alt

প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ : ভর্তিতে সতর্কতা জারি বিএমডিসির

বাকী বিল্লাহ : রোববার, ১২ মার্চ ২০২৩

দেশে অনুমোদিত ৭২টি প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ রয়েছে। তার মধ্যে কিছু কিছু কলেজে এমবিবিএস লেখাপড়ার মান নেই। এমনকি অনেক প্রাইভেট মেডিকেল কলেজে ছাত্রছাত্রীদের এমবিবিএস পড়া ও হাতে-কলমে শেখার কোন পরিবেশ নেই। নেই শিক্ষক ও শিক্ষা উপকণ। নামমাত্র কলেজ চালু করে ছাত্রছাত্রী ভর্তি করা হচ্ছে।

ওইসব মেডিকেল কলেজের হাসপাতাল শাখায় কোন রোগী নেই। কোন রোগী ভর্তি হওয়ার ব্যবস্থা নেই। সেখানে ছাত্রছাত্রীরা কিভাবে ডাক্তারি লেখাপড়া করবেন, তা নিয়ে নানা অভিযোগ রয়েছে। কেউ কেউ প্রভাব খাটিয়ে কলেজের অনুমোদন নিয়েছেন। ছাত্র ভর্তিতে কোন নিয়মনীতি মানছে না তারা। অনেকেই কোটার বাইরে গিয়ে অতিরিক্ত ছাত্রছাত্রী ভর্তি করেন।

বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) বিশেষজ্ঞ টিম অনেক কলেজ পরিদর্শন করে নানা অনিয়মের অভিযোগ পেয়েছে। সম্প্রতি বিএমডিসির ওয়েবসাইটে ৬টি মেডিকেল কলেজের তালিকা প্রকাশ করে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। জারি করা ওই নোটিশে গত ৮ ফেব্রুআরি বিএমডির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ডা. লিয়াকত হোসেনের স্বাক্ষর রয়েছে।

তালিকাভভুক্ত মেডিকেল কলেজগুলোর মধ্যে ঢাকার কেয়ার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ২০১৭-২০১৭ সাল থেকে তালিকাভুক্ত নয়। এই প্রতিষ্ঠানের সব শিক্ষার্থীকে অন্য অনুমোদিত মেডিকেল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।

রংপুরের নর্দান প্রাইভেট মেডিকেল কলেজের অনুমোদন স্থগিত। এই প্রতিষ্ঠানের সব শিক্ষার্থী অন্য অনুমোদিত মেডিকেল কলেজে স্থানান্তরিত হয়েছেন।

ঢাকার ধানমন্ডির নর্দান ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের অনুমোদন স্থগিত। তারা হাইকোর্টে রিট দায়ের করে শিক্ষার্থী ভর্তি করছে।

ডেমরার আইচি মেডিকেল কলেজ তালিকাভুক্ত নয়। তারা হাইকোর্টে রিট দায়ের করে শিক্ষার্থী ভর্তি করছে। ঢাকার আশুলিয়া নাইটেঙ্গেল মেডিকেল কলেজের অনুমোদন স্থগিত। এই প্রতিষ্ঠানেরে সব শিক্ষাথীকে অন্য অনুমোদিত মেডিকেল কলেজে স্থানান্তরিত হয়েছেন।

রাজশাহীর শাহমাগহদুম মেডিকেল কলেজ তালিকাভুক্ত নয়। এই প্রতিষ্ঠানের সব শিক্ষার্থী অন্য অনুমোদিত মেডিকেল কলেজে স্থান্তরিত হয়েছেন।

এভাবে ৬টি প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ নানা কারণে বিএমডিসির ওয়েবসাইটে তালিকায় রয়েছে। তালিকাটি ছাত্রছাত্রীদের সতর্ক করার জন্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলে (বিএমডিসি) ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ডা. লিয়াতক হোসেন সংবাদকে জানান, দেশে প্রাইভেট মেডিকেল কলেজের সংখ্যা ৭৬টি। তার মধ্যে অনুমোদন আছে ৭২টির। অনেক কলেজে এমবিবিএস ভর্তির আসন সংখ্যা ১শ’টি।

