ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বাংলাভাষীদের হয়রানি নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন।
বিভিন্ন রাজ্যে বাংলাভাষীদের ধরপাকড় এবং পশ্চিমবঙ্গের অনেককে বাংলাদেশি সন্দেহে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়ার ঘটনাকে ইঙ্গিত করে শুক্রবার কলকাতায় এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, পরিবারের শেকড় থাকায় তাকেও হয়তো বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হতে পারে।
বাংলাদেশে গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর কূটনৈতিক সম্পর্কে টানাপোড়েনের মধ্যে সীমান্তে বাংলাভাষীদের ঠেলে দেওয়ার ঘটনায় ভারত সরকারের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ ওঠে।
বার্তা সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, ‘ইন্ডিয়া’স ইয়ুথ: সোশ্যাল অপরচুনিটিজ দে শুড হ্যাভ’ বিষয়ক আলোচনায় ৯১ বছর বয়সী অমর্ত্য সেন মজা করে বলেন, “খবরের কাগজে দেখেছি বাংলায় কথা বলায় একজনকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এটা আমাকে খানিকটা চিন্তায় ফেলে দিয়েছে। সিদ্ধান্ত নিলাম, তাহলে ফরাসী ভাষায় কথা বলবো, কিন্তু সমস্যা হচ্ছে আমি ফরাসী জানি-ই না।”
স্বভাবসুলভ রসিকতায় তিনি আরও বলেন, “একটা সম্ভাবনা আছে যে আমাকেও হয়তো বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিতে পারে, কারণ ঢাকায় আমার পূর্বপুরুষের বাড়ি রয়েছে। এটা নিয়ে আমার খুব যে বেশি আপত্তি আছে তাও নয়।”
পরে বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলোতে বাংলাভাষীদের হয়রানি নিয়ে সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে তিনি ভারতীয় সভ্যতার বৈচিত্র্যের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, বাঙালি, পাঞ্জাবিসহ প্রত্যেকটি সাংস্কৃতিক পরিচয় উদ্যাপনের যথেষ্ট কারণ রয়েছে।
অমর্ত্য সেন বলেন, “বাংলার লোকজন বা বাংলাভাষী লোকজন পেশাগতভাবে বাধার মুখে পড়ছেন, অসম্মানিত হচ্ছেন। বাঙালি সংস্কৃতি ও সভ্যতাই সবার সেরা—এমন দাবি করবো না, তারপরও আমাদের বাংলা ভাষা, সংস্কৃতি ও সভ্যতার ইতিহাসে জোর দিতে হবে। বাঙালি সংস্কৃতিকে সম্মান করতে হবে। যদি না হয়, তাহলে প্রতিবাদ জরুরি।”
আগে মাঝেমধ্যে সীমান্ত দিয়ে ঠেলে দেওয়ার ঘটনা ঘটলেও গত ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার পর তা বড় আকারে শুরু হয়। ওই ঘটনার পর বিভিন্ন রাজ্যে কথিত ‘অনুপ্রবেশকারীদের’ ধরতে অভিযান শুরু করে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
২৭ এপ্রিল গুজরাটের আহমেদাবাদ ও সুরাট শহরে নারী ও শিশুসহ এক হাজার ২৪ জন বাংলাদেশিকে আটক করার তথ্য জানায় রাজ্য পুলিশ। এরপর থেকেই সীমান্ত দিয়ে মানুষ ঠেলে পাঠানোর কাজ শুরু করে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী।
‘অবৈধ অভিবাসী’ সন্দেহে বিভিন্ন রাজ্যে গ্রেপ্তার বাংলা ভাষাভাষিদের বিমানে করে সীমান্ত এলাকায় এনে বিএসএফের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। পরে বিএসএফ সুযোগ বুঝে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠাচ্ছে তাদের।
বাংলাভাষীদের হয়রানির খবর শুধু ভারতীয় সংবাদমাধ্যমেই নয়, আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি ও নিউ ইয়র্ক টাইমসেও প্রকাশিত হয়েছে।
