সৌদি আরবে গৃহকর্মীকে নির্যাতন
সংসারে সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে স্বামী সেলিম মিয়া স্ত্রীকে রিক্রটিং এজেন্সির মাধ্যমে সৌদি আরবে পাঠান। সেখানে বাসার কাজের বিনিময়ে এক হাজার রিয়েল বেতন দেয়ার মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু সৌদি আরবে যাওয়ার পর তাকে নানাভাবে শারীরিক, মানসিক ও যৌন নির্যাতন করা হচ্ছে।
যৌন নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে দেশে স্বামীর কাছে গোপনে ফোনে বিষয়টি জানান। এ বলে ফিরে আনতে দেরি হলে স্ত্রী সেখানে আত্মহত্যা করবে বলে হুমকি দেয়। স্ত্রীর নির্যাতনের খবর শুনে স্বামী চায়না মার্কেটের ট্রাভেল এজেন্সিতে গিয়ে অভিযোগ করে কোন কাজ হয়নি। উল্টো আরও টাকা দাবি করেেছ। অবশেষে কোন উপায় না পেয়ে এয়ারপোর্ট-১৩ আর্মড পুলিশ অফিসে গিয়ে অভিযোগ করে নির্যাতনের ঘটনা জানান।
এরই প্রেক্ষিতে গত সোমবার রাতে আর্মড পুলিশের টিম পল্টন থানার কাছে চায়না মার্কেটে লিফটের- ১২তে রিক্রুটিং এজেন্সি স্টার লাইন এসোসিয়েট অফিসে অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত ফিরোজ মো. মানসুরুল হক ও মো. রাজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের বিরুদ্ধে পল্টন থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এয়ারপোর্ট (১৩) আর্মড পুলিশের কমান্ডিং অফিসার (অ্যাডিশনাল ডিআইজি) তোফায়েল আহম্মদ সংবাদকে জানান, অভিযুক্তরা অসৎ উদ্দেশ্যে ওই গৃহবধূকে সৌদি আরবে গৃহকর্মীর কাজ দিয়ে এক হাজার রিয়েল বেতনের কথায় পাঠিয়েছে। তারা জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর কোন প্রকার প্রশিক্ষণ ও ছাড়পত্র (স্মার্টকার্ড) ছাড়াই এয়ারপোর্ট কণ্ট্রাক করে গত ২ ফেব্রæয়ারি শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে সৌদি আরবের দাম্মাম আরআর শহরে স্টারলাইন এসোসিয়েটে রিক্রুটিং এজেন্টের কাছে পাঠিয়ে দেয়। সেখানে যাওয়ার পর সেখানকার গৃহকর্তা তার স্ত্রীকে প্রতি নিয়ত যৌন, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করছেন। ঠিকমতো খাবার না দিয়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে অতিরিক্ত কাজ করাচ্ছেন।
সৌদি আরবে বর্বর নির্যাতনের কারণে ওই গৃহবধূ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। দ্রæত সময়ের মধ্যে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে না পারলে আত্মহত্যা ছাড়া আর কোন পথ থাকবে না। স্ত্রীর এমন কথা শোনার পর স্বামী ওই আদম বেপারীর সঙ্গে যোগাযোগ করলে সে তার কথায় পাত্তাও দেয়নি। বারবার হাতে পায়ে ধরে অনুরোধ করে স্ত্রীকে দেশে ফিরিয়ে আনতে বললে আরও ৪ লাখ টাকা দাবি করে। এরপর স্বামী সেলিম মিয়া উক্ত ঘটনা এয়ারপোর্ট (১৩) আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের কাছে অভিযোগ করেন।
ব্যাটালিয়নের সাইবার সেল ও গোয়েন্দা টিমের সহযোগিতায় গত সোমবার রাতে পল্টন চায়না মার্কেটের উপরে ট্রাভেল এজেন্সিতে অভিযান চালিয়ে দুই প্রধান অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে। তাদের বিরুদ্ধে পল্টন থানায় মানবপাচার প্রতিরোধ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, এইভাবে সংঘবদ্ধ মানব পাচারকারী ও ট্রাভেল এজেন্সির অসাধু কর্মকর্তারা পরস্পর যোগসাজশে দেশের দরিদ্র পরিবারের নারীদেরকে ফুসলিয়ে ও মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে পাঠায়। সেখানে তাদের ওপর চলে নানাভাবে নির্যাতন। অনেকেই দেশে ফিরে নির্যাতনের বর্বর কাহিনী তুলে ধরেন। এরপরও থামছে না মানব পাচার। থানা পুলিশ অনেক অভিযোগ পাওয়ার পর তাৎক্ষণিকভাবে পদক্ষেপ নিতে গড়িমসি করায় অবশেষে আর্মড পুলিশ ঝটিকা অভিযান চালিয়ে দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
স্বামী সেলিম মিয়া তার মামলার এজাহারের শেষাংশে তার স্ত্রীকে দেশে ফিরিয়ে আনতে বাংলাদেশ দূতাবাসের সহযোগিতা চেয়েছেন। আর অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যাতে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেয়া হয় তার জন্য সহায়তা চেয়েছেন।
