বিচারাধীন বিষয়ে সংবাদ প্রতিবেদন করার সময় ‘অন মেরিট’, অর্থাৎ মামলার সারবত্তা বা গুণাগুণ নিয়ে মন্তব্য করা বা সিদ্ধান্ত টানা থেকে বিরত থাকতে সংবাদমাধ্যমগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।
সংসদ সদস্য ও সাবেক ফুটবলার আব্দুস সালাম মুর্শেদীর দখলে থাকা গুলশানের একটি বাড়িকে কেন্দ্র করে এক রিট মামলার শুনানিতে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাই কোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেয়।
আদালত বলেছে, বিচারাধীন বিষয়ে প্রতিবেদন লিখতে গিয়ে সংবাদকর্মীরা যদি কিছু বুঝতে না পারেন, তাহলে সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ কর্মকর্তা, রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বা সংশ্লিষ্ট অন্যান্য আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলতে পারেন।
আদালতের এই আদেশ কেবল এ মামলার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে, নাকি সকল মামলার ক্ষেত্রে অনুসরণ করতে হবে– এমন প্রশ্নে এ আদালতের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক বলেন, “এটা সবার জন্য প্রযোজ্য হবে। কোর্টে যে পর্যন্ত হয়েছে, সেটা পর্যন্ত লেখা যাবে।”
তাহলে আদালতে বিচারাধীন কোনো বিষয়ে সরকারি সংস্থার তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে রিপোর্ট করা যাবে কি না, তা জানতে চাওয়া হয়েছিল এই আইন কর্মকর্তার কাছে। জবাবে তিনি বলেন, হাই কোর্টের পুরো রায় প্রকাশিত হলে তখন বিস্তারিত বলা যাবে।
সালাম মুর্শেদীর বাড়ি সংক্রান্ত এই রিট মামলায় দুর্নীতি দমন কমিশনও একটি পক্ষ। দুদকের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “ওভার অল সবার জন্যই ধরতে হবে। মানে কোর্ট প্রসেডিংস আপনি করবেন। কিন্তু কোনো ফাইন্ডিংস (সিদ্ধান্ত) দিতে পারবেন না, যদি না আপনি আদালতের কোনো আদেশ বা রায় নিয়ে লেখেন। যদিও (এ আদেশ) এই মামলায় বলেছেন, কিন্তু ধরে নিতে হবে সবক্ষেত্রে।”
ওই বাড়ি নিয়ে রিট মামলা চলার মধ্যেই ‘জালিয়াতি করে পরিত্যক্ত সম্পত্তি দখলে নেন সালাম মুর্শেদী’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে দৈনিক ইত্তেফাক। সেই প্রতিবেদনের কারণেই সালাম মুর্শেদীর আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা সংবাদ মাধ্যমের বিষয়টি হাই কোর্টের শুনানিতে তোলেন।
দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, “সালাম মুর্শেদীর আইনজীবী গণমাধ্যমের একটা প্রতিবেদন তুলে ধরে বলেছেন, গণমাধ্যম অলরেডি রায় দিয়ে দিচ্ছে। কীভাবে রায় দেবে? এটাতো আদালতে বিচারাধীন।
“তখন আদালত নির্দেশ দিয়েছে, গণমাধ্যমতো এ ধরনের কোনো রায় দিতে পারে না, যতক্ষণ এটা বিচারাধীন বিষয়। সাব জুডিস ম্যাটার কোর্টে নিষ্পত্তি হবে। নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোর্ট প্রসেডিংস সাংবাদিকরা লিখতে পারবে। কিন্তু কোনো ফাইন্ডিংস দিতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত আদালতে কোনো সিদ্ধান্ত না হবে।”
তিনি বলেন, “কোর্ট প্রসেডিংস লিখতে গণমাধ্যমের কোনো আইনগত বাধা নেই। কিন্তু গণমাধ্যমকে সজাগ থাকতে হবে, সে কোনো মতামত যেন না দেয়। মতামতটা কোর্টই দেবে। তখনই গণমাধ্যম লিখতে পারবে।”
