শিক্ষাবর্ষ শুরুর আর ১২ দিন
নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হতে বাকি ১২ দিন। নতুন শিক্ষাবর্ষেই প্রাথমিক স্তরের ১০০টি বিদ্যালয়ে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণী এবং মাধ্যমিকের ১০০টি বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীতে নতুন শিক্ষাক্রমের পাইলটিং শুরু হচ্ছে। তবে ২০০টি বিদ্যালয়ের চার শ্রেণীর জন্য ‘শিক্ষাক্রম’ ও ‘কনটেন্ট’ এখনও চূড়ান্ত হয়নি। এ জন্য ‘ফটোকপি’ আকারে শিক্ষাক্রম দিয়ে ‘পাইলটিং’ কার্যক্রম পরিচালনার চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে বলে এনসিটিবির সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তা সংবাদকে জানিয়েছেন। কোন কোন স্কুলে নতুন শিক্ষাক্রমে (কারিকুলাম) পাঠদান হবে সেই তালিকাও চূড়ান্ত হয়নি।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) তথ্য অনুযায়ী, প্রাথমিক স্তরের নতুন শিক্ষাক্রমের খসড়া প্রস্তুত হয়েছে। তা অনুমোদনের প্রক্রিয়াও এগিয়ে নেয়া হচ্ছে। তবে পিছিয়ে রয়েছে মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাক্রম প্রণয়ন কার্যক্রম। কারণ এই স্তরের প্রতিটি বইয়ের বিষয়বস্তুরও (কনটেন্ট) ব্যাপকতা কিছুটা বেশি। মাধ্যমিকে বইও বেশি হবে।
জানা গেছে, ‘পাইলটিংয়ের’ জন্য ১০০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তালিকা এখনও চূড়ান্ত করতে পারেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই)। তবে একটি খসড়া তালিকা করেছে। আর মাধ্যমিকের শিক্ষাক্রম প্রণয়ন কার্যক্রমে ধীরগতি থাকায় এই স্তরের ১০০টি বিদ্যালয়ের তালিকাও শনিবার (১৮ ডিসেম্বর) পর্যন্ত চূড়ান্ত হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাউশির পরিচালক অধ্যাপক মুহাম্মদ বেলাল হোসেইন শনিবার সংবাদকে বলেন, ‘তালিকা করছে এনসিটিবি। তাদের কাছে এ সংক্রান্ত সব তথ্য রয়েছে। আমাদের কাছে এ সংক্রান্ত কোন তথ্য নেই। তবে আজ থেকে নতুন কারিকুলামের ওপর শিক্ষকদের ট্রেনিং শুরু হয়েছে।’
২০২৫ শিক্ষাবর্ষে নতুন শিক্ষাক্রমের পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়ন হবে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি শনিবার রাজধানীর কাকরাইলে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন আয়োজিত এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের বলেছেন, ২০২৩ সাল থেকে এটি ধাপে ধাপে চালু করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের জন্য আগামী শিক্ষাবর্ষ (২০২২) থেকে প্রাথমিকে ১০০টি এবং মাধ্যমিকে ১০০টি প্রতিষ্ঠানে পাইলটিং শুরু হচ্ছে। এ জন্য শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ চলছে, টিচার্স গাইড তৈরি হচ্ছে।’
‘জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের’ (এনসিটিবি) সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তা শনিবার সংবাদকে জানিয়েছেন, আগামী শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিকের ১০০টি বিদ্যালয়ে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণী এবং মাধ্যমিকের ৬ষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীর সব বিষয়েই ‘নতুন শিক্ষাক্রমে’ পাইলটিং (পরীক্ষামূলক) পাঠদান শুরু করার কথা হয়েছে।
কিন্তু শনিবার পর্যন্ত ওই চার শ্রেণীর কোন বিষয়ের ‘শিক্ষাক্রম বা কনটেন্ট’ই চূড়ান্ত হয়নি। যদিও এনসিটিবির সদস্য অধ্যাপক ড. মশিউজ্জামান গত সপ্তাহে সংবাদকে জানিয়েছেন, মাধ্যমিকের নতুন শিক্ষাক্রমের ‘কনটেন্ট প্রায় চূড়ান্ত’ করা হয়েছে। তিনি আশা করছেন, ‘৩১ ডিসেম্বরের’ মধ্যে নতুন কারিকুলামে মাধ্যমিকের বই ছেপে শিক্ষার্থীদের সরবরাহ করতে পারবেন।
