alt

আন্তর্জাতিক

হামলার আগে সতর্ক করেছিল ইরান, অস্বীকার যুক্তরাষ্ট্রের

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : সোমবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৪

ইসরায়েলের ভূখণ্ড লক্ষ্য করে ইরান ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। বহুদিনের বৈরিতা থাকলেও এবারই প্রথমবারের মতো সরাসরি ইসরায়েলে হামলা চালালো দেশটি।

ইরান বলছে, ইসরায়েলে হামলার আগে তারা যুক্তরাষ্ট্রসহ আশপাশের দেশগুলোকে সতর্ক করেছিল। তবে যুক্তরাষ্ট্র বলছে, ইরানের এই দাবি সত্য নয়। তারা ইসরায়েলের উল্লেখযোগ্য ক্ষতিই করতে চেয়েছিল।

সোমবার (১৫ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তুরস্ক, জর্ডান এবং ইরাকের কর্মকর্তারা রোববার বলেছেন, ইসরায়েলে ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কয়েক দিন আগে তাদেরকে বিস্তৃত নোটিশ দিয়েছে ইরান। তবে মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছেন, তেহরান ওয়াশিংটনকে সতর্ক করেনি এবং হামলায় ইসরায়েলের উল্লেখযোগ্য ক্ষতি করার লক্ষ্যেই এটি করেনি ইরান।

সিরিয়ার রাজধানীতে তেহরানের কনস্যুলেটে সাম্প্রতিক হামলার জবাবে শনিবার গভীর রাতে তিন শতাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন দিয়ে ইরান এই হামলা চালায়। যদিও বেশিরভাগ ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলি ভূখণ্ডে পৌঁছানোর আগেই ধ্বংস করা হয়েছে বলে ইসরায়েল দাবি করেছে, তারপরও উত্তেজনার আরও বৃদ্ধি হতে পারে বলে ব্যাপক উদ্বেগ ছিল।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আবদুল্লাহিয়ান রোববার বলেছেন, ইরান প্রতিবেশী দেশ এবং ইসরায়েলের মিত্র যুক্তরাষ্ট্রকে ৭২ ঘণ্টার নোটিশ দিয়ে জানিয়েছিল- তারা হামলা চালাবে।

তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, তারা হামলার আগে ওয়াশিংটন এবং তেহরান উভয়ের সাথেই কথা বলেছিল এবং হামলার পর প্রতিক্রিয়া যেন আনুপাতিক থাকে তা নিশ্চিত করার জন্য আঙ্কারা মধ্যস্থতাকারী হিসাবে একে অপরের বার্তা উভয়পক্ষের কাছে পৌঁছে দিয়েছে।

তুরস্কের একটি কূটনৈতিক সূত্র বলেছে, ‘ইরান জানিয়েছিল- দামেস্কে তার দূতাবাসে ইসরায়েলের হামলার প্রতিক্রিয়ায় এই হামলা চালানো হবে এবং তারা এর বাইরে আর কিছুই করবে না। আমরা এই হামলার সম্ভাবনার বিষয়ে অবগত ছিলাম। আর তাই ইসরায়েলে ইরানের এই হামলা আমাদের কাছে অবাক করার মতো কিছু ছিল না।’

তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা আমির-আবদুল্লাহিয়ানের বিবৃতি অস্বীকার করে বলেছেন, ওয়াশিংটন সুইস মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে ইরানের সাথে যোগাযোগ করেছিল, কিন্তু ৭২ ঘণ্টা আগে তারা কোনও নোটিশ পায়নি।

ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘এটি একেবারেই সত্য নয়। তারা কোনও নোটিশ দেয়নি, বা তারা (হামলার বিষয়ে) কোনও ধারণাও দেয়নি ... এমন কোনও ধারণা যে, ‘এরা লক্ষ্যবস্তু হবে, তাই তাদের সরিয়ে দিন’।’

এই কর্মকর্তা আরও বলেছেন, হামলা শুরু হওয়ার পরেই তেহরান যুক্তরাষ্ট্রকে একটি বার্তা পাঠিয়েছিল এবং তাদের উদ্দেশ্য ছিল ‘অত্যন্ত ধ্বংসাত্মক’।

