মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গবেষক দল দাবি করেছে, তারা এমন একটি নতুন রঙ আবিষ্কার করেছেন, যা খালি চোখে দেখা সম্ভব নয়। প্রযুক্তির সাহায্যে বিশেষ পদ্ধতিতে এই রঙ অনুভব করা সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা। রংঙটির নাম দেয়া হয়েছে ‘ওলো’ (olo)। যে পাঁচজন এই রঙ দেখেছেন তারা বলছেন এটা টিলের মতো অর্থাৎ নীলাভ সবুজ।
ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় এবং ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা ১৮ এপ্রিল ‘সায়েন্স অ্যাডভান্সেস’ জার্নালে এই রঙ নিয়ে তাদের গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন।
প্রধান গবেষক অধ্যাপক রেন এনজি বলেন, “আমরা ‘ওজ’ (OZ) নামে একটি প্রযুক্তি তৈরি করেছি, যা মানুষের চোখের ফটোরিসেপ্টর (আলোকগ্রাহক) কোষগুলোকে নির্দিষ্টভাবে উদ্দীপিত করে নতুন রঙ দেখার সুযোগ দেয়। এটি ছিল চোখের রেটিনায় সরাসরি লেজার আলোক রশ্মি নিক্ষেপের মাধ্যমে করা একটি পরীক্ষা।”
তিনি জানান, “এই ‘ওলো’ রঙটি কিছুটা নীলাভ সবুজ বা টিলের মতো, তবে এমনভাবে পরিপূর্ণ ও গভীর যা আমরা আগে কখনও দেখিনি।”
বিশেষজ্ঞরা ব্যাখ্যা করেন, মানুষের চোখের তিন ধরনের কোষ — এস (S), এম (M) ও এল (L) কোষ — যথাক্রমে নীল, সবুজ ও লাল তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলো শনাক্ত করে। কিন্তু বাস্তবে এম (M) কোষ কখনোই একা সক্রিয় হয় না। নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে শুধুমাত্র এম কোষ উদ্দীপিত করে যে রঙ দেখা গেছে, সেটিই ‘ওলো’।
গবেষণা দলের সদস্য অস্টিন রুরদা জানান, “‘ওজ’ আসলে একটি মাইক্রোস্কোপের মতো, যা রেটিনার উপর আলোক রশ্মি প্রক্ষেপণ করে। এটি চোখের রোগ নিয়ে গবেষণার জন্যও ব্যবহৃত হচ্ছে।”
গবেষক হান্না ডয়েল বলেন, “আমি যখন ‘ওলো’ দেখলাম, এটা এতটাই গভীর ও প্রাণবন্ত টিল (নীলাভ সবুজ) রঙের ছিল যে প্রচলিত যেকোনো প্রাকৃতিক রঙ ম্লান মনে হয়েছে।”
প্রযুক্তি ব্যবহারের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ভবিষ্যতে এই প্রযুক্তি রঙ-বিভ্রান্তি বা কালার ব্লাইন্ডনেস দূরীকরণে সহায়ক হতে পারে। তবে প্রযুক্তিটি বর্তমানে এতটাই সংবেদনশীল ও স্থিতিশীলতার উপর নির্ভরশীল যে, ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য এটি সহজলভ্য করতে এখনও দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হবে।
ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের গবেষক ফ্রান্সিস উইন্ড্রাম বলেন, “রঙ দেখার ক্ষমতা তিনটি বিষয়ের উপর নির্ভর করে—আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য, স্নায়বিক প্রক্রিয়াকরণ এবং ভাষাগত নামকরণ। তাই ওলো নতুন হলেও তার অস্তিত্ব চিরকাল ছিল, আমরা শুধু আগে তা দেখতে পারতাম না।”
‘ওলো’ — দেখছেন মাত্র পাঁচজন
গবেষণায় অংশ নেওয়া পাঁচজন ব্যক্তি, যারা সবাই স্বাভাবিক দৃষ্টিশক্তির অধিকারী, এই রঙ দেখার সুযোগ পান। তাদের মধ্যে তিনজন গবেষণা নিবন্ধের সহ-লেখক এবং বাকি দুজন ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাগারে যুক্ত ছিলেন।
সাধারণ মানুষের কবে দেখবেন?
