alt

যুক্তরাষ্ট্রে কৃষ্ণাঙ্গ যুবকের মৃত্যু: পুলিশের মারধরের ভিডিও প্রকাশ

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : শনিবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৩

যুক্তরাষ্ট্রের মেম্ফিসে চলতি মাসের শুরুর দিকে মারা যাওয়া কৃষ্ণাঙ্গ যুব্ক টায়ার নিকোলসকে পাঁচ পুলিশ কর্মকর্তার নির্মম মারধরের ভিডিও প্রকাশ করেছে কর্তৃপক্ষ।

ওই কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ আনার পর শুক্রবার মেম্ফিস শহর কর্তৃপক্ষ এই ফুটেজগুলো প্রকাশ করে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

এর মধ্যে একটি ভিডিও ক্লিপে নিকোলসকে চালকের আসন থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করে তাকে জোর করে মাটিতে ফেলে দিতে দেখা গেছে। এ সময় নিকোলস চিৎকার করে ‘আরে, আমি কিছু করিনি, আমি কেবল বাড়ি যাওয়ার চেষ্টা করছি’ বলতে শোনা যায়।

পুলিশ কর্মকর্তারা তাকে মাটিতে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে নির্দেশ দেন এবং তার মুখে মরিচের গুড়া স্প্রে করেন। নিকোলস তখন নিজেকে মুক্ত করে উঠে দাঁড়িয়ে দৌড় শুরু করেন, পেছনে পুলিশের ওই কর্মকর্তাদেরকে তাকে ধাওয়া করতে দেখা যায়; এর মধ্যে একজন নিকোলসকে লক্ষ্য করে স্টান গান থেকে ফায়ারও করেন।

ফের ধরা পড়ার পর ধস্তাধস্তি এবং পুলিশ কর্মকর্তারা যে নিকোলসকে বেধড়ক পেটান তা দেখা গেছে পৃথক আরেক ভিডিওতে ।

এই ভিডিওতে দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে নিকোলসকে চেপে ধরে রাখতে এবং একজনকে তাকে লাথি মারতে দেখা গেছে। চতুর্থ আরেক কর্মকর্তাকে দেখা গেছে সম্ভবত লাঠিজাতীয় কিছু একটা দিয়ে আঘাত করতে ও পরে ঘুষি মারতে।

নিকোলস এসময় বারবারই ‘মা, মা’ বলে চিৎকার করছিলেন। ঘটনাস্থলে প্রথম জরুরি স্বাস্থ্যসেবা কর্মী পৌঁছানোর প্রায় ১৯ মিনিট পর সেখানে স্ট্রেচার পৌঁছায় বলেও ভিডিওতে প্রমাণ মিলেছে।

নিকোলেসের মা পরে জানান, পুলিশের হাতে মারধরের শিকার হওয়ার সময় তার ছেলে বাড়ি থেকে মাত্র ৮০ গজের মতো দূরে ছিলেন।

পাঁচ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় মাত্রার খুন, হামলা, অপহরণ, অসদাচরণ ও নিপীড়নের আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনার একদিন পর পুলিশ সদস্যদের শরীরে লাগানো ক্যামেরা এবং রাস্তার ধারের একটি খুঁটিতে লাগানো সিসি ক্যামেরা থেকে নেওয়া ৭ জানুয়ারির ওই মারধরের চার অংশবিশিষ্ট ফুটেজ প্রকাশ করা হয়।

ওই মারধরে গুরুতর আহত নিকোলাস (২৯) তিনদিন পর হাসপাতালে মারা যান।

যে পাঁচ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, তারা সবাই কৃষ্ণাঙ্গ; তাদেরকে গত শনিবার (২১ জানুয়ারি) পুলিশ বিভাগ থেকে বরখাস্ত করা হয়।

ভিডিও প্রকাশের আগে মেম্ফিসের পুলিশপ্রধান সেরেলিন ডেভিস ও নিকোলসের পরিবারের আইনজীবীরা ভিডিওতে থাকা নির্মমতা এবং এর কারণে সৃষ্ট ক্ষোভ নিয়ে সতর্ক করার পাশাপাশি জনগণকে শান্ত থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন।