মার্কিন এই কর্মকর্তা বলেছেন, ‘হামলার মধ্যেই আমরা ইরানিদের কাছ থেকে একটি বার্তা পেয়েছি, সুইসদের মাধ্যমে। সেই বার্তায় হামলা সম্পন্ন হয়েছে বলে মূলত ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল, তবে হামলা তখনও চলমান ছিল। সেসময় আমাদের কাছে এটিই ছিল (তাদের) বার্তা।’

অন্যদিকে ইরাকি, তুর্কি এবং জর্ডানের কর্মকর্তাদের প্রত্যেকে বলেছেন, ইরান গত সপ্তাহে কিছু বিশদ বিবরণসহ হামলার বিষয়ে প্রাথমিক সতর্কতা দিয়েছে। ড্রোন, ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলায় বড় ধরনের প্রাণহানি ঘটতে পারে এবং সংঘর্ষ বাড়তে পারে।

মার্কিন কর্মকর্তারা শুক্রবার এবং শনিবার বলেন, তারা ইরানের কাছ থেকে অল্প সময়ের মধ্যে আক্রমণের আশঙ্কা করছেন এবং সেসময় তেহরানের কাছে কঠোরভাবে বাইডেনের একমাত্র বার্তা ছিল: ‘(ইসরায়েলে হামলা) করবেন না।’

ইরাকের একজন সরকারি নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তাসহ দুটি ইরাকি সূত্র জানিয়েছে, ইরান হামলার অন্তত তিন দিন আগে বাগদাদকে এ বিষয়ে কূটনৈতিক চ্যানেল ব্যবহার করে জানিয়েছিল।

সেই সময়ে হামলার সঠিক সময় প্রকাশ করা হয়নি, তবে হামলার কয়েক ঘণ্টা আগে ইরাকি নিরাপত্তা ও সামরিক কর্তৃপক্ষের কাছে বার্তা পাঠানো হয়েছিল, যার ফলে বাগদাদ তার আকাশসীমা বন্ধ করতে পারে এবং মারাত্মক দুর্ঘটনা এড়াতে পারে।

ইরাকি নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেন, ‘সরকার ইরানি কর্মকর্তাদের কাছ থেকে স্পষ্টভাবে বুঝতে পেরেছিল, ইরাকে মার্কিন সামরিক বাহিনীও হামলার বিষয়ে আগে থেকেই অবগত ছিল।’

জর্ডানের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেছেন, ইসরায়েলে সম্ভাব্য হামলা চালানোর উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানাতে ইরান গত বুধবার তেহরানে অবস্থানরত আরব রাষ্ট্রদূতদের তলব করেছিল। যদিও সেসময় ইরান হামলার সময় নির্দিষ্ট করে জানায়নি।

ইসরায়েলে হামলার সময় ইরান ঠিক কোন অবকাঠামোকে লক্ষ্যবস্তু করবে এবং কোন ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করা হবে সে সম্পর্কে বিশদ বিবরণ দিয়েছে কিনা জানতে চাইলে, জর্ডানের ওই সূত্রটি সরাসরি উত্তর দেননি। তবে তিনি ইঙ্গিত দেন, সেখানে বিষয়বস্তু এটিই ছিল।

অন্যদিকে একটি ইরানি সূত্র বলেছে, কাতার, তুরস্ক এবং সুইজারল্যান্ডের কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রকে হামলার নির্ধারিত দিন সম্পর্কে অবহিত করেছিল ইরান। সূত্রটি আরও বলেছে, হামলাটি এমনভাবে পরিচালিত হবে যাতে প্রতিক্রিয়া উসকে দেওয়া না হয়।

অবশ্য ইরানের হামলার পর উত্তেজনার বৃদ্ধি কতটা এড়ানো যাচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। প্রেসিডেন্ট বাইডেন ইসরায়েলকে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি প্রতিশোধমূলক হামলায় যোগ দেবে না।

যাইহোক, ইসরায়েল এখনও ইরানি হামলার বিষয়ে তার প্রতিক্রিয়া ঠিক কী হবে তা পরিমাপ করছে। তবে ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার সদস্য বেনি গ্যান্টজ বলেছেন, যখন উপযুক্ত সময় আসবে, তখনই ইরানের ওপর প্রতিশোধ নেবে ইসরায়েল।

