ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে মার্কিন বোমা হামলার পর স্যাটেলাইট ইমেজে দেখা গেছে, সেখানে ছয়টি নতুন গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে মার্কিন বোমা হামলার পরই এই গর্তগুলো সৃষ্টি হয়েছে
স্থানীয় সময় গতকাল শনিবার রাতে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর বিমান হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
এই হামলার কিছুক্ষণের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি ভাষণ দেন, যা যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে সরাসরি সম্প্রচারিত হয়।
ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনাকে লক্ষ্য করে হামলা
যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ‘ধ্বংসপ্রাপ্ত’, দাবি মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রীর
সাহসী, ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত, মূল্যায়ন ইসরায়েলের
গর্হিত ও অপরাধমূলক, প্রতিক্রিয়া ইরানের
কূটনীতিই সমাধানের পথ, পরামর্শ জাতিসংঘের
ভাষণে তিনি জানান, ইরানের ফোর্দো, নাতাঞ্জ এবং ইসফাহান এলাকায় এই হামলা চালানো হয়েছে।
ট্রাম্প সতর্ক করে বলেন, ইরান যদি শান্তি আলোচনায় না বসে, তবে তাদের বিরুদ্ধে আরও বড় ধরনের হামলা চালানো হবে। তিনি বলেন, ‘হয় শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে, না হয় ইরানের ওপর এমন হামলা চালানো হবে, যা গত আট দিনে তারা দেখেনি।’
এক মার্কিন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, ইরানে চালানো এই হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের বি-টু স্পিরিট বোমারু বিমান ব্যবহার করা হয়েছে।
মাটির নিচে ৬০ মিটার গভীরে অবস্থিত স্থাপনাগুলোতে আঘাত হানার সক্ষমতা সম্পন্ন ৩০,০০০ পাউন্ড ওজনের জিবিইউ-৫৭ বোমা কেবল এই বিমান থেকেই নিক্ষেপ করা সম্ভব।
কিছুদিন আগে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের চার হাজার কিলোমিটারের মধ্যে একটি বিমানঘাঁটিতে এই ধরনের কয়েকটি বিমান মোতায়েন করেছিল। তবে দুদিন আগে এসব বিমান সরিয়ে ইরান থেকে প্রায় সাড়ে নয় হাজার কিলোমিটার দূরের একটি ঘাঁটিতে স্থানান্তর করা হয়।
ইরানে হামলার দৃশ্য হোয়াইট হাউসের সিচুয়েশন রুমে বসে সরাসরি পর্যবেক্ষণ করেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এ সময় তার সঙ্গে ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওসহ অন্যান্য শীর্ষ কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
স্যাটেলাইট ইমেজে ইঙ্গিত
রাতভর চালানো এই হামলার হাই-রেজ্যুলেশন স্যাটেলাইট ইমেজ এখনও প্রকাশিত হয়নি। তবে স্যাটেলাইট ইমেজ সরবরাহকারী সংস্থা ম্যাক্সার হামলার আগে তোলা ফোর্দো পারমাণবিক কেন্দ্রের কিছু ছবি প্রকাশ করেছে।
ম্যাক্সার জানিয়েছে, ১৯ ও ২০ জুন তোলা ছবিতে ভূগর্ভস্থ সামরিক স্থাপনাটির প্রবেশপথের আশপাশে অস্বাভাবিক ট্রাক ও যান চলাচল দেখা গেছে। প্রথম ছবিতে দেখা যায়, একটি টানেলের প্রবেশপথের দিকে যাওয়ার সড়কের পাশে ১৬টি পণ্যবাহী ট্রাক সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছে।
পরবর্তী ছবিতে মূল স্থাপনার কাছে ট্রাক ও বুলডোজার দেখা যায়। এছাড়া, টানেলের ভেতরে এবং আশপাশে খননকাজের চিহ্ন রয়েছে, যা থেকে ধারণা করা যায়, ইরান হয়তো হামলার আশঙ্কায় স্থাপনাটি আরও সুরক্ষিত করার চেষ্টা করছিল।
ম্যাক্সার আরও জানায়, ২১ জুন তোলা আরেকটি ছবিতে ফোর্দো স্থাপনা থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে নতুন করে নির্মিত প্রতিরক্ষা কাঠামোরও চিহ্ন দেখা গেছে।