এনসিটিবির অন্য একজন কর্মকর্তা সংবাদকে জানিয়েছেন, ‘প্রাথমিকের ২০০টি স্কুলের জন্য নতুন শিক্ষাক্রমের কনটেন্ট ইতোমধ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে। তবে বই আকারে ছাপাতে আরও সময় লাগবে। কারণ বিষয়গুলো এখনও এ সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির অনুমোদন এবং সরকারের প্রশাসনিক অনুমোদন পায়নি। অনুমোদনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে বই ছাপার দরপত্র আহ্বান করা হবে। এরপর কার্যাদেশ পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে ঠিকাদারের বই সরবরাহের সুযোগ থাকে।’
জানতে চাইলে এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. একেএম রিয়াজুল হাসান শনিবার সংবাদকে বলেন, ‘আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি; আমাদের কাজ একটু স্লো ছিল। এরপরও আমরা আশা করছি ২৩ ডিসেম্বরের মধ্যে কারিকুলাম ফাইনাল (শিক্ষাক্রম চূড়ান্ত) করতে পারব। ২৭ ডিসেম্বর থেকে আমরা বই লেখার কাজে হাত দিতে পারব। জানুয়ারির মধ্যে আমরা সব কাজ শেষ করার ব্যাপারে আশাবাদী।’
নতুন শিক্ষাক্রম বই আকারে দেয়া সম্ভব হবে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা বই আকারেই দেব। আমাদের বইয়ের চ্যাপ্টার এমনিতেই কম; আমরা আশা করছি পেরে যাব। তবে মাধ্যমিকের বইয়ে চ্যাপ্টার বেশি।’
১০০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তালিকা হয়েছে কি-না জানতে চাইলে ড. রিয়াজুল হাসান বলেন, ‘আমাদের তালিকা প্রায় হয়েছে, বলা যায়। আমরা খুব শীঘ্রই তা চূড়ান্ত করে ফেলব।’
সংস্থাটির এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংবাদকে জানান, নতুন শিক্ষাবর্ষের মাত্র ১২ দিন বাকি। এই সময়ে নতুন শিক্ষাক্রমের বইয়ের পান্ডুলিপি প্রস্তুতকরণ, বই মুদ্রণ ও সরবরাহ ‘প্রায় দুরূহ’। এ জন্য পাইলটিং বিদ্যালয়গুলোতে ‘ছাপানো বই’ না দিয়ে ‘ধাপে ধাপে বা তিনমাস পরপর স্কুলগুলোতে কারিকুলামের ফটোকপি’ সরবরাহের চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। এতে কোথাও কোন ‘ত্রুটি’ শনাক্ত হলে তা সংশোধনেরও সুযোগ থাকছে।
নতুন কারিকুলামে বই ছাপার প্রক্রিয়া সময়সাপেক্ষ ব্যাপার হওয়ায় আপাতত শিক্ষক প্রশিক্ষণের ওপর বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন এনসিটিবির ওই সদস্য। তিনি বলেন, ‘শিক্ষকরা নতুন কারিকুলামের ওপর প্রশিক্ষণ পেলে তারা বই ছাড়াও শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাতে পারবেন।’
২০২৩ সাল থেকে নতুন শিক্ষাক্রম কার্যক্রম সারা দেশে নিয়ে যাওয়া হবে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, ‘এরপর আমরা পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন শ্রেণীতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু করবো। ২০২৫ সালে সারা দেশে এটি পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়ন হবে।’
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নতুন বছর যেহেতু ‘পাইলটিং’ শুরু হচ্ছে; সে জন্য ওই বছর পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণীর সমাপনী পরীক্ষা নেয়ার সুযোগ থাকছে না। কারণ ‘পাইলটিং’ বিদ্যালয়গুলোতে নতুন শিক্ষাক্রম পড়ানো হবে। কিন্তু বাকি সব বিদ্যালয়ে পুরোনো শিক্ষাক্রমই পাঠদান হবে। এতে ‘বড় আকারের পাবলিক’ পরীক্ষা নেয়া হলে দুই ধরনের মূল্যায়ন ও বৈষম্য তৈরি হতে পারে।
গত ১৩ সেপ্টেম্বর জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা উপস্থাপন বিষয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী ঘোষণা দেন, প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক পর্যন্ত শিক্ষাব্যবস্থায় বড় ধরনের সংস্কার আসছে। প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি), অষ্টম শ্রেণীর জেএসসি নামে পাবলিক পরীক্ষা বাতিল করা হবে। একইসঙ্গে নবম ও দশম শ্রেণীতে মানবিক, বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা নামে বিভাগ তুলে দেয়া হবে।
এনসিটিবি জানিয়েছে, ২০১২ সালে সর্বশেষ জাতীয় শিক্ষাক্রমে পরিবর্তন আনা হয়। এর আগে ১৯৯৫ ও ১৯৭৬ সালে শিক্ষাক্রম পরিমার্জন করা হয়। সরকার ২০১০ সালে ‘জাতীয় শিক্ষানীতি’ প্রণয়ন করলেও এর অনেক কিছুই বাস্তবায়নের বাকি রয়েছে।
শিক্ষাবর্ষ শুরুর আর ১২ দিন
শনিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২১
নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হতে বাকি ১২ দিন। নতুন শিক্ষাবর্ষেই প্রাথমিক স্তরের ১০০টি বিদ্যালয়ে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণী এবং মাধ্যমিকের ১০০টি বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীতে নতুন শিক্ষাক্রমের পাইলটিং শুরু হচ্ছে। তবে ২০০টি বিদ্যালয়ের চার শ্রেণীর জন্য ‘শিক্ষাক্রম’ ও ‘কনটেন্ট’ এখনও চূড়ান্ত হয়নি। এ জন্য ‘ফটোকপি’ আকারে শিক্ষাক্রম দিয়ে ‘পাইলটিং’ কার্যক্রম পরিচালনার চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে বলে এনসিটিবির সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তা সংবাদকে জানিয়েছেন। কোন কোন স্কুলে নতুন শিক্ষাক্রমে (কারিকুলাম) পাঠদান হবে সেই তালিকাও চূড়ান্ত হয়নি।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) তথ্য অনুযায়ী, প্রাথমিক স্তরের নতুন শিক্ষাক্রমের খসড়া প্রস্তুত হয়েছে। তা অনুমোদনের প্রক্রিয়াও এগিয়ে নেয়া হচ্ছে। তবে পিছিয়ে রয়েছে মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাক্রম প্রণয়ন কার্যক্রম। কারণ এই স্তরের প্রতিটি বইয়ের বিষয়বস্তুরও (কনটেন্ট) ব্যাপকতা কিছুটা বেশি। মাধ্যমিকে বইও বেশি হবে।
জানা গেছে, ‘পাইলটিংয়ের’ জন্য ১০০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তালিকা এখনও চূড়ান্ত করতে পারেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই)। তবে একটি খসড়া তালিকা করেছে। আর মাধ্যমিকের শিক্ষাক্রম প্রণয়ন কার্যক্রমে ধীরগতি থাকায় এই স্তরের ১০০টি বিদ্যালয়ের তালিকাও শনিবার (১৮ ডিসেম্বর) পর্যন্ত চূড়ান্ত হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাউশির পরিচালক অধ্যাপক মুহাম্মদ বেলাল হোসেইন শনিবার সংবাদকে বলেন, ‘তালিকা করছে এনসিটিবি। তাদের কাছে এ সংক্রান্ত সব তথ্য রয়েছে। আমাদের কাছে এ সংক্রান্ত কোন তথ্য নেই। তবে আজ থেকে নতুন কারিকুলামের ওপর শিক্ষকদের ট্রেনিং শুরু হয়েছে।’
২০২৫ শিক্ষাবর্ষে নতুন শিক্ষাক্রমের পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়ন হবে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি শনিবার রাজধানীর কাকরাইলে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন আয়োজিত এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের বলেছেন, ২০২৩ সাল থেকে এটি ধাপে ধাপে চালু করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের জন্য আগামী শিক্ষাবর্ষ (২০২২) থেকে প্রাথমিকে ১০০টি এবং মাধ্যমিকে ১০০টি প্রতিষ্ঠানে পাইলটিং শুরু হচ্ছে। এ জন্য শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ চলছে, টিচার্স গাইড তৈরি হচ্ছে।’
‘জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের’ (এনসিটিবি) সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তা শনিবার সংবাদকে জানিয়েছেন, আগামী শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিকের ১০০টি বিদ্যালয়ে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণী এবং মাধ্যমিকের ৬ষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীর সব বিষয়েই ‘নতুন শিক্ষাক্রমে’ পাইলটিং (পরীক্ষামূলক) পাঠদান শুরু করার কথা হয়েছে।
কিন্তু শনিবার পর্যন্ত ওই চার শ্রেণীর কোন বিষয়ের ‘শিক্ষাক্রম বা কনটেন্ট’ই চূড়ান্ত হয়নি। যদিও এনসিটিবির সদস্য অধ্যাপক ড. মশিউজ্জামান গত সপ্তাহে সংবাদকে জানিয়েছেন, মাধ্যমিকের নতুন শিক্ষাক্রমের ‘কনটেন্ট প্রায় চূড়ান্ত’ করা হয়েছে। তিনি আশা করছেন, ‘৩১ ডিসেম্বরের’ মধ্যে নতুন কারিকুলামে মাধ্যমিকের বই ছেপে শিক্ষার্থীদের সরবরাহ করতে পারবেন।
