alt

শিক্ষা

পাঠ্যপুস্তকের বদলে এবার সহায়ক বই কেনা প্রকল্পের উদ্যোগ

রাকিব উদ্দিন : বুধবার, ২৩ নভেম্বর ২০২২

কাগজ সংকটে সরকার ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যবই ছাপতে হিশশিম খাচ্ছে। ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে দেশে কাগজ উৎপাদনের মূল কাঁচামাল ‘ভার্জিন পাল্প’ আমদানিও বন্ধ রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে খরচ প্রায় দ্বিগুণের বেশি বাড়িয়ে টেন্ডার ছাড়াই ৪১০ কোটি টাকার ‘সহায়ক বই’ কিনতে চায় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)।

এই বই দিয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা স্তরের শিক্ষার্থীদের বই পড়ার অভ্যাস ও দক্ষতা বাড়াতে চায় সংস্থাটি। এজন্য একটি প্রকল্পের আওতায় ‘স্ট্রেনদেনিং রিডিং হ্যাবিট অ্যান্ড রিডিং স্কিলস অ্যামাং সেকেন্ডারি স্টুডেন্টস’ শীর্ষক একটি ‘স্কিম কর্মসূচি’ অর্থাৎ ‘পাঠ্যভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচি’ বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

এই সময়ে ব্যয় বাড়িয়ে বই কেনা ঠিক হচ্ছে কি না জানতে চাইলে ‘স্কিম পরিচালক’ ও মাউশির মাধ্যমিক শাখার পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন বুধবার (২৩ নভেম্বর) সংবাদকে বলেন, ‘প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি এখনও মন্ত্রণালয়ে অনুমোদন হয়নি। এজন্য আমি কিছু বলতে পারব না।’

জানতে চাইলে ‘শিক্ষানীতি-২০১০’ প্রণয়ন কমিটির সদস্য-সচিব ও ‘জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমির’ (নায়েম) সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক শেখ ইকরামুল কবির সংবাদকে বলেন, ‘রিডিং হ্যাবিট বাড়ানোর জন্য এত ব্যয়বহুল প্রকল্প বাস্তবায়নের কোন প্রয়োজন নেই। কেনাকাটার বিষয় মানেই এর সঙ্গে সম্পৃক্ত সবাই লাভবান হয়; কমিশন ভাগাভাগি হয়। এজন্য এই ধরনের প্রকল্প নেয়া হয়।’

প্রথমদিকে ৬৪ জেলার ৩০০টি উপজেলার দেড় হাজার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ‘কর্মসূচি ও পুরস্কার’-এই দুই ধরনের বই দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। এর মধ্যে কর্মসূচির বই ৪৫ লাখ এবং পুরস্কারের জন্য ৩৮ লাখ কপি বই বিতরণের উদ্যোগ ছিল।

এই সিদ্ধান্ত কিছুটা পরিবর্তন করে এখন ৩০০ উপজেলার পরিবর্তে ৫৬১ উপজেলায় ১৫ হাজার বিদ্যালয়ের পাশাপাশি আরও প্রায় ১৭ হাজার ৭০০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে (মাধ্যমিক পর্যায়ের সব প্রতিষ্ঠান) পাঠাভ্যাস কর্মসূচি বিস্তৃত করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

এতে দুই ধরনের বইয়ের সংখ্যাই বাড়ছে। দেশের মাধ্যমিক পর্যায়ের সব প্রতিষ্ঠানে এ কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য ৪৫ লাখ বইয়ের (কর্মসূচি বই) বাইরে আরও ৩৬ লাখ বই এবং পুরস্কারের জন্য ৩৮ লাখ বইয়ের ‘বাইরে’ আরও ৩০ লাখ বই প্রয়োজন হবে।

মাধ্যমিক স্তরের সব প্রতিষ্ঠানের জন্য দুই ধরনের বই কিনতে মোট ৪০৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা প্রয়োজন উল্লেখ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিবের কাছে বুধবার মাউশির পক্ষ থেকে চাহিদাপত্র দেয়া হয়েছে।