প্রভাব খাটিয়ে তারা অতিরিক্ত ছাত্রছাত্রী ভর্তি করে। অনেক কলেজে মানসম্মত লেখাপড়ার ন্যূনতম পরিবেশও নেই। সরেজমিন তদন্ত করে অনেক কলেজে নানা অনিয়ম চিহ্নিত করা হয়েছে বলে জানান তিনি। অনেকেই প্রভাব খাটিয়ে বাধাহীনভাবে নিজেদের মতো করে ছাত্র ভর্তি করে। পরে ছাত্ররা নানাভাবে সমস্যায় পড়েন। ভর্তির অনিয়ম নিয়ে ব্যবস্থা নিতে গেলে তারা আদালতে গিয়ে (রিট করেন) আইনি ব্যবস্থা নেন। আইনি প্রক্রিয়া দীর্ঘদিন চলতে থাকে। এরপর ছাত্রদের সমস্যা বেশি হয়। তাই ছাত্রছাত্রীদের প্রাইভেট মেডিকেল কলেজে ভর্তিতে নিজেদের যাচাই-বাছাই করে এবং খোঁজ-খবর নিয়ে ভর্তি হতে ডা. লিয়াত পরামর্শ দেন।

বিএমডিসির মতে, অনেক প্রাইভেট মেডিকেল কলেজের ছাত্র ভর্তিসহ শিক্ষা কার্যক্রম এখন বন্ধ বা সাসপেন্ড আছে। ওই বিষয়ে খোঁজ নিয়ে এমবিবিএস ভর্তি হলে ছাত্রছাত্রীরা উপকৃত হবে। না হয় তারা প্রতারণার শিকার হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। তাই সাসপেন্ডকৃত প্রাইভেট মেডিকেল কলেজগুলোর আগাম খোঁজ নিয়ে ভর্তি না হওয়াই ভালো। আর কেউ যদি ভর্তি হয় তার টাকাও খরচ হবে। আবার সময় নষ্ট হবে।

বিএমডিসির নীতিমামলায় বলা হয়েছে, কোন প্রতিষ্ঠানেই অনুমোদিত আসনের অতিরিক্ত কিংবা নীতিমালায় বর্ণিত প্রক্রিয়ার বাইরে দেশি-বিদেশি ছাছাত্রী ভর্তি করা যাবে না। আর নিয়মের বাইরে ভর্তি করলে কর্তৃপক্ষ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। আর বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নীতিমালার কোন শর্ত ভঙ্গ করলে অনুমোদন বাতিল করা হবে।

বিএমডিসির কার্যকরী পরিষদের সদস্য ও সাবেক স্বাচিপ সভাপতি ডা. ইকবাল আর্সলান সংবাদকে জানান, দেশে যারা প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করতে চান তারা প্রথমে মন্ত্রণালয়ে লিখিত আবেদন করেন। পরে বিএমডিসি পরিদর্শন করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে রিপোর্টে পেশ করেন। প্রাথমিক অনুমোদনের পর প্রাইভেট মেডিকেল কলেজগুলোতে শিক্ষক নিয়োগ দেয়। পরে বিএমডিসি নীতিমালা অনুযায়ী চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিদর্শন শেষে অনুমোদন দেয়। এরমধ্যে প্রতিটি বিভাগের বিশ্ববিদ্যালয় নিজ নিজ এলাকার অনুমোদিত মেডিকেল কলেজের অনুমোদন দেয়। সর্বশেষ বিএমডিসিতে ছাত্রছাত্রী ভর্তির জন্য অনুমোদনের আবেদন করেন। অনুমোদন পেলে ছাত্র ভর্তি করতে পারে। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময় পরিদর্শন করে করা হয়।