এনসিটিবির অন্য একজন কর্মকর্তা সংবাদকে জানিয়েছেন, ‘প্রাথমিকের ২০০টি স্কুলের জন্য নতুন শিক্ষাক্রমের কনটেন্ট ইতোমধ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে। তবে বই আকারে ছাপাতে আরও সময় লাগবে। কারণ বিষয়গুলো এখনও এ সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির অনুমোদন এবং সরকারের প্রশাসনিক অনুমোদন পায়নি। অনুমোদনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে বই ছাপার দরপত্র আহ্বান করা হবে। এরপর কার্যাদেশ পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে ঠিকাদারের বই সরবরাহের সুযোগ থাকে।’
জানতে চাইলে এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. একেএম রিয়াজুল হাসান শনিবার সংবাদকে বলেন, ‘আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি; আমাদের কাজ একটু স্লো ছিল। এরপরও আমরা আশা করছি ২৩ ডিসেম্বরের মধ্যে কারিকুলাম ফাইনাল (শিক্ষাক্রম চূড়ান্ত) করতে পারব। ২৭ ডিসেম্বর থেকে আমরা বই লেখার কাজে হাত দিতে পারব। জানুয়ারির মধ্যে আমরা সব কাজ শেষ করার ব্যাপারে আশাবাদী।’
নতুন শিক্ষাক্রম বই আকারে দেয়া সম্ভব হবে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা বই আকারেই দেব। আমাদের বইয়ের চ্যাপ্টার এমনিতেই কম; আমরা আশা করছি পেরে যাব। তবে মাধ্যমিকের বইয়ে চ্যাপ্টার বেশি।’
১০০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তালিকা হয়েছে কি-না জানতে চাইলে ড. রিয়াজুল হাসান বলেন, ‘আমাদের তালিকা প্রায় হয়েছে, বলা যায়। আমরা খুব শীঘ্রই তা চূড়ান্ত করে ফেলব।’
সংস্থাটির এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংবাদকে জানান, নতুন শিক্ষাবর্ষের মাত্র ১২ দিন বাকি। এই সময়ে নতুন শিক্ষাক্রমের বইয়ের পান্ডুলিপি প্রস্তুতকরণ, বই মুদ্রণ ও সরবরাহ ‘প্রায় দুরূহ’। এ জন্য পাইলটিং বিদ্যালয়গুলোতে ‘ছাপানো বই’ না দিয়ে ‘ধাপে ধাপে বা তিনমাস পরপর স্কুলগুলোতে কারিকুলামের ফটোকপি’ সরবরাহের চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। এতে কোথাও কোন ‘ত্রুটি’ শনাক্ত হলে তা সংশোধনেরও সুযোগ থাকছে।
নতুন কারিকুলামে বই ছাপার প্রক্রিয়া সময়সাপেক্ষ ব্যাপার হওয়ায় আপাতত শিক্ষক প্রশিক্ষণের ওপর বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন এনসিটিবির ওই সদস্য। তিনি বলেন, ‘শিক্ষকরা নতুন কারিকুলামের ওপর প্রশিক্ষণ পেলে তারা বই ছাড়াও শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাতে পারবেন।’
২০২৩ সাল থেকে নতুন শিক্ষাক্রম কার্যক্রম সারা দেশে নিয়ে যাওয়া হবে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, ‘এরপর আমরা পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন শ্রেণীতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু করবো। ২০২৫ সালে সারা দেশে এটি পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়ন হবে।’
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নতুন বছর যেহেতু ‘পাইলটিং’ শুরু হচ্ছে; সে জন্য ওই বছর পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণীর সমাপনী পরীক্ষা নেয়ার সুযোগ থাকছে না। কারণ ‘পাইলটিং’ বিদ্যালয়গুলোতে নতুন শিক্ষাক্রম পড়ানো হবে। কিন্তু বাকি সব বিদ্যালয়ে পুরোনো শিক্ষাক্রমই পাঠদান হবে। এতে ‘বড় আকারের পাবলিক’ পরীক্ষা নেয়া হলে দুই ধরনের মূল্যায়ন ও বৈষম্য তৈরি হতে পারে।
গত ১৩ সেপ্টেম্বর জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা উপস্থাপন বিষয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী ঘোষণা দেন, প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক পর্যন্ত শিক্ষাব্যবস্থায় বড় ধরনের সংস্কার আসছে। প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি), অষ্টম শ্রেণীর জেএসসি নামে পাবলিক পরীক্ষা বাতিল করা হবে। একইসঙ্গে নবম ও দশম শ্রেণীতে মানবিক, বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা নামে বিভাগ তুলে দেয়া হবে।
এনসিটিবি জানিয়েছে, ২০১২ সালে সর্বশেষ জাতীয় শিক্ষাক্রমে পরিবর্তন আনা হয়। এর আগে ১৯৯৫ ও ১৯৭৬ সালে শিক্ষাক্রম পরিমার্জন করা হয়। সরকার ২০১০ সালে ‘জাতীয় শিক্ষানীতি’ প্রণয়ন করলেও এর অনেক কিছুই বাস্তবায়নের বাকি রয়েছে।