গত ফেব্রুয়ারিতে মায়ানমারের কাইন রাজ্যে সাইবার অপরাধে যুক্ত বেশ কয়েকজন বিদেশি নাগরিককে আটক করা হয় -এএফপি
বিশ্বজুড়ে বিশাল সাইবার স্ক্যাম বা কেলেংকারির আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞেরা। এই স্ক্যাম ছড়াতে পারে আফ্রিকা এবং ইউরোপে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার জাতিসংঘ একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে, এশিয়ায় একটি কয়েক বিলিয়ন ডলারের স্ক্যাম সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। রীতিমতো পরিকল্পনা করে তারা সাইবার অপরাধ সংগঠিত করছে। গোটা এশিয়াজুড়ে এই চক্র সক্রিয়। এবার তারা আফ্রিকা, ইউরোপ এবং আমেরিকাতেও জাল বিস্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াতে এই চক্র এখন সবচেয়ে বেশি সক্রিয়। রিপোর্ট বলছে, চীন এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একাধিক গ্যাং এই অপরাধ সংগঠিত করছে। তারা ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে এই অপরাধের জাল ছড়াচ্ছে। অনেক সময় তারা ভালোবাসার জাল ছড়াচ্ছে। ব্যবহার করা হচ্ছে নারীদের। তাদের মাধ্যমে সর্বস্বান্ত করা হচ্ছে বহু মানুষকে। জাতিসংঘের রিপোর্টে বলা হচ্ছে, এই অপরাধ চক্রে ঝড়ানো হচ্ছে বিপুল পরিমাণ পাচার হওয়া ব্যক্তিদের। যাদের বাধ্য করা হচ্ছে সাইবার অপরাধের সঙ্গে যুক্ত হতে।
জাতিসংঘের ড্রাগ এবং ক্রাইম সংস্থা ইউএনওডিসি-র দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কার্যকরী প্রতিনিধি বেনেডিক্ট হফম্যান জানিয়েছেন, প্যাসিফিক আইল্যান্ড বা প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জে ক্যানসারের মতো ছড়িয়ে পড়েছে এই ধরনের অপরাধ। প্রশাসন বিভিন্ন সময় রেড করে। অনেকে ধরা পড়ে। কিন্তু আবার অন্যত্র নতুন গ্যাং গজিয়ে ওঠে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, এই অপরাধ এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি দানা বেঁধেছে মিয়ানমারের সীমান্ত অঞ্চলগুলিতে। সেখানে গৃহযুদ্ধ চলায় প্রশাসনের পক্ষেও বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। সেই সুযোগ নিচ্ছে অপরাধী গ্যাং-গুলি।
অন্যদিকে লাতিন অ্যামেরিকা, আফ্রিকা, ইউরোপ এবং মধ্যপ্রাচ্যেও ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ছে এই ধরনের অপরাধমূলক কার্যকলাপ। হফম্যানের বক্তব্য, শুধমাত্র ২০২৩ সালে সাইবার অপরাধে মানুষ তিন হাজার ৭০০ কোটি ডলার খুইয়েছে। শুধুমাত্র অ্যামেরিকাতেই মানুষ হারিয়েছে ৫৬০ কোটি ডলার। এই চক্রের সঙ্গে লড়াই করার জন্য একটি আন্তর্জাতিক সংগঠন তৈরি প্রয়োজন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
এ নিয়ে বেইজিং সম্প্রতি মিয়ানমারে একটি অভিযান চালিয়েছে। সেখানে বেশ কয়েকটি গ্যাংয়ের অফিসে রেড করা হয়। প্রায় সাত হাজার কর্মীকে সেখান থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। যারা প্রায় ৫০টি দেশের মানুষ। বিভিন্নভাবে পাচার হয়ে তারা মিয়ানমার পৌঁছায় এবং তাদের এই অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত হতে বাধ্য করা হয়। কাম্বোডিয়াতেও সম্প্রতি অভিযান চালানো হয়েছে। সেখানেও এমন বহু গ্যাং কাজ করছে। বস্তুত, সেখানে সরকারও লাগাতার অভিযান চালাচ্ছে।
সাইবার জগতে অত্যাধুনিক এবং সম্ভবত সবচেয়ে জটিল একটি সমস্যা হলো সাইবার ক্রাইম বা সাইবার অপরাধ। বিভিন্ন আইন ও অপরাধ সংক্রান্ত বইপত্রে সাইবার ক্রাইমকে বিভিন্নভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়। সাইবার অপরাধসংক্রান্ত কয়েকটি উলেস্নখযোগ্য উদাহরণ হলো- কম্পিউটার হ্যাকিং, মোবাইল ফোন হ্যাকিং, ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাকিং, এটিএম বুথ হ্যাকিং, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট হ্যাকিং, বিকাশ-নগদ অ্যাকাউন্ট হ্যাকিং ইত্যাদি।