অভিযোগ রয়েছে, অনুমোদনের পর অনেকেই নীতিমালা ও শর্ত ভঙ্গ করে জোড়াতালি দিয়ে কোনমতে প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ পরিচালনা করছে। পরে তদন্তে অনিয়ম ধরা পড়লে বিশ্ববিদ্যালয় ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় অভিযুক্ত মেডিকেল কলেজের স্বীকৃতি স্থগিত করে। এই স্থগিতের বিরুদ্ধে মালিকপক্ষ কোর্টে রিট করে (স্টে-অর্ডার) আদেশ স্থগিত করে আবার ছাত্র ভর্তি করেন। ছাত্ররা যখন তৃতীয় ও ৪র্থ বর্ষে লেখাপড়া করেন তখন দেশের আর্থসামাজিক, মানবিকসহ নানা কারণ দেখিয়ে বিএমডিসি ও মন্ত্রণালয়ের ওপর চাপ সৃষ্টি করে অনিয়মকে নিয়মে নেয়ার চেষ্টা করে। এভাবে অনেক প্রাইভেট মেডিকেল কলেজে নানা অনিয়ম হচ্ছে।

এ সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ সংবাদ প্রতিবেদককে জানান, যেসব প্রাইভেট মেডিকেল কলেজে শিক্ষক নেই, শিক্ষা উপকরণের অভাব, বিএমডিসির অনুমোদন নেই তাতে ছাত্ররা যেন ভর্তি না হয়। ভর্তি হলে তাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। আর বিএমডিসির অনুমোদন না পেলে তারা রোগীর চিকিৎসাও করতে পারবে না। বিএমডিসি ওয়েবসাইটে নোটিশে ৬টি মেডিকেল কলেজের তালিকা প্রকাশ করেছেন। এই সংখ্যা আরও ৬ থেকে ৭টি বাড়তে পারে বলে তিনি জানান। তিনি ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবকদের সতর্ক হওয়ার জন্য অনুরোধ জানান।

ছবি

আন্তর্জাতিক রোবট অলিম্পিয়াডে অংশ নিতে অস্ট্রেলিয়া যাচ্ছে ১০ শিক্ষার্থী

ছবি

বুয়েটের ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি আবেদন শুরু ১৬ নভেম্বর

ছবি

শনিবারেও ক্লাস এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে

ছবি

বছরে ১০ শতাংশ বেতন বাড়ানোর দাবি আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী ফেডারেশনের

ছবি

৪৯তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষার ২ নভেম্বর শুরু

ছবি

সিরাজগঞ্জে ৭ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শতভাগ ফেল

ছবি

ইডেন ও বদরুন্নেসায় ‘সহশিক্ষা’ চালুর প্রস্তাব বাতিলের দাবি

আজ থেকে আমরণ অনশনে এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা

ছবি

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মঙ্গলবারের সব পরীক্ষা স্থগিত

ছবি

ঢাকা কলেজে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ‘হাতাহাতি’: সরকারি কলেজগুলোতে অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা

ছবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে ভর্তির আবেদন ও পরীক্ষার সূচি প্রকাশ

ছবি

এমআইএসটির ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে প্রথম বর্ষ স্নাতক ভর্তি পরীক্ষার সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা

ছবি

এইচএসসির ফল ১৬ অক্টোবর প্রকাশ হতে পারে

দুর্গাপূজার ছুটি শেষে খুলেছে স্কুল, রোববার থেকে কলেজ

ছবি

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ২-৩ হাজার টাকার প্রস্তাব পাঠাল শিক্ষা মন্ত্রণালয়

ছবি

১২ ডিসেম্বর মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা

ছবি

শিক্ষক দিবসে নারায়ণগঞ্জে ৫ শিক্ষককে সন্মাননা দেয়া হয়েছে

ছবি

এমপিও শিক্ষকদের বাড়ি ভাড়া বাড়লো ৫০০ টাকা, প্রত্যাখান

ছবি

ইউজিসি সদস্য হলেন চাবিপ্রবি উপাচার্য

ছবি

শিক্ষাবিদ-সাহিত্যিক সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের হার্টে অস্ত্রোপচার

ছবি

বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রধান-সহকারী প্রধান নিয়োগেও নিয়ন্ত্রণ নিচ্ছে সরকার

