কুমিল্লায় এসএসসি পরীক্ষায় নকলে বাধা দেওয়াসহ কেন্দ্রে কড়া নজরদারির অভিযোগে শিক্ষকদের ওপর চড়াও হয়েছে পরীক্ষার্থীরা। এ সময় বিভিন্ন কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলার দায়ে দুই শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার এবং ১১ জন শিক্ষককে কেন্দ্রের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১০ মে) বরুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। মঙ্গলবার (৯ মে) কুমিল্লার বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্রে এসব ঘটনা ঘটে।
অব্যাহতি পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন, আড্ডা উমেদারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ঝলম স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক জহিরুল ইসলাম, হাবিবুর রহমান ও রঞ্জিত সরকার। বরুড়া সুন্নিয়া কামিল মাদরাসা কেন্দ্রে বাতাইছড়ি মাদরাসার শিক্ষক রাবেয়া আক্তার। বাতাইছড়ি কেন্দ্রে কেমতলী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক সরোয়ার আলম ও শিমুল চন্দ্র ভৌমিক। চালিতাতলী মাদরাসার শিক্ষক ইলিয়াছ মিয়া, ঝলম উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে কৃষ্ণপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক সেলিনা ইসলাম। পয়ালগাছা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের শাহিদা আক্তার। ছোট তুলাগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক খোকন চন্দ্র শর্মা।
বহিষ্কার হওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন, বরুড়া সুন্নিয়া কামিল মাদরাসা কেন্দ্রে কৃষ্ণপুর মাদরাসার এক শিক্ষার্থী ও তলাগ্রাম তারিণী চরণ লাহা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এক শিক্ষার্থী।
কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার মহেশপুর আজিজিয়া উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর খাতা নিয়ে বোর্ডে আসার পথে দুর্বৃত্তরা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। এ সময় নুরুল ইসলাম নামে একজন কনস্টেবল আহত হন। হাজী নোয়াব আলী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষা শেষে কয়েকজন উচ্ছৃঙ্খল পরীক্ষার্থী ও বহিরাগতরা মিলে উত্তরপত্র ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় ছয়জন আহত হয়েছে। তবে এসব ঘটনায় শিক্ষার্থী ও শিক্ষক মিলে মোট ১৩ জনকে বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে বহিষ্কার করেছেন স্থানীয় প্রশাসন। অন্যদিকে বরুড়া হাজী নোয়াব আলী কেন্দ্র পরিবর্তন করে পার্শ্ববর্তী শাহেরা বানু কলেজে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ড।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, মঙ্গলবার ছিল গণিত পরীক্ষা। পরীক্ষার নির্ধারিত সময় শেষ না হতেই উত্তরপত্র টেনে নেওয়ার অভিযোগ তুলে কয়েকজন পরীক্ষার্থী এক শিক্ষকের মোটরসাইকেল ভাংচুর করে। এতে পুলিশ বাধা দিলে কয়েকজন পরীক্ষার্থী ও বহিরাগতদের ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে তাদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এ সময় আহত হয়েছেন তাজুল ইসলাম (১৫),সজীব হোসেন (২১), মোহাম্মদ আলী (৩৮), উদয় (১৭), ফারুক (২১) ও ফাহাদ । তাদের মধ্যে ফারুককে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা মেডিকেলল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
কেন্দ্রের কয়েকজন শিক্ষক জানান, মঙ্গলবার গণিত পরীক্ষায় আমরা কাউকে বহিষ্কার করিনি। বাইরে থেকে কোনো নকল সরবরাহ করতে না দেওয়ায় কয়েকজন পরীক্ষার্থী, পরীক্ষা শেষে মিথ্যা অভিযোগ তুলে পরিস্থিতি অশান্ত করার চেষ্টা করেছে। পুলিশ বাধা দিলে বহিরাগত কিছু লোক পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দেয়। তারা পরীক্ষার হলের বাইরে কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায় এবং স্কুলের দক্ষিণ পাশের ভবনের কয়েকটি কাঁচের জানালা ভাংচুর করে।
তারা আরও জানান, পরীক্ষা শেষে খাতা নিয়ে যেতে বাধা দেওয়া হবে এমন গুঞ্জন উঠলে পরীক্ষা শেষ হওয়ার দুই ঘণ্টা পর কেন্দ্র থেকে খাতা নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। তারপরও পথে খাতা বহনকারী পুলিশের গাড়িতে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে কয়েকজন দুর্বৃত্ত। এ সময় পুলিশ লাঠিচার্জ করলে কয়েকজন আহত হয়।
বরুড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাবরিনা আফরিন মুস্তফা জানান, মঙ্গলবার কর্তব্যে অবহেলার দায়ে কয়েকজন শিক্ষককে কেন্দ্রের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। সম্পূর্ণ নকলমুক্ত পরিবেশে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড কুমিল্লার উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. শহিদুল ইসলাম জানান, মহেষপুর আজিজিয়া উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের সচিবকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে যেসব কেন্দ্র থেকে অনিয়ম ও বিশৃঙ্খলার সংবাদ পাওয়া গেছে সেসব কেন্দ্রে অতিরিক্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে স্থানীয় প্রশাসনকে অনুরোধ করা হয়েছে।
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ হোসেন জানান, মঙ্গলবার হাজী নোয়াব আলী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে গোলযোগের সংবাদ পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দ্রুত বিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। পরীক্ষার খাতা ছিনিয়ে নেওয়ার সময়ও টের পেয়ে পুলিশ সেগুলো রক্ষা করে। পরে সেগুলো শিক্ষাবোর্ডে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বুধবার, ১০ মে ২০২৩
