রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে টানা এক সপ্তাহের কূটনৈতিক তৎপরতা শেষে এবার ট্রাম্প ঘোষণা দিলেন, পুতিন ও জেলেনস্কিকে এক টেবিলে বসাবেন।
এই কূটনৈতিক তৎপরতার সময়ে দুজনের সঙ্গে আলাদা আলাদাভাবে বসেছেন ট্রাম্প। এর পর তিনি বলে দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে এ যুদ্ধে আর কোনো সহায়তা দেবে না। তবে যদি ইউক্রেন চুক্তির বিষয়ে এগোয়, তাহলে আকাশপথে সহায়তা দেওয়া হবে।
অবশ্য ইউক্রেনকে নিরাপত্তার বিষয়ে আশ্বস্ত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট।
তার এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ইউক্রেন জানিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্রই ইউরোপের কাছ থেকে ৯০ বিলিয়ন ডলার দিয়ে সংগ্রহ করবে।
কে এই অর্থ দিচ্ছে ইউক্রেনকে?
অন্তত ৪১টি দেশ রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে সামরিক, মানবিক বা আর্থিক সহায়তা দিয়েছে ইউক্রেনকে।
জার্মানভিত্তিক চিন্তাশালা কিয়েল ইনস্টিটিউটের তথ্য এটি।
সামরিক সহায়তার মধ্যে ছিল অস্ত্রশস্ত্র এবং ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর জন্য অর্থসহায়তা। মানবিক সহায়তার আওতায় বেসামরিক মানুষ পেয়েছে চিকিৎসা, খাদ্যসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী। আর্থিক সহায়তা এসেছে মঞ্জুরি, ঋণ ও জামানতের মাধ্যমে।
ইউক্রেনকে সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা দিয়েছে ন্যাটো। ৩২ দেশের এই সামরিক জোটের ২৯টিই ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা দিয়েছে।
এছাড়া ন্যাটোর বাইরে আরও ১২টি দেশ ইউক্রেনের জন্য আর্থিক সহায়তা পাঠিয়েছে। দেশগুলো হলো: অস্ট্রেলিয়া, অস্ট্রিয়া, সাইপ্রাস, আয়ারল্যান্ড প্রজাতন্ত্র, জাপান, মাল্টা, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, সুইজারল্যান্ড, চীন, তাইওয়ান ও ভারত।
এছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়নও ইউক্রেনকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ সহায়তা দিয়েছে।
এখন পর্যন্ত কী পরিমাণ সহায়তা পেয়েছে ইউক্রেন?
কিয়েল ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত দেশটি মোট ৩৬ হাজার কোটি ডলার (৩০৯ বিলিয়ন ইউরো) সামরিক, আর্থিক ও মানবিক সহায়তা পেয়েছে। এর মধ্যে সামরিক সহায়তার পরিমাণ ১৭ হাজার ৪০০ কোটি ডলার, আর্থিক সহায়তা ১৬ হাজার ৩০০ কোটি ডলার এবং মানবিক সহায়তা ২ হাজার ৪০০ কোটি ডলার।
সবচেয়ে বেশি সহায়তা কারা দিচ্ছে?
সবচেয়ে বেশি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ২০২২ সালের ২৪ জানুয়ারি থেকে চলতি ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত দিয়েছে ১৩ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের সহায়তা। এর মধ্যে সামরিক সহায়তা ৭ হাজার ৫০০ কোটি ডলার, আর্থিক সহায়তা ৫ হাজার ৪০০ কোটি ডলার এবং মানবিক সহায়তা ৪০০ কোটি ডলার।
দ্বিতীয় শীর্ষ সহায়তাকারী ইইউ (কমিশন ও কাউন্সিল) দিয়েছে ৬ হাজার ৩১৯ কোটি ইউরো (৭ হাজার ৪০০ কোটি ডলার)। এর পরে রয়েছে জার্মানি ২ হাজার ৫০০ কোটি ডলার, যুক্তরাজ্য ২ হাজার ১০০ কোটি ডলার এবং জাপান ১ হাজার ৫০০ কোটি ডলার।
প্রতিশ্রুতি ও বরাদ্দ
তবে প্রতিশ্রুতি ও বরাদ্দের পরিমাণের দিক থেকে ইউরোপ এগিয়ে আছে যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে।
ইউরোপের প্রতিশ্রুতি রয়েছে ২৫ হাজার ৭৪০ কোটি ইউরো (৩০ হাজার কোটি ডলার) দেওয়ার। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি ছিল ১১ হাজার ৯০০ কোটি ডলারের।
কিয়েল ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, ইউক্রেনের যুদ্ধের জন্য ইউরোপীয় দেশগুলো এখন পর্যন্ত মোট বরাদ্দ করেছে ১৬ হাজার ৭৪০ কোটি ইউরো বা ১৯ হাজার ৫০০ কোটি ডলার। যুক্তরাষ্ট্র বরাদ্দ করেছে ১৩ হাজার ৪০০ কোটি ডলার।
মার্কিন সাহায্য কমেছে ট্রাম্প পুনরায় ক্ষমতায় আসার পর
ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার কয়েকদিন আগে, বাইডেন প্রশাসন ইউক্রেনকে অস্ত্র কেনার জন্য ৫০ কোটি ডলারের সামরিক সহায়তা চূড়ান্ত করে।
মার্চ মাসে হোয়াইট হাউসে জেলেনস্কির সঙ্গে ট্রাম্পের উত্তেজনাপূর্ণ বৈঠকের পর যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে অস্ত্রসহ সব ধরনের সহায়তা স্থগিত করে রেখেছে।
ট্রাম্প বলছেন, রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে ইউক্রেনকে ৩০ হাজার কোটিরও বেশি সহায়তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সর্বোচ্চ পরিমাণ সহায়তা দেওয়ার পরও ইউক্রেন ও তার সমর্থকরা তা স্বীকার করছে না।
কী কী সমরাস্ত্র পেয়েছে ইউক্রেন?
