পদোন্নতি ও আন্ত:ক্যাডার বৈষম্য নিরসনসহ ছয়দফা দাবিতে মাউশিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি। তাদের দাবিগুলির মধ্যে ‘যোগ্য’ সব কর্মকর্তার পদোন্নতি, পদসৃজন, স্কেল আপগ্রেডেশন, আন্ত:ক্যাডার বৈষম্য নিরসন, ক্যাডার কম্পোজিশনের সুরক্ষা, শিক্ষা ক্যাডার বহিভূর্তদের প্রত্যাহার করা। এসব সমস্যা দ্রƒত সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন সরকারি কলেজ শিক্ষকদের সংগঠন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির নেতারা।
আজ বৃহস্পতিবার মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) প্রাঙ্গনে অবস্থান কর্মসূতিতে এ দাবি জানান। সকাল ১১টায় শুরু বেলা দেড়টা পর্যন্ত চলে কর্মসূচি। এতে দেশের বিভিন্ন কলেজ ও শিক্ষা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের শিক্ষক ও কর্মকর্তা অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে সমিতির সভাপতি অধ্যাপক শাহেদুল খবির চৌধুরী বলেন, ‘পদোন্নতির জন্য আমাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হয়। পদসৃজন না হওয়ায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।’
শিক্ষা ক্যাডারের ১২ হাজার ৪৪৪টি ‘পদসৃজন’ ৯ বছর ধরে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘এখন আবার জনপ্রসাশন মন্ত্রণালয় বলছে আগের পদ্ধতিতে করা হবে। তাহলে এত দিন কেন ঝুঁলিয়ে রাখা হলো? আমরা ধারণা করছি, আবারও একটা দীর্ঘসূত্রিতার ফাঁদ করা হচ্ছে।’
ক্যাডার ‘কম্পোজিশন’ এখনো ‘অক্ষত’ আছে জানিয়ে শাহেদুল খবির চৌধুরী বলেন, ‘যদি সংস্কার করতে হয় তাহলে সেটা কারা করবে? অবশ্যই যারা শিক্ষা ক্যাডারে আছেন তাদের পরামর্শে হবে। কিন্তু তা করা হচ্ছে না।’
শিক্ষক নেতারা জানিয়েছেন, শিক্ষা ক্যাডারে প্রায় ১৬ হাজার সদস্য রয়েছেন। তারা সারা দেশের সরকারি কলেজ, শিক্ষা প্রশাসন, বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ড ও অধিদপ্তরে কর্মরত রয়েছেন। তাদের অনেকে ১০-১২ বছর ধরে পদোন্নতি পাচ্ছেন না। আবার কেউ কেউ ২৯ বছর চাকরি করেও সহযোগী অধ্যাপক থেকে অবসরে যাচ্ছে।
নেতাদের দাবি, বর্তমানে প্রায় সাত হাজার শিক্ষা ক্যাডার পদোন্নতিযোগ্য রয়েছেন। এর মধ্যে অধ্যাপক পদে এক হাজার ২০০ জন, সহযোগী অধ্যাপক পদে তিন হাজার জন ও সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি যোগ্য রয়েছেন প্রায় তিন হাজার জন। এসব কর্মকর্তা পদোন্নতিযোগ্য পদের বেতন স্কেলের সর্বোচ্চ সীমায় আছেন। অথাৎ তারা পদোন্নতি পেলেও বাড়তি কোনো আর্থিক সুবিধা পাবেন না। বিষয়টি সর্ম্পকে অবহিত থাকলেও সরকারি প্রশাসন তাদের পদোন্নতির উদ্যোগ নিচ্ছে না বলে শিক্ষা সমিতির অভিযোগ।
শিক্ষক সঙ্কটে শিক্ষার মান ক্রমাগত ‘ব্যহত’ হচ্ছে বলে অভিযোগ শিক্ষা সমিতির। তারা বলেন, শিক্ষক সঙ্কট ‘ভয়াবহ আকার’ ধারণ করেছে। পদ সৃজন না হওয়ায় শিক্ষক নিয়োগ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
শিক্ষকরাই ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলবেন মন্তব্য করে শাহেদুল খবির চৌধুরী বলেন, ‘কিন্তু তাদের প্রাপ্য সম্মান, অধিকার যদি না দেওয়া যায় তাহলে কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব না। পদসৃজন করেন, পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ দেন।’