ছবি

ফের অভিশংসন ভোটের মুখে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট

ছবি

মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্রে রাশিয়ায় হামলায় ইউক্রেনকে নিন্দা ট্রাম্পের

ছবি

একদিনে ৩৯ জনের দণ্ড মওকুফ ও ১৫০০ জনের সাজা কমালেন বাইডেন

ছবি

শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে চীনা প্রেসিডেন্ট জিনপিংকে আমন্ত্রণ ট্রাম্পের

ছবি

বাস্তুচ্যুতরা ফিরতে চায় সিরিয়ায়, শঙ্কিত জীবনমান নিয়ে

ছবি

স্বামীর প্ররোচনায় স্ত্রীকে ১০ বছর ধরে ধর্ষণ, অভিযুক্ত ৫০ পুরুষ

ছবি

সিরিয়া ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা জরুরি: লয়েড অস্টিন

ছবি

সিরিয়ার কারাগারে নির্যাতনকারীদের শাস্তির প্রতিশ্রুতি জোলানির

ছবি

আলাওয়াইতদের সমর্থন পেল সিরিয়ার বিদ্রোহীরা

সিরিয়ায় ইসরায়েলের ব্যাপক বিমান হামলা: ২৫০টির বেশি সামরিক লক্ষ্যবস্তু বিধ্বস্ত

ছবি

সিরিয়ায় বাশার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের উদ্যোগ

ছবি

জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব দেওয়া বন্ধ করবেন ট্রাম্প

গোলান মালভূমির বাফার জোনে সাময়িক নিয়ন্ত্রণ নিল ইসরায়েল

ছবি

সিরিয়ায় আইএস লক্ষ্য করে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপক বিমান হামলা

ছবি

বাশার আল-আসাদ রাশিয়ায় রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়েছেন

ছবি

দিল্লির ৪৪ স্কুলে বোমা হামলার হুমকি, নিরাপত্তা জোরদার

ছবি

সিরিয়ার সামনে এখন কী

ছবি

সিরিয়া বিদ্রোহীদের দখলে, পালালেন বাশার, দামেস্কে কি শীতেই ‘বসন্ত’

ছবি

১২ দিনে সিরিয়া দখল করে নিলো এইচটিএস: এই বিদ্রোহী কারা?

ছবি

মুসলমানদের হৃদয় জয় করুন: মোদীকে দিল্লির শাহী ইমাম

ছবি

ব্যক্তিগত উড়োজাহাজে দামেস্ক ছেড়েছেন প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ: রয়টার্স

ছবি

দামেস্কে রাস্তায়-রাস্তায় উল্লাস, বিমানবন্দরে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা

ছবি

পালিয়ে যাননি সিরিয়ার প্রধানমন্ত্রী, বললেন— সহায়তায় প্রস্তুত আছি

ছবি

সামরিক আইন জারির জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চাইলেন দক্ষিণ কোরীয় প্রেসিডেন্ট

ছবি

একদিনে নিহত ৩২, গাজায় মোট নিহতের সংখ্যা ছাড়াল ৪৪ হাজার ৬০০

ছবি

লেবানন থেকে দেশে ফিরলেন ৯৬৩ জন

ছবি

প্রেসিডেন্টকে আর চায় না দক্ষিণ কোরিয়ার ক্ষমতাসীনরা

ছবি

বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় সবার ওপরে ঢাকা

ছবি

ক্যালিফোর্নিয়া উপকূলে শক্তিশালী ভূমিকম্প, সুনামি সতর্কতা বাতিল

ছবি

গাজায় হত্যাযজ্ঞ চলছেই, নিহত আরও ৪৮ ফিলিস্তিনি

ছবি

ম্যানহাটনে ইউনাইটেড হেলথকেয়ারের সিইওকে গুলি করে হত্যা

ছবি

বিদ্রোহীদের অগ্রযাত্রা: সিরিয়ার হামা শহরে তীব্র লড়াই

ছবি

বাংলাদেশ বিরোধী বিক্ষোভ করায় ভারতের চেন্নাইয়ে আটক ৫০০

ছবি

ভিয়েতনামে বিস্ফোরণে ১২ সেনা নিহত

ছবি

ভারতের পতাকা মাড়ানোর ‘ভাইরাল’ ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি: রিউমার স্ক্যানার