মিত্রদের কাছ থেকে সাঁজোয়া যান, কামান, বিমান, বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রসহ বিভিন্ন ধরনের সমরাস্ত্র পেয়েছে ইউক্রেন।
কিয়েল ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিবেশীকে সর্বাধিক সংখ্যক ট্যাঙ্ক সরবরাহ করেছে পোল্যান্ড—মোট ৩৫৪টি। তবে ইউক্রেন যেসব অস্ত্র যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সবচেয়ে বেশি পেয়েছে, সেগুলো হলো: পদাতিক যুদ্ধযান ৩০৫টি, হাউইটজার বা ছোট আকারের কামান ২০১টি, বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ১৮টি এবং হাই মোবিলিটি আর্টিলারি রকেট লঞ্চার ৪১টি।
প্রায় ৮০ কিলোমিটার (৫০ মাইল) দূর থেকে নিখুঁত লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম এই হাই মোবিলিটি আর্টিলারি রকেট ব্যবস্থা যুদ্ধের শুরুতেই রাশিয়ার অগ্রযাত্রাকে শ্লথ করে দিয়েছিল।
রোববার, ২৪ আগস্ট ২০২৫
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে টানা এক সপ্তাহের কূটনৈতিক তৎপরতা শেষে এবার ট্রাম্প ঘোষণা দিলেন, পুতিন ও জেলেনস্কিকে এক টেবিলে বসাবেন।
এই কূটনৈতিক তৎপরতার সময়ে দুজনের সঙ্গে আলাদা আলাদাভাবে বসেছেন ট্রাম্প। এর পর তিনি বলে দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে এ যুদ্ধে আর কোনো সহায়তা দেবে না। তবে যদি ইউক্রেন চুক্তির বিষয়ে এগোয়, তাহলে আকাশপথে সহায়তা দেওয়া হবে।
অবশ্য ইউক্রেনকে নিরাপত্তার বিষয়ে আশ্বস্ত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট।
তার এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ইউক্রেন জানিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্রই ইউরোপের কাছ থেকে ৯০ বিলিয়ন ডলার দিয়ে সংগ্রহ করবে।
কে এই অর্থ দিচ্ছে ইউক্রেনকে?
অন্তত ৪১টি দেশ রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে সামরিক, মানবিক বা আর্থিক সহায়তা দিয়েছে ইউক্রেনকে।
জার্মানভিত্তিক চিন্তাশালা কিয়েল ইনস্টিটিউটের তথ্য এটি।
সামরিক সহায়তার মধ্যে ছিল অস্ত্রশস্ত্র এবং ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর জন্য অর্থসহায়তা। মানবিক সহায়তার আওতায় বেসামরিক মানুষ পেয়েছে চিকিৎসা, খাদ্যসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী। আর্থিক সহায়তা এসেছে মঞ্জুরি, ঋণ ও জামানতের মাধ্যমে।
ইউক্রেনকে সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা দিয়েছে ন্যাটো। ৩২ দেশের এই সামরিক জোটের ২৯টিই ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা দিয়েছে।
এছাড়া ন্যাটোর বাইরে আরও ১২টি দেশ ইউক্রেনের জন্য আর্থিক সহায়তা পাঠিয়েছে। দেশগুলো হলো: অস্ট্রেলিয়া, অস্ট্রিয়া, সাইপ্রাস, আয়ারল্যান্ড প্রজাতন্ত্র, জাপান, মাল্টা, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, সুইজারল্যান্ড, চীন, তাইওয়ান ও ভারত।
এছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়নও ইউক্রেনকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ সহায়তা দিয়েছে।
এখন পর্যন্ত কী পরিমাণ সহায়তা পেয়েছে ইউক্রেন?
