ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় জাতিসংঘের সদর দপ্তরের নিচে হামাসের কমান্ড টানেল খুঁজে পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েল। একইসঙ্গে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এটিকে হামাসের শোষণের নতুন প্রমাণ বলেও অভিহিত করেছে।
রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনী শত শত মিটার দীর্ঘ এবং আংশিকভাবে ইউএনআরডব্লিউএর গাজা সদর দপ্তরের নিচে পরিচালিত একটি টানেল নেটওয়ার্ক খুঁজে পেয়েছে বলে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী দাবি করেছে। আর এটিকে ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তুদের জন্য জাতিসংঘের প্রধান এই ত্রাণ সংস্থায় হামাসের শোষণের নতুন প্রমাণ বলে অভিহিত করেছে তারা।
মূলত গত বছরের অক্টোবরে ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায় ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। আর হামাসের সেই হামলায় ফিলিস্তিনে নিযুক্ত জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ-এর কর্মীদের জড়িত থাকার অভিযোগ সামনে এনেছে ইসরায়েল।
এরপর থেকেই সংস্থাটি বেশ সংকটে রয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যসহ বেশ কয়েকটি দেশ জাতিসংঘের এই সংস্থার অর্থায়ন স্থগিত করে। যদিও হামাসের হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে সংস্থাটি তার বেশ কয়েকজন কর্মীকে বরখাস্ত করার ঘোষণা দেওয়ার পাশাপাশি তদন্ত করার কথাও ঘোষণা করেছে।
আর এর মধ্যেই গাজায় জাতিসংঘ সদর দপ্তরের নিচে হামাসের কমান্ড টানেল ছিল বলে অভিযোগ সামনে আনল ইসরায়েল। এমনকি ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর আর্মি ইঞ্জিনিয়াররা নতুন আবিষ্কৃত এই টানেলের মধ্যে বিদেশি সংবাদ আউটলেটগুলোর সাংবাদিকদেরও নিয়ে যায়।
তবে ইউএনআরডব্লিউএকে কলঙ্কিত করার জন্য ইসরায়েল মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে ফিলিস্তিনিরা। মূলত ইউএনআরডব্লিউএ সদর দপ্তর উপত্যকাটির গাজা শহরে অবস্থিত।
এদিকে সাংবাদিকদের এই টানেলে নিয়ে যাওয়ার কাজে নেতৃত্ব দেন ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর একজন লেফটেন্যান্ট-কর্নেল। তিনি বলেন, শ্বাসরুদ্ধকর গরম, সরু এবং মাঝে মাঝে কিছুটা ঝোপ-ঝাড়ের মধ্য দিয়ে বিশ মিনিট হাঁটার পর তারা ইউএনআরডব্লিউএ সদর দপ্তরের নিচে পৌঁছান।
সামরিক বাহিনী বলছে, টানেলটি ৭০০ মিটার দীর্ঘ এবং ভূপৃষ্ঠের ১৮ মিটার গভীরে অবস্থিত। সেখানে অফিস স্পেস আছে। যদিও সেখানে থাকা স্টিলের সেফগুলো খোলা এবং খালি অবস্থায় রয়েছে। সেখানে টয়লেটও ছিল। এছাড়া একটি বড় চেম্বার কম্পিউটার সার্ভার দিয়ে পরিপূর্ণ অবস্থায় ছিল।
ইসরায়েলি বাহিনীর এই লেফটেন্যান্ট-কর্নেল তার নামের প্রথশ অংশ ইডো বলে জানিয়েছেন। তার দাবি, ‘সবকিছু এখান থেকে পরিচালিত হয়। সুড়ঙ্গগুলোর সমস্ত জ্বালানি ও শক্তি, আপনি যেখান দিয়ে হেঁটেছেন, তা এখান থেকেই চালিত হয়।
তিনি আরও বলেন, ‘এটি গোয়েন্দাদের কেন্দ্রীয় কমান্ডগুলোর মধ্যে একটি। এই স্থানটি হামাসের গোয়েন্দা ইউনিটগুলোর মধ্যে একটি, যেখান থেকে তারা বেশিরভাগ সময়ই যুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছে।’
