাকী বিল্লাহ

বৃহস্পতিবার, ১১ আগস্ট ২০২২

মদিনা সিমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড প্রতিষ্ঠানের ৪ শীর্ষ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ২১ কোটি টাকারও বেশি মূল্য সংযোজন কর ফাঁকি দেয়ার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

রাজধানীর সেগুন বাগিচার বৃহৎ করদাতা ইউনিট মূসকের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন বাদী হয়ে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থানায় এ মামলা দায়ের করেছেন।

গত রোববার থানার অফিসার ইনচার্জ ইন্সপেক্টর মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান মামলাটি গ্রহণ করেন। এরপর সাব-ইন্সপেক্টর মোস্তাফিজুর রহমান বিশ্বাসকে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা গতকাল সংবাদকে জানান, তিনি শীঘ্রই মামলাটির তদন্ত শুরু করবেন।

মামলার অভিযুক্ত আসামিরা হলোÑ মদিনা সিমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের শেখ মো. বাবুল হোসেন (ব্যবস্থাপক-মূসক), উপ-মহাব্যবস্থাপক মামুন অর রশিদ খান, মো. আতোয়ার হোসেন খান (ব্যবস্থাপক-মূসক) ও মাহমুদুর রহমান (সিনিয়র নির্বাহী)

অভিযুক্তরা প্রতারণা ও জাল কাগজপত্র তৈরি করে মূল্য সংযোজন কর ফাঁকি দিয়ে অপরাধ করেছে। মামলায় বৃহৎ করদাতা ইউনিট, মূল্য সংযোজন কর, সেগুন বাগিচায় কর্মরত ১০ জনকে এ মামলায় সাক্ষী করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, মদিনা সিমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, মেঘনাঘাট, সোনারগাঁও, নারায়ণগঞ্জ বৃহৎ করদাতা ইউনিট, মূসকের অধিক্ষেত্রাধীন একটি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটি থানা থেকে ৫ কিলোমিটার দক্ষিণ পূর্ব দিকে।

এজাহার থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, ২০২১ সালের ২ ডিসেম্বর কর আদায় দপ্তরের ৯ সদস্যের পরিদর্শক টিম মদিনা সিমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডে ঢুকে তল্লাশি চালিয়ে বিভিন্ন আলামত জব্দ করে। মূসক আইন মতে, ঢাকার দপ্তরে নিয়ে যায়। যাচাই শেষে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয় যে, মদিনা সিমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড প্রতিষ্ঠানটি একাধিক বিক্রয় হিসাব পরিচালনা করছে নকল ও জাল বিক্রয় হিসাবের মাধ্যমে। যা দিয়ে তারা মূসক ফাঁকি দিয়েছে। এরপর প্রতিষ্ঠানটিকে অধিকতর যাচাই-বাছাইপূর্বক বিশেষ নিরীক্ষা আদেশের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। যাচাই-বাছাই করে দেখা গেছে, প্রতিষ্ঠানটির বিক্রয় হিসাব বইসমূহ নকল/জালের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি রাজস্ব তথা মূসক ফাঁকি দিয়েছে।

প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ তাদের কাছে রক্ষিত ২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে ১৬টি বিক্রয় হিসাব বই মূসক কর্তৃপক্ষের দপ্তরে জমা দেয়।

ওই ১৬টি বিক্রয় হিসাব বই সরবরাহকৃত পণ্যের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে প্রতিষ্ঠান কর্তৃক দাখিলকৃত সংশ্লিষ্ট কর মেয়াদ সমূহের (২০২০ জুলাই থেকে ডিসেম্বর-২০২১) দাখিলকৃত বিক্রয়মূল্যের মূসকের সঙ্গে মিল পাওয়া গেছে।

তদন্তে ৭টি বিক্রয় হিসাবের বইয়ে লেখা বিক্রয় তথ্যে উল্লিখিত মূসক সরকারি কোষাগারে জমা দেয়ার কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। অর্থাৎ প্রতিষ্ঠান প্রতারণামূলক সরকারি রাজস্ব আত্মসাৎ করার লক্ষ্যে নকল/জাল বিক্রয় হিসাব বইসমূহ ব্যবহার করছে। ওই নকল হিসাব বই খাঁটি বলে কর দপ্তরে সরবরাহ করেছে।

উল্লেখ্য ৭টি নকল/জাল বিক্রয় হিসাব বইয়ের সর্বশেষ পাতায় শেখ মো. বাবুল হোসেন (ব্যবস্থাপক-মূসক) মদিনা সিমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড দ্বারা সত্যায়িত রয়েছে। যা পেনাল কোর্ডের ১৮৬০ সালের ৪২০.৪৬৮ ও ৪৭১ ধারা অনুযায়ী দ-নীয় অপরাধ বলে গণ্য হবে।

এজাহারে আরও বলা হয়েছে, প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি মামুন-অর রশিদ খান (উপমহাব্যবস্থাপক) ও ব্যবস্থাপক আতোয়ার হোসেন খান ও সিনিয়র নির্বাহী মাহমুদুর রহমানের সঙ্গে দপ্তরের দায়িত্ব প্রাপ্ত নিরীক্ষা দলের একাধিকবার আলোচনা হয়েছে। মতবিনিময়কালে প্রতিষ্ঠান প্রতিনিধিদ্বয় একাধিকবার স্বীকার করে নিয়েছে তাদের বিক্রয় হিসাব বই অথাৎ নকল /জাল বিক্রয় হিসাব বই পরিচালনার বিষয়টি প্রতিষ্ঠানের শুধুমাত্র কারখানার কর্মচারীরা ঘটিয়েছে।

এভাবে প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা একেক সময় একেক ধরনের বক্তব্য দিয়ে মূসক ফাঁকির বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার জন্য এ ধরনের বক্তব্য দিয়েছে। তারা মূসক ফাঁকি দিয়ে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতি সাধন করেছে।

সরকারি পাওনা বাবদ অপরিশোধিত রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যে যৌথভাবে যাচাইকৃত হিসাব অনুযায়ী মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইনের ২০১২ ধারা অনুযায়ী পরিচালনায় জড়িত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি ব্যবস্থা নেয়ার জন্য এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

সেগুন বাগিচার বৃহৎ করদাতা ইউনিটের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা গতকাল তার কার্যালয়ে সংবাদ প্রতিবেদককে জানান, মদিনা সিমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ২১ কোটির বেশি টাকা ফাঁকি দিয়েছে। এমনকি তাদের ব্যাংকের অ্যাকাউন্টের টাকাও সরিয়ে নিয়েছে। মালিকপক্ষের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করার পরও তারা রাজস্ব পরিশোধ করেনি। উল্টো জাহিদুল ইসলাম নামের একজনের একাউন্টে টাকা সরিয়ে নিয়ে গেছে। তা নিয়ে খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে বলে কমিশন অফিস থেকে বলা হয়েছে।

এদিকে গতকাল বিকেলে মামলার প্রধান অভিযুক্ত শেখ মো. বাবুল হোসেনের সঙ্গে তার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, মামলার বিষয়টি তার জানা নেই। তিনি খোঁজ নিবেন।

back to top