alt

আন্তর্জাতিক

ব্রিকস সম্মেলনে ভারতের প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি

বিদেশী সংবাদ মাধ্যম : মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫

ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত এবং চীনকে নিয়ে তৈরি ব্রিকসের মঞ্চ। ব্রাজিলে চলছে ব্রিকসের সম্মেলন। সেখানে ব্রিকস দেশগুলো লিখিত সিদ্ধান্তে জানিয়েছে, ট্রাম্প সরকার যে নতুন শুল্কনীতি চালু করার কথা বলছে, তা তারা সমর্থন করে না। ব্রিকসের এই সিদ্ধান্ত সম্প্রচারিত হওয়ার পরেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, যে দেশ আমেরিকার শুল্কনীতির বিরোধিতা করবে, তাদের ওপর আরও ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে।

ব্রিকস জোট নিয়ে আমেরিকা কখনোই খুশি নয়। কারণ এই মঞ্চে রাশিয়া এবং চীনের মতো শক্তি আছে। ভারতের ব্রিকসে থাকাও আমেরিকা খুব ভালো চোখে দেখে না। কিন্তু ভারত বরাবরই আন্তর্জাতিক কূটনীতির ভারসাম্য রক্ষা করেছে একইসঙ্গে আমেরিকা এবং রাশিয়ার সঙ্গে সমান সম্পর্ক বজায় রেখে। বর্তমান ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতিতেও কি ভারত সেই ভারসাম্য বজায় রাখতে পারবে?

সম্প্রতি সাংহাই কোঅপারেশনের বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। সেখানে সরাসরি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদে মদত দেওয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন রাজনাথ। পাশাপাশি সাংহাই কোঅপারেশনের লিখিত সিদ্ধান্তে ভারত পহেলগাম-কা-ের উল্লেখ চেয়েছিল।

কিন্তু বাস্তবে তা ঘটেনি। যে কারণে ওই যৌথ সিদ্ধান্তে ভারত সই করেনি। বিশেষজ্ঞেরা সে সময় বলেছিলেন, বিশ্বের কাছে পাকিস্তানকে জড়িয়ে সন্ত্রাসের যে বার্তা ভারত দিতে চায়, সাংহাইয়ে সেই কাজে ব্যর্থ হয়েছে ভারত। ব্রিকস সম্মেলনের যৌথ সিদ্ধান্তে ভারত পহেলগামের কথা উল্লেখ করতে পেরেছে। বিশেষজ্ঞদের একাংশ একে ভারতের জয় বলেই মনে করছেন। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধ্যাপক এবং কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞ অনিন্দ্যজ্যোতি মজুমদার এবিষয়ে জানিয়েছেন, “সাংহাই কোঅপারেশনের মঞ্চ এবং ব্রিকসের মঞ্চ এক নয়। ফলে এই দুই সম্মেলনকে একই ব্র্যাকেটে রাখা অনুচিত হবে। ব্রিকসের গুরুত্ব ভূরাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ। সেখানে ভারত পেহেলগামের কথা লিখিত সিদ্ধান্তে উল্লেখ করাতে পেরেছে, এটা নিঃসন্দেহে বড় ব্যাপার। ভারত নিজের অবস্থান তুলে ধরতে পেরেছে।

কিন্তু একইসঙ্গে মনে রাখা উচিত, এতে ভূরাজনীতিতে কোনো আলোড়ন তৈরি হবে না।”

অনিন্দ্যের মতে, ভারত এই সাফল্য অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে আলোড়ন ফেলবে সন্দেহ নেই, কিন্তু ভূরাজনীতিতে তেমন কোনো প্রভাব ফেলবে না। কারণ, ব্রিকসের মঞ্চে পাকিস্তান উপস্থিত নেই। সাংহাইয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে সরাসরি লড়াই করতে হয়েছে ভারতকে। ব্রিকসে তার প্রয়োজন হয়নি। ব্রিকসের প্রতিটি রাষ্ট্রই পেহেলগামের ঘটনার নিন্দা করেছিল আগে। আর ব্রিকসের সিদ্ধান্তে পাকিস্তানের নাম কোথাও বলা হয়নি। ফলে, দক্ষিণ-এশিয়ার কূটনীতিতেও এর বিশেষ কোনো প্রভাব আছে বলে অনিন্দ্য মনে করেন না।