আদালতের আদেশে যে তদন্ত হয়, সেই তদন্তে সুপারিশ দেওয়া থাকে, সিদ্ধান্ত টানা হয়। সেটা যদি গণমাধ্যম জানে, সেটি প্রকাশ করতে বাধা থাকবে কি না- তা জানতে চাওয়া হয়েছিল এই আইনজীবীর কাছে।
জবাবে তিনি বলেন, “সেটি গণমাধ্যমের এখতিয়ার। বিচারাধীন মামলায় গণমাধ্যম আগে ভারডিক্ট দিতে পারে না। মোদ্দাকথা, আপনারা রিপোর্ট করেন। রিপোর্ট করতে কোনো বাধা নাই। রাইট টু প্রফেশন। কিন্তু আপনাদেরকে কোর্ট প্রসেডিংস করতে হবে।”
সালাম মুর্শেদীর আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা অবশ্য বলছেন, ‘অন মেরিট’ সংবাদ প্রতিবেদন না করতে আদালতের আদেশটি কেবল এ মামলার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, কেননা শুনানিতে তারা কেবল এ মামলা নিয়েই কথা বলেছেন, অন্য কিছু নিয়ে নয়।
আদালতে গণপূর্ত সচিবের পক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন, রাজউকের পক্ষে জাকির হোসেন মাসুদ এবং রিটকারী সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের পক্ষে ব্যারিস্টার অনিক আর হক শুনানি করেন।
আগামী ১৬ জানুয়ারি এ রিট মামলায় শুনানির পরবর্তী দিন রেখে ওই সময়ের মধ্যে দুদককে তদন্ত প্রতিবেদন সরবরাহ করতে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সচিবকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
পাশাপাশি ওই বাড়ি সংক্রান্ত রেকর্ড ১৬ জানুয়ারি বা তার আগে আদালতে দাখিল করতে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সচিব, রাজউক চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোনো ধরনের ব্যর্থতা ছাড়া এই নির্দেশনা মানতে বলা হয়েছে আদেশে।
শুক্রবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২২
বিচারাধীন বিষয়ে সংবাদ প্রতিবেদন করার সময় ‘অন মেরিট’, অর্থাৎ মামলার সারবত্তা বা গুণাগুণ নিয়ে মন্তব্য করা বা সিদ্ধান্ত টানা থেকে বিরত থাকতে সংবাদমাধ্যমগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।
সংসদ সদস্য ও সাবেক ফুটবলার আব্দুস সালাম মুর্শেদীর দখলে থাকা গুলশানের একটি বাড়িকে কেন্দ্র করে এক রিট মামলার শুনানিতে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাই কোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেয়।
আদালত বলেছে, বিচারাধীন বিষয়ে প্রতিবেদন লিখতে গিয়ে সংবাদকর্মীরা যদি কিছু বুঝতে না পারেন, তাহলে সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ কর্মকর্তা, রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বা সংশ্লিষ্ট অন্যান্য আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলতে পারেন।
আদালতের এই আদেশ কেবল এ মামলার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে, নাকি সকল মামলার ক্ষেত্রে অনুসরণ করতে হবে– এমন প্রশ্নে এ আদালতের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক বলেন, “এটা সবার জন্য প্রযোজ্য হবে। কোর্টে যে পর্যন্ত হয়েছে, সেটা পর্যন্ত লেখা যাবে।”
তাহলে আদালতে বিচারাধীন কোনো বিষয়ে সরকারি সংস্থার তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে রিপোর্ট করা যাবে কি না, তা জানতে চাওয়া হয়েছিল এই আইন কর্মকর্তার কাছে। জবাবে তিনি বলেন, হাই কোর্টের পুরো রায় প্রকাশিত হলে তখন বিস্তারিত বলা যাবে।