কিয়েল ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত দেশটি মোট ৩৬ হাজার কোটি ডলার (৩০৯ বিলিয়ন ইউরো) সামরিক, আর্থিক ও মানবিক সহায়তা পেয়েছে। এর মধ্যে সামরিক সহায়তার পরিমাণ ১৭ হাজার ৪০০ কোটি ডলার, আর্থিক সহায়তা ১৬ হাজার ৩০০ কোটি ডলার এবং মানবিক সহায়তা ২ হাজার ৪০০ কোটি ডলার।
সবচেয়ে বেশি সহায়তা কারা দিচ্ছে?
সবচেয়ে বেশি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ২০২২ সালের ২৪ জানুয়ারি থেকে চলতি ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত দিয়েছে ১৩ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের সহায়তা। এর মধ্যে সামরিক সহায়তা ৭ হাজার ৫০০ কোটি ডলার, আর্থিক সহায়তা ৫ হাজার ৪০০ কোটি ডলার এবং মানবিক সহায়তা ৪০০ কোটি ডলার।
দ্বিতীয় শীর্ষ সহায়তাকারী ইইউ (কমিশন ও কাউন্সিল) দিয়েছে ৬ হাজার ৩১৯ কোটি ইউরো (৭ হাজার ৪০০ কোটি ডলার)। এর পরে রয়েছে জার্মানি ২ হাজার ৫০০ কোটি ডলার, যুক্তরাজ্য ২ হাজার ১০০ কোটি ডলার এবং জাপান ১ হাজার ৫০০ কোটি ডলার।
প্রতিশ্রুতি ও বরাদ্দ
তবে প্রতিশ্রুতি ও বরাদ্দের পরিমাণের দিক থেকে ইউরোপ এগিয়ে আছে যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে।
ইউরোপের প্রতিশ্রুতি রয়েছে ২৫ হাজার ৭৪০ কোটি ইউরো (৩০ হাজার কোটি ডলার) দেওয়ার। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি ছিল ১১ হাজার ৯০০ কোটি ডলারের।
কিয়েল ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, ইউক্রেনের যুদ্ধের জন্য ইউরোপীয় দেশগুলো এখন পর্যন্ত মোট বরাদ্দ করেছে ১৬ হাজার ৭৪০ কোটি ইউরো বা ১৯ হাজার ৫০০ কোটি ডলার। যুক্তরাষ্ট্র বরাদ্দ করেছে ১৩ হাজার ৪০০ কোটি ডলার।
মার্কিন সাহায্য কমেছে ট্রাম্প পুনরায় ক্ষমতায় আসার পর
ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার কয়েকদিন আগে, বাইডেন প্রশাসন ইউক্রেনকে অস্ত্র কেনার জন্য ৫০ কোটি ডলারের সামরিক সহায়তা চূড়ান্ত করে।
মার্চ মাসে হোয়াইট হাউসে জেলেনস্কির সঙ্গে ট্রাম্পের উত্তেজনাপূর্ণ বৈঠকের পর যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে অস্ত্রসহ সব ধরনের সহায়তা স্থগিত করে রেখেছে।
ট্রাম্প বলছেন, রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে ইউক্রেনকে ৩০ হাজার কোটিরও বেশি সহায়তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সর্বোচ্চ পরিমাণ সহায়তা দেওয়ার পরও ইউক্রেন ও তার সমর্থকরা তা স্বীকার করছে না।
কী কী সমরাস্ত্র পেয়েছে ইউক্রেন?
মিত্রদের কাছ থেকে সাঁজোয়া যান, কামান, বিমান, বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রসহ বিভিন্ন ধরনের সমরাস্ত্র পেয়েছে ইউক্রেন।
কিয়েল ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিবেশীকে সর্বাধিক সংখ্যক ট্যাঙ্ক সরবরাহ করেছে পোল্যান্ড—মোট ৩৫৪টি। তবে ইউক্রেন যেসব অস্ত্র যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সবচেয়ে বেশি পেয়েছে, সেগুলো হলো: পদাতিক যুদ্ধযান ৩০৫টি, হাউইটজার বা ছোট আকারের কামান ২০১টি, বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ১৮টি এবং হাই মোবিলিটি আর্টিলারি রকেট লঞ্চার ৪১টি।
প্রায় ৮০ কিলোমিটার (৫০ মাইল) দূর থেকে নিখুঁত লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম এই হাই মোবিলিটি আর্টিলারি রকেট ব্যবস্থা যুদ্ধের শুরুতেই রাশিয়ার অগ্রযাত্রাকে শ্লথ করে দিয়েছিল।