অর্থাৎ ‘যেসব অপরাধ সংঘটিত করতে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কম্পিউটার বা ইন্টারনেট ব্যবহৃত হয়ে থাকে, সাধারণভাবে সেগুলোই সাইবার অপরাধ বা সাইবার ক্রাইম হিসেবে পরিগডুত হয়’ এবং কোনো অপরাধমূলক কাজ যেখানে কম্পিউটার বা ইন্টারনেটকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয় কিংবা অপরাধের জন্য কম্পিউটার বা ইন্টারনেটকে টার্গেট করা হয়। অথবা কম্পিউটার বা ইন্টারনেট দ্বারা অপরাধ করার পরবর্তীতে তার সাপেক্ষে অন্য কোনো অপরাধ করা হয়। এসব অপরাধই সাইবার ক্রাইমের অন্তর্ভুক্ত হবে।
ইংল্যান্ড বিশ্বে প্রথম সাইবার আইন প্রণেতা হিসেবে তৈরি করে কম্পিউটার মিসইউজ অ্যাক্ট ১৯৯০। ই-অপরাধ প্রতিরোধে ২০০৮ সালে জাতীয় ই-অপরাধ ইউনিটও গঠন করা হয়। ভারতেও তৈরি হয় তথ্যপ্রযুক্তি আইন ২০০০। বাংলাদেশে ২০০৬ সালে তথ্যপ্রযুক্তি ও যোগাযোগ আইন তৈরি হয় এবং পরে এ আইন সংশোধন করা হয়। এ আইনের ৫৭ ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি ইচ্ছা করে ওয়েবসাইট বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক বিন্যাসে এমন কিছু প্রকাশ বা সম্প্রচার করেন, যা মিথ্যা ও অশ্লীল বা সংশ্লিষ্ট অবস্থা বিবেচনায় কেউ পড়লে বা শুনলে নীতিভ্রষ্ট বা অসৎ হতে উদ্বুদ্ধ হতে পারে বা যার মাধ্যমে মানহানি ঘটে, আইন-শৃঙ্খলা ঘটে বা ঘটার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়, রাষ্ট্র বা ব্যক্তির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয় বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে বা করতে পারে এ ধরনের তথ্যাদির মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি বা সংগঠনের বিরুদ্ধে উস্কানি দেওয়া হয়, তাহলে তার এই কাজ অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।
কোনো ব্যক্তি এ ধরনের অপরাধ করলে তিনি অনধিক ১০ বছর কারাদন্ডে দন্ডিত হতে পারেন এবং অনধিক এক কোটি টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন।
আমাদের দেশে আইন থাকলেও আইনি অব্যবস্থাপনা নিয়ে জনসাধারণের মধ্যে চাপা ক্ষোভ রয়েছে। বর্তমানে আমাদের দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা দিনদিন বাড়ছে। তার সঙ্গে পালস্না দিয়ে বাড়ছে সাইবার অপরাধও।
ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের বেশিরভাগেরই তথ্যপ্রযুক্তি আইন সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই। তাই বুঝে হোক বা না বুঝে হোক সাইবার অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। যারা সাইবার অপরাধের শিকার, তারাও সঠিক আইনি ব্যবস্থা নিতে জানেন না। আবার অনেকে থানায় গেলেও ফল পান না। কারণ অনেক পুলিশ কর্মকর্তাই জানেন না এ ধরনের অভিযোগ পেলে তার ঠিক কী করা উচিত। তাই এই আইন সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধিতে আইনের প্রচার বাড়াতে হবে ও প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারে আপনাকে খুব সচেতন হতে হবে। যেমন আপনি যদি ই-মেইল, ফেসবুক কিংবা কোনো অনলাইন অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তার বিষয়গুলো ঠিকভাবে সেটিং করতে পারেন দুনিয়ার যত বড় ক্রিমিনাল হোক আপনার অ্যাকউন্টের ক্ষতি করতে পারবে না। তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানানো যাচ্ছে, সাইবার ক্রাইম বা অপরাধের মতো ভয়াবহ বিষয়টির উপর সুদৃষ্টি রেখে কম্পিউটার বা ইন্টারনেট গ্রাহকদের নিরাপত্তার জোর দাবি জানাচ্ছি।
