বাউফলে ২ ছাত্র খুন
সিনিয়র জুনিয়রকে কেন্দ্র করে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় দুই ১০ম শ্রেণির পরীক্ষার্থী খুনের ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার শোকে স্তবÍ হয়ে গেছে পুরো গ্রাম। আর খুনিদের গ্রেপ্তারের দাবীতে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে সহপাঠীরা। খুনের ২৪ ঘন্টা পার হয়ে গেলেও খুনিরা গ্রেপ্তার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা।
এর আগে গতকাল বুধবার বিকাল সারে ৪টার দিকে উপজেলা ইন্দ্রকুল উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির দুই শিক্ষার্থী মো. নাফিজ মোস্তফা আসনারী (১৫) ও মো. মারুফ হোসেন (১৫) ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেছে একই বিদ্যালয়ের ৯বম শ্রেণির ছাত্র সায়েম, রায়হান, হাসিবুল, নাঈম হোসেন, নাঈম মিয়া। নাফিজ উপজেলার সূয্যমনি ইউনিয়নের ইন্দ্রকুল গ্রামের সিরাজ মোস্তফা আনসারির ছেলে ও মারুফ হোসেন একই ইউনিয়নের বাবলু হাওলাদার ছেলে।
গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে সূয্যমনি ইউনিয়নের ইন্দ্রকুল গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, পুরো গ্রাম যেন শোকের মাতাম। সবাই একটি কথাই বলছে, কি হতে কি হয়ে গেলে। তরতাজা দুটি কিশোরের প্রাণ এভাবে খুণ হলো। নাফিজ ও মারুফের বাড়ি গিয়ে দেখা যায় তাদের স্বজনদের কান্না পুরো গ্রাম যেন ভারি হয়ে গেছে।
একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে পাগলপ্রায় নিহত মারুফের মা আছমা বেগম । তিনি বারবার মুর্ছা যাচ্ছেন আর কান্নাজড়িত কন্ঠে বলছেন, আমার ছেলেকে সকালে স্কুলে যাওয়ার সময় ভাত থাইয়ে দিয়েছি। ছেলে বলেছে মা আমি যাই। এরপর আমি আগের মতই বিকেল ৪ টা পর্যন্ত ছেলের জন্য অপেক্ষা করি কিন্তু মারুফ আর আসে না। এরই মধ্যে আমার দেবর সম্পর্কের ছোট ভাই আরাফাত আমাকে বলে ভাবী মারুফকে কারা যেন ছুরিকাঘাত করেছে। আপনি তাড়াতাড়ি চলে আসেন। আমি যেতে না যেতেই স্থানীয়রা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিযে গেছে। এরপর বরিশাল নিয়ে গেছে। আমি আমার ছেলে এখন পযৃন্ত দেখতে পারি নাই। এ সময়ে তিনি আরো বলেন, ওরা আমার ছেলের একটা হাত ভেঙ্গে দিত,পা ভেঙ্গে দিত। একেবারে দুনিয়া ছাড়া করে গিয়েছে কেন? আমার সুস্থ ছেলে স্কুলে গিয়ে আর ফিরে এলা না। আমার ছেলেকে যারা হত্যা করেছে তাদের ফাঁসি চাই।
নিহত নাফিজের মামা সার্ভেয়ার কোরবান আলী বলেন, খুন হওয়ার পর ১৬ ঘন্টা অতিবাহিত হয়ে গিয়ে এখন পর্যন্ত পুলিশ কোন হত্যাকারী গ্রেপ্তার করতে পারে নাই। আসামী গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত বিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম বন্ধ থাকা ও হত্যাকারীরা যাতে ওই স্কুলে আর লেখাপড়ার সুযেগ না পায় সে জন্য ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।
ওই বিদ্যালয়ের নিহতদের সহপাঠী দশম শ্রেনির ছাত্র রিয়াদুল ইসলাম ও মো.তাইবুর রহমান বলেন, মারুফ ও নাফিজ দু’জনেই মেধাবী ছাত্র ছিল। শ্রেনিকক্ষে পড়াশুনায় মনোযোগী ছিলো।আচার আচারণ অনেক ভাল ছিল। কোন দিন কারো সাখে কোন বেয়াদবি করতে দেখি নাই। সহপাঠদের হারিয়ে আমরা শোকাহত।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনার সময় আমি ইন্দ্রকুল বাজারের দিকে যাচ্ছিলাম। এ সময়ে হাসিবুলের সঙ্গে দেখা হয়। তখন হাসিবুল বলেন , মারুফ ও নাফিজকে মেরে এসেছি। তখন আমি বুঝতে পারিনি এভাবে ছুড়িকাঘাত করেছে।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান হিসাব রক্ষন অফিসারগোলাম কিবরিয়া বলেন, হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। এছাড়া বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে তিন দিন শোক দিবস পালনের কর্মসুচী,কালোব্যাজ ধারণ ও বিক্ষোভ মিছিল করা হয়েছে।
প্রধান শিক্ষক মো. মিজানুর রহমান বলেন, আমাদের মেবাধী দুই শিক্ষার্থীকে এভাবে হাড়াতে হবে কোন চিন্তাও করিনি। যারা এ ঘটনার সাতে জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। যাতে ভবিষ্যাতে এরকম কোন ঘটনা আর না ঘটে।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত নিহত দুই শিক্ষার্থীর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ নিহতদের বাড়িতে নিয়ে আসা হবে এবং পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোন আসামী গ্রেফতার হয়নি।
বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) আল মামুন বলেন, হত্যাকারীদেরকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে। যেভাবেই হোক তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে। ##
বাউফলে ২ ছাত্র খুন
বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ ২০২৩
সিনিয়র জুনিয়রকে কেন্দ্র করে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় দুই ১০ম শ্রেণির পরীক্ষার্থী খুনের ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার শোকে স্তবÍ হয়ে গেছে পুরো গ্রাম। আর খুনিদের গ্রেপ্তারের দাবীতে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে সহপাঠীরা। খুনের ২৪ ঘন্টা পার হয়ে গেলেও খুনিরা গ্রেপ্তার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা।
এর আগে গতকাল বুধবার বিকাল সারে ৪টার দিকে উপজেলা ইন্দ্রকুল উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির দুই শিক্ষার্থী মো. নাফিজ মোস্তফা আসনারী (১৫) ও মো. মারুফ হোসেন (১৫) ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেছে একই বিদ্যালয়ের ৯বম শ্রেণির ছাত্র সায়েম, রায়হান, হাসিবুল, নাঈম হোসেন, নাঈম মিয়া। নাফিজ উপজেলার সূয্যমনি ইউনিয়নের ইন্দ্রকুল গ্রামের সিরাজ মোস্তফা আনসারির ছেলে ও মারুফ হোসেন একই ইউনিয়নের বাবলু হাওলাদার ছেলে।
গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে সূয্যমনি ইউনিয়নের ইন্দ্রকুল গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, পুরো গ্রাম যেন শোকের মাতাম। সবাই একটি কথাই বলছে, কি হতে কি হয়ে গেলে। তরতাজা দুটি কিশোরের প্রাণ এভাবে খুণ হলো। নাফিজ ও মারুফের বাড়ি গিয়ে দেখা যায় তাদের স্বজনদের কান্না পুরো গ্রাম যেন ভারি হয়ে গেছে।
একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে পাগলপ্রায় নিহত মারুফের মা আছমা বেগম । তিনি বারবার মুর্ছা যাচ্ছেন আর কান্নাজড়িত কন্ঠে বলছেন, আমার ছেলেকে সকালে স্কুলে যাওয়ার সময় ভাত থাইয়ে দিয়েছি। ছেলে বলেছে মা আমি যাই। এরপর আমি আগের মতই বিকেল ৪ টা পর্যন্ত ছেলের জন্য অপেক্ষা করি কিন্তু মারুফ আর আসে না। এরই মধ্যে আমার দেবর সম্পর্কের ছোট ভাই আরাফাত আমাকে বলে ভাবী মারুফকে কারা যেন ছুরিকাঘাত করেছে। আপনি তাড়াতাড়ি চলে আসেন। আমি যেতে না যেতেই স্থানীয়রা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিযে গেছে। এরপর বরিশাল নিয়ে গেছে। আমি আমার ছেলে এখন পযৃন্ত দেখতে পারি নাই। এ সময়ে তিনি আরো বলেন, ওরা আমার ছেলের একটা হাত ভেঙ্গে দিত,পা ভেঙ্গে দিত। একেবারে দুনিয়া ছাড়া করে গিয়েছে কেন? আমার সুস্থ ছেলে স্কুলে গিয়ে আর ফিরে এলা না। আমার ছেলেকে যারা হত্যা করেছে তাদের ফাঁসি চাই।
নিহত নাফিজের মামা সার্ভেয়ার কোরবান আলী বলেন, খুন হওয়ার পর ১৬ ঘন্টা অতিবাহিত হয়ে গিয়ে এখন পর্যন্ত পুলিশ কোন হত্যাকারী গ্রেপ্তার করতে পারে নাই। আসামী গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত বিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম বন্ধ থাকা ও হত্যাকারীরা যাতে ওই স্কুলে আর লেখাপড়ার সুযেগ না পায় সে জন্য ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।
ওই বিদ্যালয়ের নিহতদের সহপাঠী দশম শ্রেনির ছাত্র রিয়াদুল ইসলাম ও মো.তাইবুর রহমান বলেন, মারুফ ও নাফিজ দু’জনেই মেধাবী ছাত্র ছিল। শ্রেনিকক্ষে পড়াশুনায় মনোযোগী ছিলো।আচার আচারণ অনেক ভাল ছিল। কোন দিন কারো সাখে কোন বেয়াদবি করতে দেখি নাই। সহপাঠদের হারিয়ে আমরা শোকাহত।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনার সময় আমি ইন্দ্রকুল বাজারের দিকে যাচ্ছিলাম। এ সময়ে হাসিবুলের সঙ্গে দেখা হয়। তখন হাসিবুল বলেন , মারুফ ও নাফিজকে মেরে এসেছি। তখন আমি বুঝতে পারিনি এভাবে ছুড়িকাঘাত করেছে।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান হিসাব রক্ষন অফিসারগোলাম কিবরিয়া বলেন, হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। এছাড়া বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে তিন দিন শোক দিবস পালনের কর্মসুচী,কালোব্যাজ ধারণ ও বিক্ষোভ মিছিল করা হয়েছে।
প্রধান শিক্ষক মো. মিজানুর রহমান বলেন, আমাদের মেবাধী দুই শিক্ষার্থীকে এভাবে হাড়াতে হবে কোন চিন্তাও করিনি। যারা এ ঘটনার সাতে জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। যাতে ভবিষ্যাতে এরকম কোন ঘটনা আর না ঘটে।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত নিহত দুই শিক্ষার্থীর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ নিহতদের বাড়িতে নিয়ে আসা হবে এবং পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোন আসামী গ্রেফতার হয়নি।
বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) আল মামুন বলেন, হত্যাকারীদেরকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে। যেভাবেই হোক তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে। ##