ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন শুল্কনীতি ও দ্রুত পাল্টে যাওয়া ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে সম্প্রতি ভারত ও চীনের মধ্যকার সম্পর্কে এক ধরনের ‘উষ্ণতা’ দেখা যাচ্ছে। নানা বিষয়ের দীর্ঘ বৈরিতা কাটিয়ে আবারও আলোচনার টেবিলে বসছে দুই দেশ। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই পরিবর্তন শুধু দেশ দুটির দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কেই প্রভাব ফেলবে না, বরং পুরো এশিয়ার বাণিজ্য কাঠামোকেই নতুনভাবে গড়ে তুলতে পারে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন কোয়াড (যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, জাপান ও অস্ট্রেলিয়া) জোট দুর্বল হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়া গড়ে উঠতে পারে এশিয়াকেন্দ্রিক নতুন বাণিজ্য জোট।
২০২০ সালে ভারত সফরে দেশটির প্রতি নিজের অকুণ্ঠ সমর্থন জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। সে সময় ট্রাম্প-মোদির ব্যক্তিগত বন্ধুত্বও সামনে এসেছিল। তবে দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় আসার পর সম্পর্কের সে বাস্তবতা একেবারেই বদলে গেছে। ২০২০ সালের জুনে লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় চীনের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে ২০ ভারতীয় সেনা নিহত হওয়ার পর বেইজিংয়ের সঙ্গে সম্পর্কের চূড়ান্ত অবনতি হয় দিল্লির। তখন টিকটকসহ দুইশর বেশি চীনা অ্যাপ নিষিদ্ধ করে ভারত। এরই ধারাবাহিকতায় যুক্তরাষ্ট্র ও কোয়াডের সঙ্গে প্রতিরক্ষা ও কৌশলগত সহযোগিতা বাড়ায় দেশটি। এ ছাড়া চলতি বছর পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের সংঘাতে চীনা প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম ব্যবহার করে ইসলামাবাদ। এ সময় চীনের বিরুদ্ধে পাকিস্তানকে স্পর্শকাতর তথ্য সরবরাহের অভিযোগ আনে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। এতে আবারও অবনতির মুখে পড়ে দেশ দুটির সম্পর্ক।
কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসন সম্প্রতি ভারতের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের পাশাপাশি দেশটির আঞ্চলিক প্রতিপক্ষ পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করে ওয়াশিংটন। এতে কূটনৈতিকভাবে এক ধরনের চাপে পড়ে ভারত। ফলে চীনবিরোধী অবস্থান থেকে সরে এসে নতুন করে বেইজিংয়ের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার পথে হাঁটছে দিল্লি। সম্প্রতি নয়াদিল্লি সফর করেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। তাঁর সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশ দুটির সম্পর্কের ‘স্থিতিশীল অগ্রগতি’র কথা বলেন।
বেশ কিছু বিরোধপূর্ণ বিষয়কে আলোচনার মাধ্যমে এগিয়ে নিতেও একমত হন তারা। একই সঙ্গে সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার (এসসিও) সম্মেলনে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ নেন মোদি। এই জোটকে যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী আঞ্চলিক প্ল্যাটফর্ম হিসেবে দেখেন বিশ্লেষকরা।
কোয়াডে টানাপোড়েন: ভারসাম্য বদলের আভাসকৌশলগত পরিকল্পনায় কোয়াড জোটের মাধ্যমে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরে নিজের প্রভাব বজায় রাখতে চেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এখন জোটের অন্যতম প্রধান শরিক ভারতের নতুন চীনমুখী অবস্থান কোয়াডের ভেতর অনিশ্চয়তা তৈরি করছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, বেইজিংয়ের সঙ্গে সম্পর্ক উষ্ণ হলে চীনবিরোধী অবস্থান থেকে সরে আসতে পারে দিল্লি। তাতে জোটের অভ্যন্তরীণ আস্থা ও ঐক্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এতে এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব দুর্বল হয়ে পড়লে নতুন বাণিজ্য ও কৌশলগত জোট গড়ে উঠতে পারে।
