ইইডিতে বিশৃঙ্খলা
প্রকৌশলীদের অভ্যন্তরীণ বিরোধে বিশৃঙ্খলা চরমে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে (ইইডি)। এবার ‘অনিয়ম ও দুর্নীতি’তে বাধা দেয়ায় এক গ্র্যাজুয়েট ডিগ্রিধারী প্রকৌশলীকে পেটানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে এক ডিপ্লোমা প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত প্রকৌশলীর চাকরিচুত্যি দাবি করেছেন ইইডি প্রকৌশল সমিতির নেতারা। এর আগেও সম্প্রতি এই ধরনের একাধিক ঘটনা ঘটেছিল, কিন্তু কারো শাস্তি হয়নি, এ কারণে মাঠ পর্যায়ের ডিগ্রিধারী প্রকৌশলীরা ‘শঙ্কিত’ বলে সমিতির নেতারা জানিয়েছেন।
জানা গেছে, গত ৭ নভেম্বর ইইডির ঠাকুরগাঁও জেলা অফিসে সহকারী প্রকৌশলী জয়ন্ত কুমার রায়কে মারধর করেন উপসহকারী প্রকৌশলী মফিজুল ইসলাম। মারধরের পাশাপাশি ওই কর্মকর্তাকে ‘অকথ্য’ ভাষায় গালাগাল করা হয়। প্রাণনাশেরও হুমকি দেয়া হয়। জয়ন্ত কুমার রায় ৯ নভেম্বর ঠাকুরগাঁও সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি নম্বর ৫৪৮) করেন।
এর আগে মফিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেয়ার জন্য ঠাকুরগাঁও জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদি ইকবাল ওইদিনই ইইডির প্রধান কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলামের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে এক চিঠিতে বিষয়টি অবহিত করেন।
পরদিন ৮ নভেম্বর ওই ঘটনায় অভিযুক্ত কর্মকর্তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়ে ইইডির প্রধান প্রকৌশলীর কাছে একটি স্বারকলিপি দেয়া হয় প্রকৌশল সমিতির পক্ষ থেকে। এতে স্বাক্ষর করেন প্রধান কার্যালয়ের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সমীর কুমার রজক দাস, নির্বাহী প্রকৌশলী মীর মুয়াজ্জেম হুসেন ও এসএম সাফিন হাসান, সহকারী প্রকৌশলী আবুল হাসনাত সৈকত ও গোপাল চন্দ্র সাহা।
জানতে চাইলে ইইডির ঠাকুরগাঁও অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদি ইকবাল সংবাদকে বলেন, ‘মফিজুল ইসলাম এর আগেও সহকর্মীদের সঙ্গে একাধিকবার খারাপ আচরণ করেছেন। এর প্রতিকার প্রয়োজন।’
এ বিষয়ে ইইডির প্রধান প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন মজুমদার সংবাদকে বলেন, তিনি ৯ নভেম্বর প্রকৌশলীকে মারধরের বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের একটি স্মারকলিপি পেয়েছি। আমি বিষয়টি তদন্ত করবো, প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
প্রকৌশলীদের স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, ‘আর্থিক অনিয়ম, দুর্নীতি ও সরকারি উন্নয়ন কার্যক্রমে অনিয়মসহ বিভিন্ন বিষয়ে সহকারী প্রকৌশলী কর্তৃক বাধাপ্রাপ্ত হয়ে মফিজুল ইসলাম এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটায় যা বিকৃত মানসিকতার পরিচায়ক। এ বিষয়ে সহকারী প্রকৌশলী জয়ন্ত কুমার রায় ইতোমধ্যে থানায় লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।’
স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, ‘গত ৭ নভেম্বর ইইডি ঠাকুরগাঁও জেলা অফিসের হিসাবরক্ষকের কক্ষে উপসহকারী প্রকৌশলী মফিজুল ইসলাম সহকারী প্রকৌশলী জয়ন্ত কুমার রায়কে কিল ঘুষি মারতে থাকে ও অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে। যা সরকারি কর্মচারী শৃঙ্খলা ও আপিল বিধিমালা পরিপন্থী আচরণ এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ।’
এছাড়া পছন্দ অনুযায়ী বদলি, পদোন্নতিসহ বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে গত জুনে ওই সময়কার প্রধান প্রকৌশলীর কক্ষে প্রবেশ করে তার সঙ্গে ‘চরম দুর্ব্যবহার’ করেন ডিপ্লোমা প্রকৌশল সমিতির দ্বিতীয় সারির এক নেতা। এ ঘটনায়ও কারো শাস্তি হয়নি।
সদস্য অবসরে যাওয়া প্রধান প্রকৌশলী শাহ নইমুল কাদেরের শেষ কর্মদিবসের আগে তাকে বাধ্য করে প্রায় দুইশ’ ডিপ্লোমা প্রকৌশলীকে বদলির অভিযোগ উঠে সমিতির ওই নেতার বিরুদ্ধে। ওই নেতা সম্প্রতি তার পছন্দের প্রকৌশলীদের পদায়নের জন্য একাধিক জেষ্ঠ্য নির্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে বিরূপ আচরণ করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব ঘটনায় ইইডির বিভিন্ন স্তরে অস্থিরতা বিরাজ করছে।
এসব বিষয়ে প্রধান প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন মজুমদার বলেন, ‘আমি সব বিষয়ে জানার চেষ্টা করছি। যারাই অনিয়ম বা স্বেচ্ছাচারিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেব।’
ইইডিতে বিশৃঙ্খলা
