ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের হামলার অন্যতম লক্ষ্য স্কুল ও হাসপাতালগুলো। ২২ মাসের বেশি সময় ধরে হামলা চালিয়ে উপত্যকাটির ৯০ শতাংশের বেশি স্কুল ধ্বংস করা হয়েছে। এর মধ্যে জাতিসংঘের পরিচালিত স্কুলও রয়েছে। এই স্কুলগুলো এখন পুনরায় নির্মাণ করা ছাড়া আর ব্যবহারযোগ্য অবস্থায় নেই।
গত রোববার জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ এ তথ্য জানিয়েছে। সংস্থাটির সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, ইসরায়েলের হামলায় গাজার ৫৬৪টি স্কুলের মধ্যে ৯৭ শতাংশের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আর ৫১৮টি বা ৯১ দশমিক ৮ শতাংশ স্কুলের কার্যক্রম আবার শুরু করার জন্য সেগুলোর পুনরায় নির্মাণ বা বড় পরিসরে সংস্কারকাজের প্রয়োজন।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় নৃশংস হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। হামলার মুখে প্রাণ বাঁচাতে উপত্যকাটির বাসিন্দারা বারবার বাস্তুচ্যুত হচ্ছেন। বাসিন্দাদের বড় একটি অংশ আশ্রয় নিচ্ছে স্কুলগুলোতে। হামলায় স্কুলগুলো ধ্বংস হওয়ার পাশাপাশি সেখানে আশ্রয় নেওয়া ফিলিস্তিনিরাও নিহত হচ্ছেন। এটি আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে জাতিসংঘ।
ইউএনআরডব্লিউএর তথ্য অনুযায়ী, সংঘাতের শুরু থেকে গত ১৮ জুলাই পর্যন্ত গাজার স্কুলগুলোতে প্রায় ১০ লাখ মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। এসব স্কুলে ইসরায়েলের হামলায় তাঁদের মধ্যে অন্তত ৮৩৬ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ২ হাজার ৫২৭ জন। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত উপত্যকাটিতে প্রায় ৬৩ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১ লাখ ৫৮ হাজারের বেশি মানুষ।
গাজার স্কুলে হামলা নিয়ে ৭ আগস্ট একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। তাতেও ইসরায়েলি ধ্বংসযজ্ঞের চিত্র উঠে এসেছিল। মানবাধিকার সংস্থাটি তখন গাজায় পাঁচ শতাধিক স্কুলে ইসরায়েলি হামলার কথা জানিয়েছিল। ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ওপরও এসব হামলার দায় চাপিয়েছিল তারা। এইচআরডব্লিউর ওই প্রতিবেদনে সংস্থাটির সংকট, সংঘাত ও অস্ত্রবিষয়ক সহযোগী পরিচালক গ্যারি সিম্পসন বলেন, ‘বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলোকে আশ্রয় দেওয়া স্কুলে হামলা গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর চালানো ব্যাপক হত্যাযজ্ঞের চিত্র তুলে ধরেছে। নিরাপত্তার খোঁজে থাকা এই বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের ওপর ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ বিভিন্ন দেশের সরকারগুলোর সহ্য করা উচিত হবে না।’
মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় ইসরায়েলের মন্ত্রিসভার বৈঠক বসার কথা রয়েছে। ওই বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা করা হবে, তা প্রকাশ করা হয়নি। তবে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি মুক্তির নতুন সমঝোতা নিয়ে আলোচনার কথা রয়েছে সেখানে। গাজায় ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতিতে যখন হামাস রাজি হয়েছে, তখন ইসরায়েলের মন্ত্রিসভায় এমন বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
যুদ্ধবিরতির ওই প্রস্তাব এনেছিল যুক্তরাষ্ট্র। প্রস্তাব অনুযায়ী, গাজায় বাকি ৫০ জন জীবিত ও মৃত জিম্মির অর্ধেকের মুক্তি দেওয়ার কথা। গত মাসে একই প্রস্তাব এনেছিল ইসরায়েলও। তবে হামাস প্রস্তাবে রাজি হওয়ার পর এখন উল্টো পথে হাঁটছে তারা। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দিন কয়েক আগে গাজা থেকে সব জিম্মিকে মুক্তির জন্য আলোচনা শুরুর নির্দেশ দিয়েছেন।
মন্ত্রিসভার বৈঠকের আগে আজ সকালে ইসরায়েলের তেল আবিব শহরে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়। এএফপির খবরে বলা হয়, বিক্ষোভকারীরা শহরটির রাস্তা অবরোধ করেন। তাঁদের অনেকের হাতে ছিল জিম্মি ব্যক্তিদের ছবি ও ইসরায়েলের পতাকা। বিক্ষোভ থেকে সংঘাত বন্ধ ও জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার দাবি তোলা হয়। রুবি চেন নামের এক বিক্ষোভকারী বলেন, ‘জিম্মিদের মুক্তির চেয়ে হামাসের ধ্বংসকে বেশি অগ্রাধিকার দিচ্ছেন নেতানিয়াহু।’