শনিবার, ২৩ আগস্ট ২০২৫
ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বাংলাভাষীদের হয়রানি নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন।
বিভিন্ন রাজ্যে বাংলাভাষীদের ধরপাকড় এবং পশ্চিমবঙ্গের অনেককে বাংলাদেশি সন্দেহে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়ার ঘটনাকে ইঙ্গিত করে শুক্রবার কলকাতায় এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, পরিবারের শেকড় থাকায় তাকেও হয়তো বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হতে পারে।
বাংলাদেশে গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর কূটনৈতিক সম্পর্কে টানাপোড়েনের মধ্যে সীমান্তে বাংলাভাষীদের ঠেলে দেওয়ার ঘটনায় ভারত সরকারের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ ওঠে।
বার্তা সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, ‘ইন্ডিয়া’স ইয়ুথ: সোশ্যাল অপরচুনিটিজ দে শুড হ্যাভ’ বিষয়ক আলোচনায় ৯১ বছর বয়সী অমর্ত্য সেন মজা করে বলেন, “খবরের কাগজে দেখেছি বাংলায় কথা বলায় একজনকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এটা আমাকে খানিকটা চিন্তায় ফেলে দিয়েছে। সিদ্ধান্ত নিলাম, তাহলে ফরাসী ভাষায় কথা বলবো, কিন্তু সমস্যা হচ্ছে আমি ফরাসী জানি-ই না।”
স্বভাবসুলভ রসিকতায় তিনি আরও বলেন, “একটা সম্ভাবনা আছে যে আমাকেও হয়তো বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিতে পারে, কারণ ঢাকায় আমার পূর্বপুরুষের বাড়ি রয়েছে। এটা নিয়ে আমার খুব যে বেশি আপত্তি আছে তাও নয়।”
পরে বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলোতে বাংলাভাষীদের হয়রানি নিয়ে সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে তিনি ভারতীয় সভ্যতার বৈচিত্র্যের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, বাঙালি, পাঞ্জাবিসহ প্রত্যেকটি সাংস্কৃতিক পরিচয় উদ্যাপনের যথেষ্ট কারণ রয়েছে।
অমর্ত্য সেন বলেন, “বাংলার লোকজন বা বাংলাভাষী লোকজন পেশাগতভাবে বাধার মুখে পড়ছেন, অসম্মানিত হচ্ছেন। বাঙালি সংস্কৃতি ও সভ্যতাই সবার সেরা—এমন দাবি করবো না, তারপরও আমাদের বাংলা ভাষা, সংস্কৃতি ও সভ্যতার ইতিহাসে জোর দিতে হবে। বাঙালি সংস্কৃতিকে সম্মান করতে হবে। যদি না হয়, তাহলে প্রতিবাদ জরুরি।”
আগে মাঝেমধ্যে সীমান্ত দিয়ে ঠেলে দেওয়ার ঘটনা ঘটলেও গত ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার পর তা বড় আকারে শুরু হয়। ওই ঘটনার পর বিভিন্ন রাজ্যে কথিত ‘অনুপ্রবেশকারীদের’ ধরতে অভিযান শুরু করে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
২৭ এপ্রিল গুজরাটের আহমেদাবাদ ও সুরাট শহরে নারী ও শিশুসহ এক হাজার ২৪ জন বাংলাদেশিকে আটক করার তথ্য জানায় রাজ্য পুলিশ। এরপর থেকেই সীমান্ত দিয়ে মানুষ ঠেলে পাঠানোর কাজ শুরু করে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী।
‘অবৈধ অভিবাসী’ সন্দেহে বিভিন্ন রাজ্যে গ্রেপ্তার বাংলা ভাষাভাষিদের বিমানে করে সীমান্ত এলাকায় এনে বিএসএফের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। পরে বিএসএফ সুযোগ বুঝে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠাচ্ছে তাদের।
বাংলাভাষীদের হয়রানির খবর শুধু ভারতীয় সংবাদমাধ্যমেই নয়, আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি ও নিউ ইয়র্ক টাইমসেও প্রকাশিত হয়েছে।