যুক্তরাষ্ট্রে টিকা বিষয়ক পরামর্শক কমিটির (অ্যাডভাইজরি কমিটি অন ইমিউনাইজেশন প্র্যাকটিসেস - এসিআইপি) ১৭ জন সদস্যের সবাইকে অপসারণ করেছেন দেশটির নতুন স্বাস্থ্যমন্ত্রী রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র। টিকা নিয়ে দীর্ঘদিনের সংশয়বাদী হিসেবে পরিচিত কেনেডির এই আকস্মিক সিদ্ধান্তে যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্যমহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত এক সম্পাদকীয়তে কেনেডি তার সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তি দিয়ে বলেছেন যে, এসিআইপি সদস্যদের ‘স্বার্থের দ্বন্দ্ব’ টিকার প্রতি জনগণের আস্থা ক্ষুণ্ণ করেছে। তার দাবি, আমেরিকানদের জন্য ‘সবচেয়ে নিরাপদ’ টিকা নিশ্চিত করাই তার লক্ষ্য।
দীর্ঘদিন ধরে টিকাবিরোধী মনোভাবের জন্য চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের সমালোচনার শিকার হয়েছেন কেনেডি। তবে সেনেটে তিনি আশ্বস্ত করেছিলেন যে, তিনি টিকা ‘সরিয়ে নিচ্ছেন না’।
সোমবার কেনেডি ঘোষণা করেন যে, এসিআইপির সব সদস্যই ‘অবসরে’ যাচ্ছেন। এই ১৭ জন সদস্যের মধ্যে আটজন গত জানুয়ারিতে বাইডেন প্রশাসনের শেষ মুহূর্তে নিয়োগ পেয়েছিলেন। অধিকাংশ সদস্যই বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারের সঙ্গে যুক্ত অভিজ্ঞ চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞ। কেনেডির ভাষ্য, যদি তিনি এই কমিটি ভেঙে না দিতেন, তাহলে ২০২৮ সাল পর্যন্ত ট্রাম্প প্রশাসন নতুন সদস্য নিয়োগ করতে পারত না।
তিনি আরও বলেন, “এই কমিটি দীর্ঘদিন ধরে স্বার্থের দ্বন্দ্বে জর্জরিত এবং যে কোনো টিকার অনুমোদনে নামমাত্র সিলমোহরের ভূমিকা পালন করছে।” কেনেডির দাবি, স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ ও ওষুধ কোম্পানিগুলোই ‘জনগণের আস্থার সংকট’ সৃষ্টি করেছে, যাকে অনেকে ‘ভ্রান্ত তথ্য বা বিজ্ঞানবিরোধী মনোভাবের ওপর দায় চাপিয়ে’ ব্যাখ্যা করেন। ১৯৯০ ও ২০০০ দশকের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, এই স্বার্থের সংঘাত এখনও চলমান। তিনি অভিযোগ করেন, ‘এসিআইপির বেশিরভাগ সদস্যই ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলো থেকে উল্লেখযোগ্য পয়সাকড়ি পেয়েছে, যাদের মধ্যে রয়েছে টিকা বিপণনকারী কোম্পানিও।’
বিবিসি জানিয়েছে, কেনেডির এই পদক্ষেপ তার শপথবাক্যের সময় দেওয়া আশ্বাসের ঠিক বিপরীত। লুইজিয়ানার রিপাবলিকান সিনেটর ও চিকিৎসক বিল ক্যাসিডি অভিযোগ করেছেন যে, কেনেডি তাকে এসিআইপিতে কোনো পরিবর্তন না করার আশ্বাস দিয়েছিলেন। ক্যাসিডি সোমবার এক্স পোস্টে লেখেন, ‘এখন শঙ্কা হচ্ছে - এসিআইপি এমন লোকে ভরে যাবে, যাদের টিকা নিয়ে কোনো জ্ঞান নেই, কেবল সন্দেহ আছে। আমি কেনেডির সঙ্গে মাত্রই কথা বলেছি এবং তেমনটা যেন না হয়, সেজন্য আমি তার সঙ্গে আলাপ চালিয়ে যাব।’
উল্লেখ্য, এসিআইপি সদস্যদের ‘স্বার্থের দ্বন্দ্ব’ থাকলে তা অনলাইনে প্রকাশ করতে হয় এবং এমন দ্বন্দ্ব থাকলে তাদের ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হয়। কেনেডি অবশ্য বলেছেন যে, এসিআইপি সদস্যরা দুর্নীতিগ্রস্ত নন। ‘সমস্যা হল - তারা এমন শিল্পঘেঁষা উদ্দীপনা ও দৃষ্টিভঙ্গি ব্যবস্থার অংশ, যা কেবল শিল্পের স্বার্থ দেখে।’
যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসকদের সংগঠন আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট ব্রুস স্কট এই সিদ্ধান্তকে ‘একটি স্বচ্ছ প্রক্রিয়াকে ধ্বংস করেছে, যা অসংখ্য জীবন বাঁচিয়েছে’ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘হামের প্রাদুর্ভাব এবং শিশুদের টিকাদানের হার কমার মধ্যে এই পদক্ষেপ এল। এখন এমন রোগ ছড়ানোর সুযোগ পাবে, যা টিকা দিয়ে প্রতিরোধ করা সম্ভব ছিল।’
বিবিসি আরও জানিয়েছে যে, কেনেডি বোর্ড সদস্য হিসেবে কাদের আনবেন তা খোলাসা করেননি। এসিআইপির একটি সভার জন্য আগামী ২৫ জুন দিন ঠিক করা আছে, যেখানে কোভিড, ফ্লু, মেনিনজাইটিস, আরএসভিসহ বিভিন্ন রোগের টিকার সুপারিশ নিয়ে ভোটাভুটি হওয়ার কথা রয়েছে।
মঙ্গলবার, ১০ জুন ২০২৫
যুক্তরাষ্ট্রে টিকা বিষয়ক পরামর্শক কমিটির (অ্যাডভাইজরি কমিটি অন ইমিউনাইজেশন প্র্যাকটিসেস - এসিআইপি) ১৭ জন সদস্যের সবাইকে অপসারণ করেছেন দেশটির নতুন স্বাস্থ্যমন্ত্রী রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র। টিকা নিয়ে দীর্ঘদিনের সংশয়বাদী হিসেবে পরিচিত কেনেডির এই আকস্মিক সিদ্ধান্তে যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্যমহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত এক সম্পাদকীয়তে কেনেডি তার সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তি দিয়ে বলেছেন যে, এসিআইপি সদস্যদের ‘স্বার্থের দ্বন্দ্ব’ টিকার প্রতি জনগণের আস্থা ক্ষুণ্ণ করেছে। তার দাবি, আমেরিকানদের জন্য ‘সবচেয়ে নিরাপদ’ টিকা নিশ্চিত করাই তার লক্ষ্য।
দীর্ঘদিন ধরে টিকাবিরোধী মনোভাবের জন্য চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের সমালোচনার শিকার হয়েছেন কেনেডি। তবে সেনেটে তিনি আশ্বস্ত করেছিলেন যে, তিনি টিকা ‘সরিয়ে নিচ্ছেন না’।
সোমবার কেনেডি ঘোষণা করেন যে, এসিআইপির সব সদস্যই ‘অবসরে’ যাচ্ছেন। এই ১৭ জন সদস্যের মধ্যে আটজন গত জানুয়ারিতে বাইডেন প্রশাসনের শেষ মুহূর্তে নিয়োগ পেয়েছিলেন। অধিকাংশ সদস্যই বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারের সঙ্গে যুক্ত অভিজ্ঞ চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞ। কেনেডির ভাষ্য, যদি তিনি এই কমিটি ভেঙে না দিতেন, তাহলে ২০২৮ সাল পর্যন্ত ট্রাম্প প্রশাসন নতুন সদস্য নিয়োগ করতে পারত না।