“এমন কিছু দেখতে যাচ্ছেন আপনারা যা মানবতার পক্ষে অবমাননাকর,” ফুটেজ প্রসঙ্গে সিএনএনকে বলেছেন ডেভিস।

যে পাঁচ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, তারা সবাই কৃষ্ণাঙ্গ; তাদেরকে পুলিশ বাহিনী থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। |ছবি: রয়টার্স

ভিডিওটির প্রথম প্রকাশ এবং সিএনএন ও অন্যান্য গণমাধ্যমে প্রচারিত হওয়ার পাশাপাশি টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে বিপুল সংখ্যক বিক্ষোভকারীকে মেম্ফিসে জড়ো হয়ে ‘বিচার নেই, শান্তি নেই’ স্লোগান দিতে এবং ‘গণদাবি: পুলিশি সন্ত্রাস বন্ধ কর’ প্ল্যাকার্ড বহন করতে দেখা গেছে।

বিক্ষোভকারীরা একপর্যায়ে মহাসড়ক ইন্টারস্টেট ৫৫-র এক স্থানে যান চলাচলও বন্ধ করে দেন।

নিকোলসের পরিবারের প্রতিনিধিত্ব করা নাগরিক অধিকার আইনজীবী বেন ক্রাম্প এর আগে মেম্ফিসের পুলিশের প্রতি তাদের ‘স্করপিয়ন ইউনিট’ বিলুপ্ত করে দেওয়ার আহ্বান জানান। সড়কে সহিংস অপরাধ নিয়ে কাজ করা এই স্কোয়াডের কয়েকজন ৭ জানুয়ারির ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ছিলেন বলে মনে করা হচ্ছে।

“আমি যে অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি, কোনো মায়েরই যেন সেই অবস্থার মধ্য দিয়ে যেতে না হয়, যে সহিংসতার মধ্য দিয়ে আমি আমার সন্তানকে হারিয়েছি, এমনভাবে কোনো মা যেন তার সন্তানকে না হারান,” শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন নিকোলসের মা রোভন ওয়েলস।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, মেম্ফিসের ভিডিওটি দেখে তিনি ‘ক্ষুব্ধ’ এবং ‘গভীরভাবে বেদনাগ্রস্ত’ হয়েছেন।

চার বছর বয়সী এক সন্তানের পিতা নিকোলস দক্ষ স্কেটবোর্ডার ছিলেন, সম্প্রতি তিনি ফটোগ্রাফি ক্লাসে ভর্তি হয়েছিলেন।

ক্যালিফোর্নিয়ার সেক্রেমেন্টোতে বেড়ে উঠলেও করোনাভাইরাস মহামারীর আগে নিকোলাস মেম্ফিসে চলে যান এবং মা ও সৎবাবার সঙ্গে বসবাস শুরু করেন।

তিনি ফেডএক্সে কাজ করতেন এবং প্রতিদিন বিরতিতে মায়ের বানানো খাবার খেতে বাসায় যেতেন।

নিকোলসের পরিবারের সদস্যরা এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মেম্ফিসের প্রতিবাদকারীদের শান্ত থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন। ৬ লাখ ২৮ হাজার বাসিন্দা অধ্যুষিত শহরটির ৬৫ শতাংশই কৃষ্ণাঙ্গ।

শুক্রবার সন্ধ্যায় বাইডেন তার সহমর্মিতা প্রকাশে রোভন ওয়েলস এবং নিকোলসের সৎবাবা রডনি ওয়েলসের সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। বিক্ষোভ যদি সহিংস আকার ধারণ করে, তাহলে কী করতে হবে, তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের কার্যালয়।

মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল মেরিক গারল্যান্ডও মেম্ফিসে নিকোলসের মৃত্যু নিয়ে ‘ফেডারেল সিভিল রাইটস’ তদন্তের ঘোষণা দিয়েছেন।

নিউ ইয়র্ক, আটলান্টা, ওয়াশিংটনসহ একাধিক বড় শহরের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো জানিয়েছে, তারা নিকোলসকে মারধরের ভিডিও প্রকাশের পর সম্ভাব্য বিক্ষোভ মোকাবেলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