দ্বিতীয় দফায় হুমকি ট্রাম্পের
হামলার পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ভাষণ দেয়ার পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ একটি পোস্টে দ্বিতীয় দফায় হুমকি দেন ইরানকে।
তিনি লিখেন, ‘ইরান যদি যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের পাল্টা হামলা চালায়, তাহলে তার জবাব হবে বহু গুণ বেশি শক্তিশালী।’
ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া
যুক্তরাষ্ট্রের হামলাকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ‘সাহসী সিদ্ধান্ত’ হিসেবে অভিহিত করে তাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগ। এক্স (সাবেক টুইটার)-এ তিনি লেখেন, ‘মানব ইতিহাসের পাতায় এটি একটি মুহূর্ত, যেখানে স্বাধীনতা, দায়িত্ব ও নিরাপত্তার নীতিগুলো জয়লাভ করেছে। এটি সন্ত্রাস ও অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে এক স্পষ্ট বার্তা।’
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ হামলাকে ‘ঐতিহাসিক’ আখ্যা দিয়ে বলেন, ইরান যেন পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্র সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি জানান, ইসরায়েলি অভিযান অব্যাহত থাকবে এবং যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল জোট আগের চেয়ে আরও শক্তিশালী হয়েছে।
ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদিওন সার ট্রাম্পের সিদ্ধান্তকে ‘সাহসী’ উল্লেখ করে বলেন, ‘ট্রাম্প তার সাহসী সিদ্ধান্তের জন্য ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে নাম লিখিয়েছেন।’ তিনি আরও বলেন, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে ‘ঐতিহাসিক পদক্ষেপ’ নেয়া হয়েছে।
ইরানের নিন্দা ও পাল্টা প্রতিক্রিয়া
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইয়েদ আব্বাস আরাঘচি যুক্তরাষ্ট্রের হামলাকে ‘গর্হিত’ ও ‘অপরাধমূলক’ বলে নিন্দা জানান।
তিনি বলেন, ‘ইরান তার সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য সব বিকল্প সংরক্ষণ করছে।’ এক্স-এ দেয়া এক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘আজ সকালের ঘটনাগুলো ভয়াবহ এবং এর পরিণতি দীর্ঘস্থায়ী হবে। জাতিসংঘের প্রতিটি সদস্যকে এই বিপজ্জনক, আইনবহির্ভূত আচরণের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘ সনদের গুরুতর লঙ্ঘন করেছে।
এক টেলিভিশন ভাষণে তিনি বলেন, ‘ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার সময় বলেছিলেন, তিনি মধ্যপ্রাচ্যে আমেরিকার দীর্ঘ ও ব্যয়বহুল যুদ্ধ বন্ধ করবেন। কিন্তু এখন তিনি উল্টো আমাদের সঙ্গে কূটনীতির নামে প্রতারণা করেছেন এবং আমেরিকান জনগণকেও ঠকিয়েছেন। তিনি এমন একজন যুদ্ধাপরাধীর নির্দেশে কাজ করছেন, যিনি বহুদিন ধরে আমেরিকার অর্থ ও জনশক্তি ব্যবহার করে ইসরায়েলের স্বার্থে কাজ করে যাচ্ছেন।’
যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত সাইয়েদ আলী মৌসাভি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ইরানে যে রাতভর বিমান হামলা চালিয়েছে, তা ‘জাতিসংঘ সনদের প্রতি অসম্মান’ এবং আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন।
বিবিসির উপস্থাপক লরা কুয়েনসবার্গকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মৌসাভি বলেন, ‘এই হামলা ইরানের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখ-তার লঙ্ঘন।’
তবে এই হামলায় ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সে বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি সরাসরি কোনো মন্তব্য করেননি।
