‘মনগড়া ফল’ বাতিলের দাবিতে যশোর শিক্ষাবোর্ড ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছে এইচএসসি অনুত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা। রোববার দুপুরে শতাধিক শিক্ষার্থী যশোর শিক্ষাবোর্ডে অবস্থান নিয়ে এই বিক্ষোভ শুরু করে।
তাদের অভিযোগ, বোর্ড কর্তৃপক্ষ মনগড়া ফল দিয়েছে। যশোর বোর্ডের ইংরেজি প্রশ্ন সহজ আসার পরও গণহারে ইংরেজিতে ফেল করানো হয়েছে। আর সাবজেক্ট ম্যাপিংও সঠিকভাবে করা হয়নি। এজন্য এই ফলাফল বাতিলের দাবি জানিয়ে তারা স্মারকলিপি দিয়েছে।
যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড সূত্র জানায়, রোববার সকাল থেকে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ একদল শিক্ষার্থী শিক্ষাবোর্ডের সামনে অবস্থান নিতে শুরু করে। খুলনা বিভাগের বিভিন্ন জেলার কলেজ থেকে এসব শিক্ষার্থীরা বোর্ড প্রাঙ্গনে জড়ো হয়। দুপুরের দিকে তারা মিছিলসহকারে বোর্ডে প্রবেশ করতে গেলে প্রধান ফটক বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে তালা ভাঙ্গার চেষ্টা করলে কর্তৃপক্ষ গেট খুলে দেয়। এরপর শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বোর্ডের চেয়ারম্যানের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয় এবং সেখানে বিভিন্ন দাবিসমূহ নিয়ে বিক্ষোভ ও ¯ে¬াগান দিতে থাকে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বোর্ড কর্তৃপক্ষ মনগড়া ফল দিয়েছে। যশোর বোর্ডের ইংরেজি প্রশ্ন সহজ আসার পরও গণহারে ইংরেজিতে ফেল করানো হয়েছে। সিলেট বোর্ডে মাত্র দুই বিষয়ে পরীক্ষা গ্রহণ করা হলেও তাদের সবাইকে পাস করানো হয়েছে। যশোর বোর্ডে সঠিকভাবে খাতা মূল্যায়ন করা হয়নি। সাবজেক্ট ম্যাপিংও সঠিকভাবে করা হয়নি। ফলে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষাতে যশোর বোর্ডের ফল খারাপ করা শিক্ষার্থীরা আবেদন ও প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারবে না।
তাবাসসুম তাসফিয়া নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, সিলেট বোর্ডে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা না দেওয়া সত্ত্বেও তাদের প্রত্যেকটা সাবজেক্টে প্লাস এসেছে, তাহলে আমাদের যশোর বোর্ডে আমাদের সাথে কেন বৈষম্য করা হলো। আমরা জানতে পেরেছি অনেক থানায় পরীক্ষার খাতা পুড়ে গেছে, তাহলে কিসের ভিত্তিতে পরীক্ষার খাতা মূল্যয়ন করা হলো? পরীক্ষার সঠিক মূল্যায়ন করা হলে যশোর বোর্ডে বিভিন্ন বিষয়ে ফেল আসতো কিন্তু ইংরেজি বিষয়ে একচেটিয়া ফেল এসেছে।
আলমডাঙা সরকারি ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী শাকিব মাহমুদ বলেন, ‘আমরা অবিলম্বে এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলের সাথে ম্যাপিং পদ্ধতিতে পুনঃফলাফল এবং পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন করে ফলাফল চাই।’
এক পর্যায়ে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্রনেতাদের নিয়ে বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মর্জিনা আক্তার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বললেও তাদের দাবি না মানা পর্যন্ত অবস্থান ও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। পরবর্তীতে তারা ফলাফল বাতিল ও অটোপাসের দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান করেন। এরপর শিক্ষার্থী বোর্ডের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন।
তবে আন্দোলনকারীদের দাবি ‘অযৌক্তিক ও ভিত্তিহীন’ বলে জানিয়েছেন যশোর বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মর্জিনা আক্তার। তিনি বলেন, পরীক্ষায় খারাপ ফল করা কিছু শিক্ষার্থী আন্দোলন কর্মসূচি পালন করেছে। অল্প কিছু শিক্ষার্থী বিভ্রান্তিকর তথ্য পেয়ে এ ধরনের কর্মকা- করছে। তারা পরীক্ষা খারাপ দিয়ে খারাপ ফলাফল করলে বোর্ড কর্তৃপক্ষের তো কিছু করার নেই। তারা আমাদের কিছু লিখিত দাবি জানিয়েছে। বিষয়টি আন্তঃবোর্ডের চেয়ারম্যানকে পাঠানো হয়েছে; আমরা নির্দেশনা পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
প্রসঙ্গত, গত ১৫ অক্টোবর চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। প্রকাশিত এই ফলাফলে যশোর বোর্ডে পাসের হার ৬৪ দশমিক ২৯। জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৯ হাজার ৭৪৯ জন শিক্ষার্থী। তবে পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ৩১ শতাংশই ইংরেজিতে অনুত্তীর্ণ হয়েছে। এ কারণে যশোর বোর্ডে ফল বিপর্যয় হয়েছে বলেও ফলাফল প্রকাশকালে জানিয়েছিলেন যশোর বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক মর্জিনা আক্তার।
