কয়েক মাস ঝুলে থাকার পর অবশেষে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে রুয়ান্ডা বিল পাস হয়েছে। সোমবার বিল পাসের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ফ্রান্স থেকে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে যুক্তরাজ্যে প্রবেশের চেষ্টা করা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের একটি নৌকা থেকে সমুদ্রে পড়ে শিশুসহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, সমুদ্রে বিকল হয়ে যাওয়া ছোট্ট নৌকাটিতে প্রায় ১১০ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী ছিল। জীবিতদের সন্ধানে ফ্রান্সের কোস্টগার্ড এখনও সমুদ্রে তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে।
আঞ্চলিক গভর্নর সাংবাদিকদের বলেন, “আজ ভোরে গাদাগাদি করে থাকা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের একটি নৌকা সমুদ্রে বিকল হয়ে যায়। আমরা দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, পাঁচটি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে সাত বছরের একটি বালিকা, একজন নারী এবং তিনজন পুরুষ।
“উপকূল থেকে কয়েকশ মিটার দূরে যাওয়ার পর নৌকাটির ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায় এবং বেশ কয়েকজন পানিতে পড়ে যান। উদ্ধারকারীরা দ্রুত সেখানে পৌঁছান এবং পানি থেকে ৪৭ জনকে জীবিত উদ্ধার করেন। তাদের মধ্যে চারজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের জীবননাশের ঝুঁকি নেই।
“নৌকায় থাকা বাকি ৫৭ জন ফিরে আসতে রাজি হননি। তারা কোনোভাবে ইঞ্জিন চালু করতে সক্ষম হন এবং যুক্তরাজ্যের পথে রওয়ানা হন।”
দক্ষিণপশ্চিমের ক্যালাইস থেকে ৩২ কিলোমিটার দূরে উইমেহু থেকে নৌকাটি রওয়ানা হয়।
অভিবাসনপ্রত্যাশীদের নিয়ে নৌকাটি রওনা হওয়ার মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে বিতর্কিত রুয়ান্ডা বিল পাস হয়। এই বিল পাস হওয়ার ফলে যুক্তরাজ্য সরকার এখন সে দেশে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের রুয়ান্ডায় পাঠাতে পারবে। অর্থাৎ, যে সময়ে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের আবেদনপত্র যাচাই-বাছাই হবে সে সময়ে তাদের যুক্তরাজ্য নয় বরং রুয়ান্ডায় গিয়ে থাকতে হবে।
বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন এবং দেশটির বিরোধীদলগুলো রুয়ান্ডা বিলকে অমানবিক বলে বর্ণনা করলেও ঋষি সুনাক সরকারের দাবি, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় করে সমুদ্রপথে শরণার্থীদের আগমন আটকাতেই তারা এই উদ্যোগ নিয়েছে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শরণার্থীদের ঢল আটকাতে চান তারা।
সমুদ্রে সর্বশেষ এ ডুবে মারার ঘটনার পর যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলি বলেন, “এ ধরণের হৃদয়বিদারক ঘটনা অবশ্যই আটকাতে হবে।”
সোমবার পার্লামেন্টে অনুমোদন পাওয়ার পর এখন রুয়ান্ডা বিল আইনে পরিণত হতে রাজকীয় অনুমোদনের প্রয়োজন পড়বে। এ সপ্তাহের মধ্যেই সেই অনুমোদ পাওয়া যাবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী সুনাক বলেন, তিনি প্রত্যাশা করছেন আগামী ১০ থেকে ১২ সপ্তাহের মধ্যেই অভিবাসনপ্রত্যাশীদের নিয়ে যুক্তরাজ্য থেকে ফ্লাইট রুয়ান্ডা রওনা হতে পারবে।
সুনাক বলেন, “আমি খুবই পরিষ্কারভাবে জানি যে, এটা করতে এবং মানুষের জীবন রক্ষা করতে কোনো কিছুই আমাদের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারবে না।”