অনিন্দ্যের সঙ্গে সহমত ওপি জিন্দল বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধ্যাপক তথা বিশিষ্ট কূটনীতি বিশ্লেষক শ্রীরাধা দত্ত। তিনি জানিয়েছেন, “সন্ত্রাসবাদ নিয়ে ভারত বিশ্বমঞ্চে অনেককিছু করার চেষ্টা করলেও বাস্তবে তা ফলপ্রসূ হয়নি। পাকিস্তান নিয়ে পশ্চিমের দেশগুলোর অবস্থান ভারত বদলাতে পারেনি। ফলে সন্ত্রাসবাদ নিয়ে ভারত এখন যা যা করছে, সবটাই দেশের গ্যালারির জন্য, এর বিশেষ কোনো প্রভাব ভূরাজনীতিতে পড়ছে না।”

কূটনৈতিক ভাষ্যকার প্রণয় শর্মা অবশ্য অনিন্দ্যের সঙ্গে সম্পূর্ণ সহমত নন। তিনি মনে করেন, কূটনৈতিক অবস্থানের জায়গা থেকে ব্রিকসের সিদ্ধান্তে পেহেলগামের উল্লেখ ভারতের ভূরাজনৈতিক সাফল্য হিসেবেই দেখা উচিত। প্রণয় জানিয়েছেন, “স্বাভাবিকভাবেই সাংহাই কোঅপারেশনের রেজোলিউশনের সঙ্গে ব্রিকসের তুলনা টানা হচ্ছে। সাংহাইতে ভারত যেখানে ধাক্কা খেয়েছিল, ব্রিকসে সেখান থেকে ভারত খানিকটা উত্তরণের পথ তৈরি করতে পেরেছে, এটা বলাই যায়।”

প্রণয়ের বক্তব্য, ভূরাজনীতিতে গ্লোবাল সাউথ এখন একটি অন্যতম আলোচ্য বিষয়। ব্রিকস গ্লোবাল সাউথের গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চ। যে কারণে, পশ্চিমা বিশ্ব ব্রিকসের মঞ্চকে সমালোচনামূলক দৃষ্টিতে দেখে। এই মঞ্চে ভারতের অবস্থান যে গুরুত্বপূর্ণ তা এবারেও প্রমাণ হয়েছে। এবারের ব্রিকসের সিদ্ধান্তে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে এসেছে। ইতোমধ্যেই বিশ্বরাজনীতিতে যা আলোড়ন ফেলে দিয়েছে। ব্রিকসের সিদ্ধান্তে জানানো হয়েছে, তারা আমেরিকার শুল্কনীতির বিরোধিতা করছে। ট্রাম্প ইতোমধ্যেই এর জবাব দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, বিরোধিতা করলে আরও ১০ শতাংশ শুল্ক যুক্ত করা হবে।

ট্রাম্পের শুল্কনীতি নিয়ে আমেরিকার সঙ্গে ভারতের দফায় দফায় দ্বিপাক্ষিক আলোচনা চলছে। আমেরিকা ভারতের কৃষিবাজারে প্রবেশের পরিবর্তে ভারতকে শুল্ক ছাড় দিতে চাইছে। অন্যদিকে ভারত আমেরিকাকে কৃষির বদলে অন্য সুযোগ দিয়ে শুল্কনীতি থেকে নিজেকে মুক্ত করতে চাইছে।দ্বিপাক্ষিক আলোচনা চলার মধ্যেই আমেরিকা জানিয়েছে, নতুন শুল্কনীতি ধার্যের মেয়াদ আরেকটু বাড়ানো হয়েছে। ৯ জুলাইয়ের পরিবর্তে ১ অগাস্ট পর্যন্ত সময়সীমা বর্ধিত করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ভারত সরাসরি ট্রাম্পের শুল্কনীতির বিরোধী মঞ্চে অংশ নেওয়ায় আমেরিকা আরেকটু কঠিন মনোভাব নিতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ।

