জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় ইমেরিটাস অধ্যাপক সংক্রান্ত নীতিমালা প্রত্যাহার করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার(৭ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন রেজিস্ট্রার ভবনের সিনেট হলে একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় আলোচ্যসূচিটি স্থগিত করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নূরুল আলম। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আইন অনুষদের ডিন তাপস কুমার দাস।
এর আগে বিগত ১০ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. নুরুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইমেরিটাস অধ্যাপক, সুপারনিউমারারি অধ্যাপক এবং বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাদেশ-২০২৩ এ তিনটি শিক্ষক পদে নিয়োগ সংক্রান্ত নীতিমালা সিন্ডিকেটে উপস্থাপন করা হলে তা অনুষ্ঠিত একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় কিছু সংশোধনীসহ অনুমোদন করা হয় এবং সভার আলোচ্যসূচির ৪০ নম্বর ক্রমিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। প্রস্তাবিত এ অধ্যাদেশে মোট ১১টি ধারায় ইমেরিটাস অধ্যাপক নিয়োগের যোগ্যতা, সুযোগ-সুবিধা, দায়িত্ব ও কর্মপরিধি, মেয়াদ ইত্যাদি বিষয়ে উল্লেখ করা হয়।
সংযুক্ত প্রস্তাবিত অধ্যাদেশে ইমেরিটাস অধ্যাপক নিয়োগ কমিটির বিষয়ে বলা হয়েছে, সিন্ডিকেটের পক্ষ থেকে সভাপতি থাকবেন উপাচার্য। এ ছাড়া উপ-উপাচার্য (শিক্ষা), দুজন বিদেশি বিশেষজ্ঞ, দুজন খ্যাতনামা বাংলাদেশি বিশেষজ্ঞ এবং একজন সংশ্লিষ্ট অনুষদের ডিন সদস্য হিসেবে থাকবেন।
এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সোহেল আহমেদ জানিয়েছেন, আজকের আলোচনা সভায় অধিকাংশ শিক্ষকই বলেছেন বিষয়টি পদ্ধতিগতভাবে সঠিক হয়নি। এটা ১৯৭৩ এর অধ্যাদেশ এবং সংবিধি অনুযায়ী হয়নি। এতে অধ্যাদেশ লঙ্ঘন হয়েছে। একাডেমিক কাউন্সিলের সভাপতি হিসেবে উপাচার্য বিষয়টি উপলব্ধি করেছেন এবং তা প্রত্যাহার করেছেন। সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সংক্রান্ত সংবিধির মতো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়েও আগে সংবিধি তৈরি করতে হবে। এছাড়া যেহেতু এটা সম্পূর্ণভাবে একাডেমিক কাউন্সিলের বিষয় সেহেতু বিষয়টি একাডেমিক কাউন্সিল হয়ে সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী পর্ষদে উত্থাপিত হবে।
এ বিষয়ে আইন অনুষদের ডিন তাপস কুমার দাস বলেন, এখানে ইমেরিটাস অধ্যাপক নীতিমালায় আইনত দুটি সমস্যা আছে। প্রথমটি ‘সাবজেক্ট মেটার’ কেন্দ্রিক ও অন্যটি উপযুক্ত ‘ফোরাম’ থেকে বিষয়টি উত্থাপিত না হওয়া। এ নীতিমালাটি ‘অর্ডিন্যান্স’ বা অধ্যাদেশ আকারে এসেছে। কিন্তু এটি ‘স্ট্যাটিউট’ হিসেবে আসা উচিত ছিল।
তিনি বলেন, দ্বিতীয়ত, উপযুক্ত ফোরামে বিষয়টি যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি। এটাকে কোরাম-নন-জুডাইস বলা যেতে পারে। একাডেমিক ব্যাপারের সঙ্গে সম্পর্কিত যেকোনো নীতিমালা একাডেমিক কাউন্সিলে উত্থাপিত হবে। পরে তা সিনেটের মতামত নিয়ে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য সিন্ডিকেটে পাঠানো হবে। কিন্তু একাডেমিক কাউন্সিলে উত্থাপিত এ নীতিমালাটি শুরুতেই সিন্ডিকেট থেকে অনুমোদিত হয়ে এসেছে। তাই একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্যদের পরামর্শে উপাচার্য এজেন্ডাটি স্থগিত করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাডেমিক কাউন্সিলে উপস্থিত আরেক শিক্ষক জানিয়েছেন, এ সংক্রান্ত অধ্যাদেশ বা নীতিমালা কোন কিছুই চূড়ান্ত না হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবির ইমেরিটাস অধ্যাপক পদে আবেদন করেছেন। বিষয়টি সভার মধ্যে আলোচিত হলে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। আমরা এমন সম্মানজনক ব্যক্তির কাছ থেকে এমন আচরণ প্রত্যাশা করিনি। ব্যক্তি হিসেবে যিনিই হোন না কেন আমরা আশা করি, নিয়ম নীতি সমুন্নত রেখে এ পদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।
এ বিষয়ে ফার্মেসী বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ মাফরুহী সাত্তার জানান, এই অধ্যাদেশটি অনুমোদনে সিন্ডিকেটের এখতিয়ার নেই। আমাদের সংবিধিতে যা আছে সেগুলো মিলে হয়তো একটি স্পেসিফিক বিষয়ের জন্য নীতিমালা তৈরি হতে পারে।
তিনি আরো জানান, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাক্টে এই পদটি উল্লেখ ছিল না। সেক্ষেত্রে এটি আগে একাডেমিক কাউন্সিল হয়ে আসতে হবে। একাডেমিক কাউন্সিল যখন সুপারিশ করবে তখন একাডেমিক কাউন্সিল অথবা সিন্ডিকেট একটি প্রস্তাব তৈরি করবে। সেই প্রস্তাবের স্পেসিফিক কিছু অংশ একাডেমিক কাউন্সিলের সুপারিশসহ সিনেটে যাবে। পরে সংবিধি গুলো পাস হয়ে গেলে সিন্ডিকেট একটি নীতিমালা তৈরি করবে এবং সে নীতিমালার আলোকে প্রফেসর ইমেরিটাস সহ অন্যান্য উচ্চতর শিক্ষকতার পদগুলোতে নিয়োগ হবে।
বুধবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৩
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় ইমেরিটাস অধ্যাপক সংক্রান্ত নীতিমালা প্রত্যাহার করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার(৭ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন রেজিস্ট্রার ভবনের সিনেট হলে একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় আলোচ্যসূচিটি স্থগিত করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নূরুল আলম। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আইন অনুষদের ডিন তাপস কুমার দাস।
এর আগে বিগত ১০ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. নুরুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইমেরিটাস অধ্যাপক, সুপারনিউমারারি অধ্যাপক এবং বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাদেশ-২০২৩ এ তিনটি শিক্ষক পদে নিয়োগ সংক্রান্ত নীতিমালা সিন্ডিকেটে উপস্থাপন করা হলে তা অনুষ্ঠিত একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় কিছু সংশোধনীসহ অনুমোদন করা হয় এবং সভার আলোচ্যসূচির ৪০ নম্বর ক্রমিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। প্রস্তাবিত এ অধ্যাদেশে মোট ১১টি ধারায় ইমেরিটাস অধ্যাপক নিয়োগের যোগ্যতা, সুযোগ-সুবিধা, দায়িত্ব ও কর্মপরিধি, মেয়াদ ইত্যাদি বিষয়ে উল্লেখ করা হয়।
সংযুক্ত প্রস্তাবিত অধ্যাদেশে ইমেরিটাস অধ্যাপক নিয়োগ কমিটির বিষয়ে বলা হয়েছে, সিন্ডিকেটের পক্ষ থেকে সভাপতি থাকবেন উপাচার্য। এ ছাড়া উপ-উপাচার্য (শিক্ষা), দুজন বিদেশি বিশেষজ্ঞ, দুজন খ্যাতনামা বাংলাদেশি বিশেষজ্ঞ এবং একজন সংশ্লিষ্ট অনুষদের ডিন সদস্য হিসেবে থাকবেন।
এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সোহেল আহমেদ জানিয়েছেন, আজকের আলোচনা সভায় অধিকাংশ শিক্ষকই বলেছেন বিষয়টি পদ্ধতিগতভাবে সঠিক হয়নি। এটা ১৯৭৩ এর অধ্যাদেশ এবং সংবিধি অনুযায়ী হয়নি। এতে অধ্যাদেশ লঙ্ঘন হয়েছে। একাডেমিক কাউন্সিলের সভাপতি হিসেবে উপাচার্য বিষয়টি উপলব্ধি করেছেন এবং তা প্রত্যাহার করেছেন। সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সংক্রান্ত সংবিধির মতো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়েও আগে সংবিধি তৈরি করতে হবে। এছাড়া যেহেতু এটা সম্পূর্ণভাবে একাডেমিক কাউন্সিলের বিষয় সেহেতু বিষয়টি একাডেমিক কাউন্সিল হয়ে সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী পর্ষদে উত্থাপিত হবে।
এ বিষয়ে আইন অনুষদের ডিন তাপস কুমার দাস বলেন, এখানে ইমেরিটাস অধ্যাপক নীতিমালায় আইনত দুটি সমস্যা আছে। প্রথমটি ‘সাবজেক্ট মেটার’ কেন্দ্রিক ও অন্যটি উপযুক্ত ‘ফোরাম’ থেকে বিষয়টি উত্থাপিত না হওয়া। এ নীতিমালাটি ‘অর্ডিন্যান্স’ বা অধ্যাদেশ আকারে এসেছে। কিন্তু এটি ‘স্ট্যাটিউট’ হিসেবে আসা উচিত ছিল।
তিনি বলেন, দ্বিতীয়ত, উপযুক্ত ফোরামে বিষয়টি যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি। এটাকে কোরাম-নন-জুডাইস বলা যেতে পারে। একাডেমিক ব্যাপারের সঙ্গে সম্পর্কিত যেকোনো নীতিমালা একাডেমিক কাউন্সিলে উত্থাপিত হবে। পরে তা সিনেটের মতামত নিয়ে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য সিন্ডিকেটে পাঠানো হবে। কিন্তু একাডেমিক কাউন্সিলে উত্থাপিত এ নীতিমালাটি শুরুতেই সিন্ডিকেট থেকে অনুমোদিত হয়ে এসেছে। তাই একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্যদের পরামর্শে উপাচার্য এজেন্ডাটি স্থগিত করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাডেমিক কাউন্সিলে উপস্থিত আরেক শিক্ষক জানিয়েছেন, এ সংক্রান্ত অধ্যাদেশ বা নীতিমালা কোন কিছুই চূড়ান্ত না হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবির ইমেরিটাস অধ্যাপক পদে আবেদন করেছেন। বিষয়টি সভার মধ্যে আলোচিত হলে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। আমরা এমন সম্মানজনক ব্যক্তির কাছ থেকে এমন আচরণ প্রত্যাশা করিনি। ব্যক্তি হিসেবে যিনিই হোন না কেন আমরা আশা করি, নিয়ম নীতি সমুন্নত রেখে এ পদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।
এ বিষয়ে ফার্মেসী বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ মাফরুহী সাত্তার জানান, এই অধ্যাদেশটি অনুমোদনে সিন্ডিকেটের এখতিয়ার নেই। আমাদের সংবিধিতে যা আছে সেগুলো মিলে হয়তো একটি স্পেসিফিক বিষয়ের জন্য নীতিমালা তৈরি হতে পারে।
তিনি আরো জানান, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাক্টে এই পদটি উল্লেখ ছিল না। সেক্ষেত্রে এটি আগে একাডেমিক কাউন্সিল হয়ে আসতে হবে। একাডেমিক কাউন্সিল যখন সুপারিশ করবে তখন একাডেমিক কাউন্সিল অথবা সিন্ডিকেট একটি প্রস্তাব তৈরি করবে। সেই প্রস্তাবের স্পেসিফিক কিছু অংশ একাডেমিক কাউন্সিলের সুপারিশসহ সিনেটে যাবে। পরে সংবিধি গুলো পাস হয়ে গেলে সিন্ডিকেট একটি নীতিমালা তৈরি করবে এবং সে নীতিমালার আলোকে প্রফেসর ইমেরিটাস সহ অন্যান্য উচ্চতর শিক্ষকতার পদগুলোতে নিয়োগ হবে।