ফাইল ছবি
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের গণিত ও বাংলায় দুর্বলতার ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে সরকারি একটি জরিপে। তৃতীয় শ্রেণির ৫১ ও পঞ্চম শ্রেণির ৫০ শতাংশ শিক্ষার্থী বাংলায়ও দুর্বল। আর তৃতীয় শ্রেণির ৬১ ও পঞ্চমের ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর গণিতে ভালো দক্ষতা নেই।
কক্সবাজারের একটি হোটেলে শনিবার প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উদ্যোগে ও ইউনিসেফের সহযোগিতায় আয়োজিত এক কর্মশালায় জাতীয় শিক্ষার্থী মূল্যায়ন প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, প্রাথমিক শিক্ষায় পড়ালেখা বা শেখার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি পিছিয়ে আছে সিলেট বিভাগের শিক্ষার্থীরা। তুলনামূলকভাবে চট্টগ্রাম বিভাগের শিক্ষার্থীরাও পিছিয়ে আছে। তবে এগিয়ে আছে ঢাকা ও ময়মনসিংহের শিক্ষার্থীরা।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন পরিচালিত এ জরিপে তৃতীয় ও পঞ্চম শ্রেণির গণিত ও বাংলা বিষয়ে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন বিভাগের পঞ্চম ও তৃতীয় শ্রেণির মোট ৫৪ হাজার ২৩২ শিক্ষার্থীর ওপর এ জরিপ চালানো হয়েছে। এর মধ্যে আছে তৃতীয় শ্রেণির ২৮ হাজার ৭৫২ ও পঞ্চম শ্রেণির ২৫ হাজার ৪৮০ শিক্ষার্থী।
প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, এখনো তৃতীয় শ্রেণির ৫১ শতাংশ ও পঞ্চম শ্রেণির ৫০ শতাংশ শিক্ষার্থী শিক্ষাক্রম অনুযায়ী বাংলায় কাঙ্ক্ষিত যোগ্যতা অর্জন করতে পারছে না। আর তৃতীয় শ্রেণির প্রায় ৬১ শতাংশ ও পঞ্চম শ্রেণির ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থী গণিতে শিক্ষাক্রম অনুযায়ী যোগ্যতা অর্জন করতে পারছে না। বিপরীতে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৪৯ শতাংশ ও পঞ্চম শ্রেণির ৫০ শতাংশ শিক্ষার্থী শিক্ষাক্রম অনুযায়ী বাংলায় কাঙ্ক্ষিত যোগ্যতা অর্জন করতে পারছে। আর গণিতে তৃতীয় শ্রেণির ৩৯ শতাংশ ও পঞ্চম শ্রেণির ৩০ শতাংশ শিক্ষার্থী কাঙ্ক্ষিত যোগ্যতা অর্জন করছে।
প্রতিবেদনে পড়ালেখার অগ্রগতি, শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধ, জ্ঞান ও অনুধাবন স্তরের প্রশ্ন বোঝার দক্ষতা অর্জনে বেশ কিছু সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে দেশব্যাপী শিক্ষকস্বল্পতা দূরীকরণে দ্রুত শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম, স্কুলে স্কুলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার নেতৃত্বে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে তদারকি কার্যক্রম বাড়ানো, প্রাক্–প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের শ্রেণি কার্যক্রম আনন্দদায়ক করতে শ্রেণিকক্ষ সজ্জিত করা, স্কুল ফিডিং কার্যক্রম জোরদার করা।
ওই কর্মশালায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ বলেন, ‘২০১৭ সালের জরিপের চেয়ে ২০২২ সালের জরিপের ফলাফল নি¤œমুখী হবে বলে ভয় পেয়েছিলাম। কিন্তু টেনেটুনে সমান সমান হয়েছি। ছেলেদের তুলনায় সব বিভাগে মেয়েরা এগোচ্ছে। এটি ভালো। নারী শিক্ষার হার বাড়ছে। তবে ছেলেরা পিছিয়ে পড়াও উদ্বেগের। যেসব বিভাগে পিছিয়ে আছি, সেই সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সমান্তরালভাবে এগোনোর প্রচেষ্টা চালাতে হবে। শিক্ষকেরা আন্তরিক ও সৃজনশীল হলে শিক্ষার্থীদের মেধার বিকাশ ক্রমেই বাড়বে।’
ফরিদ আহাম্মদ বলেন, প্রতিবছর ছয় হাজার শিক্ষক অবসর গ্রহণ করেন। তাই শিক্ষকসংকট লেগেই থাকে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) মাধ্যমে নিয়োগ প্যানেল তৈরি করে দেশে শিক্ষকসংকট দূরীকরণে প্রতি ছয় মাস পরপর শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম গ্রহণ করছে মন্ত্রণালয়। আগামী বছর থেকে এ প্রক্রিয়ায় শিক্ষক নিয়োগ করা হবে। ঝরে পড়া রোধে শিক্ষার্থীদের জন্য দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা আবারও চালু হবে। দেড় শ উপজেলায় আগামী বছর থেকে ‘স্কুল মিল’ দেওয়া হবে।
ফাইল ছবি