গত ফেব্রুয়ারিতে মায়ানমারের কাইন রাজ্যে সাইবার অপরাধে যুক্ত বেশ কয়েকজন বিদেশি নাগরিককে আটক করা হয় -এএফপি
মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫
বিশ্বজুড়ে বিশাল সাইবার স্ক্যাম বা কেলেংকারির আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞেরা। এই স্ক্যাম ছড়াতে পারে আফ্রিকা এবং ইউরোপে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার জাতিসংঘ একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে, এশিয়ায় একটি কয়েক বিলিয়ন ডলারের স্ক্যাম সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। রীতিমতো পরিকল্পনা করে তারা সাইবার অপরাধ সংগঠিত করছে। গোটা এশিয়াজুড়ে এই চক্র সক্রিয়। এবার তারা আফ্রিকা, ইউরোপ এবং আমেরিকাতেও জাল বিস্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াতে এই চক্র এখন সবচেয়ে বেশি সক্রিয়। রিপোর্ট বলছে, চীন এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একাধিক গ্যাং এই অপরাধ সংগঠিত করছে। তারা ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে এই অপরাধের জাল ছড়াচ্ছে। অনেক সময় তারা ভালোবাসার জাল ছড়াচ্ছে। ব্যবহার করা হচ্ছে নারীদের। তাদের মাধ্যমে সর্বস্বান্ত করা হচ্ছে বহু মানুষকে। জাতিসংঘের রিপোর্টে বলা হচ্ছে, এই অপরাধ চক্রে ঝড়ানো হচ্ছে বিপুল পরিমাণ পাচার হওয়া ব্যক্তিদের। যাদের বাধ্য করা হচ্ছে সাইবার অপরাধের সঙ্গে যুক্ত হতে।
জাতিসংঘের ড্রাগ এবং ক্রাইম সংস্থা ইউএনওডিসি-র দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কার্যকরী প্রতিনিধি বেনেডিক্ট হফম্যান জানিয়েছেন, প্যাসিফিক আইল্যান্ড বা প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জে ক্যানসারের মতো ছড়িয়ে পড়েছে এই ধরনের অপরাধ। প্রশাসন বিভিন্ন সময় রেড করে। অনেকে ধরা পড়ে। কিন্তু আবার অন্যত্র নতুন গ্যাং গজিয়ে ওঠে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, এই অপরাধ এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি দানা বেঁধেছে মিয়ানমারের সীমান্ত অঞ্চলগুলিতে। সেখানে গৃহযুদ্ধ চলায় প্রশাসনের পক্ষেও বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। সেই সুযোগ নিচ্ছে অপরাধী গ্যাং-গুলি।
অন্যদিকে লাতিন অ্যামেরিকা, আফ্রিকা, ইউরোপ এবং মধ্যপ্রাচ্যেও ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ছে এই ধরনের অপরাধমূলক কার্যকলাপ। হফম্যানের বক্তব্য, শুধমাত্র ২০২৩ সালে সাইবার অপরাধে মানুষ তিন হাজার ৭০০ কোটি ডলার খুইয়েছে। শুধুমাত্র অ্যামেরিকাতেই মানুষ হারিয়েছে ৫৬০ কোটি ডলার। এই চক্রের সঙ্গে লড়াই করার জন্য একটি আন্তর্জাতিক সংগঠন তৈরি প্রয়োজন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
এ নিয়ে বেইজিং সম্প্রতি মিয়ানমারে একটি অভিযান চালিয়েছে। সেখানে বেশ কয়েকটি গ্যাংয়ের অফিসে রেড করা হয়। প্রায় সাত হাজার কর্মীকে সেখান থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। যারা প্রায় ৫০টি দেশের মানুষ। বিভিন্নভাবে পাচার হয়ে তারা মিয়ানমার পৌঁছায় এবং তাদের এই অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত হতে বাধ্য করা হয়। কাম্বোডিয়াতেও সম্প্রতি অভিযান চালানো হয়েছে। সেখানেও এমন বহু গ্যাং কাজ করছে। বস্তুত, সেখানে সরকারও লাগাতার অভিযান চালাচ্ছে।
সাইবার জগতে অত্যাধুনিক এবং সম্ভবত সবচেয়ে জটিল একটি সমস্যা হলো সাইবার ক্রাইম বা সাইবার অপরাধ। বিভিন্ন আইন ও অপরাধ সংক্রান্ত বইপত্রে সাইবার ক্রাইমকে বিভিন্নভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়। সাইবার অপরাধসংক্রান্ত কয়েকটি উলেস্নখযোগ্য উদাহরণ হলো- কম্পিউটার হ্যাকিং, মোবাইল ফোন হ্যাকিং, ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাকিং, এটিএম বুথ হ্যাকিং, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট হ্যাকিং, বিকাশ-নগদ অ্যাকাউন্ট হ্যাকিং ইত্যাদি।