ইডো বলেছেন, ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা ও অগ্রগতির মুখে হামাস এখান থেকে সরে গেছে বলে মনে হচ্ছে। তার আগে এখান থেকে যোগাযোগের সক্ষমতাও কেটে দিয়েছে।
অন্যদিকে এক বিবৃতিতে ইউএনআরডব্লিউএ বলেছে, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পাঁচ দিন পরে তারা গত বছরের ১২ অক্টোবর সদর দপ্তর খালি করে দেয় এবং এই কারণে ইসরায়েলি অনুসন্ধানের বিষয়টি ‘নিশ্চিত করতে বা কোনও ধরনের মন্তব্য করতে অক্ষম’ তারা।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘দপ্তরের প্রাঙ্গনে কি আছে বা কি থাকতে পারে সে বিষয়ে সামরিকভাবে পরিদর্শন করার সামরিক ও নিরাপত্তা দক্ষতা বা সক্ষমতা নেই ইউএনআরডব্লিউএ-এর।’
অবশ্য হামাস বেসামরিক অবকাঠামোগুলোতে কাজ করার কথা অস্বীকার করেছে।
তবে ইডো সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা জানি যে তাদের (হামাসের) লোকজন ইউএনআরডব্লিউএ-তে কাজ করছে। আমরা চাই প্রতিটি আন্তর্জাতিক সংস্থা গাজায় কাজ করুক। এটা কোনও সমস্যা নয়। আমাদের সমস্যা হামাস।’
উল্লেখ্য, ১৯৪৯ সালে প্রতিষ্ঠিত জাতিসংঘের ত্রাণ ও কর্মসংস্থান সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ গাজায় কাজ পরিচালনা করা জাতিসংঘের বৃহত্তম সংস্থা। সংস্থাটি গাজা, পশ্চিম তীর, জর্ডান, লেবানন এবং সিরিয়ার ফিলিস্তিনিদের স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং অন্যান্য মানবিক সহায়তা প্রদান করে। গাজার অভ্যন্তরে সংস্থাটির প্রায় ১৩ হাজার কর্মী রয়েছে।
রোববার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় জাতিসংঘের সদর দপ্তরের নিচে হামাসের কমান্ড টানেল খুঁজে পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েল। একইসঙ্গে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এটিকে হামাসের শোষণের নতুন প্রমাণ বলেও অভিহিত করেছে।
রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনী শত শত মিটার দীর্ঘ এবং আংশিকভাবে ইউএনআরডব্লিউএর গাজা সদর দপ্তরের নিচে পরিচালিত একটি টানেল নেটওয়ার্ক খুঁজে পেয়েছে বলে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী দাবি করেছে। আর এটিকে ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তুদের জন্য জাতিসংঘের প্রধান এই ত্রাণ সংস্থায় হামাসের শোষণের নতুন প্রমাণ বলে অভিহিত করেছে তারা।
মূলত গত বছরের অক্টোবরে ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায় ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। আর হামাসের সেই হামলায় ফিলিস্তিনে নিযুক্ত জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ-এর কর্মীদের জড়িত থাকার অভিযোগ সামনে এনেছে ইসরায়েল।
এরপর থেকেই সংস্থাটি বেশ সংকটে রয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যসহ বেশ কয়েকটি দেশ জাতিসংঘের এই সংস্থার অর্থায়ন স্থগিত করে। যদিও হামাসের হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে সংস্থাটি তার বেশ কয়েকজন কর্মীকে বরখাস্ত করার ঘোষণা দেওয়ার পাশাপাশি তদন্ত করার কথাও ঘোষণা করেছে।