ইউক্রেনে আরও অস্ত্র পাঠাবে যুক্তরাষ্ট্র

ছবি

সাইপ্রাসে গড়ে উঠছে ‘মিনি ইসরায়েল’

বিশ্বজুড়ে একের পর এক খনি কিনছে চীন

সিরিয়ার এইচটিএস গোষ্ঠীর সন্ত্রাসী তকমা প্রত্যাহার করল যুক্তরাষ্ট্র

ছবি

ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে কী আছে, এটা কি গাজায় যুদ্ধ থামাতে পারবে

ছবি

পাকিস্তানে বৃষ্টি ও ভূমিধসে ১৯ জনের মৃত্যু, বন্যা সতর্কতা জারি

ছবি

টেক্সাসে হড়পা বানে শতাধিক মানুষের মৃত্যু, নিখোঁজ বহু

ছবি

নেতানিয়াহুর অনড় অবস্থান, ট্রাম্প চান দ্রুত চুক্তি

গাজায় ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞের মধ্যেই শুরু হচ্ছে যুদ্ধবিরতি আলোচনা

ছবি

ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের পর প্রথমবারের মতো জনসমক্ষে খামেনি

পুতিনের পাশে কিম, জেলেনস্কিকে দূরে ঠেলে দিচ্ছেন ট্রাম্প

ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা ‘ফলপ্রসূ’ হয়েছে : জেলেনস্কি

যুক্তরাষ্ট্রে নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা দিলেন ইলন মাস্ক

ছবি

‘ভারতে এক বছরেই ৯৪৭টি ঘৃণা অপরাধ, টার্গেট মুসলিমসহ সংখ্যালঘুরা’

ছবি

মাস্কের নতুন দল গঠনের উদ্যোগ ‘হাস্যকর’: ট্রাম্প

ছবি

টেক্সাসে বন্যায় ৭৮ জনের মৃত্যু, শিশুই ২৮

ছবি

ইয়েমেনের ৩ বন্দর ও ১ বিদ্যুৎকেন্দ্রে ইসরায়েলের হামলা

ছবি

হামাসের শর্ত ‘অগ্রহণযোগ্য’ বললেও আলোচনা চালিয়ে যাবে ইসরায়েল

ছবি

৯ জুলাইয়ের পর কী হবে, পরিষ্কার নয়; শুল্ক বাড়ানোর হুমকি ট্রাম্পের

ছবি

ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধের পর প্রথমবার প্রকাশ্যে এলেন খামেনি

ছবি

যুক্তরাষ্ট্রে ‘আমেরিকা পার্টি’ গঠনের ঘোষণা ইলন মাস্কের

ছবি

টেক্সাসে আকস্মিক বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৩, নিখোঁজ ২৭ শিশু

ছবি

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ৬৪ ফিলিস্তিনি নিহত, ত্রাণ কেন্দ্রের কাছেও হামলা

ছবি

তুরস্কের একদিনে তুষারপাত, অন্যদিকে দাবানল

রাশিয়াকে ইউক্রেন যুদ্ধে হারতে দিতে পারি না : ইইউকে চীন

ছবি

গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ইতিবাচক সাড়া দিল হামাস

ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধে রাজি নয় ইরান : ট্রাম্প

ছবি

সিরিয়া কি ‘ইসরায়েলের’ সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করবে?

যুদ্ধবিরতির শর্ত ভেঙে লেবাননে হামলা করল ইসরায়েল

ছবি

‘আগামী সপ্তাহেই’ গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির আশাবাদ ট্রাম্পের

ছবি

গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতির পথে সম্ভাবনা, যুক্তরাষ্ট্র–সমর্থিত প্রস্তাবে সম্মতি হামাসের

ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে হড়কা বানে ২৪ জনের মৃত্যু

শিকাগোতে বন্দুকধারীর হামলায় নিহত ৪

ছবি

তালেবান সরকারকে প্রথম দেশ হিসেবে রাশিয়ার স্বীকৃতি

ছবি

চীনের হামলা মোকাবিলায় ব্যাপক যুদ্ধ প্রস্তুতি তাইওয়ানের

গুপ্তচর সন্দেহ, হাজার হাজার আফগানকে দেশে ফেরত পাঠাচ্ছে ইরান

tab

আন্তর্জাতিক

ব্রিকস সম্মেলনে ভারতের প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি

বিদেশী সংবাদ মাধ্যম

মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫

ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত এবং চীনকে নিয়ে তৈরি ব্রিকসের মঞ্চ। ব্রাজিলে চলছে ব্রিকসের সম্মেলন। সেখানে ব্রিকস দেশগুলো লিখিত সিদ্ধান্তে জানিয়েছে, ট্রাম্প সরকার যে নতুন শুল্কনীতি চালু করার কথা বলছে, তা তারা সমর্থন করে না। ব্রিকসের এই সিদ্ধান্ত সম্প্রচারিত হওয়ার পরেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, যে দেশ আমেরিকার শুল্কনীতির বিরোধিতা করবে, তাদের ওপর আরও ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে।

ব্রিকস জোট নিয়ে আমেরিকা কখনোই খুশি নয়। কারণ এই মঞ্চে রাশিয়া এবং চীনের মতো শক্তি আছে। ভারতের ব্রিকসে থাকাও আমেরিকা খুব ভালো চোখে দেখে না। কিন্তু ভারত বরাবরই আন্তর্জাতিক কূটনীতির ভারসাম্য রক্ষা করেছে একইসঙ্গে আমেরিকা এবং রাশিয়ার সঙ্গে সমান সম্পর্ক বজায় রেখে। বর্তমান ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতিতেও কি ভারত সেই ভারসাম্য বজায় রাখতে পারবে?

সম্প্রতি সাংহাই কোঅপারেশনের বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। সেখানে সরাসরি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদে মদত দেওয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন রাজনাথ। পাশাপাশি সাংহাই কোঅপারেশনের লিখিত সিদ্ধান্তে ভারত পহেলগাম-কা-ের উল্লেখ চেয়েছিল।

কিন্তু বাস্তবে তা ঘটেনি। যে কারণে ওই যৌথ সিদ্ধান্তে ভারত সই করেনি। বিশেষজ্ঞেরা সে সময় বলেছিলেন, বিশ্বের কাছে পাকিস্তানকে জড়িয়ে সন্ত্রাসের যে বার্তা ভারত দিতে চায়, সাংহাইয়ে সেই কাজে ব্যর্থ হয়েছে ভারত। ব্রিকস সম্মেলনের যৌথ সিদ্ধান্তে ভারত পহেলগামের কথা উল্লেখ করতে পেরেছে। বিশেষজ্ঞদের একাংশ একে ভারতের জয় বলেই মনে করছেন। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধ্যাপক এবং কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞ অনিন্দ্যজ্যোতি মজুমদার এবিষয়ে জানিয়েছেন, “সাংহাই কোঅপারেশনের মঞ্চ এবং ব্রিকসের মঞ্চ এক নয়। ফলে এই দুই সম্মেলনকে একই ব্র্যাকেটে রাখা অনুচিত হবে। ব্রিকসের গুরুত্ব ভূরাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ। সেখানে ভারত পেহেলগামের কথা লিখিত সিদ্ধান্তে উল্লেখ করাতে পেরেছে, এটা নিঃসন্দেহে বড় ব্যাপার। ভারত নিজের অবস্থান তুলে ধরতে পেরেছে।

কিন্তু একইসঙ্গে মনে রাখা উচিত, এতে ভূরাজনীতিতে কোনো আলোড়ন তৈরি হবে না।”

অনিন্দ্যের মতে, ভারত এই সাফল্য অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে আলোড়ন ফেলবে সন্দেহ নেই, কিন্তু ভূরাজনীতিতে তেমন কোনো প্রভাব ফেলবে না। কারণ, ব্রিকসের মঞ্চে পাকিস্তান উপস্থিত নেই। সাংহাইয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে সরাসরি লড়াই করতে হয়েছে ভারতকে। ব্রিকসে তার প্রয়োজন হয়নি। ব্রিকসের প্রতিটি রাষ্ট্রই পেহেলগামের ঘটনার নিন্দা করেছিল আগে। আর ব্রিকসের সিদ্ধান্তে পাকিস্তানের নাম কোথাও বলা হয়নি। ফলে, দক্ষিণ-এশিয়ার কূটনীতিতেও এর বিশেষ কোনো প্রভাব আছে বলে অনিন্দ্য মনে করেন না।

