তীব্র দাবদাহের কারণে আজ দেশের সব মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীর অসুস্থতার তথ্য আসায় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দেশের সব মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে আজ শ্রেণী কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। এর ফলে আজ শুক্রবার ও শনিবার মিলে তিন দিন ছুটি পাচ্ছে মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা। এছাড়া দেশের সব মাদ্রাসায়ও (দাখিল) আজ শ্রেণী কার্যক্রম বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর।
মাউশি এবং মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের পৃথক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বুধবার (৭ জুন) এ তথ্য জানানো হয়। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তার বরাত দিয়ে মাউশি জানিয়েছে, আগামী ৫ থেকে ৬ দিন দেশের ওপর দিয়ে মৃদু, মাঝারি ও তীব্র তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। মাদ্রাসা অধিদপ্তর থেকেও প্রায় একই তথ্য দেয়া হয়েছে।
প্রচন্ড দাবদাহের কারণে রাজধানীর ভিকারুননেসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ক্লাস চলাকালে বুধবার ছয়জন ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাদের সিদ্বেশ্বরী এলাকার কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়।
এ পরিস্থিতিতে স্কুল খোলা রাখা না রাখার সিদ্ধান্ত জানতে মাউশি ও প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির সভাপতির পরামর্শ চান প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ কেকা রায় চৌধুরী।
তিনি বলেন, ছয়জন ছাত্রী গরমে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। পরে অভিভাবকদের মাধ্যমে তাদের বাসায় পাঠানো হয়।
প্রতিষ্ঠান প্রধানের ক্ষমতাবলে যে কয়দিন ছুটি দেয়া যায় তার মধ্যে থেকে মঙ্গলবার (৬ জুন) ছুটি দিয়েছিলেন জানিয়ে কেকা রায় চৌধুরী বলেন, বছরের মাঝামাঝি হওয়ায় তিনি চাইলেই আর ছুটি দিতে পারছেন না। এজন্য মাউশি অধিদপ্তরের মতামত চাওয়া হয়েছে।
এর আগে মঙ্গলবার কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর সুবল আফতাব উচ্চ বিদ্যালয়ের ক্লাসরুমে অসুস্থ হওয়া এক শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে নেয়ার পর তার মৃত্যু হয় বলে খবর পাওয়া গেছে। ওই ছাত্রীর নাম উম্মে হাবিবা। সে ওই প্রতিষ্ঠানের ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী ও তিতাস উপজেলার চান নাগেরচর গ্রামের জিয়াউল হকের মেয়ে।
এছাড়া তীব্র গরমে কুমিল্লার দাউদকান্দিতে বুধবার তিনটি বিদ্যালয়ের ২৬ শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে এবং একটির পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।
অর্ধবার্ষিক পরীক্ষার প্রথম দিনে প্রচন্ড গরমে দাউদকান্দি উপজেলার ৩টি উচ্চ বিদ্যালয়ের ২৬ শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ে। এর মধ্যে ২৩ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্রেক্সে ভর্তি করা হয়। বুধবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টার মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গৌরীপুর সুবল আফতাব উচ্চ বিদ্যালয়ে বুধবার ও আজকের ‘বৃহস্পতিবার’ পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।
অসুস্থ হয়ে পড়া শিক্ষার্থীরা হলো সুবল আফতাব উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর তাবাচ্ছুম আক্তার, সামিয়া আক্তার, তানিয়া আক্তার, সুমাইয়া আক্তার, মারিয়া আফরিন, সাইফুল ইসলাম, জাহিদ হাসান, তাওহিদ হাসান, অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মায়মুনা আক্তার, তন্নীমা আক্তার, ফাহিয়া তাছিন, কারিমা আক্তার, কবিতা আক্তার, আমেনা আক্তার, চন্দ্রিমা রানী রায়, ফাতেমা আক্তার, ষষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থী জাকিয়া আক্তার ও মালিহা আক্তার।
এছাড়া গৌরীপুর বিলকিস মোশাররফ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী তনিমা আক্তার ও চিনামুড়া এলএন উচ্চ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ইকরা আক্তার, খাদিজা আক্তার, নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ওহি ভূঁইয়া এবং নারান্দিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী জায়েদা আক্তার। তাদের দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সুস্থ হওয়ার পর ১৬ শিক্ষার্থীকে বাড়িতে পাঠানো হয়। অন্যদের চিকিৎসা বুধবার বিকাল নাগাদ অব্যাহত ছিল।