কুয়েনসবার্গ জানতে চান, যদি যুক্তরাষ্ট্র আবার হামলা চালায়, তাহলে ইরান কি তার পারমাণবিক কর্মসূচি পরিত্যাগ করবে এবং ইসরায়েলের সঙ্গে বিরোধের অবসান ঘটাবে? জবাবে মৌসাভি বলেন, ‘ইরান ও যুক্তরাষ্ট্র পারমাণবিক আলোচনার মাঝামাঝি অবস্থানে রয়েছে।’ একইসঙ্গে তিনি অভিযোগ করেন, ‘ইসরায়েলি শাসকগোষ্ঠী আমাদের ওপর আগ্রাসন চালিয়েছে।’
গত সপ্তাহে দুইপক্ষের বেসামরিক প্রাণহানির বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘আমরা আত্মরক্ষা করছি।’
ইরানের পরমাণু শক্তি সংস্থার বিবৃতি
ইরানের পারমাণবিক শক্তি সংস্থা তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলাকে ‘বর্বর’ বলে আখ্যা দিয়েছে এবং তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।
এক বিবৃতিতে সংস্থাটি আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (ওঅঊঅ) ‘উদাসীনতা এবং এমনকি সহাবস্থানের’ অভিযোগও তোলে।
তারা বৈশ্বিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানায়, যেন এই হামলার নিন্দা জানানো হয় এবং ইরানের ন্যায্য অবস্থানকে সমর্থন দেয়া হয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘শত্রুদের ষড়যন্ত্র থাকলেও ইরানের বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞরা দেশের পারমাণবিক শিল্পকে বিরামহীনভাবে এগিয়ে নিয়ে যাবেন।’ এর পাশাপাশি, ‘আইনি ব্যবস্থা’সহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার কথাও উল্লেখ করা হয়।
হামাসের প্রতিক্রিয়া
ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলাকে ‘নির্লজ্জ আগ্রাসন’ বলে আখ্যা দিয়েছে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস।
এক বিবৃতিতে তারা জানায়, ‘এই হামলা আন্তর্জাতিক আইনের ঘোরবিরোধী এবং আন্তর্জাতিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য সরাসরি হুমকি।’
উল্লেখ্য, হামাসকে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইসরায়েলসহ বেশ কয়েকটি দেশ সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে।
আরব বিশ্বের প্রতিক্রিয়া
যুক্তরাষ্ট্রের এই হামলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আরব বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানায়।
মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে পারমাণবিক আলোচনাসংক্রান্ত মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করা ওমান যুক্তরাষ্ট্রের হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।
ওমানের সুলতান বলেন, ‘এই সরাসরি বিমান হামলা এ অঞ্চলে উত্তেজনা বাড়িয়ে দিয়েছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।’
যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র সৌদি আরব হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরানের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের নিন্দা জানায়।
সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এই ধরনের হামলা একটি সার্বভৌম রাষ্ট্রের ওপর সরাসরি আঘাত।’
কাতার সতর্ক করে জানিয়েছে, ‘বর্তমান উত্তেজনাকর পরিস্থিতি আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতার জন্য চরম বিপদ ডেকে আনতে পারে।’
দেশটি সবপক্ষকে ‘বিচক্ষণতা ও ধৈর্য’ ধারণের আহ্বান জানিয়েছে।
মিসরও একইভাবে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যে, ‘এই হামলা মধ্যপ্রাচ্যে আরও বিশৃঙ্খলা ও উত্তেজনার জন্ম দিতে পারে।’
তারা জোর দিয়ে বলেছে, ‘এই সংকটের একমাত্র সমাধান রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে সম্ভব; সামরিক পথ নয়।’
লেবাননের রাষ্ট্রপতি জোসেফ আউন বলেন, ‘ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে বোমা হামলা উত্তেজনার মাত্রা বাড়িয়ে তুলেছে, যা এ অঞ্চল এবং লেবাননের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি।’
জাতিসংঘের প্রতিক্রিয়া
জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, এখন ‘সংঘাত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার বড় ধরনের ঝুঁকি’ তৈরি হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ দেয়া এক পোস্টে তিনি আরও বলেন, এর ফলে ‘বেসামরিক নাগরিক, মধ্যপ্রাচ্য ও বিশ্বের জন্য ভয়াবহ ও বিপর্যয়মূলক পরিস্থিতি’ তৈরি হতে পারে।
তিনি বলেন, এই মুহূর্তে কেবল কূটনৈতিক পথেই সমস্যার সমাধান সম্ভব।
জরুরি বৈঠক ডেকেছে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা
ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর, সোমবার জরুরি বৈঠক ডেকেছে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ)।
এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে ইরানে সৃষ্ট জরুরি পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে, জানিয়েছেন সংস্থার প্রধান।
এদিকে, ইরানের পরমাণু শক্তি সংস্থার প্রধান মোহাম্মদ ইসলামি আইএইএ-কে এক চিঠিতে জানিয়েছেন, তেহরান চায় যুক্তরাষ্ট্রের এই হামলার বিষয়ে তদন্ত হোক। একই সঙ্গে আইএইএ’র কাছে যুক্তরাষ্ট্রের এই হামলার ‘নিন্দা জানানোর’ আহ্বান জানিয়েছে তেহরান, বলে ইরানি গণমাধ্যম জানিয়েছে।
এর আগে, আইএইএ নিশ্চিত করে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ‘তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায়’ হামলা চালালেও আশপাশের এলাকায় তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা বৃদ্ধির কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে মার্কিন বোমা হামলার পর স্যাটেলাইট ইমেজে দেখা গেছে, সেখানে ছয়টি নতুন গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে মার্কিন বোমা হামলার পরই এই গর্তগুলো সৃষ্টি হয়েছে
রোববার, ২২ জুন ২০২৫
স্থানীয় সময় গতকাল শনিবার রাতে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর বিমান হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
এই হামলার কিছুক্ষণের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি ভাষণ দেন, যা যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে সরাসরি সম্প্রচারিত হয়।
ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনাকে লক্ষ্য করে হামলা
যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ‘ধ্বংসপ্রাপ্ত’, দাবি মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রীর
সাহসী, ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত, মূল্যায়ন ইসরায়েলের
গর্হিত ও অপরাধমূলক, প্রতিক্রিয়া ইরানের
কূটনীতিই সমাধানের পথ, পরামর্শ জাতিসংঘের
ভাষণে তিনি জানান, ইরানের ফোর্দো, নাতাঞ্জ এবং ইসফাহান এলাকায় এই হামলা চালানো হয়েছে।
ট্রাম্প সতর্ক করে বলেন, ইরান যদি শান্তি আলোচনায় না বসে, তবে তাদের বিরুদ্ধে আরও বড় ধরনের হামলা চালানো হবে। তিনি বলেন, ‘হয় শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে, না হয় ইরানের ওপর এমন হামলা চালানো হবে, যা গত আট দিনে তারা দেখেনি।’
এক মার্কিন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, ইরানে চালানো এই হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের বি-টু স্পিরিট বোমারু বিমান ব্যবহার করা হয়েছে।
মাটির নিচে ৬০ মিটার গভীরে অবস্থিত স্থাপনাগুলোতে আঘাত হানার সক্ষমতা সম্পন্ন ৩০,০০০ পাউন্ড ওজনের জিবিইউ-৫৭ বোমা কেবল এই বিমান থেকেই নিক্ষেপ করা সম্ভব।
কিছুদিন আগে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের চার হাজার কিলোমিটারের মধ্যে একটি বিমানঘাঁটিতে এই ধরনের কয়েকটি বিমান মোতায়েন করেছিল। তবে দুদিন আগে এসব বিমান সরিয়ে ইরান থেকে প্রায় সাড়ে নয় হাজার কিলোমিটার দূরের একটি ঘাঁটিতে স্থানান্তর করা হয়।
ইরানে হামলার দৃশ্য হোয়াইট হাউসের সিচুয়েশন রুমে বসে সরাসরি পর্যবেক্ষণ করেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এ সময় তার সঙ্গে ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওসহ অন্যান্য শীর্ষ কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
স্যাটেলাইট ইমেজে ইঙ্গিত
রাতভর চালানো এই হামলার হাই-রেজ্যুলেশন স্যাটেলাইট ইমেজ এখনও প্রকাশিত হয়নি। তবে স্যাটেলাইট ইমেজ সরবরাহকারী সংস্থা ম্যাক্সার হামলার আগে তোলা ফোর্দো পারমাণবিক কেন্দ্রের কিছু ছবি প্রকাশ করেছে।
ম্যাক্সার জানিয়েছে, ১৯ ও ২০ জুন তোলা ছবিতে ভূগর্ভস্থ সামরিক স্থাপনাটির প্রবেশপথের আশপাশে অস্বাভাবিক ট্রাক ও যান চলাচল দেখা গেছে। প্রথম ছবিতে দেখা যায়, একটি টানেলের প্রবেশপথের দিকে যাওয়ার সড়কের পাশে ১৬টি পণ্যবাহী ট্রাক সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছে।
পরবর্তী ছবিতে মূল স্থাপনার কাছে ট্রাক ও বুলডোজার দেখা যায়। এছাড়া, টানেলের ভেতরে এবং আশপাশে খননকাজের চিহ্ন রয়েছে, যা থেকে ধারণা করা যায়, ইরান হয়তো হামলার আশঙ্কায় স্থাপনাটি আরও সুরক্ষিত করার চেষ্টা করছিল।
ম্যাক্সার আরও জানায়, ২১ জুন তোলা আরেকটি ছবিতে ফোর্দো স্থাপনা থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে নতুন করে নির্মিত প্রতিরক্ষা কাঠামোরও চিহ্ন দেখা গেছে।
দ্বিতীয় দফায় হুমকি ট্রাম্পের
হামলার পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ভাষণ দেয়ার পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ একটি পোস্টে দ্বিতীয় দফায় হুমকি দেন ইরানকে।
তিনি লিখেন, ‘ইরান যদি যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের পাল্টা হামলা চালায়, তাহলে তার জবাব হবে বহু গুণ বেশি শক্তিশালী।’
ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া
যুক্তরাষ্ট্রের হামলাকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ‘সাহসী সিদ্ধান্ত’ হিসেবে অভিহিত করে তাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগ। এক্স (সাবেক টুইটার)-এ তিনি লেখেন, ‘মানব ইতিহাসের পাতায় এটি একটি মুহূর্ত, যেখানে স্বাধীনতা, দায়িত্ব ও নিরাপত্তার নীতিগুলো জয়লাভ করেছে। এটি সন্ত্রাস ও অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে এক স্পষ্ট বার্তা।’
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ হামলাকে ‘ঐতিহাসিক’ আখ্যা দিয়ে বলেন, ইরান যেন পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্র সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি জানান, ইসরায়েলি অভিযান অব্যাহত থাকবে এবং যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল জোট আগের চেয়ে আরও শক্তিশালী হয়েছে।
ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদিওন সার ট্রাম্পের সিদ্ধান্তকে ‘সাহসী’ উল্লেখ করে বলেন, ‘ট্রাম্প তার সাহসী সিদ্ধান্তের জন্য ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে নাম লিখিয়েছেন।’ তিনি আরও বলেন, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে ‘ঐতিহাসিক পদক্ষেপ’ নেয়া হয়েছে।
ইরানের নিন্দা ও পাল্টা প্রতিক্রিয়া
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইয়েদ আব্বাস আরাঘচি যুক্তরাষ্ট্রের হামলাকে ‘গর্হিত’ ও ‘অপরাধমূলক’ বলে নিন্দা জানান।
তিনি বলেন, ‘ইরান তার সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য সব বিকল্প সংরক্ষণ করছে।’ এক্স-এ দেয়া এক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘আজ সকালের ঘটনাগুলো ভয়াবহ এবং এর পরিণতি দীর্ঘস্থায়ী হবে। জাতিসংঘের প্রতিটি সদস্যকে এই বিপজ্জনক, আইনবহির্ভূত আচরণের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘ সনদের গুরুতর লঙ্ঘন করেছে।
এক টেলিভিশন ভাষণে তিনি বলেন, ‘ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার সময় বলেছিলেন, তিনি মধ্যপ্রাচ্যে আমেরিকার দীর্ঘ ও ব্যয়বহুল যুদ্ধ বন্ধ করবেন। কিন্তু এখন তিনি উল্টো আমাদের সঙ্গে কূটনীতির নামে প্রতারণা করেছেন এবং আমেরিকান জনগণকেও ঠকিয়েছেন। তিনি এমন একজন যুদ্ধাপরাধীর নির্দেশে কাজ করছেন, যিনি বহুদিন ধরে আমেরিকার অর্থ ও জনশক্তি ব্যবহার করে ইসরায়েলের স্বার্থে কাজ করে যাচ্ছেন।’
যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত সাইয়েদ আলী মৌসাভি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ইরানে যে রাতভর বিমান হামলা চালিয়েছে, তা ‘জাতিসংঘ সনদের প্রতি অসম্মান’ এবং আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন।
বিবিসির উপস্থাপক লরা কুয়েনসবার্গকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মৌসাভি বলেন, ‘এই হামলা ইরানের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখ-তার লঙ্ঘন।’
তবে এই হামলায় ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সে বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি সরাসরি কোনো মন্তব্য করেননি।
কুয়েনসবার্গ জানতে চান, যদি যুক্তরাষ্ট্র আবার হামলা চালায়, তাহলে ইরান কি তার পারমাণবিক কর্মসূচি পরিত্যাগ করবে এবং ইসরায়েলের সঙ্গে বিরোধের অবসান ঘটাবে? জবাবে মৌসাভি বলেন, ‘ইরান ও যুক্তরাষ্ট্র পারমাণবিক আলোচনার মাঝামাঝি অবস্থানে রয়েছে।’ একইসঙ্গে তিনি অভিযোগ করেন, ‘ইসরায়েলি শাসকগোষ্ঠী আমাদের ওপর আগ্রাসন চালিয়েছে।’
গত সপ্তাহে দুইপক্ষের বেসামরিক প্রাণহানির বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘আমরা আত্মরক্ষা করছি।’
ইরানের পরমাণু শক্তি সংস্থার বিবৃতি
ইরানের পারমাণবিক শক্তি সংস্থা তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলাকে ‘বর্বর’ বলে আখ্যা দিয়েছে এবং তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।
এক বিবৃতিতে সংস্থাটি আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (ওঅঊঅ) ‘উদাসীনতা এবং এমনকি সহাবস্থানের’ অভিযোগও তোলে।
তারা বৈশ্বিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানায়, যেন এই হামলার নিন্দা জানানো হয় এবং ইরানের ন্যায্য অবস্থানকে সমর্থন দেয়া হয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘শত্রুদের ষড়যন্ত্র থাকলেও ইরানের বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞরা দেশের পারমাণবিক শিল্পকে বিরামহীনভাবে এগিয়ে নিয়ে যাবেন।’ এর পাশাপাশি, ‘আইনি ব্যবস্থা’সহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার কথাও উল্লেখ করা হয়।
হামাসের প্রতিক্রিয়া
ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলাকে ‘নির্লজ্জ আগ্রাসন’ বলে আখ্যা দিয়েছে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস।
এক বিবৃতিতে তারা জানায়, ‘এই হামলা আন্তর্জাতিক আইনের ঘোরবিরোধী এবং আন্তর্জাতিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য সরাসরি হুমকি।’