অর্থাৎ ‘যেসব অপরাধ সংঘটিত করতে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কম্পিউটার বা ইন্টারনেট ব্যবহৃত হয়ে থাকে, সাধারণভাবে সেগুলোই সাইবার অপরাধ বা সাইবার ক্রাইম হিসেবে পরিগডুত হয়’ এবং কোনো অপরাধমূলক কাজ যেখানে কম্পিউটার বা ইন্টারনেটকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয় কিংবা অপরাধের জন্য কম্পিউটার বা ইন্টারনেটকে টার্গেট করা হয়। অথবা কম্পিউটার বা ইন্টারনেট দ্বারা অপরাধ করার পরবর্তীতে তার সাপেক্ষে অন্য কোনো অপরাধ করা হয়। এসব অপরাধই সাইবার ক্রাইমের অন্তর্ভুক্ত হবে।
ইংল্যান্ড বিশ্বে প্রথম সাইবার আইন প্রণেতা হিসেবে তৈরি করে কম্পিউটার মিসইউজ অ্যাক্ট ১৯৯০। ই-অপরাধ প্রতিরোধে ২০০৮ সালে জাতীয় ই-অপরাধ ইউনিটও গঠন করা হয়। ভারতেও তৈরি হয় তথ্যপ্রযুক্তি আইন ২০০০। বাংলাদেশে ২০০৬ সালে তথ্যপ্রযুক্তি ও যোগাযোগ আইন তৈরি হয় এবং পরে এ আইন সংশোধন করা হয়। এ আইনের ৫৭ ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি ইচ্ছা করে ওয়েবসাইট বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক বিন্যাসে এমন কিছু প্রকাশ বা সম্প্রচার করেন, যা মিথ্যা ও অশ্লীল বা সংশ্লিষ্ট অবস্থা বিবেচনায় কেউ পড়লে বা শুনলে নীতিভ্রষ্ট বা অসৎ হতে উদ্বুদ্ধ হতে পারে বা যার মাধ্যমে মানহানি ঘটে, আইন-শৃঙ্খলা ঘটে বা ঘটার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়, রাষ্ট্র বা ব্যক্তির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয় বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে বা করতে পারে এ ধরনের তথ্যাদির মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি বা সংগঠনের বিরুদ্ধে উস্কানি দেওয়া হয়, তাহলে তার এই কাজ অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।
কোনো ব্যক্তি এ ধরনের অপরাধ করলে তিনি অনধিক ১০ বছর কারাদন্ডে দন্ডিত হতে পারেন এবং অনধিক এক কোটি টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন।
আমাদের দেশে আইন থাকলেও আইনি অব্যবস্থাপনা নিয়ে জনসাধারণের মধ্যে চাপা ক্ষোভ রয়েছে। বর্তমানে আমাদের দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা দিনদিন বাড়ছে। তার সঙ্গে পালস্না দিয়ে বাড়ছে সাইবার অপরাধও।
ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের বেশিরভাগেরই তথ্যপ্রযুক্তি আইন সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই। তাই বুঝে হোক বা না বুঝে হোক সাইবার অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। যারা সাইবার অপরাধের শিকার, তারাও সঠিক আইনি ব্যবস্থা নিতে জানেন না। আবার অনেকে থানায় গেলেও ফল পান না। কারণ অনেক পুলিশ কর্মকর্তাই জানেন না এ ধরনের অভিযোগ পেলে তার ঠিক কী করা উচিত। তাই এই আইন সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধিতে আইনের প্রচার বাড়াতে হবে ও প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারে আপনাকে খুব সচেতন হতে হবে। যেমন আপনি যদি ই-মেইল, ফেসবুক কিংবা কোনো অনলাইন অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তার বিষয়গুলো ঠিকভাবে সেটিং করতে পারেন দুনিয়ার যত বড় ক্রিমিনাল হোক আপনার অ্যাকউন্টের ক্ষতি করতে পারবে না। তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানানো যাচ্ছে, সাইবার ক্রাইম বা অপরাধের মতো ভয়াবহ বিষয়টির উপর সুদৃষ্টি রেখে কম্পিউটার বা ইন্টারনেট গ্রাহকদের নিরাপত্তার জোর দাবি জানাচ্ছি।