শিক্ষার্থীদের অসুস্থতার খবর পেয়ে কুমিল্লার সিভিল সার্জন নাছিমা আক্তার, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহিনুল হাসান, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা তৌহিদ আল হাসান, সহকারী কমিশনার (ভূমি) জিয়াউর রহমান, মডেল থানার ওসি মুহম্মদ আলমগীর ভূঞা, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা একেএম ফজলুল হক দ্রুত হাসপাতালে ছুটে যান এবং অসুস্থ শিক্ষার্থীদের যথাযথ চিকিৎসা ব্যবস্থা করেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা তৌহিদ আল হাসান বলেন, গরম ও পরীক্ষার চিন্তায় প্রথমে এক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়। পরে ওই শিক্ষার্থীর দেখাদেখি আতঙ্কে অন্য শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়। অসুস্থ শিক্ষার্থীদের যথাযথ চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ করে তোলা হয়েছে।
গৌরীপুর সুবল আফতাব উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সেলিম জানিয়েছেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশক্রমে বুধবার ও বৃস্পতিবারের বিদ্যালয়ের সব শ্রেণীর অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।
এর আগে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ছাত্রছাত্রীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিবেচনা করে ৫ জুন থেকে ৮ জুন পর্যন্ত দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণী কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে।
গত ৪ জুন গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশব্যাপী তীব্র দাবদাহের কারণে কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিবেচনা করে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
কুড়িগ্রাম : ফুলবাড়ীতে তীব্র গরমে দুই শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছে। বুধবার দুপুরে উপজেলার উত্তর রাবাইতারী উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরল আমিন জানান, বিদ্যালয়ে অর্ধবার্ষিকী পরীক্ষা চলছিল। পরীক্ষা চলাকালীন নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী হেলেনা আক্তার (১৪) তীব্র গরমে জ্ঞান হারিয়ে পরীক্ষা কক্ষেই লুটিয়ে পড়ে। পরে আমরা তাকে উদ্ধার করে দ্রুত নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করি। অন্যদিকে নবম শ্রেণীর অন্য শিক্ষার্থী আবু হাসান (১৫) ইংরেজি প্রথমপত্রের পরীক্ষা শেষ করে দুপুর একটার দিকে বাড়িতে ফিরেই জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে পড়ে যায় । তার পরিবারের লোকজন তাকেও দ্রুত নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। বর্তমানে তারা দুজনই নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, অসুস্থ অবস্থায় ওই দুই শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে নেয়া হয়। তাদেরকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। বর্তমানে তারা শঙ্কামুক্ত।
চাটখিলিতে দুই শিক্ষার্থী জ্ঞান হারিয়ে হাসপাতালে
নোয়াখালী চাটখিলির ভীমপুর বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী অত্যাধিক গরমে জ্ঞান হারিয়ে মাথা ঘুরে পড়ে যায়। পরে স্কুল কর্তৃপক্ষ তাদের তাৎক্ষণিক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানায়, দীর্ঘ লোডশেডিং আর অত্যাধিক গরমে ক্লাস করা কঠিন। বুধবার দুপুরে বিদ্যালয়ের পরীক্ষা চলাকালীন নবম শ্রেণীর ছাত্রী কানিজ ফাতেমা রিয়া (১৫) ও দশম শ্রেণীর তানজিনা সুলতানা (১৬) হঠাৎ জ্ঞান হারিয়ে ঘুরে পড়ে যায়।
চাটখিল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. মামুনুর রশীদ জানান, অত্যাধিক গরমে শিক্ষার্থীরা হিট স্ট্রোক করে জ্ঞান হারিয়েছে। কানিজ ফাতেমা রিয়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে অন্য শিক্ষার্থী তানজিনা সুলতানা প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়িতে ফিরে গেছে। এ সময় তিনি অত্যাধিক গরমে জরুরি প্রয়োজনে বাড়ির বাহির যেতে ছাতা ব্যবহার করার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিশুদ্ধ খাবার পানি রাখার এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বেশি বেশি বিশুদ্ধ পানি পান করার ও পুষ্টিকর খাওয়ার পরামর্শ দেন।