আর এর মধ্যেই গাজায় জাতিসংঘ সদর দপ্তরের নিচে হামাসের কমান্ড টানেল ছিল বলে অভিযোগ সামনে আনল ইসরায়েল। এমনকি ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর আর্মি ইঞ্জিনিয়াররা নতুন আবিষ্কৃত এই টানেলের মধ্যে বিদেশি সংবাদ আউটলেটগুলোর সাংবাদিকদেরও নিয়ে যায়।
তবে ইউএনআরডব্লিউএকে কলঙ্কিত করার জন্য ইসরায়েল মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে ফিলিস্তিনিরা। মূলত ইউএনআরডব্লিউএ সদর দপ্তর উপত্যকাটির গাজা শহরে অবস্থিত।
এদিকে সাংবাদিকদের এই টানেলে নিয়ে যাওয়ার কাজে নেতৃত্ব দেন ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর একজন লেফটেন্যান্ট-কর্নেল। তিনি বলেন, শ্বাসরুদ্ধকর গরম, সরু এবং মাঝে মাঝে কিছুটা ঝোপ-ঝাড়ের মধ্য দিয়ে বিশ মিনিট হাঁটার পর তারা ইউএনআরডব্লিউএ সদর দপ্তরের নিচে পৌঁছান।
সামরিক বাহিনী বলছে, টানেলটি ৭০০ মিটার দীর্ঘ এবং ভূপৃষ্ঠের ১৮ মিটার গভীরে অবস্থিত। সেখানে অফিস স্পেস আছে। যদিও সেখানে থাকা স্টিলের সেফগুলো খোলা এবং খালি অবস্থায় রয়েছে। সেখানে টয়লেটও ছিল। এছাড়া একটি বড় চেম্বার কম্পিউটার সার্ভার দিয়ে পরিপূর্ণ অবস্থায় ছিল।
ইসরায়েলি বাহিনীর এই লেফটেন্যান্ট-কর্নেল তার নামের প্রথশ অংশ ইডো বলে জানিয়েছেন। তার দাবি, ‘সবকিছু এখান থেকে পরিচালিত হয়। সুড়ঙ্গগুলোর সমস্ত জ্বালানি ও শক্তি, আপনি যেখান দিয়ে হেঁটেছেন, তা এখান থেকেই চালিত হয়।
তিনি আরও বলেন, ‘এটি গোয়েন্দাদের কেন্দ্রীয় কমান্ডগুলোর মধ্যে একটি। এই স্থানটি হামাসের গোয়েন্দা ইউনিটগুলোর মধ্যে একটি, যেখান থেকে তারা বেশিরভাগ সময়ই যুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছে।’
ইডো বলেছেন, ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা ও অগ্রগতির মুখে হামাস এখান থেকে সরে গেছে বলে মনে হচ্ছে। তার আগে এখান থেকে যোগাযোগের সক্ষমতাও কেটে দিয়েছে।
অন্যদিকে এক বিবৃতিতে ইউএনআরডব্লিউএ বলেছে, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পাঁচ দিন পরে তারা গত বছরের ১২ অক্টোবর সদর দপ্তর খালি করে দেয় এবং এই কারণে ইসরায়েলি অনুসন্ধানের বিষয়টি ‘নিশ্চিত করতে বা কোনও ধরনের মন্তব্য করতে অক্ষম’ তারা।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘দপ্তরের প্রাঙ্গনে কি আছে বা কি থাকতে পারে সে বিষয়ে সামরিকভাবে পরিদর্শন করার সামরিক ও নিরাপত্তা দক্ষতা বা সক্ষমতা নেই ইউএনআরডব্লিউএ-এর।’
অবশ্য হামাস বেসামরিক অবকাঠামোগুলোতে কাজ করার কথা অস্বীকার করেছে।
তবে ইডো সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা জানি যে তাদের (হামাসের) লোকজন ইউএনআরডব্লিউএ-তে কাজ করছে। আমরা চাই প্রতিটি আন্তর্জাতিক সংস্থা গাজায় কাজ করুক। এটা কোনও সমস্যা নয়। আমাদের সমস্যা হামাস।’
উল্লেখ্য, ১৯৪৯ সালে প্রতিষ্ঠিত জাতিসংঘের ত্রাণ ও কর্মসংস্থান সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ গাজায় কাজ পরিচালনা করা জাতিসংঘের বৃহত্তম সংস্থা। সংস্থাটি গাজা, পশ্চিম তীর, জর্ডান, লেবানন এবং সিরিয়ার ফিলিস্তিনিদের স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং অন্যান্য মানবিক সহায়তা প্রদান করে। গাজার অভ্যন্তরে সংস্থাটির প্রায় ১৩ হাজার কর্মী রয়েছে।