ছবি

এইচএসসি পরীক্ষার ফল ৬০ দিনের মধ্যেই

ছবি

স্বাতন্ত্র্য ও শিক্ষার উন্নয়নে ‘অক্সফোর্ড মডেলে’ বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের

ছবি

বিশ্ববিদ্যালয় করার উদ্যোগের বিরুদ্ধে মানববন্ধন সাত কলেজের শিক্ষকদের

ছবি

অষ্টম শ্রেণির জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষা ২১ থেকে ২৪ ডিসেম্বর

ছবি

জরিপ: পিআর সম্পর্কে ধারণা নেই ৫৬ শতাংশের, ভোট দিতে চান ৯৪ শতাংশ

ছবি

এসএসসি পরীক্ষায় ১৪০টি ভেন্যু কেন্দ্রের সবগুলোই বাতিল করছে যশোর বোর্ড

ছবি

র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ তিনে নেই অক্সফোর্ড ও কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়!

ছবি

ইইডি ডিপ্লোমা প্রকৌশল সমিতি: কাউন্সিল নিয়ে কর্তৃত্বের ‘দ্বন্দ্ব’

ছবি

ডিমলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রক্সি দিয়ে চলছে পাঠদান

ছবি

৪৭তম বিসিএস: পৌনে চার লাখ পরীক্ষার্থীর অংশগ্রহণে প্রিলিমিনারি সম্পন্ন

ছবি

ঢাকার ৭ সরকারি কলেজ: উচ্চশিক্ষা ও নারী শিক্ষা সংকোচন, কলেজের স্বতন্ত্র কাঠামো বিলুপ্তির চেষ্টার অভিযোগ

ছবি

দুর্গাপূজা উপলক্ষে ১১ দিনের লম্বা ছুটিতে স্কুল-কলেজ

ছবি

তৃতীয় আবেদনেও কলেজ পায়নি জিপিএ-৫ পাওয়া ২৯৫ জনসহ ৫ হাজার শিক্ষার্থী

ছবি

২০২৬ শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যবই: প্রাথমিকের বই ছাপা শুরু হচ্ছে আগামী সপ্তাহে

ছবি

ঢাকা কলেজ অর্থনীতি বিভাগ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন গঠিত

tab

প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ : ভর্তিতে সতর্কতা জারি বিএমডিসির

বাকী বিল্লাহ

রোববার, ১২ মার্চ ২০২৩

দেশে অনুমোদিত ৭২টি প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ রয়েছে। তার মধ্যে কিছু কিছু কলেজে এমবিবিএস লেখাপড়ার মান নেই। এমনকি অনেক প্রাইভেট মেডিকেল কলেজে ছাত্রছাত্রীদের এমবিবিএস পড়া ও হাতে-কলমে শেখার কোন পরিবেশ নেই। নেই শিক্ষক ও শিক্ষা উপকণ। নামমাত্র কলেজ চালু করে ছাত্রছাত্রী ভর্তি করা হচ্ছে।

ওইসব মেডিকেল কলেজের হাসপাতাল শাখায় কোন রোগী নেই। কোন রোগী ভর্তি হওয়ার ব্যবস্থা নেই। সেখানে ছাত্রছাত্রীরা কিভাবে ডাক্তারি লেখাপড়া করবেন, তা নিয়ে নানা অভিযোগ রয়েছে। কেউ কেউ প্রভাব খাটিয়ে কলেজের অনুমোদন নিয়েছেন। ছাত্র ভর্তিতে কোন নিয়মনীতি মানছে না তারা। অনেকেই কোটার বাইরে গিয়ে অতিরিক্ত ছাত্রছাত্রী ভর্তি করেন।

বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) বিশেষজ্ঞ টিম অনেক কলেজ পরিদর্শন করে নানা অনিয়মের অভিযোগ পেয়েছে। সম্প্রতি বিএমডিসির ওয়েবসাইটে ৬টি মেডিকেল কলেজের তালিকা প্রকাশ করে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। জারি করা ওই নোটিশে গত ৮ ফেব্রুআরি বিএমডির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ডা. লিয়াকত হোসেনের স্বাক্ষর রয়েছে।