শিক্ষা ক্যাডার নেতাদের অভিযোগ, যথাযথ অধিকার ও মর্যাদা না পেয়ে অনেকেই শিক্ষকতা ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন। সাম্প্রতিক সময়ে শিক্ষা ক্যাডারে জুনিয়র সহকর্মীরা তাদের অধিকার না পেয়ে চরম হতাশায় ভুগছেন। অনেকেই মৃত্যু মুখে পতিত হয়েছেন। তারা মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ছেন।
শিক্ষা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেওয়ার আহবান জানিয়ে বিসিএস শিক্ষা সমিতির সভাপতি বলেন, ‘গবেষণায় দেখা গেছে দেশে প্রাথমিক শিক্ষার মান কমে গেছে। শিক্ষণ ঘাটতি তৈরি হচ্ছে।’
ব্যবস্থাপনার ঘাটতির কারণে এটা হচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘শিক্ষা পরিচালনা সংক্রান্ত সমস্ত কার্যক্রম, দায়িত্ব শিক্ষা সংক্রান্ত ব্যক্তিদেরই দিতে হবে। আমাদের ঘর থেকে আমাদের সড়িয়ে দেওয়া যাবে না। আমাদের ঘরে আমরাই থাকবো। সারা পৃথিবীতে এমনটাই আছে।’
শিক্ষা সমিতির মহাসচিব শওকত হোসেন মোল্ল্যা বলেন, পদোন্নতির একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। এরপরও শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের বঞ্চিত করা হয়। পদোন্নতির সব যোগ্যতা অর্জনের পরও বছরের পর বছর শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তারা পদোন্নতি পাচ্ছেন না বলে অভিযোগে তার।
কর্মসূচিতে সমিতির সহসভাপতি অধ্যাপক দবিউর রহমান, মামুন উল হক, আ জ ম রুহুল কাদীর, যুগ্ম মহাসচিব বিপুল চন্দ্র সরকার, প্রচার সচিব মোহাম্মদ ফাতিহুল কাদীর, আইন সচিব দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ।
বৃহস্পতিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩
পদোন্নতি ও আন্ত:ক্যাডার বৈষম্য নিরসনসহ ছয়দফা দাবিতে মাউশিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি। তাদের দাবিগুলির মধ্যে ‘যোগ্য’ সব কর্মকর্তার পদোন্নতি, পদসৃজন, স্কেল আপগ্রেডেশন, আন্ত:ক্যাডার বৈষম্য নিরসন, ক্যাডার কম্পোজিশনের সুরক্ষা, শিক্ষা ক্যাডার বহিভূর্তদের প্রত্যাহার করা। এসব সমস্যা দ্রƒত সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন সরকারি কলেজ শিক্ষকদের সংগঠন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির নেতারা।
আজ বৃহস্পতিবার মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) প্রাঙ্গনে অবস্থান কর্মসূতিতে এ দাবি জানান। সকাল ১১টায় শুরু বেলা দেড়টা পর্যন্ত চলে কর্মসূচি। এতে দেশের বিভিন্ন কলেজ ও শিক্ষা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের শিক্ষক ও কর্মকর্তা অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে সমিতির সভাপতি অধ্যাপক শাহেদুল খবির চৌধুরী বলেন, ‘পদোন্নতির জন্য আমাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হয়। পদসৃজন না হওয়ায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।’
শিক্ষা ক্যাডারের ১২ হাজার ৪৪৪টি ‘পদসৃজন’ ৯ বছর ধরে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘এখন আবার জনপ্রসাশন মন্ত্রণালয় বলছে আগের পদ্ধতিতে করা হবে। তাহলে এত দিন কেন ঝুঁলিয়ে রাখা হলো? আমরা ধারণা করছি, আবারও একটা দীর্ঘসূত্রিতার ফাঁদ করা হচ্ছে।’
ক্যাডার ‘কম্পোজিশন’ এখনো ‘অক্ষত’ আছে জানিয়ে শাহেদুল খবির চৌধুরী বলেন, ‘যদি সংস্কার করতে হয় তাহলে সেটা কারা করবে? অবশ্যই যারা শিক্ষা ক্যাডারে আছেন তাদের পরামর্শে হবে। কিন্তু তা করা হচ্ছে না।’