রোববার, ২৪ আগস্ট ২০২৫
ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন শুল্কনীতি ও দ্রুত পাল্টে যাওয়া ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে সম্প্রতি ভারত ও চীনের মধ্যকার সম্পর্কে এক ধরনের ‘উষ্ণতা’ দেখা যাচ্ছে। নানা বিষয়ের দীর্ঘ বৈরিতা কাটিয়ে আবারও আলোচনার টেবিলে বসছে দুই দেশ। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই পরিবর্তন শুধু দেশ দুটির দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কেই প্রভাব ফেলবে না, বরং পুরো এশিয়ার বাণিজ্য কাঠামোকেই নতুনভাবে গড়ে তুলতে পারে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন কোয়াড (যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, জাপান ও অস্ট্রেলিয়া) জোট দুর্বল হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়া গড়ে উঠতে পারে এশিয়াকেন্দ্রিক নতুন বাণিজ্য জোট।
২০২০ সালে ভারত সফরে দেশটির প্রতি নিজের অকুণ্ঠ সমর্থন জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। সে সময় ট্রাম্প-মোদির ব্যক্তিগত বন্ধুত্বও সামনে এসেছিল। তবে দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় আসার পর সম্পর্কের সে বাস্তবতা একেবারেই বদলে গেছে। ২০২০ সালের জুনে লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় চীনের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে ২০ ভারতীয় সেনা নিহত হওয়ার পর বেইজিংয়ের সঙ্গে সম্পর্কের চূড়ান্ত অবনতি হয় দিল্লির। তখন টিকটকসহ দুইশর বেশি চীনা অ্যাপ নিষিদ্ধ করে ভারত। এরই ধারাবাহিকতায় যুক্তরাষ্ট্র ও কোয়াডের সঙ্গে প্রতিরক্ষা ও কৌশলগত সহযোগিতা বাড়ায় দেশটি। এ ছাড়া চলতি বছর পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের সংঘাতে চীনা প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম ব্যবহার করে ইসলামাবাদ। এ সময় চীনের বিরুদ্ধে পাকিস্তানকে স্পর্শকাতর তথ্য সরবরাহের অভিযোগ আনে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। এতে আবারও অবনতির মুখে পড়ে দেশ দুটির সম্পর্ক।
কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসন সম্প্রতি ভারতের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের পাশাপাশি দেশটির আঞ্চলিক প্রতিপক্ষ পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করে ওয়াশিংটন। এতে কূটনৈতিকভাবে এক ধরনের চাপে পড়ে ভারত। ফলে চীনবিরোধী অবস্থান থেকে সরে এসে নতুন করে বেইজিংয়ের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার পথে হাঁটছে দিল্লি। সম্প্রতি নয়াদিল্লি সফর করেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। তাঁর সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশ দুটির সম্পর্কের ‘স্থিতিশীল অগ্রগতি’র কথা বলেন।
বেশ কিছু বিরোধপূর্ণ বিষয়কে আলোচনার মাধ্যমে এগিয়ে নিতেও একমত হন তারা। একই সঙ্গে সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার (এসসিও) সম্মেলনে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ নেন মোদি। এই জোটকে যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী আঞ্চলিক প্ল্যাটফর্ম হিসেবে দেখেন বিশ্লেষকরা।
কোয়াডে টানাপোড়েন: ভারসাম্য বদলের আভাসকৌশলগত পরিকল্পনায় কোয়াড জোটের মাধ্যমে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরে নিজের প্রভাব বজায় রাখতে চেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এখন জোটের অন্যতম প্রধান শরিক ভারতের নতুন চীনমুখী অবস্থান কোয়াডের ভেতর অনিশ্চয়তা তৈরি করছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, বেইজিংয়ের সঙ্গে সম্পর্ক উষ্ণ হলে চীনবিরোধী অবস্থান থেকে সরে আসতে পারে দিল্লি। তাতে জোটের অভ্যন্তরীণ আস্থা ও ঐক্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এতে এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব দুর্বল হয়ে পড়লে নতুন বাণিজ্য ও কৌশলগত জোট গড়ে উঠতে পারে।