বুধবার, ০৭ জুন ২০২৩
তীব্র দাবদাহের কারণে আজ দেশের সব মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীর অসুস্থতার তথ্য আসায় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দেশের সব মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে আজ শ্রেণী কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। এর ফলে আজ শুক্রবার ও শনিবার মিলে তিন দিন ছুটি পাচ্ছে মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা। এছাড়া দেশের সব মাদ্রাসায়ও (দাখিল) আজ শ্রেণী কার্যক্রম বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর।
মাউশি এবং মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের পৃথক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বুধবার (৭ জুন) এ তথ্য জানানো হয়। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তার বরাত দিয়ে মাউশি জানিয়েছে, আগামী ৫ থেকে ৬ দিন দেশের ওপর দিয়ে মৃদু, মাঝারি ও তীব্র তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। মাদ্রাসা অধিদপ্তর থেকেও প্রায় একই তথ্য দেয়া হয়েছে।
প্রচন্ড দাবদাহের কারণে রাজধানীর ভিকারুননেসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ক্লাস চলাকালে বুধবার ছয়জন ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাদের সিদ্বেশ্বরী এলাকার কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়।
এ পরিস্থিতিতে স্কুল খোলা রাখা না রাখার সিদ্ধান্ত জানতে মাউশি ও প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির সভাপতির পরামর্শ চান প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ কেকা রায় চৌধুরী।
তিনি বলেন, ছয়জন ছাত্রী গরমে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। পরে অভিভাবকদের মাধ্যমে তাদের বাসায় পাঠানো হয়।
প্রতিষ্ঠান প্রধানের ক্ষমতাবলে যে কয়দিন ছুটি দেয়া যায় তার মধ্যে থেকে মঙ্গলবার (৬ জুন) ছুটি দিয়েছিলেন জানিয়ে কেকা রায় চৌধুরী বলেন, বছরের মাঝামাঝি হওয়ায় তিনি চাইলেই আর ছুটি দিতে পারছেন না। এজন্য মাউশি অধিদপ্তরের মতামত চাওয়া হয়েছে।
এর আগে মঙ্গলবার কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর সুবল আফতাব উচ্চ বিদ্যালয়ের ক্লাসরুমে অসুস্থ হওয়া এক শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে নেয়ার পর তার মৃত্যু হয় বলে খবর পাওয়া গেছে। ওই ছাত্রীর নাম উম্মে হাবিবা। সে ওই প্রতিষ্ঠানের ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী ও তিতাস উপজেলার চান নাগেরচর গ্রামের জিয়াউল হকের মেয়ে।
এছাড়া তীব্র গরমে কুমিল্লার দাউদকান্দিতে বুধবার তিনটি বিদ্যালয়ের ২৬ শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে এবং একটির পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।
অর্ধবার্ষিক পরীক্ষার প্রথম দিনে প্রচন্ড গরমে দাউদকান্দি উপজেলার ৩টি উচ্চ বিদ্যালয়ের ২৬ শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ে। এর মধ্যে ২৩ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্রেক্সে ভর্তি করা হয়। বুধবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টার মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গৌরীপুর সুবল আফতাব উচ্চ বিদ্যালয়ে বুধবার ও আজকের ‘বৃহস্পতিবার’ পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।
অসুস্থ হয়ে পড়া শিক্ষার্থীরা হলো সুবল আফতাব উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর তাবাচ্ছুম আক্তার, সামিয়া আক্তার, তানিয়া আক্তার, সুমাইয়া আক্তার, মারিয়া আফরিন, সাইফুল ইসলাম, জাহিদ হাসান, তাওহিদ হাসান, অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মায়মুনা আক্তার, তন্নীমা আক্তার, ফাহিয়া তাছিন, কারিমা আক্তার, কবিতা আক্তার, আমেনা আক্তার, চন্দ্রিমা রানী রায়, ফাতেমা আক্তার, ষষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থী জাকিয়া আক্তার ও মালিহা আক্তার।
এছাড়া গৌরীপুর বিলকিস মোশাররফ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী তনিমা আক্তার ও চিনামুড়া এলএন উচ্চ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ইকরা আক্তার, খাদিজা আক্তার, নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ওহি ভূঁইয়া এবং নারান্দিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী জায়েদা আক্তার। তাদের দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সুস্থ হওয়ার পর ১৬ শিক্ষার্থীকে বাড়িতে পাঠানো হয়। অন্যদের চিকিৎসা বুধবার বিকাল নাগাদ অব্যাহত ছিল।
