দেশের বেসরকারি স্কুল-কলেজগুলোতে দীর্ঘদিন ধরে অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগ রয়েছে। অবশেষে শিক্ষার্থীদের উপর এই অর্থনৈতিক চাপ কমানোর উদ্দেশ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয় নতুন নীতিমালা ঘোষণা করেছে। "বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (স্কুল, স্কুল এন্ড কলেজ, উচ্চমাধ্যমিক কলেজ ও ডিগ্রি কলেজের উচ্চমাধ্যমিক স্তর) এর টিউশন ফি নীতিমালা-২০২৪" শীর্ষক এই নীতিমালায় শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি নিয়ন্ত্রণে দুটি কমিটি গঠন করা হয়েছে, যারা মহানগর ও জেলা পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের মাসিক বেতন নির্ধারণ করবে। এছাড়া, অন্যান্য খাতের ফি নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে নিয়ে আসা হয়েছে।
গত ২৭ অক্টোবর সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়ের স্বাক্ষরিত এ নীতিমালাটি এখন থেকে কার্যকর হবে বলে জানানো হয়েছে। মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আলাদা দুটি কমিটি গঠন করা হয়েছে, যা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রকারভেদ ও অবস্থান বিবেচনা করে শিক্ষার্থীদের মাসিক বেতন নির্ধারণ করবে। মহানগর কমিটি সিটি কর্পোরেশন এবং মহানগর এলাকার এমপিওভুক্ত ও নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বেতন নির্ধারণ করবে, অপরদিকে জেলা কমিটি জেলা সদর, পৌর এলাকা ও উপজেলা পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য একই কার্য সম্পাদন করবে।
বেতন নির্ধারণের ক্ষেত্রে অভিভাবকদের আর্থিক সামর্থ্য, প্রতিষ্ঠানগুলোর ধরণ ও অবস্থান বিবেচনায় রাখা হবে। মহানগর ও জেলা কমিটির সদস্যদের মধ্যে থাকবেন একজন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক, এবং বিভিন্ন এমপিও ও নন-এমপিও স্কুল-কলেজের প্রতিনিধিরা।
নতুন নীতিমালায় মহানগর ও জেলা পর্যায়ে বিভিন্ন ক্যাটাগরির আওতায় ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। মহানগর পর্যায়ের এমপিওভুক্ত স্কুলগুলো বছরে সর্বোচ্চ ২৩১৫ টাকা এবং নন-এমপিও স্কুলগুলো ৩৮২৫ টাকা পর্যন্ত বিভিন্ন খাতে ফি নিতে পারবে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ফি আরো কম রাখা হয়েছে। এছাড়া, স্কুল-কলেজগুলো অভ্যন্তরীণ পরীক্ষার জন্য প্রতি বিষয়ে সর্বাধিক ৫০ টাকা এবং চার ঘণ্টার পরীক্ষার জন্য ৬০ টাকা ফি নিতে পারবে।
এই ফি নির্ধারণের প্রক্রিয়ায় মহানগর ও জেলা কমিটির সদস্য থাকলেও এতে অভিভাবকদের প্রতিনিধিত্ব না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেক অভিভাবক। ‘অভিভাবক ঐক্য ফোরাম’ নামক একটি সংগঠনের সভাপতি মো. জিয়াউল কবীর দুলু বলেন, “এ ধরনের কমিটিতে অতীতেও অভিভাবক প্রতিনিধি না থাকার কারণে অভিভাবকদের উপর অতিরিক্ত চাপ এসেছে। এবারও এই নীতিমালায় অভিভাবকদের পকেট কাটার সুযোগ তৈরি করা হয়েছে। তাই কমিটিতে অবশ্যই দুইজন অভিভাবক প্রতিনিধি রাখা উচিত।” শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, এই প্রস্তাবটি তাদের আলোচনায় আছে।
নীতিমালায় আর্থিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে স্কুল-কলেজগুলোকে তফসিলী ব্যাংকে নির্দিষ্ট হিসাবে সমস্ত ফি সংরক্ষণ করতে হবে। কোনো একক খাতে বছরে দশ লাখ টাকার বেশি আদায় হলে আলাদা ব্যাংক হিসাব খুলতে হবে। খাতভিত্তিক ব্যয় করতে হবে এবং এক খাতের অর্থ অন্য খাতে ব্যয় করা যাবে না। প্রতিষ্ঠানগুলোকে এই আর্থিক হিসাব সংরক্ষণের জন্য নির্দিষ্ট নীতিমালা মেনে চলতে হবে এবং প্রতি বছর অন্তত দুইবার তা পর্যালোচনা করতে হবে। এইসব হিসাবের সফট ও হার্ড কপি ন্যূনতম ২০ বছর সংরক্ষণ করতে হবে এবং দায়িত্ব হস্তান্তরের সময় পরবর্তী প্রধান শিক্ষক বা অধ্যক্ষকে লিখিতভাবে বুঝিয়ে দিতে হবে।
এছাড়াও, নতুন নীতিমালায় স্কুল-কলেজগুলোকে স্কাউটস, গার্লস গাইড, বিএনসিসি ও রেডক্রিসেন্ট ফি এবং পরিবহন খরচ সংক্রান্ত নিয়মাবলীও নির্ধারণ করা হয়েছে।
বুধবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৪
দেশের বেসরকারি স্কুল-কলেজগুলোতে দীর্ঘদিন ধরে অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগ রয়েছে। অবশেষে শিক্ষার্থীদের উপর এই অর্থনৈতিক চাপ কমানোর উদ্দেশ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয় নতুন নীতিমালা ঘোষণা করেছে। "বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (স্কুল, স্কুল এন্ড কলেজ, উচ্চমাধ্যমিক কলেজ ও ডিগ্রি কলেজের উচ্চমাধ্যমিক স্তর) এর টিউশন ফি নীতিমালা-২০২৪" শীর্ষক এই নীতিমালায় শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি নিয়ন্ত্রণে দুটি কমিটি গঠন করা হয়েছে, যারা মহানগর ও জেলা পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের মাসিক বেতন নির্ধারণ করবে। এছাড়া, অন্যান্য খাতের ফি নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে নিয়ে আসা হয়েছে।
গত ২৭ অক্টোবর সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়ের স্বাক্ষরিত এ নীতিমালাটি এখন থেকে কার্যকর হবে বলে জানানো হয়েছে। মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আলাদা দুটি কমিটি গঠন করা হয়েছে, যা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রকারভেদ ও অবস্থান বিবেচনা করে শিক্ষার্থীদের মাসিক বেতন নির্ধারণ করবে। মহানগর কমিটি সিটি কর্পোরেশন এবং মহানগর এলাকার এমপিওভুক্ত ও নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বেতন নির্ধারণ করবে, অপরদিকে জেলা কমিটি জেলা সদর, পৌর এলাকা ও উপজেলা পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য একই কার্য সম্পাদন করবে।
বেতন নির্ধারণের ক্ষেত্রে অভিভাবকদের আর্থিক সামর্থ্য, প্রতিষ্ঠানগুলোর ধরণ ও অবস্থান বিবেচনায় রাখা হবে। মহানগর ও জেলা কমিটির সদস্যদের মধ্যে থাকবেন একজন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক, এবং বিভিন্ন এমপিও ও নন-এমপিও স্কুল-কলেজের প্রতিনিধিরা।
নতুন নীতিমালায় মহানগর ও জেলা পর্যায়ে বিভিন্ন ক্যাটাগরির আওতায় ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। মহানগর পর্যায়ের এমপিওভুক্ত স্কুলগুলো বছরে সর্বোচ্চ ২৩১৫ টাকা এবং নন-এমপিও স্কুলগুলো ৩৮২৫ টাকা পর্যন্ত বিভিন্ন খাতে ফি নিতে পারবে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ফি আরো কম রাখা হয়েছে। এছাড়া, স্কুল-কলেজগুলো অভ্যন্তরীণ পরীক্ষার জন্য প্রতি বিষয়ে সর্বাধিক ৫০ টাকা এবং চার ঘণ্টার পরীক্ষার জন্য ৬০ টাকা ফি নিতে পারবে।
এই ফি নির্ধারণের প্রক্রিয়ায় মহানগর ও জেলা কমিটির সদস্য থাকলেও এতে অভিভাবকদের প্রতিনিধিত্ব না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেক অভিভাবক। ‘অভিভাবক ঐক্য ফোরাম’ নামক একটি সংগঠনের সভাপতি মো. জিয়াউল কবীর দুলু বলেন, “এ ধরনের কমিটিতে অতীতেও অভিভাবক প্রতিনিধি না থাকার কারণে অভিভাবকদের উপর অতিরিক্ত চাপ এসেছে। এবারও এই নীতিমালায় অভিভাবকদের পকেট কাটার সুযোগ তৈরি করা হয়েছে। তাই কমিটিতে অবশ্যই দুইজন অভিভাবক প্রতিনিধি রাখা উচিত।” শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, এই প্রস্তাবটি তাদের আলোচনায় আছে।
নীতিমালায় আর্থিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে স্কুল-কলেজগুলোকে তফসিলী ব্যাংকে নির্দিষ্ট হিসাবে সমস্ত ফি সংরক্ষণ করতে হবে। কোনো একক খাতে বছরে দশ লাখ টাকার বেশি আদায় হলে আলাদা ব্যাংক হিসাব খুলতে হবে। খাতভিত্তিক ব্যয় করতে হবে এবং এক খাতের অর্থ অন্য খাতে ব্যয় করা যাবে না। প্রতিষ্ঠানগুলোকে এই আর্থিক হিসাব সংরক্ষণের জন্য নির্দিষ্ট নীতিমালা মেনে চলতে হবে এবং প্রতি বছর অন্তত দুইবার তা পর্যালোচনা করতে হবে। এইসব হিসাবের সফট ও হার্ড কপি ন্যূনতম ২০ বছর সংরক্ষণ করতে হবে এবং দায়িত্ব হস্তান্তরের সময় পরবর্তী প্রধান শিক্ষক বা অধ্যক্ষকে লিখিতভাবে বুঝিয়ে দিতে হবে।
এছাড়াও, নতুন নীতিমালায় স্কুল-কলেজগুলোকে স্কাউটস, গার্লস গাইড, বিএনসিসি ও রেডক্রিসেন্ট ফি এবং পরিবহন খরচ সংক্রান্ত নিয়মাবলীও নির্ধারণ করা হয়েছে।