শিক্ষক নেতারা জানিয়েছেন, শিক্ষা ক্যাডারে প্রায় ১৬ হাজার সদস্য রয়েছেন। তারা সারা দেশের সরকারি কলেজ, শিক্ষা প্রশাসন, বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ড ও অধিদপ্তরে কর্মরত রয়েছেন। তাদের অনেকে ১০-১২ বছর ধরে পদোন্নতি পাচ্ছেন না। আবার কেউ কেউ ২৯ বছর চাকরি করেও সহযোগী অধ্যাপক থেকে অবসরে যাচ্ছে।
নেতাদের দাবি, বর্তমানে প্রায় সাত হাজার শিক্ষা ক্যাডার পদোন্নতিযোগ্য রয়েছেন। এর মধ্যে অধ্যাপক পদে এক হাজার ২০০ জন, সহযোগী অধ্যাপক পদে তিন হাজার জন ও সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি যোগ্য রয়েছেন প্রায় তিন হাজার জন। এসব কর্মকর্তা পদোন্নতিযোগ্য পদের বেতন স্কেলের সর্বোচ্চ সীমায় আছেন। অথাৎ তারা পদোন্নতি পেলেও বাড়তি কোনো আর্থিক সুবিধা পাবেন না। বিষয়টি সর্ম্পকে অবহিত থাকলেও সরকারি প্রশাসন তাদের পদোন্নতির উদ্যোগ নিচ্ছে না বলে শিক্ষা সমিতির অভিযোগ।
শিক্ষক সঙ্কটে শিক্ষার মান ক্রমাগত ‘ব্যহত’ হচ্ছে বলে অভিযোগ শিক্ষা সমিতির। তারা বলেন, শিক্ষক সঙ্কট ‘ভয়াবহ আকার’ ধারণ করেছে। পদ সৃজন না হওয়ায় শিক্ষক নিয়োগ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
শিক্ষকরাই ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলবেন মন্তব্য করে শাহেদুল খবির চৌধুরী বলেন, ‘কিন্তু তাদের প্রাপ্য সম্মান, অধিকার যদি না দেওয়া যায় তাহলে কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব না। পদসৃজন করেন, পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ দেন।’
শিক্ষা ক্যাডার নেতাদের অভিযোগ, যথাযথ অধিকার ও মর্যাদা না পেয়ে অনেকেই শিক্ষকতা ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন। সাম্প্রতিক সময়ে শিক্ষা ক্যাডারে জুনিয়র সহকর্মীরা তাদের অধিকার না পেয়ে চরম হতাশায় ভুগছেন। অনেকেই মৃত্যু মুখে পতিত হয়েছেন। তারা মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ছেন।
শিক্ষা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেওয়ার আহবান জানিয়ে বিসিএস শিক্ষা সমিতির সভাপতি বলেন, ‘গবেষণায় দেখা গেছে দেশে প্রাথমিক শিক্ষার মান কমে গেছে। শিক্ষণ ঘাটতি তৈরি হচ্ছে।’
ব্যবস্থাপনার ঘাটতির কারণে এটা হচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘শিক্ষা পরিচালনা সংক্রান্ত সমস্ত কার্যক্রম, দায়িত্ব শিক্ষা সংক্রান্ত ব্যক্তিদেরই দিতে হবে। আমাদের ঘর থেকে আমাদের সড়িয়ে দেওয়া যাবে না। আমাদের ঘরে আমরাই থাকবো। সারা পৃথিবীতে এমনটাই আছে।’
শিক্ষা সমিতির মহাসচিব শওকত হোসেন মোল্ল্যা বলেন, পদোন্নতির একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। এরপরও শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের বঞ্চিত করা হয়। পদোন্নতির সব যোগ্যতা অর্জনের পরও বছরের পর বছর শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তারা পদোন্নতি পাচ্ছেন না বলে অভিযোগে তার।
কর্মসূচিতে সমিতির সহসভাপতি অধ্যাপক দবিউর রহমান, মামুন উল হক, আ জ ম রুহুল কাদীর, যুগ্ম মহাসচিব বিপুল চন্দ্র সরকার, প্রচার সচিব মোহাম্মদ ফাতিহুল কাদীর, আইন সচিব দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ।