বিগত বেশ কয়েকদিন ধরেই বিবিসি দ্য মোদী কোয়েশ্চেন’ তথ্যচিত্র নিয়ে দেশ, বিদেশে বিতর্ক তুঙ্গে। ২০০২ সালে গুজরাট দাঙ্গায় মোদীর নেতৃত্ব ও তার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। খবর হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা ।
দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসংগঠন (জেএনইউএসইউ) মঙ্গলবার তথ্যচিত্রটি দেখানোর আয়োজন করেছিল। এক টুইটে বলা হয়েছিল, মঙ্গলবার স্থানীয় সময় রাত ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ক্যাফেটেরিয়ায় তথ্যচিত্রটি দেখানো হবে।এরপর আগের দিন সোমবার রাতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন থেকে তাদের ওয়েবসাইটে বলা হয়, কর্তৃপক্ষ ওই তথ্যচিত্র প্রদর্শনের অনুমতি দেয়নি।
টুইটার, ইউটিউবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে বিবিসি-র তৈরি তথ্যচিত্র দেখানো বন্ধের নির্দেশের পর এবার ভারতের শীর্ষ একটি বিশ্ববিদ্যালয় এ তথ্যচিত্রের প্রদর্শনী বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে। নতুবা কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
‘‘কঠোরভাবে বলছি, এই ধরনের অননুমোদিত কার্যকলাপ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের শান্তি ও সম্প্রীতিকে ব্যাহত করতে পারে।
‘‘সংশ্লিষ্ট ছাত্র বা ব্যক্তিদের অবিলম্বে প্রস্তাবিত কর্মসূচি বাতিল করার জোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। যদি তারা তা করতে ব্যর্থ হয় তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিধি অনুযায়ী কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে।”
গুজরাট দাঙ্গা নিয়ে তৈরি বিবিসি-র তথ্যচিত্রকে কেন্দ্র করে ভারতে রাজনীতি উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। রাজ্যে রাজ্যে বিরোধীরা তথ্যচিত্র প্রদর্শনী করার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।
গুজরাটে ওই দাঙ্গার সময় মোদী পশ্চিমাঞ্চলীয় এই রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। সেবারের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় সরকারি হিসাবেই এক হাজারের বেশি মানুষ নিহত হন, যাদের বেশিরভাগই ছিলেন মুসলমান।
দাঙ্গায় প্রকৃত নিহতের সংখ্যা সরকারি সংখ্যার দ্বিগুণের বেশি বলে অনুমান একাধিক মানবাধিকার সংস্থার। হিন্দু তীর্থযাত্রীবাহী একটি ট্রেনে আগুন ধরে ৫৯ জনের মৃত্যুর পর গুজরাটে ওই দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়েছিল।
দাঙ্গা রোধে মোদী কার্যকর ব্যবস্থা নেননি, এমনকি নিরাপত্তা বাহিনীকে নিষ্ক্রিয় করে রেখেছিলেন বলে অনেকেই অভিযোগ করেন। ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) এই শীর্ষ নেতা অবশ্য প্রথম থেকেই এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।
দাঙ্গায় মোদী ও অন্যদের ভূমিকা তদন্তে সুপ্রিম কোর্টের নিয়োগ দেওয়া বিশেষ তদন্ত দলও ২০১২ সালে দেওয়া তাদের ৫৪১ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে গুজরাটের তখনকার মুখ্যমন্ত্রীকে বিচারের আওতায় আনার মতো কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে।
মোদী এরপর দলের প্রধান হন; তার হাত ধরেই বিজেপি ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে জিতে কেন্দ্রের ক্ষমতায় বসে। নির্বাচনে জিতে তারা ২০১৯ সালে ফের সরকার গড়ে।
গত সপ্তাহে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র গুজরাট দাঙ্গা নিয়ে বিবিসি-র তথ্যচিত্র ‘ইন্ডিয়া: দ্য মোদী কোশ্চেন’ কে বিতর্কিত কাহিনী ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে বানানো ‘অপপ্রচার’ বলে অ্যাখ্যা দিয়েছিলেন।
পরে শনিবার এক টুইটে ভারত সরকারের উপদেষ্টা কাঞ্চন গুপ্ত জানান, তথ্যপ্রযুক্তি আইনের অধীনে জরুরি ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে দেশটির সরকার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ওই তথ্যচিত্র প্রদর্শন বন্ধের নির্দেশ জারি করেছে। এমনকী তথ্যচিত্রের কোনো ক্লিপও শেয়ার করা যাবে না।
এবার জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় বিতর্কিত এই তথ্যচিত্র প্রদর্শনী বন্ধের পথে হাঁটলেও বেঁকে বসছে ছাত্র ইউনিয়ন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হুঁশিয়ারি মানার কোনো ইচ্ছা নেই বলে জানিয়েছেন ছাত্র ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট ঐশি ঘোষ। তিনি টুইটারে পোস্টের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের তথ্যচিত্রটি দেখতে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।
তথ্যচিত্রটি দেখনোর পরিকল্পনা ঠিক আছে কিনা, রয়টার্স থেকে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘হ্যাঁ, আমরা দেখাব।” তবে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দেওয়া শাস্তির হুমকি নিয়ে কথা বলতে রাজি হননি।
দিল্লি পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা গভীর মনযোগে পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে।
দক্ষিণের রাজ্য কেরালার কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়েও তথ্যচিত্রটি প্রদর্শন করা হবে বলে জানিয়েছে রয়টার্স। তবে এ বিষয়ে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এখনও কোনো মন্তব্য করা হয়নি।
বুধবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৩
বিগত বেশ কয়েকদিন ধরেই বিবিসি দ্য মোদী কোয়েশ্চেন’ তথ্যচিত্র নিয়ে দেশ, বিদেশে বিতর্ক তুঙ্গে। ২০০২ সালে গুজরাট দাঙ্গায় মোদীর নেতৃত্ব ও তার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। খবর হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা ।
দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসংগঠন (জেএনইউএসইউ) মঙ্গলবার তথ্যচিত্রটি দেখানোর আয়োজন করেছিল। এক টুইটে বলা হয়েছিল, মঙ্গলবার স্থানীয় সময় রাত ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ক্যাফেটেরিয়ায় তথ্যচিত্রটি দেখানো হবে।এরপর আগের দিন সোমবার রাতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন থেকে তাদের ওয়েবসাইটে বলা হয়, কর্তৃপক্ষ ওই তথ্যচিত্র প্রদর্শনের অনুমতি দেয়নি।
টুইটার, ইউটিউবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে বিবিসি-র তৈরি তথ্যচিত্র দেখানো বন্ধের নির্দেশের পর এবার ভারতের শীর্ষ একটি বিশ্ববিদ্যালয় এ তথ্যচিত্রের প্রদর্শনী বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে। নতুবা কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
‘‘কঠোরভাবে বলছি, এই ধরনের অননুমোদিত কার্যকলাপ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের শান্তি ও সম্প্রীতিকে ব্যাহত করতে পারে।
‘‘সংশ্লিষ্ট ছাত্র বা ব্যক্তিদের অবিলম্বে প্রস্তাবিত কর্মসূচি বাতিল করার জোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। যদি তারা তা করতে ব্যর্থ হয় তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিধি অনুযায়ী কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে।”
গুজরাট দাঙ্গা নিয়ে তৈরি বিবিসি-র তথ্যচিত্রকে কেন্দ্র করে ভারতে রাজনীতি উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। রাজ্যে রাজ্যে বিরোধীরা তথ্যচিত্র প্রদর্শনী করার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।
গুজরাটে ওই দাঙ্গার সময় মোদী পশ্চিমাঞ্চলীয় এই রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। সেবারের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় সরকারি হিসাবেই এক হাজারের বেশি মানুষ নিহত হন, যাদের বেশিরভাগই ছিলেন মুসলমান।
দাঙ্গায় প্রকৃত নিহতের সংখ্যা সরকারি সংখ্যার দ্বিগুণের বেশি বলে অনুমান একাধিক মানবাধিকার সংস্থার। হিন্দু তীর্থযাত্রীবাহী একটি ট্রেনে আগুন ধরে ৫৯ জনের মৃত্যুর পর গুজরাটে ওই দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়েছিল।
দাঙ্গা রোধে মোদী কার্যকর ব্যবস্থা নেননি, এমনকি নিরাপত্তা বাহিনীকে নিষ্ক্রিয় করে রেখেছিলেন বলে অনেকেই অভিযোগ করেন। ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) এই শীর্ষ নেতা অবশ্য প্রথম থেকেই এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।
দাঙ্গায় মোদী ও অন্যদের ভূমিকা তদন্তে সুপ্রিম কোর্টের নিয়োগ দেওয়া বিশেষ তদন্ত দলও ২০১২ সালে দেওয়া তাদের ৫৪১ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে গুজরাটের তখনকার মুখ্যমন্ত্রীকে বিচারের আওতায় আনার মতো কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে।
মোদী এরপর দলের প্রধান হন; তার হাত ধরেই বিজেপি ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে জিতে কেন্দ্রের ক্ষমতায় বসে। নির্বাচনে জিতে তারা ২০১৯ সালে ফের সরকার গড়ে।
গত সপ্তাহে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র গুজরাট দাঙ্গা নিয়ে বিবিসি-র তথ্যচিত্র ‘ইন্ডিয়া: দ্য মোদী কোশ্চেন’ কে বিতর্কিত কাহিনী ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে বানানো ‘অপপ্রচার’ বলে অ্যাখ্যা দিয়েছিলেন।
পরে শনিবার এক টুইটে ভারত সরকারের উপদেষ্টা কাঞ্চন গুপ্ত জানান, তথ্যপ্রযুক্তি আইনের অধীনে জরুরি ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে দেশটির সরকার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ওই তথ্যচিত্র প্রদর্শন বন্ধের নির্দেশ জারি করেছে। এমনকী তথ্যচিত্রের কোনো ক্লিপও শেয়ার করা যাবে না।
এবার জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় বিতর্কিত এই তথ্যচিত্র প্রদর্শনী বন্ধের পথে হাঁটলেও বেঁকে বসছে ছাত্র ইউনিয়ন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হুঁশিয়ারি মানার কোনো ইচ্ছা নেই বলে জানিয়েছেন ছাত্র ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট ঐশি ঘোষ। তিনি টুইটারে পোস্টের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের তথ্যচিত্রটি দেখতে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।
তথ্যচিত্রটি দেখনোর পরিকল্পনা ঠিক আছে কিনা, রয়টার্স থেকে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘হ্যাঁ, আমরা দেখাব।” তবে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দেওয়া শাস্তির হুমকি নিয়ে কথা বলতে রাজি হননি।
দিল্লি পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা গভীর মনযোগে পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে।
দক্ষিণের রাজ্য কেরালার কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়েও তথ্যচিত্রটি প্রদর্শন করা হবে বলে জানিয়েছে রয়টার্স। তবে এ বিষয়ে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এখনও কোনো মন্তব্য করা হয়নি।