তিনি আরও বলেন, “এই কমিটি দীর্ঘদিন ধরে স্বার্থের দ্বন্দ্বে জর্জরিত এবং যে কোনো টিকার অনুমোদনে নামমাত্র সিলমোহরের ভূমিকা পালন করছে।” কেনেডির দাবি, স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ ও ওষুধ কোম্পানিগুলোই ‘জনগণের আস্থার সংকট’ সৃষ্টি করেছে, যাকে অনেকে ‘ভ্রান্ত তথ্য বা বিজ্ঞানবিরোধী মনোভাবের ওপর দায় চাপিয়ে’ ব্যাখ্যা করেন। ১৯৯০ ও ২০০০ দশকের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, এই স্বার্থের সংঘাত এখনও চলমান। তিনি অভিযোগ করেন, ‘এসিআইপির বেশিরভাগ সদস্যই ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলো থেকে উল্লেখযোগ্য পয়সাকড়ি পেয়েছে, যাদের মধ্যে রয়েছে টিকা বিপণনকারী কোম্পানিও।’
বিবিসি জানিয়েছে, কেনেডির এই পদক্ষেপ তার শপথবাক্যের সময় দেওয়া আশ্বাসের ঠিক বিপরীত। লুইজিয়ানার রিপাবলিকান সিনেটর ও চিকিৎসক বিল ক্যাসিডি অভিযোগ করেছেন যে, কেনেডি তাকে এসিআইপিতে কোনো পরিবর্তন না করার আশ্বাস দিয়েছিলেন। ক্যাসিডি সোমবার এক্স পোস্টে লেখেন, ‘এখন শঙ্কা হচ্ছে - এসিআইপি এমন লোকে ভরে যাবে, যাদের টিকা নিয়ে কোনো জ্ঞান নেই, কেবল সন্দেহ আছে। আমি কেনেডির সঙ্গে মাত্রই কথা বলেছি এবং তেমনটা যেন না হয়, সেজন্য আমি তার সঙ্গে আলাপ চালিয়ে যাব।’
উল্লেখ্য, এসিআইপি সদস্যদের ‘স্বার্থের দ্বন্দ্ব’ থাকলে তা অনলাইনে প্রকাশ করতে হয় এবং এমন দ্বন্দ্ব থাকলে তাদের ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হয়। কেনেডি অবশ্য বলেছেন যে, এসিআইপি সদস্যরা দুর্নীতিগ্রস্ত নন। ‘সমস্যা হল - তারা এমন শিল্পঘেঁষা উদ্দীপনা ও দৃষ্টিভঙ্গি ব্যবস্থার অংশ, যা কেবল শিল্পের স্বার্থ দেখে।’
যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসকদের সংগঠন আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট ব্রুস স্কট এই সিদ্ধান্তকে ‘একটি স্বচ্ছ প্রক্রিয়াকে ধ্বংস করেছে, যা অসংখ্য জীবন বাঁচিয়েছে’ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘হামের প্রাদুর্ভাব এবং শিশুদের টিকাদানের হার কমার মধ্যে এই পদক্ষেপ এল। এখন এমন রোগ ছড়ানোর সুযোগ পাবে, যা টিকা দিয়ে প্রতিরোধ করা সম্ভব ছিল।’
বিবিসি আরও জানিয়েছে যে, কেনেডি বোর্ড সদস্য হিসেবে কাদের আনবেন তা খোলাসা করেননি। এসিআইপির একটি সভার জন্য আগামী ২৫ জুন দিন ঠিক করা আছে, যেখানে কোভিড, ফ্লু, মেনিনজাইটিস, আরএসভিসহ বিভিন্ন রোগের টিকার সুপারিশ নিয়ে ভোটাভুটি হওয়ার কথা রয়েছে।