রোববার, ২০ আগস্ট ২০২৩
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের গণিত ও বাংলায় দুর্বলতার ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে সরকারি একটি জরিপে। তৃতীয় শ্রেণির ৫১ ও পঞ্চম শ্রেণির ৫০ শতাংশ শিক্ষার্থী বাংলায়ও দুর্বল। আর তৃতীয় শ্রেণির ৬১ ও পঞ্চমের ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর গণিতে ভালো দক্ষতা নেই।
কক্সবাজারের একটি হোটেলে শনিবার প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উদ্যোগে ও ইউনিসেফের সহযোগিতায় আয়োজিত এক কর্মশালায় জাতীয় শিক্ষার্থী মূল্যায়ন প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, প্রাথমিক শিক্ষায় পড়ালেখা বা শেখার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি পিছিয়ে আছে সিলেট বিভাগের শিক্ষার্থীরা। তুলনামূলকভাবে চট্টগ্রাম বিভাগের শিক্ষার্থীরাও পিছিয়ে আছে। তবে এগিয়ে আছে ঢাকা ও ময়মনসিংহের শিক্ষার্থীরা।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন পরিচালিত এ জরিপে তৃতীয় ও পঞ্চম শ্রেণির গণিত ও বাংলা বিষয়ে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন বিভাগের পঞ্চম ও তৃতীয় শ্রেণির মোট ৫৪ হাজার ২৩২ শিক্ষার্থীর ওপর এ জরিপ চালানো হয়েছে। এর মধ্যে আছে তৃতীয় শ্রেণির ২৮ হাজার ৭৫২ ও পঞ্চম শ্রেণির ২৫ হাজার ৪৮০ শিক্ষার্থী।
প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, এখনো তৃতীয় শ্রেণির ৫১ শতাংশ ও পঞ্চম শ্রেণির ৫০ শতাংশ শিক্ষার্থী শিক্ষাক্রম অনুযায়ী বাংলায় কাঙ্ক্ষিত যোগ্যতা অর্জন করতে পারছে না। আর তৃতীয় শ্রেণির প্রায় ৬১ শতাংশ ও পঞ্চম শ্রেণির ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থী গণিতে শিক্ষাক্রম অনুযায়ী যোগ্যতা অর্জন করতে পারছে না। বিপরীতে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৪৯ শতাংশ ও পঞ্চম শ্রেণির ৫০ শতাংশ শিক্ষার্থী শিক্ষাক্রম অনুযায়ী বাংলায় কাঙ্ক্ষিত যোগ্যতা অর্জন করতে পারছে। আর গণিতে তৃতীয় শ্রেণির ৩৯ শতাংশ ও পঞ্চম শ্রেণির ৩০ শতাংশ শিক্ষার্থী কাঙ্ক্ষিত যোগ্যতা অর্জন করছে।
প্রতিবেদনে পড়ালেখার অগ্রগতি, শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধ, জ্ঞান ও অনুধাবন স্তরের প্রশ্ন বোঝার দক্ষতা অর্জনে বেশ কিছু সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে দেশব্যাপী শিক্ষকস্বল্পতা দূরীকরণে দ্রুত শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম, স্কুলে স্কুলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার নেতৃত্বে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে তদারকি কার্যক্রম বাড়ানো, প্রাক্–প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের শ্রেণি কার্যক্রম আনন্দদায়ক করতে শ্রেণিকক্ষ সজ্জিত করা, স্কুল ফিডিং কার্যক্রম জোরদার করা।
ওই কর্মশালায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ বলেন, ‘২০১৭ সালের জরিপের চেয়ে ২০২২ সালের জরিপের ফলাফল নি¤œমুখী হবে বলে ভয় পেয়েছিলাম। কিন্তু টেনেটুনে সমান সমান হয়েছি। ছেলেদের তুলনায় সব বিভাগে মেয়েরা এগোচ্ছে। এটি ভালো। নারী শিক্ষার হার বাড়ছে। তবে ছেলেরা পিছিয়ে পড়াও উদ্বেগের। যেসব বিভাগে পিছিয়ে আছি, সেই সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সমান্তরালভাবে এগোনোর প্রচেষ্টা চালাতে হবে। শিক্ষকেরা আন্তরিক ও সৃজনশীল হলে শিক্ষার্থীদের মেধার বিকাশ ক্রমেই বাড়বে।’
ফরিদ আহাম্মদ বলেন, প্রতিবছর ছয় হাজার শিক্ষক অবসর গ্রহণ করেন। তাই শিক্ষকসংকট লেগেই থাকে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) মাধ্যমে নিয়োগ প্যানেল তৈরি করে দেশে শিক্ষকসংকট দূরীকরণে প্রতি ছয় মাস পরপর শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম গ্রহণ করছে মন্ত্রণালয়। আগামী বছর থেকে এ প্রক্রিয়ায় শিক্ষক নিয়োগ করা হবে। ঝরে পড়া রোধে শিক্ষার্থীদের জন্য দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা আবারও চালু হবে। দেড় শ উপজেলায় আগামী বছর থেকে ‘স্কুল মিল’ দেওয়া হবে।