তালিকাভভুক্ত মেডিকেল কলেজগুলোর মধ্যে ঢাকার কেয়ার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ২০১৭-২০১৭ সাল থেকে তালিকাভুক্ত নয়। এই প্রতিষ্ঠানের সব শিক্ষার্থীকে অন্য অনুমোদিত মেডিকেল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।

রংপুরের নর্দান প্রাইভেট মেডিকেল কলেজের অনুমোদন স্থগিত। এই প্রতিষ্ঠানের সব শিক্ষার্থী অন্য অনুমোদিত মেডিকেল কলেজে স্থানান্তরিত হয়েছেন।

ঢাকার ধানমন্ডির নর্দান ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের অনুমোদন স্থগিত। তারা হাইকোর্টে রিট দায়ের করে শিক্ষার্থী ভর্তি করছে।

ডেমরার আইচি মেডিকেল কলেজ তালিকাভুক্ত নয়। তারা হাইকোর্টে রিট দায়ের করে শিক্ষার্থী ভর্তি করছে। ঢাকার আশুলিয়া নাইটেঙ্গেল মেডিকেল কলেজের অনুমোদন স্থগিত। এই প্রতিষ্ঠানেরে সব শিক্ষাথীকে অন্য অনুমোদিত মেডিকেল কলেজে স্থানান্তরিত হয়েছেন।

রাজশাহীর শাহমাগহদুম মেডিকেল কলেজ তালিকাভুক্ত নয়। এই প্রতিষ্ঠানের সব শিক্ষার্থী অন্য অনুমোদিত মেডিকেল কলেজে স্থান্তরিত হয়েছেন।

এভাবে ৬টি প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ নানা কারণে বিএমডিসির ওয়েবসাইটে তালিকায় রয়েছে। তালিকাটি ছাত্রছাত্রীদের সতর্ক করার জন্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলে (বিএমডিসি) ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ডা. লিয়াতক হোসেন সংবাদকে জানান, দেশে প্রাইভেট মেডিকেল কলেজের সংখ্যা ৭৬টি। তার মধ্যে অনুমোদন আছে ৭২টির। অনেক কলেজে এমবিবিএস ভর্তির আসন সংখ্যা ১শ’টি।

প্রভাব খাটিয়ে তারা অতিরিক্ত ছাত্রছাত্রী ভর্তি করে। অনেক কলেজে মানসম্মত লেখাপড়ার ন্যূনতম পরিবেশও নেই। সরেজমিন তদন্ত করে অনেক কলেজে নানা অনিয়ম চিহ্নিত করা হয়েছে বলে জানান তিনি। অনেকেই প্রভাব খাটিয়ে বাধাহীনভাবে নিজেদের মতো করে ছাত্র ভর্তি করে। পরে ছাত্ররা নানাভাবে সমস্যায় পড়েন। ভর্তির অনিয়ম নিয়ে ব্যবস্থা নিতে গেলে তারা আদালতে গিয়ে (রিট করেন) আইনি ব্যবস্থা নেন। আইনি প্রক্রিয়া দীর্ঘদিন চলতে থাকে। এরপর ছাত্রদের সমস্যা বেশি হয়। তাই ছাত্রছাত্রীদের প্রাইভেট মেডিকেল কলেজে ভর্তিতে নিজেদের যাচাই-বাছাই করে এবং খোঁজ-খবর নিয়ে ভর্তি হতে ডা. লিয়াত পরামর্শ দেন।

বিএমডিসির মতে, অনেক প্রাইভেট মেডিকেল কলেজের ছাত্র ভর্তিসহ শিক্ষা কার্যক্রম এখন বন্ধ বা সাসপেন্ড আছে। ওই বিষয়ে খোঁজ নিয়ে এমবিবিএস ভর্তি হলে ছাত্রছাত্রীরা উপকৃত হবে। না হয় তারা প্রতারণার শিকার হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। তাই সাসপেন্ডকৃত প্রাইভেট মেডিকেল কলেজগুলোর আগাম খোঁজ নিয়ে ভর্তি না হওয়াই ভালো। আর কেউ যদি ভর্তি হয় তার টাকাও খরচ হবে। আবার সময় নষ্ট হবে।