‘স্কিম পরিচালক’ অধ্যাপক মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন স্বাক্ষরিত চিঠিতে বইয়ের মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, ‘স্কিম ডকুমেন্টে কর্মসূচির প্রতিটি বইয়ের গড়মূল্য ১১৬ টাকা ও পুরস্কারের প্রতিটি বইয়ের গড় মূল্য ১১১ টাকা ধরা হয়েছে। বর্তমানে উন্মুক্ত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বই জমা নেয়ায় ছোট/বড় সব ধরনের বই জমা পড়েছে। বর্তমানে কাগজের মূল্য ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বিভিন্ন ধরনের বই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারে যার মূল্য আগের তুলনায় অনেক বেশি।’

মাউশির প্রস্তাবনায় ‘কর্মসূচির প্রতিটি বইয়ের গড় মূল্য ২০৮ টাকা এবং এই টাকার ওপর ২০ শতাংশ ভ্যাট, ট্যাক্সসহ মোট ১১২ কোটি ৩২ লাখ টাকা এবং পুরস্কারের প্রতিটি বইয়ের গড় মূল্য ২৫৩ টাকা এবং টাকার ওপর ২০ শতাংশ ভ্যাট, ট্যাক্সসহ মোট ১১৫ কোটি ৩৬ লাখ ৮০ হাজার টাকার প্রয়োজন হবে’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

তবে দেশের মাধ্যমিক স্তরের সব প্রতিষ্ঠানে এই হারে বই দিতে গেলে এই খাতে ‘ভ্যাট, ট্যাক্সসহ মোট ৪০৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা প্রয়োজন’ হবে বলে বেলাল হোসাইনের চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

বই কেনার প্রক্রিয়া নিয়ে বিতর্ক

শিক্ষা উপকরণ বা বই কেনার প্রক্রিয়া নিয়ে ‘চাতুর্যের’ অভিযোগ করেছে এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত মাউশির একাধিক কর্মকর্তা। তারা বলেন, কী কী বই শিক্ষা উপকরণ হিসেবে বাছাই করা হবে সেজন্য ‘উন্মুক্ত বিজ্ঞপ্তি’ দেয়া হয়েছিল। কিন্তু এখন বই কেনায় কোন উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করা হচ্ছে না। এতে বই কেনায় ব্যয় বেশি হওয়ার পাশাপাশি ব্যক্তি বিশেষের পছন্দের প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের বই কেনার সুযোগ উন্মুক্ত রাখা হয়েছে।

এ বিষয়ে শিক্ষা সচিবকে দেয়া মাউশির চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘স্কিম কর্তৃপক্ষ অনুমোদিত ক্রয় কমিটি কর্তৃক সরাসরি ক্রয় পদ্ধতির (ডিপিএম) একক উৎসভিত্তিক ক্রয় প্রক্রিয়া অনুসরণ করে দর কষাকষির মাধ্যমে প্রতিটি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে পৃথক পৃথক চুক্তির মাধ্যমে বই ক্রয় সম্পন্ন করে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান বিশ^সাহিত্য কেন্দ্রের দ্বারা মাঠ পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছে দিবে।’

উন্মুক্ত দরপত্র ছাড়া ডিপিএমে বই কেনা ঠিক হচ্ছে কি না জানতে চাইলে ‘স্কিম পরিচালক’ মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন বলেন, ‘যেহেতু এখনও মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন হয়নি, সেজন্য আমি এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারব না।’

স্কিম অফিস থেকে জানা গেছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে বই কেনার জন্য ৭২ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। কিন্তু বই বাছাইয়ে স্বজনপ্রীতির অভিযোগে বইয়ের তালিকায় অনুমোদন দেয়নি শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এজন্য ওই বছর বই কেনা হয়নি।

বই কেনার জন্য বর্তমান অর্থবছরে মাত্র তিন কোটি ১৫ লাখ ৩১ হাজার টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এজন্য বরাদ্দ বৃদ্ধির পাশাপাশি বইয়ের ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে মাউশি।

ছবি

শিক্ষার্থীর ‘কটূক্তি’র অভিযোগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সাময়িক বহিষ্কার