অভিবাসনপ্রত্যাশীদের রুয়ান্ডা পাঠাতে ২০২২ সালের এপ্রিলে রুয়ান্ডার সঙ্গে যুক্তরাজ্য সরকারের পাঁচ বছর মেয়াদি একটি চুক্তি হয়।
চুক্তির আওতায় পাঁচ বছর যুক্তরাজ্যে আসা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের জায়গা দেবে রুয়ান্ডা। বিনিময়ে রুয়ান্ডাকে অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য সহায়তা দেওয়ার ব্যাপারে সম্মত হয়েছে ব্রিটিশ সরকার। পাশাপাশি অভিবাসনপ্রত্যাশীদের পুনর্বাসন বাবদ বাড়তি অর্থ পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
২০২২ সালের জুনে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের নিয়ে প্রথম ফ্লাইটটি রওনা করার কথা ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে ইউরোপীয় মানবাধিকার আদালতের এক আদেশে তা বাতিল হয়ে যায়। বলা হয়, রুয়ান্ডা অভিবাসপ্রত্যাশীদের জন্য কতটা নিরাপদ তা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে।
পরের বছরের নভেম্বরে এ ধরনের পরিকল্পনাকে অবৈধ ঘোষণা করে যুক্তরাজ্যের সুপ্রিম কোর্ট, তবে ঋষি সুনাক সরকার চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকেন।
গতকাল সোমবার পাস হওয়া বিলটিতে রুয়ান্ডাকে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের জন্য নিরাপদ দেশ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
যু্দ্ধ এবং দারিদ্রতা থেকে বাঁচতে আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য এবং এশিয়ার দেশগুলো থেকে বহু মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছোট ছোট নৌকায় সমুদ্র পাড়ি দিয়ে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করে। এ বছর এখন পর্যন্ত ছয় হাজারের বেশি অভিবাসনপ্রত্যাশী যুক্তরাজ্য গেছেন।
মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪
কয়েক মাস ঝুলে থাকার পর অবশেষে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে রুয়ান্ডা বিল পাস হয়েছে। সোমবার বিল পাসের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ফ্রান্স থেকে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে যুক্তরাজ্যে প্রবেশের চেষ্টা করা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের একটি নৌকা থেকে সমুদ্রে পড়ে শিশুসহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, সমুদ্রে বিকল হয়ে যাওয়া ছোট্ট নৌকাটিতে প্রায় ১১০ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী ছিল। জীবিতদের সন্ধানে ফ্রান্সের কোস্টগার্ড এখনও সমুদ্রে তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে।
আঞ্চলিক গভর্নর সাংবাদিকদের বলেন, “আজ ভোরে গাদাগাদি করে থাকা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের একটি নৌকা সমুদ্রে বিকল হয়ে যায়। আমরা দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, পাঁচটি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে সাত বছরের একটি বালিকা, একজন নারী এবং তিনজন পুরুষ।
“উপকূল থেকে কয়েকশ মিটার দূরে যাওয়ার পর নৌকাটির ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায় এবং বেশ কয়েকজন পানিতে পড়ে যান। উদ্ধারকারীরা দ্রুত সেখানে পৌঁছান এবং পানি থেকে ৪৭ জনকে জীবিত উদ্ধার করেন। তাদের মধ্যে চারজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের জীবননাশের ঝুঁকি নেই।
“নৌকায় থাকা বাকি ৫৭ জন ফিরে আসতে রাজি হননি। তারা কোনোভাবে ইঞ্জিন চালু করতে সক্ষম হন এবং যুক্তরাজ্যের পথে রওয়ানা হন।”
দক্ষিণপশ্চিমের ক্যালাইস থেকে ৩২ কিলোমিটার দূরে উইমেহু থেকে নৌকাটি রওয়ানা হয়।