বিএমডিসির নীতিমামলায় বলা হয়েছে, কোন প্রতিষ্ঠানেই অনুমোদিত আসনের অতিরিক্ত কিংবা নীতিমালায় বর্ণিত প্রক্রিয়ার বাইরে দেশি-বিদেশি ছাছাত্রী ভর্তি করা যাবে না। আর নিয়মের বাইরে ভর্তি করলে কর্তৃপক্ষ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। আর বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নীতিমালার কোন শর্ত ভঙ্গ করলে অনুমোদন বাতিল করা হবে।

বিএমডিসির কার্যকরী পরিষদের সদস্য ও সাবেক স্বাচিপ সভাপতি ডা. ইকবাল আর্সলান সংবাদকে জানান, দেশে যারা প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করতে চান তারা প্রথমে মন্ত্রণালয়ে লিখিত আবেদন করেন। পরে বিএমডিসি পরিদর্শন করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে রিপোর্টে পেশ করেন। প্রাথমিক অনুমোদনের পর প্রাইভেট মেডিকেল কলেজগুলোতে শিক্ষক নিয়োগ দেয়। পরে বিএমডিসি নীতিমালা অনুযায়ী চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিদর্শন শেষে অনুমোদন দেয়। এরমধ্যে প্রতিটি বিভাগের বিশ্ববিদ্যালয় নিজ নিজ এলাকার অনুমোদিত মেডিকেল কলেজের অনুমোদন দেয়। সর্বশেষ বিএমডিসিতে ছাত্রছাত্রী ভর্তির জন্য অনুমোদনের আবেদন করেন। অনুমোদন পেলে ছাত্র ভর্তি করতে পারে। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময় পরিদর্শন করে করা হয়।

অভিযোগ রয়েছে, অনুমোদনের পর অনেকেই নীতিমালা ও শর্ত ভঙ্গ করে জোড়াতালি দিয়ে কোনমতে প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ পরিচালনা করছে। পরে তদন্তে অনিয়ম ধরা পড়লে বিশ্ববিদ্যালয় ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় অভিযুক্ত মেডিকেল কলেজের স্বীকৃতি স্থগিত করে। এই স্থগিতের বিরুদ্ধে মালিকপক্ষ কোর্টে রিট করে (স্টে-অর্ডার) আদেশ স্থগিত করে আবার ছাত্র ভর্তি করেন। ছাত্ররা যখন তৃতীয় ও ৪র্থ বর্ষে লেখাপড়া করেন তখন দেশের আর্থসামাজিক, মানবিকসহ নানা কারণ দেখিয়ে বিএমডিসি ও মন্ত্রণালয়ের ওপর চাপ সৃষ্টি করে অনিয়মকে নিয়মে নেয়ার চেষ্টা করে। এভাবে অনেক প্রাইভেট মেডিকেল কলেজে নানা অনিয়ম হচ্ছে।

এ সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ সংবাদ প্রতিবেদককে জানান, যেসব প্রাইভেট মেডিকেল কলেজে শিক্ষক নেই, শিক্ষা উপকরণের অভাব, বিএমডিসির অনুমোদন নেই তাতে ছাত্ররা যেন ভর্তি না হয়। ভর্তি হলে তাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। আর বিএমডিসির অনুমোদন না পেলে তারা রোগীর চিকিৎসাও করতে পারবে না। বিএমডিসি ওয়েবসাইটে নোটিশে ৬টি মেডিকেল কলেজের তালিকা প্রকাশ করেছেন। এই সংখ্যা আরও ৬ থেকে ৭টি বাড়তে পারে বলে তিনি জানান। তিনি ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবকদের সতর্ক হওয়ার জন্য অনুরোধ জানান।

back to top