নতুন শিক্ষাক্রমে এসএসসি পরীক্ষা
নতুন শিক্ষাক্রমে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা বহাল থাকছে। তবে ৫০ শতাংশ লিখিত পরীক্ষা রাখার সুপারিশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় গঠিত মূল্যায়ন কমিটি। কমিটি লিখিত মূল্যায়ন ৫০ শতাংশ এবং কার্যক্রমভিত্তিক মূল্যায়ন ৫০ শতাংশ করার প্রস্তাব করেছে। দশটি বিষয়ের ওপর শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের সুপারিশ করেছে কমিটি। আর শিক্ষাক্রমে পাঁচ ঘণ্টার পরীক্ষা নেয়ার কথা বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফরহাদুল ইসলাম বুধবার (২৪ এপ্রিল) সংবাদকে জানিয়েছেন, নতুন শিক্ষাক্রমে মূল্যায়ন সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন ২৩ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়া হয়েছে।
টানা পাঁচ ঘণ্টা শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা কেন্দ্রে রাখা সম্ভব কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সব বিষয়ে পাঁচ ঘণ্টা পরীক্ষা হবে না। কোনো বিষয়ে তিন ঘণ্টা.... কোনো বিষয়ে দুই ঘণ্টার পরীক্ষাও হতে পারে। সেটি নির্ভর করবে বিষয়ের (গুরুত্বের) ওপর।’ পরবর্তীতে শিক্ষা বোর্ডগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে পরীক্ষার সময় চূড়ান্ত করা হবে বলে জানান ফরহাদুল ইসলাম।
নতুন শিক্ষাক্রমে (কারিকুলাম) প্রথমবার এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ২০২৬ সালে। এ পরীক্ষার নাম ও মূল্যায়ন পদ্ধতির ধরন ঠিক করতে গত ৫ মার্চ ১৪ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ কমিটির সদস্যরা এ পরীক্ষার নাম ‘মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি)’ রাখার পক্ষে মতামত দিয়েছেন।
এ কমিটি গত ২২ এপ্রিল মূল্যায়ন পদ্ধতি নিয়ে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডে একটি বৈঠক করে। সেই বৈঠকেই সুপারিশের খসড়া চূড়ান্ত করা হয়।
এ বিষয়ে অধ্যাপক ফরহাদুল ইসলাম বলেন, নতুন কারিকুলামে মূল্যায়ন পদ্ধতি নিয়ে এনসিটিবিরও একটি কমিটি ছিল। সেই কমিটি ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয়ের গঠিত উচ্চপর্যায়ের কমিটির কাছে একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এগুলো চূড়ান্ত নয়। আরও পর্যালোচনা করা হচ্ছে; এরপর সুপারিশ চূড়ান্ত করা হবে।
লিখিত পরীক্ষার বিষয়ে কমিটির সুপারিশে বলা হয়েছে, মূল্যায়ন পদ্ধতিতে যোগ্যতা ও কার্যক্রমভিত্তিক মূল্যায়নের পাশাপাশি লিখিত পরীক্ষা বা মূল্যায়ন রাখা যেতে পারে। আন্তঃসম্পর্ক বজায় রেখে লিখিত মূল্যায়নের ‘ওয়েটেজ’ (মূল্যায়ন) ৫০ শতাংশ ও ‘কার্যক্রমভিত্তিক’ মূল্যায়নের ‘ওয়েটেজ’ ৫০ শতাংশ রাখার সুপারিশ করা হয়েছে। স্কুলভিত্তিক ষান্মাসিক ও বার্ষিক মূল্যায়ন এবং পাবলিক মূল্যায়নে একই পদ্ধতিতে করা যেতে পারে।
সুপারিশে আরও বলা হয়েছে, ‘চূড়ান্ত মূল্যায়ন সনদ/ট্রান্সক্রিপ্টে মূল্যায়নের সাত পর্যায়ের স্কেলে যোগ্যতা ও পারদর্শিতার সূচকের বিষয়টি অভিভাবক এবং অংশীজনদের অবহিত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে।’
‘জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা-২০২১ অনুযায়ী প্রণীত শিক্ষাক্রম প্রণয়ন করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কোনো কোনো দেশের মডেলকে পর্যালোচনা করা হয়েছে এবং কোনো কোনো দেশে এই মডেল সফল বাস্তবায়ন হয়েছে এবং মূল্যায়ন পদ্ধতির আন্তর্জাতিক গ্রহণ যোগ্যতার বিষয়ে অংশীজনকে অবহিত করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে।’ আরেক সুপারিশে বলা হয়েছে, ‘চূড়ান্ত মূল্যায়ন পদ্ধতি ও গাইড লাইনের আলোকে নৈপুণ্য প্ল্যাটফর্মের হালনাগাদ করা যেতে পারে এবং এ বিষয়ে শিক্ষক ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা যেতে পারে।’
