যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যে ৯০ দিনের সময়সীমা দিয়েছিলেন, তা শেষ হতে আর মাত্র কয়েক দিন বাকি। ৯ জুলাই রাত ১২টা ১ মিনিটে মেয়াদ শেষ হওয়ার পর কী ঘটবে, তা এখনো অনিশ্চিত।
এই সময়সীমা পেরিয়ে গেলে পরিস্থিতি কী হবে, সে বিষয়ে নিশ্চিত কোনো দিকনির্দেশনা নেই। তবে এ নিয়ে বিশ্ব অর্থনীতিতে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে।
গত ২ এপ্রিল ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান বাণিজ্য অংশীদারদের পণ্যে পাল্টা শুল্ক আরোপ করেন, কিছু ক্ষেত্রে যার হার ৫০ শতাংশ পর্যন্ত। সেই দিনটিকে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবস হিসেবে উল্লেখ করেন। বাস্তবে এটি ছিল গত ১০০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ শুল্ক। অর্থনীতিবিদদের আশঙ্কা, এ কারণে বিশ্বজুড়ে মন্দা দেখা দিতে পারে।
৯ এপ্রিল থেকে এসব শুল্ক কার্যকর হওয়ার শঙ্কায় ওয়াল স্ট্রিট ও বন্ড বাজারে অস্থিরতা শুরু হয়। পরে ট্রাম্প তিন মাসের জন্য শুল্ক স্থগিত রাখার ঘোষণা দেন, যাতে বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগ কিছুটা কমে।
তবে এখনও যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি হওয়া প্রায় সব পণ্যের ওপর কমপক্ষে ১০ শতাংশ শুল্ক বহাল রয়েছে। শেয়ারবাজারের ক্ষতি এখনো পূরণ হয়নি, মূল্যস্ফীতির হারও বদলায়নি। নতুন করে শুল্ক বাড়লে অর্থনীতিতে ইতিবাচক অগ্রগতি মুছে যেতে পারে।
এই সময়ের মধ্যে মাত্র তিনটি চুক্তি ঘোষণা করা হয়েছে, যার একটি ভিয়েতনামের সঙ্গে, সেটিও এখনো চূড়ান্ত হয়নি। ট্রাম্প প্রশাসন বলছে, আরও চুক্তি হবে। অন্যদিকে তিনি হুমকি দিচ্ছেন, যারা চুক্তি করবে না, তাদের রপ্তানি পণ্যে যুক্তরাষ্ট্র নতুন শুল্ক আরোপ করবে।
জুলাইয়ের ৯ তারিখ ঘনিয়ে আসার আগে প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলছেন, শুল্কহার ফিরিয়ে আনা বা আরও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হতে পারে। তবে ‘যেসব দেশ আন্তরিকভাবে আলোচনা করছে’, তাদের জন্য সময়সীমা বাড়ানোর কথাও ভাবা হচ্ছে। শেষ সিদ্ধান্ত ট্রাম্পের হাতে, তবে তিনিও দ্বিধায় আছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
এক বক্তব্যে ট্রাম্প বলেন, “আমরা চাইলে যা খুশি করতে পারি, সময়সীমা বাড়াতেও পারি, কমাতেও পারি।” তিনি বলেন, সবাইকে চিঠি পাঠিয়ে জানাবেন, “অভিনন্দন, আপনারা এখন থেকে ২৫ শতাংশ শুল্ক দেবেন।”
তিনি আরও বলেন, “কোনো দেশ আমাদের সঙ্গে কেমন আচরণ করছে, তা দেখা হবে—ভালো না খারাপ। কিছু দেশের ক্ষেত্রে সোজা একটা বড় সংখ্যা পাঠিয়ে দেব।” শুক্রবার তিনি জানান, কয়েক দিনের মধ্যে চিঠি পাঠানো শুরু হবে এবং শুল্কহার হবে ১০ থেকে ৭০ শতাংশের মধ্যে।
আশার বিষয় হলো, এসব নতুন হার আগামী ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে, অর্থাৎ এখনো আলোচনা সম্ভব। ভিয়েতনামের সঙ্গে চুক্তিতে সর্বনিম্ন ২০ শতাংশ শুল্ক নির্ধারিত হয়েছে, যা তিন মাসের বিরতির সময়ের দ্বিগুণ। তবে এপ্রিলের ঘোষণামতে ভিয়েতনামের জন্য ৪৬ শতাংশ শুল্ক নির্ধারিত ছিল, সেদিক থেকে এটি কিছুটা স্বস্তির।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি ট্রাম্পের কৌশল হতে পারে। প্রচারণায় দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তিনি বিদেশি পণ্যে শুল্ক বাড়িয়ে রাজস্ব আনার এবং যুক্তরাষ্ট্রে শিল্প ও কর্মসংস্থান ফেরানোর চেষ্টা করছেন।
ইউবিএস গ্লোবাল ওয়েলথ ম্যানেজমেন্টের বৈশ্বিক ইকুইটি বিভাগের প্রধান উলরিকে হফম্যান-বারচার্ডি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র-ভিয়েতনাম চুক্তিকে আমরা ইতিবাচক অগ্রগতি হিসেবে দেখি, যা ভবিষ্যতে আরও টেকসই দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তির পথ দেখাতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, “চুক্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকলেও বাজার ধীরে ধীরে মানিয়ে নিচ্ছে। শেষ পর্যন্ত ট্রাম্প প্রশাসন অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাকে অগ্রাধিকার দেবে, বিশেষ করে ২০২৬ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনের আগে।”
রোববার, ০৬ জুলাই ২০২৫
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যে ৯০ দিনের সময়সীমা দিয়েছিলেন, তা শেষ হতে আর মাত্র কয়েক দিন বাকি। ৯ জুলাই রাত ১২টা ১ মিনিটে মেয়াদ শেষ হওয়ার পর কী ঘটবে, তা এখনো অনিশ্চিত।
এই সময়সীমা পেরিয়ে গেলে পরিস্থিতি কী হবে, সে বিষয়ে নিশ্চিত কোনো দিকনির্দেশনা নেই। তবে এ নিয়ে বিশ্ব অর্থনীতিতে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে।
গত ২ এপ্রিল ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান বাণিজ্য অংশীদারদের পণ্যে পাল্টা শুল্ক আরোপ করেন, কিছু ক্ষেত্রে যার হার ৫০ শতাংশ পর্যন্ত। সেই দিনটিকে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবস হিসেবে উল্লেখ করেন। বাস্তবে এটি ছিল গত ১০০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ শুল্ক। অর্থনীতিবিদদের আশঙ্কা, এ কারণে বিশ্বজুড়ে মন্দা দেখা দিতে পারে।
৯ এপ্রিল থেকে এসব শুল্ক কার্যকর হওয়ার শঙ্কায় ওয়াল স্ট্রিট ও বন্ড বাজারে অস্থিরতা শুরু হয়। পরে ট্রাম্প তিন মাসের জন্য শুল্ক স্থগিত রাখার ঘোষণা দেন, যাতে বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগ কিছুটা কমে।
তবে এখনও যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি হওয়া প্রায় সব পণ্যের ওপর কমপক্ষে ১০ শতাংশ শুল্ক বহাল রয়েছে। শেয়ারবাজারের ক্ষতি এখনো পূরণ হয়নি, মূল্যস্ফীতির হারও বদলায়নি। নতুন করে শুল্ক বাড়লে অর্থনীতিতে ইতিবাচক অগ্রগতি মুছে যেতে পারে।
এই সময়ের মধ্যে মাত্র তিনটি চুক্তি ঘোষণা করা হয়েছে, যার একটি ভিয়েতনামের সঙ্গে, সেটিও এখনো চূড়ান্ত হয়নি। ট্রাম্প প্রশাসন বলছে, আরও চুক্তি হবে। অন্যদিকে তিনি হুমকি দিচ্ছেন, যারা চুক্তি করবে না, তাদের রপ্তানি পণ্যে যুক্তরাষ্ট্র নতুন শুল্ক আরোপ করবে।
জুলাইয়ের ৯ তারিখ ঘনিয়ে আসার আগে প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলছেন, শুল্কহার ফিরিয়ে আনা বা আরও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হতে পারে। তবে ‘যেসব দেশ আন্তরিকভাবে আলোচনা করছে’, তাদের জন্য সময়সীমা বাড়ানোর কথাও ভাবা হচ্ছে। শেষ সিদ্ধান্ত ট্রাম্পের হাতে, তবে তিনিও দ্বিধায় আছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
এক বক্তব্যে ট্রাম্প বলেন, “আমরা চাইলে যা খুশি করতে পারি, সময়সীমা বাড়াতেও পারি, কমাতেও পারি।” তিনি বলেন, সবাইকে চিঠি পাঠিয়ে জানাবেন, “অভিনন্দন, আপনারা এখন থেকে ২৫ শতাংশ শুল্ক দেবেন।”
তিনি আরও বলেন, “কোনো দেশ আমাদের সঙ্গে কেমন আচরণ করছে, তা দেখা হবে—ভালো না খারাপ। কিছু দেশের ক্ষেত্রে সোজা একটা বড় সংখ্যা পাঠিয়ে দেব।” শুক্রবার তিনি জানান, কয়েক দিনের মধ্যে চিঠি পাঠানো শুরু হবে এবং শুল্কহার হবে ১০ থেকে ৭০ শতাংশের মধ্যে।
আশার বিষয় হলো, এসব নতুন হার আগামী ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে, অর্থাৎ এখনো আলোচনা সম্ভব। ভিয়েতনামের সঙ্গে চুক্তিতে সর্বনিম্ন ২০ শতাংশ শুল্ক নির্ধারিত হয়েছে, যা তিন মাসের বিরতির সময়ের দ্বিগুণ। তবে এপ্রিলের ঘোষণামতে ভিয়েতনামের জন্য ৪৬ শতাংশ শুল্ক নির্ধারিত ছিল, সেদিক থেকে এটি কিছুটা স্বস্তির।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি ট্রাম্পের কৌশল হতে পারে। প্রচারণায় দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তিনি বিদেশি পণ্যে শুল্ক বাড়িয়ে রাজস্ব আনার এবং যুক্তরাষ্ট্রে শিল্প ও কর্মসংস্থান ফেরানোর চেষ্টা করছেন।
ইউবিএস গ্লোবাল ওয়েলথ ম্যানেজমেন্টের বৈশ্বিক ইকুইটি বিভাগের প্রধান উলরিকে হফম্যান-বারচার্ডি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র-ভিয়েতনাম চুক্তিকে আমরা ইতিবাচক অগ্রগতি হিসেবে দেখি, যা ভবিষ্যতে আরও টেকসই দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তির পথ দেখাতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, “চুক্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকলেও বাজার ধীরে ধীরে মানিয়ে নিচ্ছে। শেষ পর্যন্ত ট্রাম্প প্রশাসন অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাকে অগ্রাধিকার দেবে, বিশেষ করে ২০২৬ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনের আগে।”