আফগানিস্তানে আকস্মিক বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৫৩ জন হয়েছে। আহত হয়েছেন শতাধিক মানুষ। এছাড়া ভারী বৃষ্টিপাতের জেরে সৃষ্ট এই বন্যায় নিখোঁজ রয়েছেন আরও বহু মানুষ।
শনিবার (১১ মে) জানিয়েছে তালেবান সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আব্দুল মতিন কানি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, বাগলান, তাখার এবং বাদাখশান প্রদেশে শুক্রবার ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় আরও অন্তত ১৩৮ জন আহত হয়েছেন।
আকস্মিক বন্যায় অনেক অঞ্চল তলিয়ে গেলে শতাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। তাদের উদ্ধারে তালেবান কর্তৃপক্ষ হেলিকপ্টার পাঠিয়েছে এবং রাতভর সেগুলো উদ্ধার কাজ চালিয়েছে বলেও জানান তিনি।
বন্যায় দেশটিতে বহু মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছেন। সড়ক যোগাযোগ, পানি এবং বর্জ্য নিষ্কাশন ব্যবস্থা ‘মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত’ হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা-ডব্লিউএইচও।
শুক্রবার রাতে ডব্লিউএইচওর আফগানিস্তান কার্যালয় থেকে বলা হয়, “বন্যার প্রভাব ছিল অনেক গভীর। অনেক মানুষ হতাহত হয়েছেন। অনেকে এখনও নিখোঁজ রয়েছেন।”
বন্যায় চারটি স্বাস্থ্য কেন্দ্র ক্ষতিগস্ত হয়েছে এবং একটি স্বাস্থ্য কেন্দ্র ভেসে গেছে বলেও জানিয়েছে ডব্লিউএইচও কর্তৃপক্ষ। বলেছে, তারা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষদের সহায়তার জন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের পাঠিয়েছে।
অন্যদিকে সকালে বিবিসি এক প্রতিবেদনে বলছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া বেশ কিছু ছবিতে বেশ কয়েকটি গ্রামের বাড়িঘরের মধ্য দিয়ে পানির স্রোত বয়ে যেতে দেখা যাচ্ছে। এছাড়া ভয়াবহ এই বন্যা দেশটির এই অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করেছে।
মূলত গত কয়েক সপ্তাহ ধরে আফগানিস্তানে অস্বাভাবিকভাবে ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। গত এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে বন্যায় দেশটিতে ১০০ জনেরও বেশি মানুষ মারা গেছেন।
আফগানিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আব্দুল মতিন কানি বিবিসিকে বলেছেন, যারা মারা গেছেন তারা বাঘলান প্রদেশের বোরকা জেলার মানুষ। সেখানে দুই শতাধিক মানুষ তাদের ঘরের মধ্যে আটকা পড়েছেন।
আফগান সরকারের এই কর্মকর্তা এর আগে বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেন, আটকে পড়া মানুষকে উদ্ধারের জন্য হেলিকপ্টারগুলোকে বাঘলানে পাঠানো হয়েছে। এই এলাকাটি রাজধানী কাবুলের সরাসরি উত্তরে অবস্থিত। তবে রাতে দৃষ্টিশক্তির ঘাটতির কারণে ‘অপারেশন সফল নাও হতে পারে’ বলে জানান তিনি।
এদিকে, স্থানীয় কর্মকর্তা হেদায়তুল্লাহ হামদর্দ বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেছেন, সেনাবাহিনীসহ জরুরি কর্মীরা ‘কাদা ও ধ্বংসস্তূপের নিচে সম্ভাব্য ক্ষতিগ্রস্তদের সন্ধান করছেন’। এই কর্মকর্তা আরও বলেছেন, ঘরবাড়ি হারিয়েছে এমন কিছু পরিবারকে তাঁবু, কম্বল এবং খাবার সরবরাহ করা হয়েছে।
এছাড়া বন্যার জেরে কাবুলের সাথে উত্তর আফগানিস্তানের সংযোগকারী প্রধান সড়কটিও বন্ধ রয়েছে।
গত মাসে আফগানিস্তানের পশ্চিমে বন্যায় কয়েক ডজন লোক মারা যাওয়ার পরে এবার উত্তরাঞ্চলে বন্যার এই ঘটনা ঘটল। এর ফলে হাজার হাজার মানুষের মানবিক সহায়তার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। প্রায় ২ হাজার ঘরবাড়ি, তিনটি মসজিদ এবং চারটি স্কুলও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
মূলত আকস্মিক বন্যা যখন ঘটে তখন এত বেশি বৃষ্টিপাত হয় যে, স্বাভাবিক নিষ্কাশন ব্যবস্থা সেটি মোকাবিলা করতে পারে না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অপেক্ষাকৃত শুষ্ক ঠান্ডা মাটির জন্য বৃষ্টিপাত শোষণ করা আরও কঠিন করে তুলেছে।
মূলত আফগানিস্তানে প্রতি বছর মুষলধারে বৃষ্টি এবং বন্যায় মানুষ মারা যায়। এছাড়া বিচ্ছিন্ন গ্রামীণ এলাকায় দুর্বলভাবে নির্মিত ঘরগুলো বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ।
বিশেষজ্ঞদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে আফগানিস্তান বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর একটি হয়ে উঠেছে।