ছবি

এইচএসসি পরীক্ষায় বসছে সাড়ে ১২ লাখ শিক্ষার্থী

ছবি

২৬ জুন শুরু এইচএসসি, কেন্দ্র এলাকায় চলাচলে ডিএমপির বিধিনিষেধ জারি

ছবি

রাতের ঘটনায় আসন বাতিল, শৃঙ্খলা কমিটিতে তদন্ত প্রতিবেদন জমার প্রস্তুতি

পরীক্ষার আগের সপ্তাহ পর্যন্ত ফরম পূরণের সুযোগ, জানাল শিক্ষা বোর্ড

ছবি

মহামারির আশঙ্কায় এইচএসসি কেন্দ্রে মাস্ক, স্যানিটাইজার ও ডেঙ্গু প্রতিরোধের নির্দেশ

পরীক্ষা পেছানোর পরিকল্পনা নেই, প্রস্তুত শিক্ষা বোর্ডগুলো

ছবি

ভিসি নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি, আবেদন শেষ ২৬ জুন

ছবি

আদালতের রায়ে এক যুগ পর চাকরিতে ফিরছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৮৮ কর্মকর্তা-কর্মচারী

ছবি

‘ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়’ চালু না হওয়া পর্যন্ত ইউজিসির অধীনেই চলবে সাত কলেজ

ছবি

উপাচার্য ও প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি, আন্দোলনে ছাত্রদলসহ শিক্ষার্থীরা

ছবি

শাহরিয়ার সাম্য হত্যার ঘটনায় ঢাবিতে অর্ধদিবস শ্রদ্ধা, নিরাপত্তা জোরদারে উদ্যোগ

ছবি

বিশ্ববিদ্যালয় তহবিল স্থানান্তর ও রাজস্ব ফাঁকিতে দুদকের নজরে দুই প্রতিষ্ঠান

ছবি

কোরবানির ঈদ আর গ্রীষ্ম: লম্বা ছুটিতে যাচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

ছবি

১৬ কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন, বাদ শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী নেতাদের নাম

ছবি

কুয়েটে শিক্ষাকার্যক্রম শুরু হলেও শিক্ষকদের অনড় কর্মবিরতি, অনিশ্চয়তায় শিক্ষার্থীরা

ছবি

৬ বছর পর ইইডিতে উপপরিচালক পদায়ন

ছবি

শিক্ষার্থী-শিক্ষক উত্তেজনায় কুয়েটে অনিশ্চয়তায় একাডেমিক কার্যক্রম

ছবি

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অ্যাডহক কমিটির মাধ্যমে নিয়মিত কমিটি গঠন স্থগিত

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা ২৪ মে

ছবি

মে মাসের মাঝামাঝিতে তারিখ ঘোষণার লক্ষ্যে ডাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রকাশ

ছবি

কক্সবাজারে পরীক্ষা দিচ্ছে সেই ১৩ শিক্ষার্থী

ছবি

ভিসি অপসারণ একমাত্র দাবি: কুয়েট শিক্ষার্থীদের এক দফা আন্দোলন

ছবি

কৃষি গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা ১২ এপ্রিল

ছবি

বৃহস্পতিবার শুরু হচ্ছে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা, অংশ নেবে ১৯ লাখের বেশি শিক্ষার্থী

ছবি

১৩৫ কলেজে নতুন অধ্যক্ষ নিয়োগ দিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়

ছবি

শিক্ষা সংস্কারে পদক্ষেপ নেই, বাজেট বাড়ানোর দাবি শিক্ষাবিদদের

ছবি

এসএসসি পরীক্ষার জন্য কোচিং সেন্টার বন্ধ ও কেন্দ্রের আশপাশে ১৪৪ ধারা

ছবি

ঢাবির ‘গ’ ইউনিটের ফল প্রকাশে দুই মাসের স্থগিতাদেশ

ছবি

পেছালো এসএসসির গণিত পরীক্ষা, নতুন সময়সূচি প্রকাশ

ছবি

ঢাবির সহিংসতা: ১২৮ জনের তালিকা চূড়ান্ত নয়, পুনঃতদন্তে কমিটি

ছবি

নতুন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ‘গ্রামীণ ইউনিভার্সিটি’ অনুমোদিত

ছবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহিংসতা: ১২৮ জনের তালিকা প্রকাশ