কুমিল্লায় এসএসসি পরীক্ষায় নকলে বাধা দেওয়াসহ কেন্দ্রে কড়া নজরদারির অভিযোগে শিক্ষকদের ওপর চড়াও হয়েছে পরীক্ষার্থীরা। এ সময় বিভিন্ন কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলার দায়ে দুই শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার এবং ১১ জন শিক্ষককে কেন্দ্রের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১০ মে) বরুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। মঙ্গলবার (৯ মে) কুমিল্লার বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্রে এসব ঘটনা ঘটে।
অব্যাহতি পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন, আড্ডা উমেদারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ঝলম স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক জহিরুল ইসলাম, হাবিবুর রহমান ও রঞ্জিত সরকার। বরুড়া সুন্নিয়া কামিল মাদরাসা কেন্দ্রে বাতাইছড়ি মাদরাসার শিক্ষক রাবেয়া আক্তার। বাতাইছড়ি কেন্দ্রে কেমতলী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক সরোয়ার আলম ও শিমুল চন্দ্র ভৌমিক। চালিতাতলী মাদরাসার শিক্ষক ইলিয়াছ মিয়া, ঝলম উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে কৃষ্ণপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক সেলিনা ইসলাম। পয়ালগাছা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের শাহিদা আক্তার। ছোট তুলাগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক খোকন চন্দ্র শর্মা।
বহিষ্কার হওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন, বরুড়া সুন্নিয়া কামিল মাদরাসা কেন্দ্রে কৃষ্ণপুর মাদরাসার এক শিক্ষার্থী ও তলাগ্রাম তারিণী চরণ লাহা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এক শিক্ষার্থী।
কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার মহেশপুর আজিজিয়া উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর খাতা নিয়ে বোর্ডে আসার পথে দুর্বৃত্তরা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। এ সময় নুরুল ইসলাম নামে একজন কনস্টেবল আহত হন। হাজী নোয়াব আলী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষা শেষে কয়েকজন উচ্ছৃঙ্খল পরীক্ষার্থী ও বহিরাগতরা মিলে উত্তরপত্র ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় ছয়জন আহত হয়েছে। তবে এসব ঘটনায় শিক্ষার্থী ও শিক্ষক মিলে মোট ১৩ জনকে বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে বহিষ্কার করেছেন স্থানীয় প্রশাসন। অন্যদিকে বরুড়া হাজী নোয়াব আলী কেন্দ্র পরিবর্তন করে পার্শ্ববর্তী শাহেরা বানু কলেজে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ড।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, মঙ্গলবার ছিল গণিত পরীক্ষা। পরীক্ষার নির্ধারিত সময় শেষ না হতেই উত্তরপত্র টেনে নেওয়ার অভিযোগ তুলে কয়েকজন পরীক্ষার্থী এক শিক্ষকের মোটরসাইকেল ভাংচুর করে। এতে পুলিশ বাধা দিলে কয়েকজন পরীক্ষার্থী ও বহিরাগতদের ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে তাদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এ সময় আহত হয়েছেন তাজুল ইসলাম (১৫),সজীব হোসেন (২১), মোহাম্মদ আলী (৩৮), উদয় (১৭), ফারুক (২১) ও ফাহাদ । তাদের মধ্যে ফারুককে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা মেডিকেলল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
কেন্দ্রের কয়েকজন শিক্ষক জানান, মঙ্গলবার গণিত পরীক্ষায় আমরা কাউকে বহিষ্কার করিনি। বাইরে থেকে কোনো নকল সরবরাহ করতে না দেওয়ায় কয়েকজন পরীক্ষার্থী, পরীক্ষা শেষে মিথ্যা অভিযোগ তুলে পরিস্থিতি অশান্ত করার চেষ্টা করেছে। পুলিশ বাধা দিলে বহিরাগত কিছু লোক পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দেয়। তারা পরীক্ষার হলের বাইরে কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায় এবং স্কুলের দক্ষিণ পাশের ভবনের কয়েকটি কাঁচের জানালা ভাংচুর করে।
তারা আরও জানান, পরীক্ষা শেষে খাতা নিয়ে যেতে বাধা দেওয়া হবে এমন গুঞ্জন উঠলে পরীক্ষা শেষ হওয়ার দুই ঘণ্টা পর কেন্দ্র থেকে খাতা নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। তারপরও পথে খাতা বহনকারী পুলিশের গাড়িতে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে কয়েকজন দুর্বৃত্ত। এ সময় পুলিশ লাঠিচার্জ করলে কয়েকজন আহত হয়।
বরুড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাবরিনা আফরিন মুস্তফা জানান, মঙ্গলবার কর্তব্যে অবহেলার দায়ে কয়েকজন শিক্ষককে কেন্দ্রের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। সম্পূর্ণ নকলমুক্ত পরিবেশে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড কুমিল্লার উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. শহিদুল ইসলাম জানান, মহেষপুর আজিজিয়া উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের সচিবকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে যেসব কেন্দ্র থেকে অনিয়ম ও বিশৃঙ্খলার সংবাদ পাওয়া গেছে সেসব কেন্দ্রে অতিরিক্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে স্থানীয় প্রশাসনকে অনুরোধ করা হয়েছে।
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ হোসেন জানান, মঙ্গলবার হাজী নোয়াব আলী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে গোলযোগের সংবাদ পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দ্রুত বিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। পরীক্ষার খাতা ছিনিয়ে নেওয়ার সময়ও টের পেয়ে পুলিশ সেগুলো রক্ষা করে। পরে সেগুলো শিক্ষাবোর্ডে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।