সৌদি আরবে গৃহকর্মীকে নির্যাতন
বুধবার, ১০ মে ২০২৩
সংসারে সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে স্বামী সেলিম মিয়া স্ত্রীকে রিক্রটিং এজেন্সির মাধ্যমে সৌদি আরবে পাঠান। সেখানে বাসার কাজের বিনিময়ে এক হাজার রিয়েল বেতন দেয়ার মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু সৌদি আরবে যাওয়ার পর তাকে নানাভাবে শারীরিক, মানসিক ও যৌন নির্যাতন করা হচ্ছে।
যৌন নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে দেশে স্বামীর কাছে গোপনে ফোনে বিষয়টি জানান। এ বলে ফিরে আনতে দেরি হলে স্ত্রী সেখানে আত্মহত্যা করবে বলে হুমকি দেয়। স্ত্রীর নির্যাতনের খবর শুনে স্বামী চায়না মার্কেটের ট্রাভেল এজেন্সিতে গিয়ে অভিযোগ করে কোন কাজ হয়নি। উল্টো আরও টাকা দাবি করেেছ। অবশেষে কোন উপায় না পেয়ে এয়ারপোর্ট-১৩ আর্মড পুলিশ অফিসে গিয়ে অভিযোগ করে নির্যাতনের ঘটনা জানান।
এরই প্রেক্ষিতে গত সোমবার রাতে আর্মড পুলিশের টিম পল্টন থানার কাছে চায়না মার্কেটে লিফটের- ১২তে রিক্রুটিং এজেন্সি স্টার লাইন এসোসিয়েট অফিসে অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত ফিরোজ মো. মানসুরুল হক ও মো. রাজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের বিরুদ্ধে পল্টন থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এয়ারপোর্ট (১৩) আর্মড পুলিশের কমান্ডিং অফিসার (অ্যাডিশনাল ডিআইজি) তোফায়েল আহম্মদ সংবাদকে জানান, অভিযুক্তরা অসৎ উদ্দেশ্যে ওই গৃহবধূকে সৌদি আরবে গৃহকর্মীর কাজ দিয়ে এক হাজার রিয়েল বেতনের কথায় পাঠিয়েছে। তারা জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর কোন প্রকার প্রশিক্ষণ ও ছাড়পত্র (স্মার্টকার্ড) ছাড়াই এয়ারপোর্ট কণ্ট্রাক করে গত ২ ফেব্রæয়ারি শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে সৌদি আরবের দাম্মাম আরআর শহরে স্টারলাইন এসোসিয়েটে রিক্রুটিং এজেন্টের কাছে পাঠিয়ে দেয়। সেখানে যাওয়ার পর সেখানকার গৃহকর্তা তার স্ত্রীকে প্রতি নিয়ত যৌন, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করছেন। ঠিকমতো খাবার না দিয়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে অতিরিক্ত কাজ করাচ্ছেন।
সৌদি আরবে বর্বর নির্যাতনের কারণে ওই গৃহবধূ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। দ্রæত সময়ের মধ্যে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে না পারলে আত্মহত্যা ছাড়া আর কোন পথ থাকবে না। স্ত্রীর এমন কথা শোনার পর স্বামী ওই আদম বেপারীর সঙ্গে যোগাযোগ করলে সে তার কথায় পাত্তাও দেয়নি। বারবার হাতে পায়ে ধরে অনুরোধ করে স্ত্রীকে দেশে ফিরিয়ে আনতে বললে আরও ৪ লাখ টাকা দাবি করে। এরপর স্বামী সেলিম মিয়া উক্ত ঘটনা এয়ারপোর্ট (১৩) আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের কাছে অভিযোগ করেন।
ব্যাটালিয়নের সাইবার সেল ও গোয়েন্দা টিমের সহযোগিতায় গত সোমবার রাতে পল্টন চায়না মার্কেটের উপরে ট্রাভেল এজেন্সিতে অভিযান চালিয়ে দুই প্রধান অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে। তাদের বিরুদ্ধে পল্টন থানায় মানবপাচার প্রতিরোধ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, এইভাবে সংঘবদ্ধ মানব পাচারকারী ও ট্রাভেল এজেন্সির অসাধু কর্মকর্তারা পরস্পর যোগসাজশে দেশের দরিদ্র পরিবারের নারীদেরকে ফুসলিয়ে ও মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে পাঠায়। সেখানে তাদের ওপর চলে নানাভাবে নির্যাতন। অনেকেই দেশে ফিরে নির্যাতনের বর্বর কাহিনী তুলে ধরেন। এরপরও থামছে না মানব পাচার। থানা পুলিশ অনেক অভিযোগ পাওয়ার পর তাৎক্ষণিকভাবে পদক্ষেপ নিতে গড়িমসি করায় অবশেষে আর্মড পুলিশ ঝটিকা অভিযান চালিয়ে দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
স্বামী সেলিম মিয়া তার মামলার এজাহারের শেষাংশে তার স্ত্রীকে দেশে ফিরিয়ে আনতে বাংলাদেশ দূতাবাসের সহযোগিতা চেয়েছেন। আর অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যাতে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেয়া হয় তার জন্য সহায়তা চেয়েছেন।