শনিবার, ১১ মে ২০২৪
আফগানিস্তানে আকস্মিক বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৫৩ জন হয়েছে। আহত হয়েছেন শতাধিক মানুষ। এছাড়া ভারী বৃষ্টিপাতের জেরে সৃষ্ট এই বন্যায় নিখোঁজ রয়েছেন আরও বহু মানুষ।
শনিবার (১১ মে) জানিয়েছে তালেবান সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আব্দুল মতিন কানি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, বাগলান, তাখার এবং বাদাখশান প্রদেশে শুক্রবার ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় আরও অন্তত ১৩৮ জন আহত হয়েছেন।
আকস্মিক বন্যায় অনেক অঞ্চল তলিয়ে গেলে শতাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। তাদের উদ্ধারে তালেবান কর্তৃপক্ষ হেলিকপ্টার পাঠিয়েছে এবং রাতভর সেগুলো উদ্ধার কাজ চালিয়েছে বলেও জানান তিনি।
বন্যায় দেশটিতে বহু মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছেন। সড়ক যোগাযোগ, পানি এবং বর্জ্য নিষ্কাশন ব্যবস্থা ‘মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত’ হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা-ডব্লিউএইচও।
শুক্রবার রাতে ডব্লিউএইচওর আফগানিস্তান কার্যালয় থেকে বলা হয়, “বন্যার প্রভাব ছিল অনেক গভীর। অনেক মানুষ হতাহত হয়েছেন। অনেকে এখনও নিখোঁজ রয়েছেন।”
বন্যায় চারটি স্বাস্থ্য কেন্দ্র ক্ষতিগস্ত হয়েছে এবং একটি স্বাস্থ্য কেন্দ্র ভেসে গেছে বলেও জানিয়েছে ডব্লিউএইচও কর্তৃপক্ষ। বলেছে, তারা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষদের সহায়তার জন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের পাঠিয়েছে।
অন্যদিকে সকালে বিবিসি এক প্রতিবেদনে বলছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া বেশ কিছু ছবিতে বেশ কয়েকটি গ্রামের বাড়িঘরের মধ্য দিয়ে পানির স্রোত বয়ে যেতে দেখা যাচ্ছে। এছাড়া ভয়াবহ এই বন্যা দেশটির এই অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করেছে।
মূলত গত কয়েক সপ্তাহ ধরে আফগানিস্তানে অস্বাভাবিকভাবে ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। গত এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে বন্যায় দেশটিতে ১০০ জনেরও বেশি মানুষ মারা গেছেন।
আফগানিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আব্দুল মতিন কানি বিবিসিকে বলেছেন, যারা মারা গেছেন তারা বাঘলান প্রদেশের বোরকা জেলার মানুষ। সেখানে দুই শতাধিক মানুষ তাদের ঘরের মধ্যে আটকা পড়েছেন।
আফগান সরকারের এই কর্মকর্তা এর আগে বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেন, আটকে পড়া মানুষকে উদ্ধারের জন্য হেলিকপ্টারগুলোকে বাঘলানে পাঠানো হয়েছে। এই এলাকাটি রাজধানী কাবুলের সরাসরি উত্তরে অবস্থিত। তবে রাতে দৃষ্টিশক্তির ঘাটতির কারণে ‘অপারেশন সফল নাও হতে পারে’ বলে জানান তিনি।
এদিকে, স্থানীয় কর্মকর্তা হেদায়তুল্লাহ হামদর্দ বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেছেন, সেনাবাহিনীসহ জরুরি কর্মীরা ‘কাদা ও ধ্বংসস্তূপের নিচে সম্ভাব্য ক্ষতিগ্রস্তদের সন্ধান করছেন’। এই কর্মকর্তা আরও বলেছেন, ঘরবাড়ি হারিয়েছে এমন কিছু পরিবারকে তাঁবু, কম্বল এবং খাবার সরবরাহ করা হয়েছে।
এছাড়া বন্যার জেরে কাবুলের সাথে উত্তর আফগানিস্তানের সংযোগকারী প্রধান সড়কটিও বন্ধ রয়েছে।
গত মাসে আফগানিস্তানের পশ্চিমে বন্যায় কয়েক ডজন লোক মারা যাওয়ার পরে এবার উত্তরাঞ্চলে বন্যার এই ঘটনা ঘটল। এর ফলে হাজার হাজার মানুষের মানবিক সহায়তার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। প্রায় ২ হাজার ঘরবাড়ি, তিনটি মসজিদ এবং চারটি স্কুলও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
মূলত আকস্মিক বন্যা যখন ঘটে তখন এত বেশি বৃষ্টিপাত হয় যে, স্বাভাবিক নিষ্কাশন ব্যবস্থা সেটি মোকাবিলা করতে পারে না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অপেক্ষাকৃত শুষ্ক ঠান্ডা মাটির জন্য বৃষ্টিপাত শোষণ করা আরও কঠিন করে তুলেছে।
মূলত আফগানিস্তানে প্রতি বছর মুষলধারে বৃষ্টি এবং বন্যায় মানুষ মারা যায়। এছাড়া বিচ্ছিন্ন গ্রামীণ এলাকায় দুর্বলভাবে নির্মিত ঘরগুলো বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ।
বিশেষজ্ঞদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে আফগানিস্তান বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর একটি হয়ে উঠেছে।