ছবি

ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলো তিতুমীরের শিক্ষার্থীরা

ছবি

অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের মৃত্যুতে ঢাবিতে রোববার ছুটি

ছবি

শাবিপ্রবির ভর্তি পরীক্ষায় আপাতত সব কোটা স্থগিত

tab

শিক্ষা

পাঠ্যপুস্তকের বদলে এবার সহায়ক বই কেনা প্রকল্পের উদ্যোগ

রাকিব উদ্দিন

বুধবার, ২৩ নভেম্বর ২০২২

কাগজ সংকটে সরকার ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যবই ছাপতে হিশশিম খাচ্ছে। ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে দেশে কাগজ উৎপাদনের মূল কাঁচামাল ‘ভার্জিন পাল্প’ আমদানিও বন্ধ রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে খরচ প্রায় দ্বিগুণের বেশি বাড়িয়ে টেন্ডার ছাড়াই ৪১০ কোটি টাকার ‘সহায়ক বই’ কিনতে চায় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)।

এই বই দিয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা স্তরের শিক্ষার্থীদের বই পড়ার অভ্যাস ও দক্ষতা বাড়াতে চায় সংস্থাটি। এজন্য একটি প্রকল্পের আওতায় ‘স্ট্রেনদেনিং রিডিং হ্যাবিট অ্যান্ড রিডিং স্কিলস অ্যামাং সেকেন্ডারি স্টুডেন্টস’ শীর্ষক একটি ‘স্কিম কর্মসূচি’ অর্থাৎ ‘পাঠ্যভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচি’ বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

এই সময়ে ব্যয় বাড়িয়ে বই কেনা ঠিক হচ্ছে কি না জানতে চাইলে ‘স্কিম পরিচালক’ ও মাউশির মাধ্যমিক শাখার পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন বুধবার (২৩ নভেম্বর) সংবাদকে বলেন, ‘প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি এখনও মন্ত্রণালয়ে অনুমোদন হয়নি। এজন্য আমি কিছু বলতে পারব না।’

জানতে চাইলে ‘শিক্ষানীতি-২০১০’ প্রণয়ন কমিটির সদস্য-সচিব ও ‘জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমির’ (নায়েম) সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক শেখ ইকরামুল কবির সংবাদকে বলেন, ‘রিডিং হ্যাবিট বাড়ানোর জন্য এত ব্যয়বহুল প্রকল্প বাস্তবায়নের কোন প্রয়োজন নেই। কেনাকাটার বিষয় মানেই এর সঙ্গে সম্পৃক্ত সবাই লাভবান হয়; কমিশন ভাগাভাগি হয়। এজন্য এই ধরনের প্রকল্প নেয়া হয়।’

প্রথমদিকে ৬৪ জেলার ৩০০টি উপজেলার দেড় হাজার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ‘কর্মসূচি ও পুরস্কার’-এই দুই ধরনের বই দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। এর মধ্যে কর্মসূচির বই ৪৫ লাখ এবং পুরস্কারের জন্য ৩৮ লাখ কপি বই বিতরণের উদ্যোগ ছিল।

এই সিদ্ধান্ত কিছুটা পরিবর্তন করে এখন ৩০০ উপজেলার পরিবর্তে ৫৬১ উপজেলায় ১৫ হাজার বিদ্যালয়ের পাশাপাশি আরও প্রায় ১৭ হাজার ৭০০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে (মাধ্যমিক পর্যায়ের সব প্রতিষ্ঠান) পাঠাভ্যাস কর্মসূচি বিস্তৃত করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

এতে দুই ধরনের বইয়ের সংখ্যাই বাড়ছে। দেশের মাধ্যমিক পর্যায়ের সব প্রতিষ্ঠানে এ কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য ৪৫ লাখ বইয়ের (কর্মসূচি বই) বাইরে আরও ৩৬ লাখ বই এবং পুরস্কারের জন্য ৩৮ লাখ বইয়ের ‘বাইরে’ আরও ৩০ লাখ বই প্রয়োজন হবে।

মাধ্যমিক স্তরের সব প্রতিষ্ঠানের জন্য দুই ধরনের বই কিনতে মোট ৪০৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা প্রয়োজন উল্লেখ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিবের কাছে বুধবার মাউশির পক্ষ থেকে চাহিদাপত্র দেয়া হয়েছে।