ছবি

নিউইয়র্কে আজ মেয়র নির্বাচন: সর্বশেষ চার জরিপেও এগিয়ে জোহরান মামদানি

ছবি

বিশ্বকে ১৫০ বার ধ্বংস করার মতো পারমাণবিক অস্ত্র আমাদের আছে: ট্রাম্প

ছবি

ইউক্রেনকে আপাতত টমাহক দেওয়া হবে না : ট্রাম্প

ছবি

আফগানিস্তানে ৬.৩ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প, নিহত ২০

ছবি

দুই সপ্তাহের মধ্যে তীব্র খাবার পানির সংকটে পড়তে যাচ্ছে তেহরান

ছবি

যুদ্ধবিরতির পরও ইসরায়েলি অবরোধে বিপর্যয়ের মুখে ফিলিস্তিনিরা

ছবি

জেন জি’ ও পরবর্তী সব প্রজন্মের জন্য ধূমপান নিষিদ্ধ করল মালদ্বীপ

ছবি

আরএসএফের নিপীড়নের বর্ণনা দিলেন পালিয়ে আসা মানুষেরা

ছবি

ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতির ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করে লেবাননে ইসরায়েলের হামলা, নিহত ৪

ছবি

চীনের সর্বকনিষ্ঠ নভোচারীর সঙ্গে মহাকাশে পাঠানো হলো ৪টি কালো ইঁদুর

ছবি

‘সুদানে বিদ্রোহীদের চীনা ড্রোন-কামান দিচ্ছে আরব আমিরাত’

ছবি

‘গ্রে জোনে’ হাজার হাজার রুশ সেনা, কোণঠাসা ইউক্রেনের বাহিনী

ছবি

ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি বন্ধ করবে না ইরান : আরাগচি

ছবি

ওনেই পানি-খাবার, বাঁচার আশায় মাইলের পর মাইল হাঁটছে মানুষ

ছবি

চুক্তি ভেঙে গাজায় ত্রাণ প্রবেশ বাধা দিচ্ছে ইসরায়েল, চালাচ্ছে হামলা

ছবি

৩০ প্যালেস্টাইনির মৃতদেহ ফেরত দিয়েছে ইসরায়েল, গাজায় ফের হামলা

ছবি

ট্রাম্পের কাছে ক্ষমা চাইলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী কার্নি

ছবি

ট্রাম্পের কাছে ক্ষমা চাইলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী কার্নি

ছবি

যুক্তরাষ্ট্র-ভারত ১০ বছরের প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর

ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসন ঠেকাতে রাশিয়া-চীন-ইরানের দ্বারে মাদুরো

ছবি

‘না যুদ্ধ’, ‘না শান্তির’ মরণফাঁদে পড়ার ঝুঁকিতে গাজা

ছবি

যুক্তরাষ্ট্রে শাটডাউনের মধ্যেও খাদ্য সহায়তা দিতে আদালতের নির্দেশ

ছবি

গৃহযুদ্ধে নাকাল সুদান

ছবি

প্রিন্স উপাধি হারালেও আপাতত রয়েল লজেই থাকছেন অ্যান্ড্রু

এক সপ্তাহের যুদ্ধবিরতিতে রাজি পাকিস্তান আফগানিস্তান

ওমরাহ ভিসা নিয়ে সৌদির নতুন সিদ্ধান্ত

ছবি

যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে ১০ বছর মেয়াদী প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর

ছবি

নতুন পারমাণবিক অস্ত্র প্রতিযোগিতায় যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চীন

ছবি

পাকিস্তান–আফগানিস্তান যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়াতে সম্মত

ছবি

গাজায় ‘শক্তিশালী’ হামলা চালানোর নির্দেশ নেতানিয়াহুর

ছবি

নেটোর সঙ্গে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে রাশিয়া, সমন্বয়ের অভাব ইউরোপে

ছবি

ট্রাম্পের আগমন ঘিরে দ. কোরিয়ায় বিক্ষোভ

ছবি

কানাডায় এবার ভারতীয় বংশোদ্ভূত শিল্পপতিকে খুন করল বিষ্ণোই গ্যাং

ছবি

ট্রাম্পের দক্ষিণ কোরিয়া সফরের আগে উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা

ছবি

এক মাসে রেকর্ড ১ কোটি ১৭ লাখ মানুষের ওমরাহ পালন

ছবি

ভারতের অন্ধ্র উপকূলে ঘূর্ণিঝড় ‘মোনথা’র তাণ্ডব, নিহত ১

tab

যুক্তরাষ্ট্রে কৃষ্ণাঙ্গ যুবকের মৃত্যু: পুলিশের মারধরের ভিডিও প্রকাশ

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

শনিবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৩

যুক্তরাষ্ট্রের মেম্ফিসে চলতি মাসের শুরুর দিকে মারা যাওয়া কৃষ্ণাঙ্গ যুব্ক টায়ার নিকোলসকে পাঁচ পুলিশ কর্মকর্তার নির্মম মারধরের ভিডিও প্রকাশ করেছে কর্তৃপক্ষ।

ওই কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ আনার পর শুক্রবার মেম্ফিস শহর কর্তৃপক্ষ এই ফুটেজগুলো প্রকাশ করে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

এর মধ্যে একটি ভিডিও ক্লিপে নিকোলসকে চালকের আসন থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করে তাকে জোর করে মাটিতে ফেলে দিতে দেখা গেছে। এ সময় নিকোলস চিৎকার করে ‘আরে, আমি কিছু করিনি, আমি কেবল বাড়ি যাওয়ার চেষ্টা করছি’ বলতে শোনা যায়।

পুলিশ কর্মকর্তারা তাকে মাটিতে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে নির্দেশ দেন এবং তার মুখে মরিচের গুড়া স্প্রে করেন। নিকোলস তখন নিজেকে মুক্ত করে উঠে দাঁড়িয়ে দৌড় শুরু করেন, পেছনে পুলিশের ওই কর্মকর্তাদেরকে তাকে ধাওয়া করতে দেখা যায়; এর মধ্যে একজন নিকোলসকে লক্ষ্য করে স্টান গান থেকে ফায়ারও করেন।

ফের ধরা পড়ার পর ধস্তাধস্তি এবং পুলিশ কর্মকর্তারা যে নিকোলসকে বেধড়ক পেটান তা দেখা গেছে পৃথক আরেক ভিডিওতে ।

এই ভিডিওতে দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে নিকোলসকে চেপে ধরে রাখতে এবং একজনকে তাকে লাথি মারতে দেখা গেছে। চতুর্থ আরেক কর্মকর্তাকে দেখা গেছে সম্ভবত লাঠিজাতীয় কিছু একটা দিয়ে আঘাত করতে ও পরে ঘুষি মারতে।

নিকোলস এসময় বারবারই ‘মা, মা’ বলে চিৎকার করছিলেন। ঘটনাস্থলে প্রথম জরুরি স্বাস্থ্যসেবা কর্মী পৌঁছানোর প্রায় ১৯ মিনিট পর সেখানে স্ট্রেচার পৌঁছায় বলেও ভিডিওতে প্রমাণ মিলেছে।

নিকোলেসের মা পরে জানান, পুলিশের হাতে মারধরের শিকার হওয়ার সময় তার ছেলে বাড়ি থেকে মাত্র ৮০ গজের মতো দূরে ছিলেন।

পাঁচ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় মাত্রার খুন, হামলা, অপহরণ, অসদাচরণ ও নিপীড়নের আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনার একদিন পর পুলিশ সদস্যদের শরীরে লাগানো ক্যামেরা এবং রাস্তার ধারের একটি খুঁটিতে লাগানো সিসি ক্যামেরা থেকে নেওয়া ৭ জানুয়ারির ওই মারধরের চার অংশবিশিষ্ট ফুটেজ প্রকাশ করা হয়।

ওই মারধরে গুরুতর আহত নিকোলাস (২৯) তিনদিন পর হাসপাতালে মারা যান।

যে পাঁচ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, তারা সবাই কৃষ্ণাঙ্গ; তাদেরকে গত শনিবার (২১ জানুয়ারি) পুলিশ বিভাগ থেকে বরখাস্ত করা হয়।

ভিডিও প্রকাশের আগে মেম্ফিসের পুলিশপ্রধান সেরেলিন ডেভিস ও নিকোলসের পরিবারের আইনজীবীরা ভিডিওতে থাকা নির্মমতা এবং এর কারণে সৃষ্ট ক্ষোভ নিয়ে সতর্ক করার পাশাপাশি জনগণকে শান্ত থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন।