গবেষকরা জানিয়েছেন, বর্তমানে স্মার্টফোন, টিভি কিংবা ভার্চুয়াল রিয়ালিটি হেডসেটেও এই রঙ প্রদর্শন সম্ভব নয়। কারণ ওলো এমন এক রঙ, যা শুধু বিশেষ প্রযুক্তির মাধ্যমে সরাসরি চোখের কোষে আলো পাঠিয়ে অনুভব করা সম্ভব।
রোববার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গবেষক দল দাবি করেছে, তারা এমন একটি নতুন রঙ আবিষ্কার করেছেন, যা খালি চোখে দেখা সম্ভব নয়। প্রযুক্তির সাহায্যে বিশেষ পদ্ধতিতে এই রঙ অনুভব করা সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা। রংঙটির নাম দেয়া হয়েছে ‘ওলো’ (olo)। যে পাঁচজন এই রঙ দেখেছেন তারা বলছেন এটা টিলের মতো অর্থাৎ নীলাভ সবুজ।
ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় এবং ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা ১৮ এপ্রিল ‘সায়েন্স অ্যাডভান্সেস’ জার্নালে এই রঙ নিয়ে তাদের গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন।
প্রধান গবেষক অধ্যাপক রেন এনজি বলেন, “আমরা ‘ওজ’ (OZ) নামে একটি প্রযুক্তি তৈরি করেছি, যা মানুষের চোখের ফটোরিসেপ্টর (আলোকগ্রাহক) কোষগুলোকে নির্দিষ্টভাবে উদ্দীপিত করে নতুন রঙ দেখার সুযোগ দেয়। এটি ছিল চোখের রেটিনায় সরাসরি লেজার আলোক রশ্মি নিক্ষেপের মাধ্যমে করা একটি পরীক্ষা।”
তিনি জানান, “এই ‘ওলো’ রঙটি কিছুটা নীলাভ সবুজ বা টিলের মতো, তবে এমনভাবে পরিপূর্ণ ও গভীর যা আমরা আগে কখনও দেখিনি।”
বিশেষজ্ঞরা ব্যাখ্যা করেন, মানুষের চোখের তিন ধরনের কোষ — এস (S), এম (M) ও এল (L) কোষ — যথাক্রমে নীল, সবুজ ও লাল তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলো শনাক্ত করে। কিন্তু বাস্তবে এম (M) কোষ কখনোই একা সক্রিয় হয় না। নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে শুধুমাত্র এম কোষ উদ্দীপিত করে যে রঙ দেখা গেছে, সেটিই ‘ওলো’।
গবেষণা দলের সদস্য অস্টিন রুরদা জানান, “‘ওজ’ আসলে একটি মাইক্রোস্কোপের মতো, যা রেটিনার উপর আলোক রশ্মি প্রক্ষেপণ করে। এটি চোখের রোগ নিয়ে গবেষণার জন্যও ব্যবহৃত হচ্ছে।”
গবেষক হান্না ডয়েল বলেন, “আমি যখন ‘ওলো’ দেখলাম, এটা এতটাই গভীর ও প্রাণবন্ত টিল (নীলাভ সবুজ) রঙের ছিল যে প্রচলিত যেকোনো প্রাকৃতিক রঙ ম্লান মনে হয়েছে।”
প্রযুক্তি ব্যবহারের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ভবিষ্যতে এই প্রযুক্তি রঙ-বিভ্রান্তি বা কালার ব্লাইন্ডনেস দূরীকরণে সহায়ক হতে পারে। তবে প্রযুক্তিটি বর্তমানে এতটাই সংবেদনশীল ও স্থিতিশীলতার উপর নির্ভরশীল যে, ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য এটি সহজলভ্য করতে এখনও দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হবে।
ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের গবেষক ফ্রান্সিস উইন্ড্রাম বলেন, “রঙ দেখার ক্ষমতা তিনটি বিষয়ের উপর নির্ভর করে—আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য, স্নায়বিক প্রক্রিয়াকরণ এবং ভাষাগত নামকরণ। তাই ওলো নতুন হলেও তার অস্তিত্ব চিরকাল ছিল, আমরা শুধু আগে তা দেখতে পারতাম না।”
‘ওলো’ — দেখছেন মাত্র পাঁচজন
গবেষণায় অংশ নেওয়া পাঁচজন ব্যক্তি, যারা সবাই স্বাভাবিক দৃষ্টিশক্তির অধিকারী, এই রঙ দেখার সুযোগ পান। তাদের মধ্যে তিনজন গবেষণা নিবন্ধের সহ-লেখক এবং বাকি দুজন ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাগারে যুক্ত ছিলেন।
সাধারণ মানুষের কবে দেখবেন?
গবেষকরা জানিয়েছেন, বর্তমানে স্মার্টফোন, টিভি কিংবা ভার্চুয়াল রিয়ালিটি হেডসেটেও এই রঙ প্রদর্শন সম্ভব নয়। কারণ ওলো এমন এক রঙ, যা শুধু বিশেষ প্রযুক্তির মাধ্যমে সরাসরি চোখের কোষে আলো পাঠিয়ে অনুভব করা সম্ভব।