‘স্কিম পরিচালক’ অধ্যাপক মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন স্বাক্ষরিত চিঠিতে বইয়ের মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, ‘স্কিম ডকুমেন্টে কর্মসূচির প্রতিটি বইয়ের গড়মূল্য ১১৬ টাকা ও পুরস্কারের প্রতিটি বইয়ের গড় মূল্য ১১১ টাকা ধরা হয়েছে। বর্তমানে উন্মুক্ত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বই জমা নেয়ায় ছোট/বড় সব ধরনের বই জমা পড়েছে। বর্তমানে কাগজের মূল্য ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বিভিন্ন ধরনের বই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারে যার মূল্য আগের তুলনায় অনেক বেশি।’

মাউশির প্রস্তাবনায় ‘কর্মসূচির প্রতিটি বইয়ের গড় মূল্য ২০৮ টাকা এবং এই টাকার ওপর ২০ শতাংশ ভ্যাট, ট্যাক্সসহ মোট ১১২ কোটি ৩২ লাখ টাকা এবং পুরস্কারের প্রতিটি বইয়ের গড় মূল্য ২৫৩ টাকা এবং টাকার ওপর ২০ শতাংশ ভ্যাট, ট্যাক্সসহ মোট ১১৫ কোটি ৩৬ লাখ ৮০ হাজার টাকার প্রয়োজন হবে’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

তবে দেশের মাধ্যমিক স্তরের সব প্রতিষ্ঠানে এই হারে বই দিতে গেলে এই খাতে ‘ভ্যাট, ট্যাক্সসহ মোট ৪০৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা প্রয়োজন’ হবে বলে বেলাল হোসাইনের চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

বই কেনার প্রক্রিয়া নিয়ে বিতর্ক

শিক্ষা উপকরণ বা বই কেনার প্রক্রিয়া নিয়ে ‘চাতুর্যের’ অভিযোগ করেছে এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত মাউশির একাধিক কর্মকর্তা। তারা বলেন, কী কী বই শিক্ষা উপকরণ হিসেবে বাছাই করা হবে সেজন্য ‘উন্মুক্ত বিজ্ঞপ্তি’ দেয়া হয়েছিল। কিন্তু এখন বই কেনায় কোন উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করা হচ্ছে না। এতে বই কেনায় ব্যয় বেশি হওয়ার পাশাপাশি ব্যক্তি বিশেষের পছন্দের প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের বই কেনার সুযোগ উন্মুক্ত রাখা হয়েছে।

এ বিষয়ে শিক্ষা সচিবকে দেয়া মাউশির চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘স্কিম কর্তৃপক্ষ অনুমোদিত ক্রয় কমিটি কর্তৃক সরাসরি ক্রয় পদ্ধতির (ডিপিএম) একক উৎসভিত্তিক ক্রয় প্রক্রিয়া অনুসরণ করে দর কষাকষির মাধ্যমে প্রতিটি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে পৃথক পৃথক চুক্তির মাধ্যমে বই ক্রয় সম্পন্ন করে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান বিশ^সাহিত্য কেন্দ্রের দ্বারা মাঠ পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছে দিবে।’

উন্মুক্ত দরপত্র ছাড়া ডিপিএমে বই কেনা ঠিক হচ্ছে কি না জানতে চাইলে ‘স্কিম পরিচালক’ মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন বলেন, ‘যেহেতু এখনও মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন হয়নি, সেজন্য আমি এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারব না।’

স্কিম অফিস থেকে জানা গেছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে বই কেনার জন্য ৭২ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। কিন্তু বই বাছাইয়ে স্বজনপ্রীতির অভিযোগে বইয়ের তালিকায় অনুমোদন দেয়নি শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এজন্য ওই বছর বই কেনা হয়নি।

বই কেনার জন্য বর্তমান অর্থবছরে মাত্র তিন কোটি ১৫ লাখ ৩১ হাজার টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এজন্য বরাদ্দ বৃদ্ধির পাশাপাশি বইয়ের ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে মাউশি।

back to top