শিক্ষার্থীদের অসুস্থতার খবর পেয়ে কুমিল্লার সিভিল সার্জন নাছিমা আক্তার, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহিনুল হাসান, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা তৌহিদ আল হাসান, সহকারী কমিশনার (ভূমি) জিয়াউর রহমান, মডেল থানার ওসি মুহম্মদ আলমগীর ভূঞা, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা একেএম ফজলুল হক দ্রুত হাসপাতালে ছুটে যান এবং অসুস্থ শিক্ষার্থীদের যথাযথ চিকিৎসা ব্যবস্থা করেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা তৌহিদ আল হাসান বলেন, গরম ও পরীক্ষার চিন্তায় প্রথমে এক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়। পরে ওই শিক্ষার্থীর দেখাদেখি আতঙ্কে অন্য শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়। অসুস্থ শিক্ষার্থীদের যথাযথ চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ করে তোলা হয়েছে।
গৌরীপুর সুবল আফতাব উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সেলিম জানিয়েছেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশক্রমে বুধবার ও বৃস্পতিবারের বিদ্যালয়ের সব শ্রেণীর অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।
এর আগে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ছাত্রছাত্রীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিবেচনা করে ৫ জুন থেকে ৮ জুন পর্যন্ত দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণী কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে।
গত ৪ জুন গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশব্যাপী তীব্র দাবদাহের কারণে কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিবেচনা করে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
কুড়িগ্রাম : ফুলবাড়ীতে তীব্র গরমে দুই শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছে। বুধবার দুপুরে উপজেলার উত্তর রাবাইতারী উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরল আমিন জানান, বিদ্যালয়ে অর্ধবার্ষিকী পরীক্ষা চলছিল। পরীক্ষা চলাকালীন নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী হেলেনা আক্তার (১৪) তীব্র গরমে জ্ঞান হারিয়ে পরীক্ষা কক্ষেই লুটিয়ে পড়ে। পরে আমরা তাকে উদ্ধার করে দ্রুত নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করি। অন্যদিকে নবম শ্রেণীর অন্য শিক্ষার্থী আবু হাসান (১৫) ইংরেজি প্রথমপত্রের পরীক্ষা শেষ করে দুপুর একটার দিকে বাড়িতে ফিরেই জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে পড়ে যায় । তার পরিবারের লোকজন তাকেও দ্রুত নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। বর্তমানে তারা দুজনই নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, অসুস্থ অবস্থায় ওই দুই শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে নেয়া হয়। তাদেরকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। বর্তমানে তারা শঙ্কামুক্ত।
চাটখিলিতে দুই শিক্ষার্থী জ্ঞান হারিয়ে হাসপাতালে
নোয়াখালী চাটখিলির ভীমপুর বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী অত্যাধিক গরমে জ্ঞান হারিয়ে মাথা ঘুরে পড়ে যায়। পরে স্কুল কর্তৃপক্ষ তাদের তাৎক্ষণিক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানায়, দীর্ঘ লোডশেডিং আর অত্যাধিক গরমে ক্লাস করা কঠিন। বুধবার দুপুরে বিদ্যালয়ের পরীক্ষা চলাকালীন নবম শ্রেণীর ছাত্রী কানিজ ফাতেমা রিয়া (১৫) ও দশম শ্রেণীর তানজিনা সুলতানা (১৬) হঠাৎ জ্ঞান হারিয়ে ঘুরে পড়ে যায়।
চাটখিল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. মামুনুর রশীদ জানান, অত্যাধিক গরমে শিক্ষার্থীরা হিট স্ট্রোক করে জ্ঞান হারিয়েছে। কানিজ ফাতেমা রিয়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে অন্য শিক্ষার্থী তানজিনা সুলতানা প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়িতে ফিরে গেছে। এ সময় তিনি অত্যাধিক গরমে জরুরি প্রয়োজনে বাড়ির বাহির যেতে ছাতা ব্যবহার করার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিশুদ্ধ খাবার পানি রাখার এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বেশি বেশি বিশুদ্ধ পানি পান করার ও পুষ্টিকর খাওয়ার পরামর্শ দেন।