“এমন কিছু দেখতে যাচ্ছেন আপনারা যা মানবতার পক্ষে অবমাননাকর,” ফুটেজ প্রসঙ্গে সিএনএনকে বলেছেন ডেভিস।

যে পাঁচ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, তারা সবাই কৃষ্ণাঙ্গ; তাদেরকে পুলিশ বাহিনী থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। |ছবি: রয়টার্স

ভিডিওটির প্রথম প্রকাশ এবং সিএনএন ও অন্যান্য গণমাধ্যমে প্রচারিত হওয়ার পাশাপাশি টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে বিপুল সংখ্যক বিক্ষোভকারীকে মেম্ফিসে জড়ো হয়ে ‘বিচার নেই, শান্তি নেই’ স্লোগান দিতে এবং ‘গণদাবি: পুলিশি সন্ত্রাস বন্ধ কর’ প্ল্যাকার্ড বহন করতে দেখা গেছে।

বিক্ষোভকারীরা একপর্যায়ে মহাসড়ক ইন্টারস্টেট ৫৫-র এক স্থানে যান চলাচলও বন্ধ করে দেন।

নিকোলসের পরিবারের প্রতিনিধিত্ব করা নাগরিক অধিকার আইনজীবী বেন ক্রাম্প এর আগে মেম্ফিসের পুলিশের প্রতি তাদের ‘স্করপিয়ন ইউনিট’ বিলুপ্ত করে দেওয়ার আহ্বান জানান। সড়কে সহিংস অপরাধ নিয়ে কাজ করা এই স্কোয়াডের কয়েকজন ৭ জানুয়ারির ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ছিলেন বলে মনে করা হচ্ছে।

“আমি যে অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি, কোনো মায়েরই যেন সেই অবস্থার মধ্য দিয়ে যেতে না হয়, যে সহিংসতার মধ্য দিয়ে আমি আমার সন্তানকে হারিয়েছি, এমনভাবে কোনো মা যেন তার সন্তানকে না হারান,” শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন নিকোলসের মা রোভন ওয়েলস।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, মেম্ফিসের ভিডিওটি দেখে তিনি ‘ক্ষুব্ধ’ এবং ‘গভীরভাবে বেদনাগ্রস্ত’ হয়েছেন।

চার বছর বয়সী এক সন্তানের পিতা নিকোলস দক্ষ স্কেটবোর্ডার ছিলেন, সম্প্রতি তিনি ফটোগ্রাফি ক্লাসে ভর্তি হয়েছিলেন।

ক্যালিফোর্নিয়ার সেক্রেমেন্টোতে বেড়ে উঠলেও করোনাভাইরাস মহামারীর আগে নিকোলাস মেম্ফিসে চলে যান এবং মা ও সৎবাবার সঙ্গে বসবাস শুরু করেন।

তিনি ফেডএক্সে কাজ করতেন এবং প্রতিদিন বিরতিতে মায়ের বানানো খাবার খেতে বাসায় যেতেন।

নিকোলসের পরিবারের সদস্যরা এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মেম্ফিসের প্রতিবাদকারীদের শান্ত থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন। ৬ লাখ ২৮ হাজার বাসিন্দা অধ্যুষিত শহরটির ৬৫ শতাংশই কৃষ্ণাঙ্গ।

শুক্রবার সন্ধ্যায় বাইডেন তার সহমর্মিতা প্রকাশে রোভন ওয়েলস এবং নিকোলসের সৎবাবা রডনি ওয়েলসের সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। বিক্ষোভ যদি সহিংস আকার ধারণ করে, তাহলে কী করতে হবে, তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের কার্যালয়।

মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল মেরিক গারল্যান্ডও মেম্ফিসে নিকোলসের মৃত্যু নিয়ে ‘ফেডারেল সিভিল রাইটস’ তদন্তের ঘোষণা দিয়েছেন।

নিউ ইয়র্ক, আটলান্টা, ওয়াশিংটনসহ একাধিক বড় শহরের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো জানিয়েছে, তারা নিকোলসকে মারধরের ভিডিও প্রকাশের পর সম্ভাব্য বিক্ষোভ মোকাবেলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

back to top