মূল্যায়ন কমিটির একাধিক সদস্য জানিয়েছেন, লিখিত ও কার্যক্রমভিত্তিক মূল্যায়ন মিলিয়ে মোট সময় হবে পাঁচ ঘণ্টা। এর মধ্যে লিখিত অংশের সময় কত ও কার্যক্রমভিত্তিক অংশের জন্য সময় কত হবে, তা বিষয়ের ওপর নির্ভর করবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ খালেদ রহীম সাংবাদিকদের বলেন, নতুন শিক্ষাক্রমে পাবলিক পরীক্ষার মূল্যায়ন পদ্ধতির কিছু সুপারিশ নিয়ে তারা আলোচনা করেছেন। শীঘ্রই চূড়ান্ত করে প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়া হবে বলে জানান তিনি।
১৯৬২ সাল থেকে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষা হয়ে আসছে। নতুন শিক্ষাক্রমের বাস্তবায়ন শুরু হওয়ার পর এসএসসি পরীক্ষা থাকবে নাকি উঠে যাচ্ছে সেই বিষয়ে নানা রকম আলোচনা হয়ে আসছিল।
চলতি শিক্ষাবর্ষে ৮ম ও ৯ম শ্রেণীতে নতুন শিক্ষাক্রমে পাঠদান শুরু হয়েছে। এবার ৮ম ও ৯ম শ্রেণীতে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা ২০২৬ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবে।
২০২৩ শিক্ষাবর্ষে প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীতে নতুন শিক্ষাক্রমে পাঠদান শুরু হয়েছে। চলতি শিক্ষাবর্ষে দ্বিতীয়, তৃতীয়, অষ্টম ও নবম শ্রেণীতে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। এরপর ২০২৫ সালে পঞ্চম ও দশম শ্রেণী, ২০২৬ সালে একাদশ এবং ২০২৭ সালে দ্বাদশ শ্রেণীতে এই শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন হওয়ার কথা রয়েছে।
বর্তমানে নতুন শিক্ষাক্রমে দুই পদ্ধতিতে মূল্যায়ন করা হয়। একটি বছরব্যাপী শ্রেণীকক্ষে শিখনকালীন মূল্যায়ন, অন্যটি হলো- বছর শেষে সামষ্টিক মূল্যায়ন। শিক্ষাক্রমের রূপরেখায় প্রাক-প্রাথমিক থেকে তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত কোনো পরীক্ষা রাখা হয়নি। এর পরিবর্তে শতভাগ শিখনকালীন মূল্যায়নের কথা বলা হয়েছে।
তবে চতুর্থ শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত পাঁচটি বিষয়ে কিছু অংশের ‘শিখনকালীন’ মূল্যায়নের কথা বলা হয়েছে। বাকি অংশের সামষ্টিক মূল্যায়ন হবে।
এই মূল্যায়ন পদ্ধতি নিয়ে অভিভাবক, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অংশীজনদের মধ্যে অসন্তোষ রয়েছে। তাদের যুক্তি হলো-নির্দিষ্ট দিন বা সময়ে কোনো লিখিত পরীক্ষা না থাকায় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় মনোযোগ ব্যাহত হতে পারে। এ কারণে তারা লিখিত পরীক্ষা রাখার দাবি জানিয়ে আসছেন।
একজন শিক্ষার্থীর অগ্রগতি বোঝাতে নম্বর বা গ্রেডের পরিবর্তে ত্রিভুজ, চতুর্ভুজ ও বৃত্ত ব্যবহার করার কথা বলা হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রমে। ত্রিভুজ হচ্ছে সবচেয়ে দক্ষ বা ভালো, বৃত্ত হচ্ছে মোটামুটি ভালো এবং চতুর্ভুজ হলো- উন্নতি প্রয়োজন।
শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী গত ১ ফেব্রুয়ারি এনসিটিবি এবং শিক্ষাক্রম প্রণয়নের সঙ্গে যুক্ত কর্তৃপক্ষ ও অংশীজনদের নিয়ে বৈঠক করেন। বৈঠকে মূল্যায়ন পদ্ধতির বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানতে চান মন্ত্রী। তিনি বিষয়টি নিয়ে জন-অসন্তোষ নিরসনে এ কার্যক্রম যাচাই– বাছাইয়ের পরামর্শ দেন।
পরবর্তীতে ৪ ফেব্রুয়ারি মূল্যায়ন পদ্ধতি ও নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে ১৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি সমন্বয় কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ কমিটির আহ্বায়ক হলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মোহাম্মদ খালেদ রহীম। কমিটির সদস্য হিসেবে আছেন এনসিটিবি, মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বিভিন্ন অধিদপ্তর ও শিক্ষা বোর্ডগুলোর প্রতিনিধিরা।
নতুন শিক্ষাক্রমে এসএসসি পরীক্ষা
বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪
নতুন শিক্ষাক্রমে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা বহাল থাকছে। তবে ৫০ শতাংশ লিখিত পরীক্ষা রাখার সুপারিশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় গঠিত মূল্যায়ন কমিটি। কমিটি লিখিত মূল্যায়ন ৫০ শতাংশ এবং কার্যক্রমভিত্তিক মূল্যায়ন ৫০ শতাংশ করার প্রস্তাব করেছে। দশটি বিষয়ের ওপর শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের সুপারিশ করেছে কমিটি। আর শিক্ষাক্রমে পাঁচ ঘণ্টার পরীক্ষা নেয়ার কথা বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফরহাদুল ইসলাম বুধবার (২৪ এপ্রিল) সংবাদকে জানিয়েছেন, নতুন শিক্ষাক্রমে মূল্যায়ন সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন ২৩ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়া হয়েছে।
টানা পাঁচ ঘণ্টা শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা কেন্দ্রে রাখা সম্ভব কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সব বিষয়ে পাঁচ ঘণ্টা পরীক্ষা হবে না। কোনো বিষয়ে তিন ঘণ্টা.... কোনো বিষয়ে দুই ঘণ্টার পরীক্ষাও হতে পারে। সেটি নির্ভর করবে বিষয়ের (গুরুত্বের) ওপর।’ পরবর্তীতে শিক্ষা বোর্ডগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে পরীক্ষার সময় চূড়ান্ত করা হবে বলে জানান ফরহাদুল ইসলাম।
নতুন শিক্ষাক্রমে (কারিকুলাম) প্রথমবার এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ২০২৬ সালে। এ পরীক্ষার নাম ও মূল্যায়ন পদ্ধতির ধরন ঠিক করতে গত ৫ মার্চ ১৪ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ কমিটির সদস্যরা এ পরীক্ষার নাম ‘মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি)’ রাখার পক্ষে মতামত দিয়েছেন।
এ কমিটি গত ২২ এপ্রিল মূল্যায়ন পদ্ধতি নিয়ে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডে একটি বৈঠক করে। সেই বৈঠকেই সুপারিশের খসড়া চূড়ান্ত করা হয়।
এ বিষয়ে অধ্যাপক ফরহাদুল ইসলাম বলেন, নতুন কারিকুলামে মূল্যায়ন পদ্ধতি নিয়ে এনসিটিবিরও একটি কমিটি ছিল। সেই কমিটি ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয়ের গঠিত উচ্চপর্যায়ের কমিটির কাছে একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এগুলো চূড়ান্ত নয়। আরও পর্যালোচনা করা হচ্ছে; এরপর সুপারিশ চূড়ান্ত করা হবে।
লিখিত পরীক্ষার বিষয়ে কমিটির সুপারিশে বলা হয়েছে, মূল্যায়ন পদ্ধতিতে যোগ্যতা ও কার্যক্রমভিত্তিক মূল্যায়নের পাশাপাশি লিখিত পরীক্ষা বা মূল্যায়ন রাখা যেতে পারে। আন্তঃসম্পর্ক বজায় রেখে লিখিত মূল্যায়নের ‘ওয়েটেজ’ (মূল্যায়ন) ৫০ শতাংশ ও ‘কার্যক্রমভিত্তিক’ মূল্যায়নের ‘ওয়েটেজ’ ৫০ শতাংশ রাখার সুপারিশ করা হয়েছে। স্কুলভিত্তিক ষান্মাসিক ও বার্ষিক মূল্যায়ন এবং পাবলিক মূল্যায়নে একই পদ্ধতিতে করা যেতে পারে।
সুপারিশে আরও বলা হয়েছে, ‘চূড়ান্ত মূল্যায়ন সনদ/ট্রান্সক্রিপ্টে মূল্যায়নের সাত পর্যায়ের স্কেলে যোগ্যতা ও পারদর্শিতার সূচকের বিষয়টি অভিভাবক এবং অংশীজনদের অবহিত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে।’
‘জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা-২০২১ অনুযায়ী প্রণীত শিক্ষাক্রম প্রণয়ন করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কোনো কোনো দেশের মডেলকে পর্যালোচনা করা হয়েছে এবং কোনো কোনো দেশে এই মডেল সফল বাস্তবায়ন হয়েছে এবং মূল্যায়ন পদ্ধতির আন্তর্জাতিক গ্রহণ যোগ্যতার বিষয়ে অংশীজনকে অবহিত করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে।’ আরেক সুপারিশে বলা হয়েছে, ‘চূড়ান্ত মূল্যায়ন পদ্ধতি ও গাইড লাইনের আলোকে নৈপুণ্য প্ল্যাটফর্মের হালনাগাদ করা যেতে পারে এবং এ বিষয়ে শিক্ষক ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা যেতে পারে।’