ছবি

বাংলাদেশি রোগী বয়কটের বিরোধিতা করলো ভারতীয় চিকিৎসক সংগঠন

tab

আন্তর্জাতিক

হামলার আগে সতর্ক করেছিল ইরান, অস্বীকার যুক্তরাষ্ট্রের

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

সোমবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৪

ইসরায়েলের ভূখণ্ড লক্ষ্য করে ইরান ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। বহুদিনের বৈরিতা থাকলেও এবারই প্রথমবারের মতো সরাসরি ইসরায়েলে হামলা চালালো দেশটি।

ইরান বলছে, ইসরায়েলে হামলার আগে তারা যুক্তরাষ্ট্রসহ আশপাশের দেশগুলোকে সতর্ক করেছিল। তবে যুক্তরাষ্ট্র বলছে, ইরানের এই দাবি সত্য নয়। তারা ইসরায়েলের উল্লেখযোগ্য ক্ষতিই করতে চেয়েছিল।

সোমবার (১৫ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তুরস্ক, জর্ডান এবং ইরাকের কর্মকর্তারা রোববার বলেছেন, ইসরায়েলে ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কয়েক দিন আগে তাদেরকে বিস্তৃত নোটিশ দিয়েছে ইরান। তবে মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছেন, তেহরান ওয়াশিংটনকে সতর্ক করেনি এবং হামলায় ইসরায়েলের উল্লেখযোগ্য ক্ষতি করার লক্ষ্যেই এটি করেনি ইরান।

সিরিয়ার রাজধানীতে তেহরানের কনস্যুলেটে সাম্প্রতিক হামলার জবাবে শনিবার গভীর রাতে তিন শতাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন দিয়ে ইরান এই হামলা চালায়। যদিও বেশিরভাগ ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলি ভূখণ্ডে পৌঁছানোর আগেই ধ্বংস করা হয়েছে বলে ইসরায়েল দাবি করেছে, তারপরও উত্তেজনার আরও বৃদ্ধি হতে পারে বলে ব্যাপক উদ্বেগ ছিল।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আবদুল্লাহিয়ান রোববার বলেছেন, ইরান প্রতিবেশী দেশ এবং ইসরায়েলের মিত্র যুক্তরাষ্ট্রকে ৭২ ঘণ্টার নোটিশ দিয়ে জানিয়েছিল- তারা হামলা চালাবে।

তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, তারা হামলার আগে ওয়াশিংটন এবং তেহরান উভয়ের সাথেই কথা বলেছিল এবং হামলার পর প্রতিক্রিয়া যেন আনুপাতিক থাকে তা নিশ্চিত করার জন্য আঙ্কারা মধ্যস্থতাকারী হিসাবে একে অপরের বার্তা উভয়পক্ষের কাছে পৌঁছে দিয়েছে।

তুরস্কের একটি কূটনৈতিক সূত্র বলেছে, ‘ইরান জানিয়েছিল- দামেস্কে তার দূতাবাসে ইসরায়েলের হামলার প্রতিক্রিয়ায় এই হামলা চালানো হবে এবং তারা এর বাইরে আর কিছুই করবে না। আমরা এই হামলার সম্ভাবনার বিষয়ে অবগত ছিলাম। আর তাই ইসরায়েলে ইরানের এই হামলা আমাদের কাছে অবাক করার মতো কিছু ছিল না।’

তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা আমির-আবদুল্লাহিয়ানের বিবৃতি অস্বীকার করে বলেছেন, ওয়াশিংটন সুইস মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে ইরানের সাথে যোগাযোগ করেছিল, কিন্তু ৭২ ঘণ্টা আগে তারা কোনও নোটিশ পায়নি।

ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘এটি একেবারেই সত্য নয়। তারা কোনও নোটিশ দেয়নি, বা তারা (হামলার বিষয়ে) কোনও ধারণাও দেয়নি ... এমন কোনও ধারণা যে, ‘এরা লক্ষ্যবস্তু হবে, তাই তাদের সরিয়ে দিন’।’

এই কর্মকর্তা আরও বলেছেন, হামলা শুরু হওয়ার পরেই তেহরান যুক্তরাষ্ট্রকে একটি বার্তা পাঠিয়েছিল এবং তাদের উদ্দেশ্য ছিল ‘অত্যন্ত ধ্বংসাত্মক’।