অভিবাসনপ্রত্যাশীদের নিয়ে নৌকাটি রওনা হওয়ার মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে বিতর্কিত রুয়ান্ডা বিল পাস হয়। এই বিল পাস হওয়ার ফলে যুক্তরাজ্য সরকার এখন সে দেশে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের রুয়ান্ডায় পাঠাতে পারবে। অর্থাৎ, যে সময়ে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের আবেদনপত্র যাচাই-বাছাই হবে সে সময়ে তাদের যুক্তরাজ্য নয় বরং রুয়ান্ডায় গিয়ে থাকতে হবে।
বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন এবং দেশটির বিরোধীদলগুলো রুয়ান্ডা বিলকে অমানবিক বলে বর্ণনা করলেও ঋষি সুনাক সরকারের দাবি, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় করে সমুদ্রপথে শরণার্থীদের আগমন আটকাতেই তারা এই উদ্যোগ নিয়েছে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শরণার্থীদের ঢল আটকাতে চান তারা।
সমুদ্রে সর্বশেষ এ ডুবে মারার ঘটনার পর যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলি বলেন, “এ ধরণের হৃদয়বিদারক ঘটনা অবশ্যই আটকাতে হবে।”
সোমবার পার্লামেন্টে অনুমোদন পাওয়ার পর এখন রুয়ান্ডা বিল আইনে পরিণত হতে রাজকীয় অনুমোদনের প্রয়োজন পড়বে। এ সপ্তাহের মধ্যেই সেই অনুমোদ পাওয়া যাবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী সুনাক বলেন, তিনি প্রত্যাশা করছেন আগামী ১০ থেকে ১২ সপ্তাহের মধ্যেই অভিবাসনপ্রত্যাশীদের নিয়ে যুক্তরাজ্য থেকে ফ্লাইট রুয়ান্ডা রওনা হতে পারবে।
সুনাক বলেন, “আমি খুবই পরিষ্কারভাবে জানি যে, এটা করতে এবং মানুষের জীবন রক্ষা করতে কোনো কিছুই আমাদের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারবে না।”
অভিবাসনপ্রত্যাশীদের রুয়ান্ডা পাঠাতে ২০২২ সালের এপ্রিলে রুয়ান্ডার সঙ্গে যুক্তরাজ্য সরকারের পাঁচ বছর মেয়াদি একটি চুক্তি হয়।
চুক্তির আওতায় পাঁচ বছর যুক্তরাজ্যে আসা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের জায়গা দেবে রুয়ান্ডা। বিনিময়ে রুয়ান্ডাকে অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য সহায়তা দেওয়ার ব্যাপারে সম্মত হয়েছে ব্রিটিশ সরকার। পাশাপাশি অভিবাসনপ্রত্যাশীদের পুনর্বাসন বাবদ বাড়তি অর্থ পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
২০২২ সালের জুনে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের নিয়ে প্রথম ফ্লাইটটি রওনা করার কথা ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে ইউরোপীয় মানবাধিকার আদালতের এক আদেশে তা বাতিল হয়ে যায়। বলা হয়, রুয়ান্ডা অভিবাসপ্রত্যাশীদের জন্য কতটা নিরাপদ তা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে।
পরের বছরের নভেম্বরে এ ধরনের পরিকল্পনাকে অবৈধ ঘোষণা করে যুক্তরাজ্যের সুপ্রিম কোর্ট, তবে ঋষি সুনাক সরকার চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকেন।
গতকাল সোমবার পাস হওয়া বিলটিতে রুয়ান্ডাকে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের জন্য নিরাপদ দেশ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
যু্দ্ধ এবং দারিদ্রতা থেকে বাঁচতে আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য এবং এশিয়ার দেশগুলো থেকে বহু মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছোট ছোট নৌকায় সমুদ্র পাড়ি দিয়ে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করে। এ বছর এখন পর্যন্ত ছয় হাজারের বেশি অভিবাসনপ্রত্যাশী যুক্তরাজ্য গেছেন।