উল্লেখ্য, হামাসকে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইসরায়েলসহ বেশ কয়েকটি দেশ সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে।
আরব বিশ্বের প্রতিক্রিয়া
যুক্তরাষ্ট্রের এই হামলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আরব বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানায়।
মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে পারমাণবিক আলোচনাসংক্রান্ত মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করা ওমান যুক্তরাষ্ট্রের হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।
ওমানের সুলতান বলেন, ‘এই সরাসরি বিমান হামলা এ অঞ্চলে উত্তেজনা বাড়িয়ে দিয়েছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।’
যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র সৌদি আরব হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরানের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের নিন্দা জানায়।
সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এই ধরনের হামলা একটি সার্বভৌম রাষ্ট্রের ওপর সরাসরি আঘাত।’
কাতার সতর্ক করে জানিয়েছে, ‘বর্তমান উত্তেজনাকর পরিস্থিতি আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতার জন্য চরম বিপদ ডেকে আনতে পারে।’
দেশটি সবপক্ষকে ‘বিচক্ষণতা ও ধৈর্য’ ধারণের আহ্বান জানিয়েছে।
মিসরও একইভাবে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যে, ‘এই হামলা মধ্যপ্রাচ্যে আরও বিশৃঙ্খলা ও উত্তেজনার জন্ম দিতে পারে।’
তারা জোর দিয়ে বলেছে, ‘এই সংকটের একমাত্র সমাধান রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে সম্ভব; সামরিক পথ নয়।’
লেবাননের রাষ্ট্রপতি জোসেফ আউন বলেন, ‘ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে বোমা হামলা উত্তেজনার মাত্রা বাড়িয়ে তুলেছে, যা এ অঞ্চল এবং লেবাননের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি।’
জাতিসংঘের প্রতিক্রিয়া
জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, এখন ‘সংঘাত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার বড় ধরনের ঝুঁকি’ তৈরি হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ দেয়া এক পোস্টে তিনি আরও বলেন, এর ফলে ‘বেসামরিক নাগরিক, মধ্যপ্রাচ্য ও বিশ্বের জন্য ভয়াবহ ও বিপর্যয়মূলক পরিস্থিতি’ তৈরি হতে পারে।
তিনি বলেন, এই মুহূর্তে কেবল কূটনৈতিক পথেই সমস্যার সমাধান সম্ভব।
জরুরি বৈঠক ডেকেছে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা
ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর, সোমবার জরুরি বৈঠক ডেকেছে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ)।
এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে ইরানে সৃষ্ট জরুরি পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে, জানিয়েছেন সংস্থার প্রধান।
এদিকে, ইরানের পরমাণু শক্তি সংস্থার প্রধান মোহাম্মদ ইসলামি আইএইএ-কে এক চিঠিতে জানিয়েছেন, তেহরান চায় যুক্তরাষ্ট্রের এই হামলার বিষয়ে তদন্ত হোক। একই সঙ্গে আইএইএ’র কাছে যুক্তরাষ্ট্রের এই হামলার ‘নিন্দা জানানোর’ আহ্বান জানিয়েছে তেহরান, বলে ইরানি গণমাধ্যম জানিয়েছে।
এর আগে, আইএইএ নিশ্চিত করে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ‘তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায়’ হামলা চালালেও আশপাশের এলাকায় তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা বৃদ্ধির কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।