মার্কিন এই কর্মকর্তা বলেছেন, ‘হামলার মধ্যেই আমরা ইরানিদের কাছ থেকে একটি বার্তা পেয়েছি, সুইসদের মাধ্যমে। সেই বার্তায় হামলা সম্পন্ন হয়েছে বলে মূলত ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল, তবে হামলা তখনও চলমান ছিল। সেসময় আমাদের কাছে এটিই ছিল (তাদের) বার্তা।’

অন্যদিকে ইরাকি, তুর্কি এবং জর্ডানের কর্মকর্তাদের প্রত্যেকে বলেছেন, ইরান গত সপ্তাহে কিছু বিশদ বিবরণসহ হামলার বিষয়ে প্রাথমিক সতর্কতা দিয়েছে। ড্রোন, ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলায় বড় ধরনের প্রাণহানি ঘটতে পারে এবং সংঘর্ষ বাড়তে পারে।

মার্কিন কর্মকর্তারা শুক্রবার এবং শনিবার বলেন, তারা ইরানের কাছ থেকে অল্প সময়ের মধ্যে আক্রমণের আশঙ্কা করছেন এবং সেসময় তেহরানের কাছে কঠোরভাবে বাইডেনের একমাত্র বার্তা ছিল: ‘(ইসরায়েলে হামলা) করবেন না।’

ইরাকের একজন সরকারি নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তাসহ দুটি ইরাকি সূত্র জানিয়েছে, ইরান হামলার অন্তত তিন দিন আগে বাগদাদকে এ বিষয়ে কূটনৈতিক চ্যানেল ব্যবহার করে জানিয়েছিল।

সেই সময়ে হামলার সঠিক সময় প্রকাশ করা হয়নি, তবে হামলার কয়েক ঘণ্টা আগে ইরাকি নিরাপত্তা ও সামরিক কর্তৃপক্ষের কাছে বার্তা পাঠানো হয়েছিল, যার ফলে বাগদাদ তার আকাশসীমা বন্ধ করতে পারে এবং মারাত্মক দুর্ঘটনা এড়াতে পারে।

ইরাকি নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেন, ‘সরকার ইরানি কর্মকর্তাদের কাছ থেকে স্পষ্টভাবে বুঝতে পেরেছিল, ইরাকে মার্কিন সামরিক বাহিনীও হামলার বিষয়ে আগে থেকেই অবগত ছিল।’

জর্ডানের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেছেন, ইসরায়েলে সম্ভাব্য হামলা চালানোর উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানাতে ইরান গত বুধবার তেহরানে অবস্থানরত আরব রাষ্ট্রদূতদের তলব করেছিল। যদিও সেসময় ইরান হামলার সময় নির্দিষ্ট করে জানায়নি।

ইসরায়েলে হামলার সময় ইরান ঠিক কোন অবকাঠামোকে লক্ষ্যবস্তু করবে এবং কোন ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করা হবে সে সম্পর্কে বিশদ বিবরণ দিয়েছে কিনা জানতে চাইলে, জর্ডানের ওই সূত্রটি সরাসরি উত্তর দেননি। তবে তিনি ইঙ্গিত দেন, সেখানে বিষয়বস্তু এটিই ছিল।

অন্যদিকে একটি ইরানি সূত্র বলেছে, কাতার, তুরস্ক এবং সুইজারল্যান্ডের কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রকে হামলার নির্ধারিত দিন সম্পর্কে অবহিত করেছিল ইরান। সূত্রটি আরও বলেছে, হামলাটি এমনভাবে পরিচালিত হবে যাতে প্রতিক্রিয়া উসকে দেওয়া না হয়।

অবশ্য ইরানের হামলার পর উত্তেজনার বৃদ্ধি কতটা এড়ানো যাচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। প্রেসিডেন্ট বাইডেন ইসরায়েলকে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি প্রতিশোধমূলক হামলায় যোগ দেবে না।

যাইহোক, ইসরায়েল এখনও ইরানি হামলার বিষয়ে তার প্রতিক্রিয়া ঠিক কী হবে তা পরিমাপ করছে। তবে ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার সদস্য বেনি গ্যান্টজ বলেছেন, যখন উপযুক্ত সময় আসবে, তখনই ইরানের ওপর প্রতিশোধ নেবে ইসরায়েল।

back to top