বুধবার, ২৭ আগস্ট ২০২৫
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের হামলার অন্যতম লক্ষ্য স্কুল ও হাসপাতালগুলো। ২২ মাসের বেশি সময় ধরে হামলা চালিয়ে উপত্যকাটির ৯০ শতাংশের বেশি স্কুল ধ্বংস করা হয়েছে। এর মধ্যে জাতিসংঘের পরিচালিত স্কুলও রয়েছে। এই স্কুলগুলো এখন পুনরায় নির্মাণ করা ছাড়া আর ব্যবহারযোগ্য অবস্থায় নেই।
গত রোববার জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ এ তথ্য জানিয়েছে। সংস্থাটির সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, ইসরায়েলের হামলায় গাজার ৫৬৪টি স্কুলের মধ্যে ৯৭ শতাংশের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আর ৫১৮টি বা ৯১ দশমিক ৮ শতাংশ স্কুলের কার্যক্রম আবার শুরু করার জন্য সেগুলোর পুনরায় নির্মাণ বা বড় পরিসরে সংস্কারকাজের প্রয়োজন।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় নৃশংস হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। হামলার মুখে প্রাণ বাঁচাতে উপত্যকাটির বাসিন্দারা বারবার বাস্তুচ্যুত হচ্ছেন। বাসিন্দাদের বড় একটি অংশ আশ্রয় নিচ্ছে স্কুলগুলোতে। হামলায় স্কুলগুলো ধ্বংস হওয়ার পাশাপাশি সেখানে আশ্রয় নেওয়া ফিলিস্তিনিরাও নিহত হচ্ছেন। এটি আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে জাতিসংঘ।
ইউএনআরডব্লিউএর তথ্য অনুযায়ী, সংঘাতের শুরু থেকে গত ১৮ জুলাই পর্যন্ত গাজার স্কুলগুলোতে প্রায় ১০ লাখ মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। এসব স্কুলে ইসরায়েলের হামলায় তাঁদের মধ্যে অন্তত ৮৩৬ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ২ হাজার ৫২৭ জন। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত উপত্যকাটিতে প্রায় ৬৩ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১ লাখ ৫৮ হাজারের বেশি মানুষ।
গাজার স্কুলে হামলা নিয়ে ৭ আগস্ট একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। তাতেও ইসরায়েলি ধ্বংসযজ্ঞের চিত্র উঠে এসেছিল। মানবাধিকার সংস্থাটি তখন গাজায় পাঁচ শতাধিক স্কুলে ইসরায়েলি হামলার কথা জানিয়েছিল। ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ওপরও এসব হামলার দায় চাপিয়েছিল তারা। এইচআরডব্লিউর ওই প্রতিবেদনে সংস্থাটির সংকট, সংঘাত ও অস্ত্রবিষয়ক সহযোগী পরিচালক গ্যারি সিম্পসন বলেন, ‘বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলোকে আশ্রয় দেওয়া স্কুলে হামলা গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর চালানো ব্যাপক হত্যাযজ্ঞের চিত্র তুলে ধরেছে। নিরাপত্তার খোঁজে থাকা এই বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের ওপর ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ বিভিন্ন দেশের সরকারগুলোর সহ্য করা উচিত হবে না।’
মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় ইসরায়েলের মন্ত্রিসভার বৈঠক বসার কথা রয়েছে। ওই বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা করা হবে, তা প্রকাশ করা হয়নি। তবে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি মুক্তির নতুন সমঝোতা নিয়ে আলোচনার কথা রয়েছে সেখানে। গাজায় ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতিতে যখন হামাস রাজি হয়েছে, তখন ইসরায়েলের মন্ত্রিসভায় এমন বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
যুদ্ধবিরতির ওই প্রস্তাব এনেছিল যুক্তরাষ্ট্র। প্রস্তাব অনুযায়ী, গাজায় বাকি ৫০ জন জীবিত ও মৃত জিম্মির অর্ধেকের মুক্তি দেওয়ার কথা। গত মাসে একই প্রস্তাব এনেছিল ইসরায়েলও। তবে হামাস প্রস্তাবে রাজি হওয়ার পর এখন উল্টো পথে হাঁটছে তারা। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দিন কয়েক আগে গাজা থেকে সব জিম্মিকে মুক্তির জন্য আলোচনা শুরুর নির্দেশ দিয়েছেন।
মন্ত্রিসভার বৈঠকের আগে আজ সকালে ইসরায়েলের তেল আবিব শহরে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়। এএফপির খবরে বলা হয়, বিক্ষোভকারীরা শহরটির রাস্তা অবরোধ করেন। তাঁদের অনেকের হাতে ছিল জিম্মি ব্যক্তিদের ছবি ও ইসরায়েলের পতাকা। বিক্ষোভ থেকে সংঘাত বন্ধ ও জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার দাবি তোলা হয়। রুবি চেন নামের এক বিক্ষোভকারী বলেন, ‘জিম্মিদের মুক্তির চেয়ে হামাসের ধ্বংসকে বেশি অগ্রাধিকার দিচ্ছেন নেতানিয়াহু।’