অনিন্দ্যের সঙ্গে সহমত ওপি জিন্দল বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধ্যাপক তথা বিশিষ্ট কূটনীতি বিশ্লেষক শ্রীরাধা দত্ত। তিনি জানিয়েছেন, “সন্ত্রাসবাদ নিয়ে ভারত বিশ্বমঞ্চে অনেককিছু করার চেষ্টা করলেও বাস্তবে তা ফলপ্রসূ হয়নি। পাকিস্তান নিয়ে পশ্চিমের দেশগুলোর অবস্থান ভারত বদলাতে পারেনি। ফলে সন্ত্রাসবাদ নিয়ে ভারত এখন যা যা করছে, সবটাই দেশের গ্যালারির জন্য, এর বিশেষ কোনো প্রভাব ভূরাজনীতিতে পড়ছে না।”

কূটনৈতিক ভাষ্যকার প্রণয় শর্মা অবশ্য অনিন্দ্যের সঙ্গে সম্পূর্ণ সহমত নন। তিনি মনে করেন, কূটনৈতিক অবস্থানের জায়গা থেকে ব্রিকসের সিদ্ধান্তে পেহেলগামের উল্লেখ ভারতের ভূরাজনৈতিক সাফল্য হিসেবেই দেখা উচিত। প্রণয় জানিয়েছেন, “স্বাভাবিকভাবেই সাংহাই কোঅপারেশনের রেজোলিউশনের সঙ্গে ব্রিকসের তুলনা টানা হচ্ছে। সাংহাইতে ভারত যেখানে ধাক্কা খেয়েছিল, ব্রিকসে সেখান থেকে ভারত খানিকটা উত্তরণের পথ তৈরি করতে পেরেছে, এটা বলাই যায়।”

প্রণয়ের বক্তব্য, ভূরাজনীতিতে গ্লোবাল সাউথ এখন একটি অন্যতম আলোচ্য বিষয়। ব্রিকস গ্লোবাল সাউথের গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চ। যে কারণে, পশ্চিমা বিশ্ব ব্রিকসের মঞ্চকে সমালোচনামূলক দৃষ্টিতে দেখে। এই মঞ্চে ভারতের অবস্থান যে গুরুত্বপূর্ণ তা এবারেও প্রমাণ হয়েছে। এবারের ব্রিকসের সিদ্ধান্তে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে এসেছে। ইতোমধ্যেই বিশ্বরাজনীতিতে যা আলোড়ন ফেলে দিয়েছে। ব্রিকসের সিদ্ধান্তে জানানো হয়েছে, তারা আমেরিকার শুল্কনীতির বিরোধিতা করছে। ট্রাম্প ইতোমধ্যেই এর জবাব দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, বিরোধিতা করলে আরও ১০ শতাংশ শুল্ক যুক্ত করা হবে।

ট্রাম্পের শুল্কনীতি নিয়ে আমেরিকার সঙ্গে ভারতের দফায় দফায় দ্বিপাক্ষিক আলোচনা চলছে। আমেরিকা ভারতের কৃষিবাজারে প্রবেশের পরিবর্তে ভারতকে শুল্ক ছাড় দিতে চাইছে। অন্যদিকে ভারত আমেরিকাকে কৃষির বদলে অন্য সুযোগ দিয়ে শুল্কনীতি থেকে নিজেকে মুক্ত করতে চাইছে।দ্বিপাক্ষিক আলোচনা চলার মধ্যেই আমেরিকা জানিয়েছে, নতুন শুল্কনীতি ধার্যের মেয়াদ আরেকটু বাড়ানো হয়েছে। ৯ জুলাইয়ের পরিবর্তে ১ অগাস্ট পর্যন্ত সময়সীমা বর্ধিত করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ভারত সরাসরি ট্রাম্পের শুল্কনীতির বিরোধী মঞ্চে অংশ নেওয়ায় আমেরিকা আরেকটু কঠিন মনোভাব নিতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ।

back to top