সালাম মুর্শেদীর বাড়ি সংক্রান্ত এই রিট মামলায় দুর্নীতি দমন কমিশনও একটি পক্ষ। দুদকের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “ওভার অল সবার জন্যই ধরতে হবে। মানে কোর্ট প্রসেডিংস আপনি করবেন। কিন্তু কোনো ফাইন্ডিংস (সিদ্ধান্ত) দিতে পারবেন না, যদি না আপনি আদালতের কোনো আদেশ বা রায় নিয়ে লেখেন। যদিও (এ আদেশ) এই মামলায় বলেছেন, কিন্তু ধরে নিতে হবে সবক্ষেত্রে।”
ওই বাড়ি নিয়ে রিট মামলা চলার মধ্যেই ‘জালিয়াতি করে পরিত্যক্ত সম্পত্তি দখলে নেন সালাম মুর্শেদী’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে দৈনিক ইত্তেফাক। সেই প্রতিবেদনের কারণেই সালাম মুর্শেদীর আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা সংবাদ মাধ্যমের বিষয়টি হাই কোর্টের শুনানিতে তোলেন।
দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, “সালাম মুর্শেদীর আইনজীবী গণমাধ্যমের একটা প্রতিবেদন তুলে ধরে বলেছেন, গণমাধ্যম অলরেডি রায় দিয়ে দিচ্ছে। কীভাবে রায় দেবে? এটাতো আদালতে বিচারাধীন।
“তখন আদালত নির্দেশ দিয়েছে, গণমাধ্যমতো এ ধরনের কোনো রায় দিতে পারে না, যতক্ষণ এটা বিচারাধীন বিষয়। সাব জুডিস ম্যাটার কোর্টে নিষ্পত্তি হবে। নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোর্ট প্রসেডিংস সাংবাদিকরা লিখতে পারবে। কিন্তু কোনো ফাইন্ডিংস দিতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত আদালতে কোনো সিদ্ধান্ত না হবে।”
তিনি বলেন, “কোর্ট প্রসেডিংস লিখতে গণমাধ্যমের কোনো আইনগত বাধা নেই। কিন্তু গণমাধ্যমকে সজাগ থাকতে হবে, সে কোনো মতামত যেন না দেয়। মতামতটা কোর্টই দেবে। তখনই গণমাধ্যম লিখতে পারবে।”
আদালতের আদেশে যে তদন্ত হয়, সেই তদন্তে সুপারিশ দেওয়া থাকে, সিদ্ধান্ত টানা হয়। সেটা যদি গণমাধ্যম জানে, সেটি প্রকাশ করতে বাধা থাকবে কি না- তা জানতে চাওয়া হয়েছিল এই আইনজীবীর কাছে।
জবাবে তিনি বলেন, “সেটি গণমাধ্যমের এখতিয়ার। বিচারাধীন মামলায় গণমাধ্যম আগে ভারডিক্ট দিতে পারে না। মোদ্দাকথা, আপনারা রিপোর্ট করেন। রিপোর্ট করতে কোনো বাধা নাই। রাইট টু প্রফেশন। কিন্তু আপনাদেরকে কোর্ট প্রসেডিংস করতে হবে।”
সালাম মুর্শেদীর আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা অবশ্য বলছেন, ‘অন মেরিট’ সংবাদ প্রতিবেদন না করতে আদালতের আদেশটি কেবল এ মামলার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, কেননা শুনানিতে তারা কেবল এ মামলা নিয়েই কথা বলেছেন, অন্য কিছু নিয়ে নয়।
আদালতে গণপূর্ত সচিবের পক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন, রাজউকের পক্ষে জাকির হোসেন মাসুদ এবং রিটকারী সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের পক্ষে ব্যারিস্টার অনিক আর হক শুনানি করেন।
আগামী ১৬ জানুয়ারি এ রিট মামলায় শুনানির পরবর্তী দিন রেখে ওই সময়ের মধ্যে দুদককে তদন্ত প্রতিবেদন সরবরাহ করতে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সচিবকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
পাশাপাশি ওই বাড়ি সংক্রান্ত রেকর্ড ১৬ জানুয়ারি বা তার আগে আদালতে দাখিল করতে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সচিব, রাজউক চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোনো ধরনের ব্যর্থতা ছাড়া এই নির্দেশনা মানতে বলা হয়েছে আদেশে।