মূল্যায়ন কমিটির একাধিক সদস্য জানিয়েছেন, লিখিত ও কার্যক্রমভিত্তিক মূল্যায়ন মিলিয়ে মোট সময় হবে পাঁচ ঘণ্টা। এর মধ্যে লিখিত অংশের সময় কত ও কার্যক্রমভিত্তিক অংশের জন্য সময় কত হবে, তা বিষয়ের ওপর নির্ভর করবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ খালেদ রহীম সাংবাদিকদের বলেন, নতুন শিক্ষাক্রমে পাবলিক পরীক্ষার মূল্যায়ন পদ্ধতির কিছু সুপারিশ নিয়ে তারা আলোচনা করেছেন। শীঘ্রই চূড়ান্ত করে প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়া হবে বলে জানান তিনি।
১৯৬২ সাল থেকে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষা হয়ে আসছে। নতুন শিক্ষাক্রমের বাস্তবায়ন শুরু হওয়ার পর এসএসসি পরীক্ষা থাকবে নাকি উঠে যাচ্ছে সেই বিষয়ে নানা রকম আলোচনা হয়ে আসছিল।
চলতি শিক্ষাবর্ষে ৮ম ও ৯ম শ্রেণীতে নতুন শিক্ষাক্রমে পাঠদান শুরু হয়েছে। এবার ৮ম ও ৯ম শ্রেণীতে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা ২০২৬ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবে।
২০২৩ শিক্ষাবর্ষে প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীতে নতুন শিক্ষাক্রমে পাঠদান শুরু হয়েছে। চলতি শিক্ষাবর্ষে দ্বিতীয়, তৃতীয়, অষ্টম ও নবম শ্রেণীতে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। এরপর ২০২৫ সালে পঞ্চম ও দশম শ্রেণী, ২০২৬ সালে একাদশ এবং ২০২৭ সালে দ্বাদশ শ্রেণীতে এই শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন হওয়ার কথা রয়েছে।
বর্তমানে নতুন শিক্ষাক্রমে দুই পদ্ধতিতে মূল্যায়ন করা হয়। একটি বছরব্যাপী শ্রেণীকক্ষে শিখনকালীন মূল্যায়ন, অন্যটি হলো- বছর শেষে সামষ্টিক মূল্যায়ন। শিক্ষাক্রমের রূপরেখায় প্রাক-প্রাথমিক থেকে তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত কোনো পরীক্ষা রাখা হয়নি। এর পরিবর্তে শতভাগ শিখনকালীন মূল্যায়নের কথা বলা হয়েছে।
তবে চতুর্থ শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত পাঁচটি বিষয়ে কিছু অংশের ‘শিখনকালীন’ মূল্যায়নের কথা বলা হয়েছে। বাকি অংশের সামষ্টিক মূল্যায়ন হবে।
এই মূল্যায়ন পদ্ধতি নিয়ে অভিভাবক, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অংশীজনদের মধ্যে অসন্তোষ রয়েছে। তাদের যুক্তি হলো-নির্দিষ্ট দিন বা সময়ে কোনো লিখিত পরীক্ষা না থাকায় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় মনোযোগ ব্যাহত হতে পারে। এ কারণে তারা লিখিত পরীক্ষা রাখার দাবি জানিয়ে আসছেন।
একজন শিক্ষার্থীর অগ্রগতি বোঝাতে নম্বর বা গ্রেডের পরিবর্তে ত্রিভুজ, চতুর্ভুজ ও বৃত্ত ব্যবহার করার কথা বলা হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রমে। ত্রিভুজ হচ্ছে সবচেয়ে দক্ষ বা ভালো, বৃত্ত হচ্ছে মোটামুটি ভালো এবং চতুর্ভুজ হলো- উন্নতি প্রয়োজন।
শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী গত ১ ফেব্রুয়ারি এনসিটিবি এবং শিক্ষাক্রম প্রণয়নের সঙ্গে যুক্ত কর্তৃপক্ষ ও অংশীজনদের নিয়ে বৈঠক করেন। বৈঠকে মূল্যায়ন পদ্ধতির বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানতে চান মন্ত্রী। তিনি বিষয়টি নিয়ে জন-অসন্তোষ নিরসনে এ কার্যক্রম যাচাই– বাছাইয়ের পরামর্শ দেন।
পরবর্তীতে ৪ ফেব্রুয়ারি মূল্যায়ন পদ্ধতি ও নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে ১৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি সমন্বয় কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ কমিটির আহ্বায়ক হলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মোহাম্মদ খালেদ রহীম। কমিটির সদস্য হিসেবে আছেন এনসিটিবি, মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বিভিন্ন অধিদপ্তর ও শিক্ষা বোর্ডগুলোর প্রতিনিধিরা।