রোববার, ২০ অক্টোবর ২০২৪
‘মনগড়া ফল’ বাতিলের দাবিতে যশোর শিক্ষাবোর্ড ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছে এইচএসসি অনুত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা। রোববার দুপুরে শতাধিক শিক্ষার্থী যশোর শিক্ষাবোর্ডে অবস্থান নিয়ে এই বিক্ষোভ শুরু করে।
তাদের অভিযোগ, বোর্ড কর্তৃপক্ষ মনগড়া ফল দিয়েছে। যশোর বোর্ডের ইংরেজি প্রশ্ন সহজ আসার পরও গণহারে ইংরেজিতে ফেল করানো হয়েছে। আর সাবজেক্ট ম্যাপিংও সঠিকভাবে করা হয়নি। এজন্য এই ফলাফল বাতিলের দাবি জানিয়ে তারা স্মারকলিপি দিয়েছে।
যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড সূত্র জানায়, রোববার সকাল থেকে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ একদল শিক্ষার্থী শিক্ষাবোর্ডের সামনে অবস্থান নিতে শুরু করে। খুলনা বিভাগের বিভিন্ন জেলার কলেজ থেকে এসব শিক্ষার্থীরা বোর্ড প্রাঙ্গনে জড়ো হয়। দুপুরের দিকে তারা মিছিলসহকারে বোর্ডে প্রবেশ করতে গেলে প্রধান ফটক বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে তালা ভাঙ্গার চেষ্টা করলে কর্তৃপক্ষ গেট খুলে দেয়। এরপর শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বোর্ডের চেয়ারম্যানের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয় এবং সেখানে বিভিন্ন দাবিসমূহ নিয়ে বিক্ষোভ ও ¯ে¬াগান দিতে থাকে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বোর্ড কর্তৃপক্ষ মনগড়া ফল দিয়েছে। যশোর বোর্ডের ইংরেজি প্রশ্ন সহজ আসার পরও গণহারে ইংরেজিতে ফেল করানো হয়েছে। সিলেট বোর্ডে মাত্র দুই বিষয়ে পরীক্ষা গ্রহণ করা হলেও তাদের সবাইকে পাস করানো হয়েছে। যশোর বোর্ডে সঠিকভাবে খাতা মূল্যায়ন করা হয়নি। সাবজেক্ট ম্যাপিংও সঠিকভাবে করা হয়নি। ফলে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষাতে যশোর বোর্ডের ফল খারাপ করা শিক্ষার্থীরা আবেদন ও প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারবে না।
তাবাসসুম তাসফিয়া নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, সিলেট বোর্ডে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা না দেওয়া সত্ত্বেও তাদের প্রত্যেকটা সাবজেক্টে প্লাস এসেছে, তাহলে আমাদের যশোর বোর্ডে আমাদের সাথে কেন বৈষম্য করা হলো। আমরা জানতে পেরেছি অনেক থানায় পরীক্ষার খাতা পুড়ে গেছে, তাহলে কিসের ভিত্তিতে পরীক্ষার খাতা মূল্যয়ন করা হলো? পরীক্ষার সঠিক মূল্যায়ন করা হলে যশোর বোর্ডে বিভিন্ন বিষয়ে ফেল আসতো কিন্তু ইংরেজি বিষয়ে একচেটিয়া ফেল এসেছে।
আলমডাঙা সরকারি ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী শাকিব মাহমুদ বলেন, ‘আমরা অবিলম্বে এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলের সাথে ম্যাপিং পদ্ধতিতে পুনঃফলাফল এবং পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন করে ফলাফল চাই।’
এক পর্যায়ে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্রনেতাদের নিয়ে বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মর্জিনা আক্তার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বললেও তাদের দাবি না মানা পর্যন্ত অবস্থান ও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। পরবর্তীতে তারা ফলাফল বাতিল ও অটোপাসের দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান করেন। এরপর শিক্ষার্থী বোর্ডের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন।
তবে আন্দোলনকারীদের দাবি ‘অযৌক্তিক ও ভিত্তিহীন’ বলে জানিয়েছেন যশোর বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মর্জিনা আক্তার। তিনি বলেন, পরীক্ষায় খারাপ ফল করা কিছু শিক্ষার্থী আন্দোলন কর্মসূচি পালন করেছে। অল্প কিছু শিক্ষার্থী বিভ্রান্তিকর তথ্য পেয়ে এ ধরনের কর্মকা- করছে। তারা পরীক্ষা খারাপ দিয়ে খারাপ ফলাফল করলে বোর্ড কর্তৃপক্ষের তো কিছু করার নেই। তারা আমাদের কিছু লিখিত দাবি জানিয়েছে। বিষয়টি আন্তঃবোর্ডের চেয়ারম্যানকে পাঠানো হয়েছে; আমরা নির্দেশনা পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
প্রসঙ্গত, গত ১৫ অক্টোবর চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। প্রকাশিত এই ফলাফলে যশোর বোর্ডে পাসের হার ৬৪ দশমিক ২৯। জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৯ হাজার ৭৪৯ জন শিক্ষার্থী। তবে পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ৩১ শতাংশই ইংরেজিতে অনুত্তীর্ণ হয়েছে। এ কারণে যশোর বোর্ডে ফল বিপর্যয় হয়েছে বলেও ফলাফল প্রকাশকালে জানিয়েছিলেন যশোর বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক মর্জিনা আক্তার।