বৃহস্পতিবার, ১০ নভেম্বর ২০২২
প্রকৌশলীদের অভ্যন্তরীণ বিরোধে বিশৃঙ্খলা চরমে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে (ইইডি)। এবার ‘অনিয়ম ও দুর্নীতি’তে বাধা দেয়ায় এক গ্র্যাজুয়েট ডিগ্রিধারী প্রকৌশলীকে পেটানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে এক ডিপ্লোমা প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত প্রকৌশলীর চাকরিচুত্যি দাবি করেছেন ইইডি প্রকৌশল সমিতির নেতারা। এর আগেও সম্প্রতি এই ধরনের একাধিক ঘটনা ঘটেছিল, কিন্তু কারো শাস্তি হয়নি, এ কারণে মাঠ পর্যায়ের ডিগ্রিধারী প্রকৌশলীরা ‘শঙ্কিত’ বলে সমিতির নেতারা জানিয়েছেন।
জানা গেছে, গত ৭ নভেম্বর ইইডির ঠাকুরগাঁও জেলা অফিসে সহকারী প্রকৌশলী জয়ন্ত কুমার রায়কে মারধর করেন উপসহকারী প্রকৌশলী মফিজুল ইসলাম। মারধরের পাশাপাশি ওই কর্মকর্তাকে ‘অকথ্য’ ভাষায় গালাগাল করা হয়। প্রাণনাশেরও হুমকি দেয়া হয়। জয়ন্ত কুমার রায় ৯ নভেম্বর ঠাকুরগাঁও সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি নম্বর ৫৪৮) করেন।
এর আগে মফিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেয়ার জন্য ঠাকুরগাঁও জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদি ইকবাল ওইদিনই ইইডির প্রধান কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলামের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে এক চিঠিতে বিষয়টি অবহিত করেন।
পরদিন ৮ নভেম্বর ওই ঘটনায় অভিযুক্ত কর্মকর্তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়ে ইইডির প্রধান প্রকৌশলীর কাছে একটি স্বারকলিপি দেয়া হয় প্রকৌশল সমিতির পক্ষ থেকে। এতে স্বাক্ষর করেন প্রধান কার্যালয়ের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সমীর কুমার রজক দাস, নির্বাহী প্রকৌশলী মীর মুয়াজ্জেম হুসেন ও এসএম সাফিন হাসান, সহকারী প্রকৌশলী আবুল হাসনাত সৈকত ও গোপাল চন্দ্র সাহা।
জানতে চাইলে ইইডির ঠাকুরগাঁও অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদি ইকবাল সংবাদকে বলেন, ‘মফিজুল ইসলাম এর আগেও সহকর্মীদের সঙ্গে একাধিকবার খারাপ আচরণ করেছেন। এর প্রতিকার প্রয়োজন।’
এ বিষয়ে ইইডির প্রধান প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন মজুমদার সংবাদকে বলেন, তিনি ৯ নভেম্বর প্রকৌশলীকে মারধরের বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের একটি স্মারকলিপি পেয়েছি। আমি বিষয়টি তদন্ত করবো, প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
প্রকৌশলীদের স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, ‘আর্থিক অনিয়ম, দুর্নীতি ও সরকারি উন্নয়ন কার্যক্রমে অনিয়মসহ বিভিন্ন বিষয়ে সহকারী প্রকৌশলী কর্তৃক বাধাপ্রাপ্ত হয়ে মফিজুল ইসলাম এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটায় যা বিকৃত মানসিকতার পরিচায়ক। এ বিষয়ে সহকারী প্রকৌশলী জয়ন্ত কুমার রায় ইতোমধ্যে থানায় লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।’
স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, ‘গত ৭ নভেম্বর ইইডি ঠাকুরগাঁও জেলা অফিসের হিসাবরক্ষকের কক্ষে উপসহকারী প্রকৌশলী মফিজুল ইসলাম সহকারী প্রকৌশলী জয়ন্ত কুমার রায়কে কিল ঘুষি মারতে থাকে ও অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে। যা সরকারি কর্মচারী শৃঙ্খলা ও আপিল বিধিমালা পরিপন্থী আচরণ এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ।’
এছাড়া পছন্দ অনুযায়ী বদলি, পদোন্নতিসহ বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে গত জুনে ওই সময়কার প্রধান প্রকৌশলীর কক্ষে প্রবেশ করে তার সঙ্গে ‘চরম দুর্ব্যবহার’ করেন ডিপ্লোমা প্রকৌশল সমিতির দ্বিতীয় সারির এক নেতা। এ ঘটনায়ও কারো শাস্তি হয়নি।
সদস্য অবসরে যাওয়া প্রধান প্রকৌশলী শাহ নইমুল কাদেরের শেষ কর্মদিবসের আগে তাকে বাধ্য করে প্রায় দুইশ’ ডিপ্লোমা প্রকৌশলীকে বদলির অভিযোগ উঠে সমিতির ওই নেতার বিরুদ্ধে। ওই নেতা সম্প্রতি তার পছন্দের প্রকৌশলীদের পদায়নের জন্য একাধিক জেষ্ঠ্য নির্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে বিরূপ আচরণ করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব ঘটনায় ইইডির বিভিন্ন স্তরে অস্থিরতা বিরাজ করছে।
এসব বিষয়ে প্রধান প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন মজুমদার বলেন, ‘আমি সব বিষয়ে জানার চেষ্টা করছি। যারাই অনিয়ম বা স্বেচ্ছাচারিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেব।’